Showing posts with label বাণী. Show all posts
Showing posts with label বাণী. Show all posts

18 July 2010

জামায়াতের রাজনীতি সাংবিধানিকভাবে নিষিদ্ধ করা হবে : আইন প্রতিমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী বাতিলসংক্রান্ত উচ্চ আদালতের রায় বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশে জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি সাংবিধানিকভাবে নিষিদ্ধ করা হবে বলে জানিয়েছেন আইন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম। তিনি বলেন, জামায়াত দেশে জঙ্গিদের মদদ দিচ্ছে, তাদের সংগঠিত করছে। কোনো অবস্থাতেই তাদের এ দেশে রাজনীতি করতে দেওয়া হবে না। এ দেশে ধর্মভিত্তিক রাজনীতির চির অবসান ঘটানো হবে।

গতকাল শনিবার শেখ রাসেল মেমোরিয়াল একাডেমীর উদ্যোগে জাতীয় প্রেসক্লাবে 'যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দ্রুত বাস্তবায়ন, সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার ও বিরোধী দলের ভূমিকা' শীর্ষক আলোচনা সভায় আইন প্রতিমন্ত্রী এসব মন্তব্য করেন।

একাডেমীর সভাপতি ও জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান আবুল বারকাতের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহম্মদ হোসেন, শেখ রাসেল মেমোরিয়াল একাডেমীর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শেখ সিদ্দিকুর রহমান ও বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সৈয়দা রাজিয়া মোস্তাফা বক্তব্য দেন।

জামায়াতের শীর্ষ পাঁচ নেতার গ্রেপ্তারের প্রসঙ্গে কামরুল ইসলাম বলেন, 'এর মধ্যে কয়েকজন চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অচিরেই তাদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হবে এবং এ বছরের মধ্যেই চিহ্নিত ঘাতকদের বিচার কার্যক্রম শেষ করা হবে।' তিনি বলেন, 'যারা চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী তাদের বিচার আগে এবং দ্রুত করা হবে। সে যে দলের, যত বড় নেতাই হোক। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।' আইন প্রতিমন্ত্রী বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আন্তর্জাতিক মানের হবে। বিচার প্রশ্নবিদ্ধ হবে না। সরকার সেভাবেই কাজ করছে।

বিএনপির সমালোচনা করে কামরুল ইসলাম বলেন, তারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চায় না। যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষার জন্য তারা নানা চেষ্টা করছে।

1 July 2010

শিবিরের উচিত যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষ না নেওয়া : স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

Thu, Jul 1st, 2010 7:51 pm BdST

ঢাকা, জুলাই ০১ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- জামায়াতে ইসলামী সমর্থক ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরকে যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষ না নেওয়ার আহবান জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু।

তিনি বলেছেন, "শিবিরের বর্তমান প্রজন্ম ইসলামী ছাত্রসংঘ থেকে আসেনি। তাদের যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষ নেওয়া উচিত নয়। তারা বাংলাদেশের অস্তিত্ব ধারণ করে বড় হয়েছে। এ সুযোগ তাদের নেওয়া উচিত।"

ছাত্রশিবির নেতা-কর্মীদের গণতন্ত্রের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে কাজ করারও আহবান জানান স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।

বৃহস্পতিবার বিকালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।

টুকু বলেন, রিমান্ডে থাকা জামায়াত নেতাদের পক্ষে বিবৃতি দিয়ে বিএনপি যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষার চেষ্টা করছে।

"আমরা জানতাম তারা একসময় যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষ নেবে।", বলেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।

নেতাদের মুক্তির দাবিতে জামায়াতের বিক্ষোভ কর্মসূচি প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, "তারা যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়া শুরুর আগে থেকেই নানা ধরণের হুমকি দিচ্ছে।"

টুকু আরো বলেন, "তাদের জানা উচিত মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে দমিয়ে রাখা যাবে না। দেশবিরোধী কোন কার্যকলাপে জড়িত থাকলে তাদের বাধা দেওয়া হবে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় রয়েছে।"

জামায়াতের বিক্ষোভ মিছিলকে কেন্দ্র করে নাশকতার আশঙ্কা প্রসঙ্গে পুলিশের মহাপরিদর্শক নূর মোহাম্মদ এ সময় জানান, এমন কোন আশঙ্কা তাদের নেই। তবে যে কোন অবস্থা মোকাবেলায় তারা প্রস্তুত রয়েছেন।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এমকে/এসএএ/১৯৪২ঘ.

3 April 2010

আইন প্রতিমন্ত্রীর মন্তব্যঃ জামায়াতকে রক্ষা করতে চায় বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক

যুদ্ধাপরাধের বিচারের জন্য গঠিত ট্রাইব্যুনাল সম্পর্কে আপত্তি তুলে বিএনপি জামায়াতকে রক্ষা করতে চায়_মন্তব্য করে আইন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেছেন, 'যুদ্ধাপরাধ আর মানবতাবিরোধী অপরাধ সমান কথা। বিএনপি মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার এ নিয়ে মন্তব্য করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বাধাগ্রস্ত করতে চাইছেন।'

গত শুক্রবার বিএনপির মহাসচিব হত্যা, লুণ্ঠন, ধর্ষণ এবং অগি্নসংযোগের মতো অপরাধ প্রচলিত ফৌজদারি আইনেই করা সম্ভব বলে মন্তব্য করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু একাডেমী আয়োজিত 'যুদ্ধাপরাধীদের বিচার-দেশবাসীর দাবি' শীর্ষক আলোচনা সভায় গতকাল শনিবার আইন প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু একাডেমীর আহ্বায়ক হেমায়েত উদ্দিন বীর বিক্রমের সভাপতিত্বে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে এ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ নাসিম।

অ্যাডভোকেট কামরুল প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন। এ ছাড়া বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের শ্রমবিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ। অ্যাডভোকেট কামরুল বলেন, তারা আগে থেকেই জানতেন যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে বিএনপি সহায়তা ও সমর্থন করবে না। কারণ এ দলের নেতারাই যুদ্ধাপরাধীদের আশ্রয়-প্রশয় দিয়ে রেখেছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি জিয়াউর রহমানের সময় কুখ্যাত রাজাকার শাহ আজিজুর রহমানের প্রধানমন্ত্রী এবং আরেক রাজাকার আলীমের মন্ত্রী হওয়া ও খালেদা জিয়ার সরকারে নিজামী-মুজাহিদের মন্ত্রী হওয়ার উদাহরণ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বিএনপি মহাসচিব এমন কথা বলে জাতিকে বিভ্রান্ত করতে চাইছেন। আইন প্রতিমন্ত্রী বলেন, খোন্দকার দেলোয়ার একজন বিজ্ঞ আইনজীবী, তাঁর এমন কথা বলা উচিত হয়নি। তিনি জ্ঞানপাপী বলেই এমনটা বলেছেন। বিএনপিতেই যুদ্ধাপরাধী আছে উল্লেখ করে কামরুল ইসলাম বলেন, ১৯৭১ এ মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজাকার, আলবদর, আলশামসরা যেসব অপরাধ করেছে সবই যুদ্ধাপরাধের পাশাপাশি মানবতাবিরোধী অপরাধের আওতায় পড়ে। তাই এ প্রোপটে বিষয় দুটিকে আলাদা করে ব্যাখ্যা করার অবকাশ নেই। তিনি বলেন, সারা দেশে সব যুদ্ধাপরাধীর বিচার করতে আরো ট্রাইব্যুনাল গঠনের প্রয়োজন হতে পারে।

মোহাম্মদ নাসিম বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হয়েছে উল্লেখ করে বলেন, এসবের পাশাপাশি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করাও মহাজোটের অন্যতম নির্বাচনী অঙ্গীকার ছিল। এখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার না হলে জনগণকে এ সরকার কী জবাব দেবে। তিনি বলেন, আগামী বিজয় দিবস জাতি পালন করবে যুদ্ধাপরাধীমুক্ত বাংলাদেশ হিসেবে। তিনি বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানি সংকট মোকাবিলায় জনগণের কাছে আরো সময় প্রার্থনা করে বলেন, আওয়ামী লীগ ২০২১ সাল পর্যন্ত সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। সময় পেলে এ সরকার বাংলাদেশকে সিঙ্গাপুরের সমান উচ্চতায় নিয়ে যাবে।

এদিকে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নান খান বলেছেন, জাতির কাছে দেওয়া আওয়ামী লীগের নির্বাচনী অঙ্গীকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সরকার বাস্তবায়ন করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। কোনো ষড়যন্ত্রই তা বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন কমিটির উদ্যোগে গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে 'মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার' বিষয়ক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।


খবরের লিংক

20 March 2010

নগর আ.লীগের সমাবেশে বক্তারাঃ জামায়াতের আর্থিক প্রতিষ্ঠান নিষিদ্ধ করতে হবে




বিশেষ প্রতিনিধি | তারিখ: ২১-০৩-২০১০


মহানবী হজরত মোহাম্মদ (সা.)-এর সঙ্গে জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর তুলনাকারীরা ইসলাম ধর্মে বিশ্বাস করেন না। তাঁরা ধর্মের নামে মানুষকে ধোঁকা দেন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার-প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করতে জামায়াত কোটি কোটি টাকা ব্যয় করছে। এই বিচার-প্রক্রিয়াকে বাধাহীন করতে জামায়াতের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো নিষিদ্ধ করতে হবে।

গতকাল শনিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা এ কথা বলেন। জামায়াতের আমির নিজামীকে মহানবী হজরত মোহাম্মদ (সা.)-এর সঙ্গে তুলনা করায় এই প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, জেএমবি ও বাংলা ভাইয়ের মতোই যুদ্ধাপরাধী নিজামী-মুজাহিদরা ফাঁসির দড়ি এড়াতে পারবেন না। তিনি বলেন, ‘জামায়াত মওদুদীবাদে বিশ্বাস করে। এর আগে বিএনপিও জেনারেল জিয়াউর রহমানকে নবীজির সঙ্গে তুলনা করেছে। এবার জামায়াতও নিজামীকে নবীজির সঙ্গে তুলনা করল।’

স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির বলেন, জামায়াতের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো নিষিদ্ধ করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। তিনি বলেন, ‘মহাজোট সরকার জাতির কাছে ওয়াদাবদ্ধ। আমরা এ বিচার করবই।’ বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করবেন না। পরিণাম ভালো হবে না।’

আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলামও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার-প্রক্রিয়া বাধাহীন করতে জামায়াতের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ন্ত্রণের পক্ষে কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের লক্ষ্যে আদালত ও তদন্তকারী সংস্থা গঠনের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত। কয়েক দিনের মধ্যেই সংশ্লিষ্টদের নাম ঘোষণা করা হবে।

মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম এ আজিজের সভাপতিত্বে সমাবেশ আরও বক্তৃতা করেন হাবিবুর রহমান, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, ফয়েজউদ্দিন মিয়া, শেখ বজলুর রহমান, মুকুল চৌধুরী, আসলামুল হক আসলাম, শাহ আলম মুরাদ প্রমুখ। সমাবেশ শেষে প্রতিবাদ মিছিল ও নিজামী-মুজাহিদের কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়।


খবরের লিংক

15 March 2010

নিউইয়র্কে আইনমন্ত্রীঃ লস্কর-ই-তাইয়েবার সঙ্গে জামায়াতের সম্পর্ক রয়েছে




নিউইয়র্ক প্রতিনিধি | তারিখ: ১৫-০৩-২০১০

আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ বলেছেন, ‘জামায়াতপন্থীদের জাতিসংঘের সামনে বিক্ষোভ করে কোনো লাভ হবে না। যুদ্ধাপরাধের জন্য তাঁদের বিচারের মুখোমুখি দাঁড়াতেই হবে। বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তাইয়েবার সম্পর্ক রয়েছে।’

নিউইয়র্কে প্রবাসীদের উদ্যোগে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় আইনমন্ত্রী এসব কথা বলেন। নিউইয়র্ক শহরের জ্যামাইকাতে গতকাল শনিবার ওই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

আইনমন্ত্রী আরও বলেন, পঞ্চম সংশোধনী বাতিলের পর জামায়াতসহ ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলো আর রাজনীতি করতে পারবে না। বিষয়টি নিয়ে সরকার আদালতের ব্যাখ্যার অপেক্ষায় রয়েছে। এরপর নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে জামায়াত আর নিবন্ধন পাবে না।

এদিকে ২৬ মার্চের মধ্যেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হবে বলে মন্ত্রী জানান। তিনি বলেন, গুরুত্বপূর্ণ এ বিচারের জন্য সব অবকাঠামোগত প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। তিনজন বিচারকের সমন্বয়ে স্পেশাল ট্রাইব্যুনালে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা হবে।


খবরের লিংক

12 March 2010

গণমাধ্যমের সামনে শিবির নেতাঃ এত দিন পর এই রেওয়াজ বেআইনি ও অসাংবিধানিক!

নিজস্ব প্রতিবেদক | তারিখ: ১২-০৩-২০১০


বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় ২০০৫ সালের ১ অক্টোবরই প্রথম আটক ব্যক্তিকে গণমাধ্যমের সামনে হাজির করা হয়েছিল। এরপর এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়েছে অনেকবার। কিন্তু কখনোই বিএনপি-জামায়াতের কেউ এ নিয়ে প্রশ্ন তোলেননি।

কিন্তু রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ছাত্রশিবিরের নেতা ইকরাম হোসাইনকে গণমাধ্যমের সামনে হাজির করায় এখন এ নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। বলা হয়েছে, এটা সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক ও বেআইনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ কর্মী ফারুক হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া ইকরাম র্যাব সদর দপ্তরে গণমাধ্যমের সামনে বলেন, ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলার সময় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি শামছুল আলম জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ এবং ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতিসহ অনেকের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁদের নির্দেশনা অনুসারে ক্যাম্পাসে হামলা হয়।

‘অভিযুক্তের কথিত স্বীকারোক্তি মিডিয়ায় প্রচার সংবিধান ও মানবাধিকার লঙ্ঘন’ শীর্ষক বিবৃতি দিয়েছেন বিএনপি-জামায়াতের নয় নেতা ও আইনজীবী। তাঁদের মধ্যে জমির উদ্দিন সরকার ও মওদুদ আহমদ রয়েছেন। বিবৃতিতে তাঁরা বলেন, ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বা তার চেয়েও ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড আমাদের দেশে আরও হয়েছে। কিন্তু এ ইস্যুটিকে কেন্দ্র করে একটি বিশেষ মতের-দলের নেতা-কর্মীদের হয়রানি, গ্রেপ্তার, মিথ্যা মামলায় জড়ানো, অভিযুক্তদের কাছ থেকে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি আদায়, অপপ্রচার সবই সীমা অতিক্রম করেছে। এতে সুস্পষ্ট হচ্ছে যে এই নারকীয় হত্যাকাণ্ডকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করছে সরকার ও কিছু স্বার্থান্বেষী মহল।’

বিবৃতিদাতা নয় আইনজীবীর মধ্যে আটজন বিএনপির ও একজন জামায়াতের। বিবৃতিদাতা অন্যরা হলেন বিএনপির রফিকুল ইসলাম মিয়া, খন্দকার মাহবুব হোসেন, জয়নুল আবেদীন, নিতাই রায় চৌধুরী, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল আ জা মোহাম্মদ আলী ও মোহাম্মদ আলী এবং জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য আবদুর রাজ্জাক।

এ প্রসঙ্গে মওদুদ আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘অভিযুক্তদের গণমাধ্যমের সামনে হাজির করে কথিত স্বীকারোক্তি দেওয়া গর্হিত কাজ। আমি এর প্রতিবাদ করেছি।’ আগেও এমন ঘটেছে, তখন বিবৃতি দেননি কেন? উত্তরে তিনি বলেন, ‘বিএনপির বা অন্য সময়ে এমন ঘটনার প্রতিবাদ করিনি। তাই বলে এখন করা যাবে না, তা তো নয়। আমি এখন থেকে এ কাজের বিরুদ্ধে থাকব।’ আরেক প্রশ্নের জবাবে মওদুদ আহমদ বলেন, ‘শিবির হিসেবে নয়, মানুষ হিসেবে দেখতে হবে। আমি শিবিরের পক্ষে বিবৃতি দিয়েছি তা বলা হচ্ছে কেন? আমি তো মানুষ বিবেচনা করে বিবৃতি দিয়েছি। তা ছাড়া শিবিরের অনেক কার্যকলাপ আমি পছন্দও করি না।’

দলীয় সিদ্ধান্ত নয়: বিএনপির এক আইনজীবী নেতা প্রথম আলোকে বলেন, শিবিরের পক্ষে যায় এমন কোনো বক্তব্য দেওয়ার ব্যাপারে দলের বিধিনিষেধ আছে। বিএনপির নেতারা যে বিবৃতি দিয়েছেন তা ব্যক্তিগত। তবে দল এ ব্যাপারে অবগত আছে। বিবৃতিকে শুধু শিবিরের পক্ষে না বলে এ ধরনের সব কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে বলাই ভালো।

বিবৃতিদাতা রফিকুল ইসলাম মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিবৃতিটিকে সার্বিকভাবে বিবেচনা করেছি। স্বাক্ষর করার আগেই বলেছি এটা যেন শুধু শিবিরের ওই নেতার পক্ষে না যায়। সবাই আশ্বস্ত করেছে এটা সবার পক্ষে যাবে। তারপর স্বাক্ষর করেছি।’

সাড়ে চার বছর পর বোধোদয়: ২০০৫ সালে জোট সরকারের সময় র্যাব গঠনের পর থেকেই অভিযুক্তদের গণমাধ্যমের সামনে হাজির করার রেওয়াজ শুরু হয়। ওই বছরের ১ অক্টোবর ঢাকার বাড্ডা থেকে জঙ্গি নেতা মুফতি হান্নানকে গ্রেপ্তারের পর গণমাধ্যমের সামনে হাজির করা হয়। এর পর থেকে নানা ঘটনায় গণমাধ্যমের সামনে অভিযুক্তদের হাজির করে স্বীকারোক্তিমূলক জবাববন্দি দেওয়ার রেওয়াজ চালু হয়।
জোট সরকারের আমলে শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলা মামলায় জজ মিয়াকে জড়িত করে পুলিশ তাঁর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রচার করতে থাকে। জজ মিয়ার ওই জবানবন্দি তখন বিএনপি নেতারাও বিভিন্ন সভা-সমাবেশে এবং গণমাধ্যমের সামনে তুলে ধরেন।

বিবৃতিদাতা মাহবুব হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ওই সময় জজ মিয়ার কাহিনি প্রচার করাও বেআইনি ছিল।

ওই বিবৃতিতে বলা হয়, ‘নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার-সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক চুক্তি, ১৯৬৬-এর ৭ ও ১০ নং অনুচ্ছেদ, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ঘোষণাপত্র ১৯৪৮-এর ৫নং অনুচ্ছেদ ব্যক্তির প্রতি অমানবিক আচরণ ও নিষ্ঠুরতা, জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি আদায় নিষিদ্ধ করেছে। তার পরও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইকরামের কথিত স্বীকারোক্তি প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ফলাও করে প্রচার করা হলো।’



খবরের লিংক

19 February 2010

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিল-সমাবেশঃ জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি




বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক | তারিখ: ১৯-০২-২০১০


বাহাত্তরের সংবিধানে ফিরে যাওয়া এবং জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিবিরকে প্রতিহত করারও ঘোষণা দিয়েছে এ সংগঠন। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে পরিষদের নেতারা এ দাবি জানান। বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় জাতীয় পরিষদও একই দাবি জানিয়েছে।

গতকাল দুপুরে মধুর ক্যানটিন থেকে একটি মিছিল বের করে পরিষদ। ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা জানান, মিছিলটি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করার সময় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক খায়রুল হাসানের সঙ্গে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতির মৃদু ধাক্কাধাক্কি হয়। তবে ছাত্রলীগের নেতারা এই ঘটনা অস্বীকার করেছেন।

ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো প্রদক্ষিণ শেষে পরিষদ অপরাজেয় বাংলার সামনে একটি সমাবেশ করে।
এতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মাহমুদ হাসান বলেন, বর্তমান সরকারের নেতৃত্বে দেশ যখন সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাচ্ছে, তখনই স্বাধীনতাবিরোধী চক্র ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। তিনি সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এই অপশক্তিকে প্রতিহত করতে শিক্ষার্থীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।

ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে জঙ্গি ও মৌলবাদীরা এখনো ঘুরে বেড়াচ্ছে। ক্যাম্পাসে অস্থিরতা সৃষ্টির আগেই তাদের প্রতিহত করতে হবে।
জাসদ ছাত্রলীগের সভাপতি হোসাইন আহমেদ বলেন, রাজশাহী ও চট্টগ্রামের মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে ঘাতকদের প্রতিহত করতে হবে।

ছাত্রমৈত্রীর সভাপতি রফিকুল ইসলাম, ছাত্র আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক নুরুস সাফা, ছাত্র সমিতির আহ্বায়ক আলমগীর হোসেনসহ অন্যরা সমাবেশে বক্তব্য দেন।

ছাত্র ইউনিয়নের সভা: আইন করে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি নিষিদ্ধ করাসহ সন্ত্রাস ও দখলদারি প্রতিরোধ করে একটি সুস্থ ধারার ছাত্র অধিকারের আন্দোলন গড়ে তোলার দাবি জানিয়েছে ছাত্র ইউনিয়ন। গতকাল ডাকসুতে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় পরিষদের সভা শেষে এই আহ্বান জানানো হয়। সংগঠনের সভাপতি মানবেন্দ্র দেব এতে সভাপতিত্ব করেন। তিনি বলেন, দেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় চালাতে হলে ক্যাম্পাসকে সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িকতামুক্ত করতে হবে। সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস আহমেদ বলেন, জামায়াত-শিবিরচক্র ৭১-এর মতো আবার হত্যাযজ্ঞে মেতে উঠেছে।

ছাত্রমৈত্রীর সংবাদ সম্মেলন: ছাত্রমৈত্রী আগামী ৯ থেকে ১১ মার্চ তাদের পঞ্চদশ জাতীয় সম্মেলন আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছে। ‘শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস, দখলদারিত্ব, মৌলবাদ, অপতত্পরতা রুখো; একই পদ্ধতির বিজ্ঞানভিত্তিক অসাম্প্রদায়িক গণমুখী শিক্ষানীতি বাস্তবায়ন করো’—এ স্লোগান সামনে রেখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসংসদ (ডাকসু) ভবনের দ্বিতীয় তলায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে সংগঠনের সভাপতি রফিকুল ইসলাম এ কথা জানান। এ সময় সংগঠনের নেতা কায়সার মাহমুদ, বাপ্পাদিত্য বসু, তানভীর রুসমত প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।


খবরের লিংক

যৌথ প্রতিবাদ সভায় বক্তারাঃ দ্রুত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শেষ করতে হবে




নিজস্ব প্রতিবেদক | তারিখ: ১৯-০২-২০১০


মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে দেরি করলেও যুদ্ধাপরাধী জামায়াত-শিবির চক্র বসে নেই। তারা ১৯৭১ সালের মতো একই কায়দায় রগ কেটে মানুষকে হত্যা করছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে যত দেরি হবে, ততই এ ধরনের অরাজকতা বাড়তে থাকবে। তাই সরকারকে দ্রুত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার-প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।

গতকাল বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রতিবাদ সভায় বক্তারা সরকারের কাছে এ আহ্বান জানান। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচাল করতে জামায়াত-শিবিরের পরিকল্পিত সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম, মুক্তিযুদ্ধ ’৭১ ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট যৌথভাবে এ প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে।

সভায় বক্তারা বলেন, সরকার মার্চের প্রথম সপ্তাহে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরুর ঘোষণা দিয়েছে। জনগণ ও সরকারের দৃষ্টি অন্যদিকে সরিয়ে নিতে যুদ্ধাপরাধীরা পরিকল্পিতভাবে রাজশাহী, চট্টগ্রাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারা দেশে অরাজকতা তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারীরা সংঘবদ্ধ হয়ে রগকাটা ও অস্ত্রের ব্যবহার শুরু করেছে।

সভার সভাপতি পরিকল্পনামন্ত্রী এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) এ কে খন্দকার বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, সরকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিষয়ে সচেতন। তাই সরকার শিগগিরই এ বিচার-প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে।’
সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের সভাপতি এ কে খন্দকার আরও বলেন, সরকারের প্রথম সংসদ অধিবেশনের প্রথম পাস হওয়া প্রস্তাব ছিল যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা। বাজেটে এ খাতে টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। আইন সংশোধন করা হয়েছে। বিচারের জন্য জায়গা নির্বাচনের কাজ চলছে। তবে এক বছরের বেশি সময় পার হয়ে গেছে। তাই সাধারণ জনগণের দাবি, এ বিষয়ে আর দেরি করা যাবে না, দ্রুত বিচারকাজ শেষ করতে হবে।

আলোচনায় ফোরামের নেতা মেজর জেনারেল (অব.) কে এম সফিউল্লাহ ধর্মভিত্তিক ছাত্ররাজনীতি প্রতিহত করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটে যাওয়া ঘটনার জন্য তিনি জামায়াত নেতা নিজামীকে দায়ী করে তাঁকে আইনের আওতায় আনারও আহ্বান জানান।

ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মেজর জেনারেল (অব.) হারুন-অর-রশীদ বলেন, জামায়াত-শিবির আর একজন স্বাধীনতাকামী মানুষ হত্যা করলে মুক্তিযোদ্ধারা আবার গর্জে উঠবে। তিনি এই চক্রকে রুখতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ডা. সারওয়ার আলী বলেন, ইসলাম ও ধর্মের নামে যারা মানুষ হত্যা করছে, তারা শুধু জাতি নয়, ধর্মেরও কলঙ্ক।

সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি নাসির উদ্দীন ইউসুফ বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের কার কী অপরাধ, তা চিহ্নিত করে জনগণকে জানাতে হবে। তাই আগে তদন্ত কমিশন গঠন করতে হবে, পরে বিচারের জন্য ভবন ঠিক করতে হবে। তিনি জঙ্গি সংগঠনের তালিকা করে আইনের আওতায় আনারও আহ্বান জানান।
সম্মিলিত নাগরিক আন্দোলনের সমন্বয়কারী গোলাম কুদ্দুছ জামায়াত-শিবির চক্রের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি জানান।

প্রতিবাদ সভায় একাত্মতা প্রকাশ করে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন সেক্টর কমান্ডার সি আর দত্ত, পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (আইজি) নুরুল আলম, নাট্যব্যক্তিত্ব ম হামিদ, রাষ্ট্রদূত আনোয়ারুল আলম, সাংবাদিক হারুন হাবিব প্রমুখ।


খবরের লিংক

18 February 2010

মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীঃ জামায়াত-শিবির প্রশাসনে বসে কলকাঠি নাড়ছে

চট্টগ্রাম অফিস

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেছেন, 'জামায়াত-শিবির সমর্থকরা প্রশাসনের বিভিন্ন পদে বসে কলকাঠি নাড়ছেন। তাদের দোসররা প্রশাসনের ভেতরে অবস্থান করে বিভিন্ন কৌশলে সহায়তা দিচ্ছে। ফলে জামায়াত-শিবির ক্যাডাররা রগকাটাসহ হত্যাযজ্ঞ চালানোর পরও রেহাই পেয়ে যাচ্ছে।'

গতকাল বিকেলে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা ইউনিট কমান্ড আয়োজিত মুক্তিযোদ্ধা জনতা সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সারা দেশে স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত-শিবির কর্তৃক খুন, অরাজকতা, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির প্রতিবাদে ও অবিলম্বে যুদ্ধাপরাধীর বিচার, বাহাত্তরের সংবিধান পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এবং শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবিতে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সমাবেশ শুরুর আগে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তাঁর পরিবারের সদস্যদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

সমাবেশে মেয়র আরো বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র মহিউদ্দিনকে ষোলশহর রেল স্টেশনে হত্যা করা হলো। কিন্তু জিআরপিতে জামায়াতের এক কর্মকর্তা থাকায় এখনো হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটিত করা সম্ভব হয়নি। তাকে বদলি না করলে ঘটনার সুষ্ঠু বিচার হবে না।

মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ফাহিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, মোহাম্মদ মাঈনউদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক কাজী ইনামুল হক দানু, উত্তর জেলা সাধারণ সম্পাদক এম এ সালাম, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারদের মধ্যে সাহাবউদ্দিন আহম্মেদ, এস এম মুর্তুজা হোসেন, আবদুর রাজ্জাক, আবদুল হান্নান, মুক্তিযোদ্ধা গবেষণা কেন্দ্রের সভাপতি ডা. মাহফুজুর রহমান, ন্যাপ নেতা অ্যাডভোকেট আবদুল মোমিন ভূঁইয়া, কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম, নগর ছাত্রলীগের সভাপতি এম আর আজিম, মাহবুবুল হক, এস সি বিশ্বাস, মেজর (অব.) মোহাম্মদ হোসেন, অ্যাডভোকেট আনোয়ারুল কবির চৌধুরী প্রমুখ।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, যুদ্ধাপরাধীর বিচার না হলে দেশ থেকে বিশৃঙ্খলা রোধ করা যাবে না। যখন যুদ্ধাপরাধীর বিচার প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে এমনি মুহূর্তে তারা দেশে বিশৃঙ্খলা শুরু করেছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধারা সর্বস্তরের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন অব্যাহত রাখবে।


খবরের লিংক

16 February 2010

জেলায় জেলায় জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি

প্রিয় দেশ ডেস্ক

জামায়াত শিবিরের রাজনীতি তথা সাম্প্রদায়িক রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে জেলায় জেলায় বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। কালের কণ্ঠ প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর :

চট্টগ্রাম : সোমবার বিকেলে চট্টগ্রাম হকার্স লীগ স্টেশন রোড ইউনিটের সভাপতি এমরান হোসেনের সভাপতিত্বে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি জানিয়ে বক্তৃতা করেন প্রবীণ কুমার ঘোষ, জাহেদুল হক চৌধুরী প্রমুখ।

ফরিদপুর : বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ফরিদপুর জেলা কমিটির উদ্যোগে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করা হয়।

সোমবার বিকেল ৪টায় ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সামনে মুজিব সড়কে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তৃতা করেন জেলা সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রফিকুজ্জামান লায়েক, আব্দুল মালেক শিকদার, তোফাজ্জল হোসেন লস্কর ও শামসুর রহমান। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়।

গাইবান্ধা : জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধসহ জঙ্গিবাদ নির্মূলের দাবিতে সোমবার গাইবান্ধায় এক বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। জেলা সিপিবির উদ্যোগে আয়োজিত ওই বিক্ষোভ মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে ডিবি রোডের ১ নম্বর ট্রাফিক মোড়ে মানববন্ধন করে। মানববন্ধন চলাকালে বক্তৃতা করেন ওয়াজিউর রহমান রাফেল, মিহির ঘোষ, মোস্তাফিজার রহমান মুকুল প্রমুখ।

ঝিনাইদহ : সোমবার বিকেলে ঝিনাইদহ জেলা ছাত্রলীগের উদ্যোগে এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। শহরের পায়রা চত্বরে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম শিমুল। প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তৃতা করেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আজিজুর রহমান, আওয়ামী লীগ নেতা তৈয়ব আলী জোয়ার্দ্দার, কনক কান্তি দাস, জেড এম রশিদুল ইসলাম, নজরুল ইসলাম, এনামুল হক লিকু, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মতিয়ার রহমান প্রমুখ।


খবরের লিংক

15 February 2010

বিশেষ মন্তব্য প্রতিবেদনঃ জামায়াতী ফাঁদে পড়ছে না তো সরকার!

আবেদ খান

সন্দেহ হচ্ছে সরকার কোনো ফাঁদে পড়ছে না তো! জামায়াতের পাতা ফাঁদে? গত কয়েক দিনের ঘটনায় তেমনটিই মনে হচ্ছে। জামায়াত দুধরনের ফাঁদ পেতেছিল দুই বড় দলের জন্য। বিএনপি আপাতত রক্ষা পেয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ? সন্দেহটা সেখানেই। জামায়াতের পরিকল্পনাটাই হচ্ছে দেশে আন্দোলনের নামে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি করা। সংঘাতময় পরিস্থিতি সাধারণত শাসকদলকে কিছুটা বিভ্রান্ত করে ফেলে। এ বিভ্রান্তির সুযোগে কিছু ভুল পদক্ষেপও হয়ে যায়। আর এই ভুল পদক্ষেপকে পুঁজি করেই বিরোধী রাজনীতির কর্মসূচি দানা বেঁধে ওঠে।

জামায়াত যে গত আট মাস যাবৎ একটা আন্দোলন দাঁড় করানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল সেটা বিভিন্ন সময়ে তাদের বক্তব্যের ভেতর দিয়ে স্পষ্ট হয়ে উঠছিল। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিষয়টি নিয়ে ছয়-সাত মাস ধরে সরকার বেশ গুরুত্ব দিয়েই অগ্রসর হচ্ছিল। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ব্যাপারে সরকারের ওপর চাপও সৃষ্টি হচ্ছিল। যারা অভিযুক্ত তাদের ভেতরে ভেতরে একটা আশা ছিল যে শেষ পর্যন্ত হয়তো আন্তর্জাতিক অঙ্গনের কোনো কোনো অংশ এ ব্যাপারে অগ্রসর না হওয়ার জন্য সরকারকে অনুরোধ করবে। কিন্তু যখন দেখা গেল এ ক্ষেত্রেও তারা কোনো সুস্পষ্ট ইঙ্গিত পাচ্ছে না,বরং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যুদ্ধাপরাধের ব্যাপারটি ক্রমেই জোরদার হয়ে উঠছে তখন জামায়াত একটু অস্থির হয়ে ওঠে এবং নানাভাবে বিএনপিকে প্ররোচিত করতে থাকে রাজপথে আন্দোলন পরিচালনা করার জন্য। কিন্তু তাতে বিএনপির নেতৃত্বের পরিপক্ব অংশ প্রভাবিত হয়নি বলে জামায়াতের সেই চেষ্টাও হালে পানি পাচ্ছিল না। তবে বিএনপি-জামায়াত সম্পর্কটিতে চিড় ধরেনি এ জন্য যে জামায়াতের পক্ষে বিএনপিকে কোনোমতেই নাগালের বাইরে ঠেলে রাখা সম্ভব নয়। কারণ জামায়াত এটুকু বোঝে, এককভাবে তাদের পক্ষে কোনো আন্দোলনই গড়ে তোলা এখন সম্ভব নয়। বিএনপির সহযোগিতা তাকে পেতেই হবে। জামায়াতের সব সময়ের চেষ্টা ছিল বিএনপিকে যত দিন সম্ভব সংসদের বাইরে রাখা। বাইরে থাকতে থাকতে একসময় বিএনপির একাংশের ভেতরে আন্দোলন করার প্রবণতা তৈরি হতে পারে, যেটাকে জামায়াত কাজে লাগাতে সক্ষম হবে। কিন্তু সেটাও সম্ভব হচ্ছে না এখনো পর্যন্ত।

এরই মধ্যে আর একটি ঘটনা ঘটে গেল। পঞ্চম সংশোধনী দেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে বাতিল বলে গণ্য হলো। এর ফলে ধর্মভিত্তিক রাজনীতির ওপর একটা চাপও সৃষ্টি হয়ে গেল। এ ঘটনা জামায়াতকে অত্যন্ত শঙ্কিত করে ফেলে। জামায়াতের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ফোরামে এ রায়ের সমালোচনা করা হতে থাকে এবং এই প্রচারণা চালানো হতে থাকে যে জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার জন্য সরকার নানা রকম চেষ্টা চালাচ্ছে।

এর পরও জামায়াত নেতৃত্বের একটা ক্ষীণ আশা ছিল, হয়তোবা বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার আসামিদের ব্যাপারে সরকার এত কঠোর অবস্থানে না-ও যেতে পারে এবং এ ব্যাপারে আন্তর্জাতিক মহল হয়তো সরকারকে কিছুটা নিবৃত্তও করতে পারে। কিন্তু তেমন কিছু না ঘটায় তারা প্রচণ্ডভাবে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে এবং এ হতাশা থেকেই এককভাবে তারা সহিংস রাজনীতির মাধ্যমে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার পন্থা অবলম্বন করে।

সবচাইতে লক্ষণীয় ব্যাপারটি হচ্ছে, তাদের এ কর্মকাণ্ডে তারা এখনো পর্যন্ত ছাত্রদল, যুবদল কিংবা বিএনপিকে সংশ্লিষ্ট করতে পারেনি। উপরন্তু বিএনপি সংসদ অধিবেশনে যোগদান করায় এবং সম্পূর্ণ দলীয় ইস্যুগুলো সংসদে উত্থাপন করায় জামায়াতের হতাশার মাত্রা তীব্রতর হয়েছে।

বিএনপিকে আন্দোলনের জন্য মাঠে নামানোর ব্যাপারে জামায়াতের আর একটি গোপন উদ্দেশ্য ছিল। বর্তমানে বিএনপির দুর্বল সাংগঠনিক অবস্থা ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তোলার মতো নয়। এ অবস্থায় যদি তাকে মাঠে নামানো যায় তাহলে পুরো নেতৃত্বটি জামায়াতের কব্জার মধ্যে চলে যাবে এবং বিএনপি নির্বীর্য রাজনৈতিক সংগঠনে পরিণত হবে। পাঠক লক্ষ করবেন, চারদলীয় জোট যখন ক্ষমতায় ছিল তখন জামায়াত দল গুছিয়েছে, বিভিন্ন জায়গায় এবং বিভিন্ন নির্বাচনী অঞ্চলে বিএনপিকে প্রান্তিক অবস্থানে ঠেলে দিয়ে নিজেরাই সামগ্রিক কর্তৃত্ব নিয়েছে। এমনকি ছাত্রসংগঠনের মধ্যেও ছাত্রশিবির ছাত্রদলকে কোণঠাসা করে রেখেছিল চারদলীয় জোটের পুরোটা সময় ধরেই। আরো লক্ষ করার বিষয়, তথাকথিত এক-এগারোর পর আওয়ামী লীগ-বিএনপি, ছাত্রলীগ-ছাত্রদল, যুবলীগ-যুবদল চরম নির্যাতনের শিকার হলেও জামায়াত-শিবিরের কেশাগ্রও স্পর্শ করা হয়নি। বরং তাদের ক্লিন ইমেজের তকমা পরিয়ে নির্বিবাদে সংগঠন গোছানোর সুযোগ দেওয়া হয়েছে।

জামায়াতের এই কৌশল নতুন কিছু নয়। একাত্তরে তারা মুসলিম লীগের কাঁধে ভর করে যত রকম অপকর্ম করেছিল। শেষ পর্যন্ত রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে মুসলিম লীগের মতো একটি বিশাল ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়; কিন্তু পরিপুষ্ট হয়ে ওঠে জামায়াতে ইসলামী। বর্তমান সময়ে বিএনপির মতো একটি বিরাট রাজনৈতিক দলকেও আমরা বিভিন্ন জায়গায় নির্বীর্য হয়ে যেতে দেখছি। চারদলীয় জোটের শাসনামলে তার উদাহরণ দেখা গেছে বিভিন্ন সময়ে।

একাত্তরে জামায়াতের লাঠিয়াল এবং ঢাল ছিল ইসলামী ছাত্রসংঘ। আলবদর-আলশামস বাহিনীর কর্তৃত্ব ছিল এই ইসলামী ছাত্রসংঘের হাতে। আজ যাদের বিরুদ্ধে একাত্তরে বুদ্ধিজীবী হত্যা এবং ব্যাপক গণহত্যার অভিযোগ উঠেছে তাদেরও অনেকের পরিচিতি ছিল ইসলামী ছাত্রসংঘের নেতা হিসেবে। এখন তারাই জামায়াতের মূল কর্ণধার।

আজ শিবিরকে পথে নামানো হয়েছে সহিংস রাজনীতি করার মন্ত্রপাঠ করিয়ে। ঠিক এইভাবেই করা হয়েছিল একাত্তরে। তখন জামায়াত বুঝেছিল, পাকিস্তানকে আর বাঁচানো যাবে না, অথচ মেধাশূন্য করে ফেলো দেশটাকে। আর এখনো জামায়াত বুঝতে পেরেছে, ধর্মভিত্তিক রাজনীতি আর এ দেশে চলবে না, অতএব সাফ করে ফেলো যারা তাদের বিরুদ্ধাচরণ করে। এ জন্যই তারা তালিকা বানায় একাত্তরের মতো। এ জন্যই তারা আন্ডারগ্রাউন্ড সংগঠন করার ক্ষেত্র প্রস্তুত করছে। এবং তারা এমন বক্তব্যও অন্যদের মাধ্যমে প্রচার করার চেষ্টা করছে যে জামায়াত যদি একবার গোপন আস্তানায় যায়, তাহলে তারা বিরাট কিছু অঘটন ঘটিয়ে ফেলতে পারে।

জামায়াত যে শিবিরকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে তার আর একটা কারণ আছে। ছাত্রশিবিরের একাংশের মধ্যে এ ধরনের চিন্তাও মাথাচাড়া দিয়ে উঠছিল যে একাত্তরের ঘাতকদের দায়দায়িত্ব কেন নতুন প্রজন্মের ছাত্রশিবির গ্রহণ করবে? সেই অংশটি নানাভাবে চেষ্টা করেও নিজেদের বক্তব্যকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারছিল না। কাজেই তাদের মধ্যেও এক ধরনের হতাশা দানা বাঁধছিল। জামায়াতের ধূর্ত ও কৌশলী নেতৃত্ব এই পরিস্থিতি অনুধাবন করে তাদের অ্যাকশনে নামিয়ে দেয়। জামায়াতের শীর্ষ নেতার সাম্প্রতিক শিবিরবন্দনা থেকে এই তোয়াজ করার মানসিকতার আভাস পাওয়া যায়।

এ তো গেল জামায়াত-শিবিরের কথা। কিন্তু আমার সন্দেহ, জামায়াতের ফাঁদে এ সরকার কি নিজের অজ্ঞাতসারেই পা দিয়ে বসে আছে? সন্দেহের কারণ হলো : এক. সরকার শিবিরের বিরুদ্ধে চিরুনি অভিযান শুরু করেছে কোন অভিযোগে, সেটা সরকার কেন স্পষ্টভাবে বলছে না? এখনো পর্যন্ত যেহেতু জামায়াতে ইসলামী বা ইসলামী ছাত্রশিবির নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন নয়, সেই হেতু দেশব্যাপী শিবিরের বিরুদ্ধে চিরুনি অভিযান পরিচালনা করা সরকারের দুর্বল পদক্ষেপ বলে আমি মনে করি। সরকারের জন্য সবচাইতে সহজ পদক্ষেপ ছিল ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করার কাজটি আগে সম্পাদন করা। এ ক্ষেত্রে আইনগত সব প্রতিবন্ধকতা যেহেতু অপসারিত হয়েছে, সেই হেতু দেশব্যাপী চিরুনি অভিযানের আগে উচিত ছিল সেই পদক্ষেপ গ্রহণ করা, যাতে কোনো রকম প্রশ্নের মুখোমুখি হওয়ার সুযোগ থাকবে না; দুই. জামায়াত চাইছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটুক। এ জন্য জঙ্গি তৎপরতাকে গোপনে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছে তারা_এমন একাধিক প্রমাণ পুলিশের হাতেও আছে এবং বিভিন্ন সময় পত্রপত্রিকায়ও প্রকাশিত অনেক প্রতিবেদন বা প্রবন্ধে এ তথ্য পাওয়া গেছে। জামায়াত চাইছে, এ ক্ষেত্রে সরকার সরাসরি জড়িত হোক_তাহলে তাদের পক্ষে একটা অজুহাত বা যুক্তি দাঁড় করানো সম্ভব হবে। সরকারের চিরুনি অভিযান যদি জামায়াতকে এই অজুহাত দাঁড় করানোর সুযোগ করে দেয় তাহলে কি সেটা ভুল বলা হবে? তিন. সরকারের উচিত ছিল, সরকারদলীয় ছাত্রসংগঠনের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে যেসব শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তারও বিস্তারিত বিবরণ প্রকাশ করা, যাতে এ অভিযানকে কোনোভাবেই বিশেষ কোনো সংগঠনের বিরুদ্ধে পরিচালিত বলে প্রতীয়মান না হয়। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে সরকারদলীয় সংগঠনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি সম্পূর্ণ অনুল্লেখ্য থেকে যাচ্ছে; চার. অভিযানটি লোকালাইজড হওয়া উচিত ছিল। চিহ্নিতদের আটক করার পর তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অন্যান্য জায়গায় অভিযান পরিচালনা করা যেতে পারত। এ প্রসঙ্গে আমরা জঙ্গি দমনের ব্যাপারে সরকারের সফল অভিযানের পদ্ধতি স্মরণ করতে পারি। প্রক্রিয়াটা সে রকম হলে শিবির কিংবা জামায়াত মানুষের করুণাপ্রার্থী হতে পারত না; পাঁচ. সরকার বলেছে জনগণকে নিয়ে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার কথা। ব্যাপারটি সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের অন্তর্ভুক্ত। এ ক্ষেত্রে সরকারের উচিত ছিল আইনের বাধ্যবাধকতাকে সর্বাগ্রে সম্পাদন করে মহাজোটের রাজনৈতিক শরিকদের সঙ্গে মিলিত হয়ে পূর্ণাঙ্গ পরিকল্পনা প্রণয়ন করা এবং তা বাস্তবায়নের ব্যবস্থা করা। এ ক্ষেত্রে সেটাও করা হয়নি; ছয়. আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন, ছাত্রলীগ নেতৃত্বের শীর্ষ স্থানেও শিবিরের অনুপ্রবেশ ঘটে গেছে। এ কথা এভাবে বলার ফলে ছাত্রলীগ নেতৃত্বের ভেতরে পারস্পরিক সংশয় এবং সন্দেহ সৃষ্টি হওয়া বিচিত্র নয়। দলের উচিত ছিল এ ব্যাপারে প্রকাশ্য বক্তব্য প্রদান না করে অভ্যন্তরীণ তদন্তের মাধ্যমে শনাক্ত করা এবং যারা এ অনুপ্রবেশকারীদের ঢুকিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা। এই অভ্যন্তরীণ শুদ্ধি অভিযান সংগঠনটিকে অনেক বিশুদ্ধ করতে পারত।

সরকারের এই ঘোষিত চিরুনি অভিযানকে আমার মনে হয়েছে ঘোড়ার আগে গাড়ি জুড়ার মতো। এর ফলে জামায়াত নিঃশ্বাস ফেলার সুযোগ পাবে, যে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির উদ্ভব তারা চেয়েছিল সেটারই সুযোগ সৃষ্টি হবে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া বিলম্বিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেবে, ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করার প্রয়াসটিও বিঘি্নত হবে। কারণ জামায়াত আন্তর্জাতিক মহলে এই বার্তাটি পেঁৗছানোর চেষ্টা করতে পারবে যে সরকার তাদের মতো 'মডারেট ইসলামিক পার্টি'র গণতান্ত্রিক কর্মকাণ্ডে বাধা সৃষ্টি করছে। এর ফলে জামায়াত-শিবিরের সর্বপ্রকার নৃশংসতা, বর্বরতা এবং স্বাধীনতাবিরোধী কর্মযজ্ঞ চাপা পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকবে।

এ জন্যই আমার সন্দেহ, জামায়াতের পাতা অদৃশ্য ফাঁদে পা রাখছে না তো এই সরকার?


খবরের লিংক

11 February 2010

জামায়াত-শিবিরকে প্রতিহত করার ডাকঃ রাজশাহীতে ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ অব্যাহত



নিজস্ব প্রতিবেদক | তারিখ: ১২-০২-২০১০


রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রশিবিরের বর্বর হামলায় ফারুক হোসেন নিহত হওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও নিন্দা অব্যাহত রয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিক্ষোভ সমাবেশে ফারুকের খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে শিবিরের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর অঙ্গীকার করা হয়। বিভিন্ন ছাত্র ও রাজনৈতিক সংগঠন এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা আজ শুক্রবারও বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে। অনেক সংগঠন গতকাল বিবৃতি দিয়ে এই হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়েছে।

বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন ও সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান এক বিবৃতিতে বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী অবৈধ ঘোষণার রায় বাস্তবায়নের মুহূর্তে দেশে অস্থিতিশীল অবস্থা সৃষ্টির জন্য স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি অপতত্পরতায় লিপ্ত হয়েছে। জামায়াত-শিবির যাতে অন্য কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ ধরনের ঘটনা না ঘটাতে পারে, সে জন্য প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান তাঁরা। আওয়ামী যুবলীগের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, রাজশাহীতে ছাত্র হত্যা, রগ কেটে দেওয়া ও বোমা হামলার ঘটনা ১৯৭১ সালে জামায়াত-শিবিরের ভূমিকার পুনরাবৃত্তি।
বাংলাদেশ নাগরিক সমাজ ৩৪ দিনের ব্যবধানে শিক্ষাঙ্গনে তিনটি প্রাণ ঝরে যাওয়ার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে। তারা শিক্ষাঙ্গনে সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য দলীয় প্রভাবে পরিচালিত ছাত্র রাজনীতি বন্ধের দাবি জানায়।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হক গতকাল পঙ্গু হাসপাতালে রাজশাহীতে আহত চিকিত্সাধীন ছাত্রদের দেখতে যান।

ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে যেসব সংগঠন বিবৃতি দিয়েছে সেগুলো হচ্ছে—বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, বাংলাদেশ অভিভাবক পরিষদ, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন, জয়বাংলা সাংস্কৃতিক ঐক্যজোট, বাংলাদেশ ছাত্র আন্দোলন, যুব গণফোরাম, ৯০ দশকের ১৫১ জন যুবনেতা, সুপ্রিম কোর্টের ১১৫ জন আইনজীবী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রাক্তন ছাত্র সমিতি।

সভা-সমাবেশ করেছে বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন, সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী ছাত্র ঐক্য, বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগ, ইডেন কলেজ ছাত্রলীগ এবং বাংলাদেশ ফেত্না প্রতিরোধ কমিটি।


খবরের লিংক

ছাত্রলীগের মধ্যে শিবিরঃ বাঘের ঘরে ঘোগের বাসা



তারিখ: ১২-০২-২০১০


ছাত্রলীগ ও শিবিরের মধ্যে যে আদায় কাঁচকলা সম্পর্ক, সেটা একরকম স্বতঃসিদ্ধ ব্যাপার বলেই আমাদের রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত। শিবির বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ‘রগকাটা’, হত্যা, গুমসহ নানা অপরাধমূলক তত্পরতায় জড়িত একটি সংগঠন হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছে। অন্যদিকে রাজনৈতিকভাবেও শিবির ছাত্রলীগের আদর্শগত শত্রু। এখন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারটি হলে ছাত্রলীগ কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদে শিবিরের চিহ্নিত কর্মীদের বসানো হয়েছে। ছাত্রলীগের নেতারাও মনে করেন যে তাঁদের সংগঠনে শিবির ঢুকে পড়েছে। এ সম্পর্কে বুধবার প্রথম আলোয় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বিস্তৃত তথ্য রয়েছে।

এ যে বাঘের ঘরে ঘোগের বাসা! ঘোগ হলো বুনো কুকুর, যা বাঘের চরম শত্রু। সতর্ক থাকলে বাঘের ঘরে তার বাসা বাঁধার কথা নয়। কারণ, এটা তো বাঘের বাঁচা-মরার প্রশ্ন। তাহলে ছাত্রলীগের নেতৃত্বের মধ্যে শিবির এসে ঢুকল কীভাবে? কারা তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতা? এ বিষয়টি ছাত্রলীগের মূল নেতৃত্বকে অনুসন্ধান করে দেখতে হবে। সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম জানিয়েছেন যে মাত্র কয়েক দিন আগে তাঁরা এ বিষয়টি জানতে পেরেছেন। যথাযথ গুরুত্ব দেওয়া হলে এবং বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করলে হয়তো এ এফ রহমান হলের ছাত্রলীগের সম্প্রতি বহিষ্কৃত সভাপতি সাইদুজ্জামান ফারুককে অনেক আগেই সংগঠন থেকে বের করে দেওয়া যেত। তাহলে হয়তো সেদিন ওই হলে রক্তাক্ত সংঘর্ষের সুযোগ থাকত না এবং মেধাবী ছাত্র আবু বকরকে প্রাণ দিতে হতো না।

সরকার বদলের সঙ্গে সঙ্গে একধরনের অপরাধী ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে মিশে যায়। এটা সবাই জানে। আবার এটাও সত্য যে দলছুটদের দলে টানার একটা প্রবণতাও ক্ষমতাসীনদের মধ্যে থাকে। এখানে আদর্শের কোনো ব্যাপার নেই। সুবিধাবাদী ও অনৈতিক সুবিধা আদায়ই মূল উদ্দেশ্য। ছাত্রলীগের মধ্যে এই শেষোক্ত প্রবণতা থাকা বিচিত্র নয়। টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, হল দখল, সিট দখলের জন্য ছাত্র নামধারী সন্ত্রাসীদের দলে প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ কম নয়। এ অবস্থার সুযোগ নিয়ে শিবিরের সন্ত্রাসীদের দলে টানা হয়ে থাকলে অবাক হওয়ার কিছু নেই। এ এফ রহমান হলের বহিষ্কৃত সভাপতি ফারুকের বিরুদ্ধে আগে থেকেই ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বারবার বললেও কোনো ফল পাওয়া যায়নি বলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ শাখার একজন নেতা জানিয়েছেন। অর্থাত্ ছাত্রলীগের নেতারা জেনেশুনেই দলের মধ্যে শিবির প্রতিপালন করছেন। এটা শুধু ছাত্রলীগের নয়, সরকার ও দেশের জন্যও বিপর্যয় ডেকে আনবে। তার লক্ষণগুলো ক্রমেই স্পষ্ট হয়ে উঠছে।

এখন ছাত্রলীগে অনুপ্রবেশকারী শিবিরের কিছু নেতা-কর্মীকে চিহ্নিত করে বের করে দিলেই সমস্যার সমাধান হবে না। ছাত্রলীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাদের ভর্তি-বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। এই সব আর্থিক লুটপাট ও অপকীর্তি বন্ধ হলেই সংগঠন থেকে শিবির তো বটেই, সব ধরনের সন্ত্রাসীই দূর হবে।

শিবিরের ব্যাপারে ছাত্রলীগ যদি বাঘের ভূমিকা অক্ষুণ্ন রাখতে চায়, তাহলে তার চেহারাটা নিষ্কলুষ করার ওপর সর্বাগ্রে গুরুত্ব দিতে হবে। নইলে ঘোগেরা বাসা বাঁধবেই।


খবরের লিংক

10 February 2010

রগ কাটার রাজনীতি বন্ধ করতে হবেঃ রক্তাক্ত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

তারিখ: ১১-০২-২০১০

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামী ছাত্রশিবিরের বর্বরতার সর্বশেষ দৃষ্টান্ত দেখা গেল গত সোমবার রাতভর ছাত্রলীগ ও পুলিশের সঙ্গে তাদের সশস্ত্র সংঘর্ষের ঘটনায়। ফারুক হোসেন নামে ছাত্রলীগের এক কর্মীকে নৃশংসভাবে হত্যা করে ম্যানহোলে ফেলে দেওয়া, আরও তিন কর্মীর হাত-পায়ের রগ কেটে দেওয়া, পুলিশের সঙ্গে তাদের রাতভর গুলিবিনিময়, ছাত্রাবাসগুলোর ফটক ভাঙা, ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মীর কক্ষ ভাঙচুর, কয়েকটিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া—এসবের বিবরণ ছাপা হয়েছে বুধবারের জাতীয় দৈনিকগুলোতে। চিত্রটি এমন, যেন ইসলামী ছাত্রশিবির ছাত্রদের সংগঠন নয়, বরং প্রশিক্ষিত, সশস্ত্র, সংঘবদ্ধ একটি দুর্বৃত্ত বাহিনী; যারা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্তৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে নিজেদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠায় তত্পর।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আবু বকর সিদ্দিক নামের এক সাধারণ ছাত্রের মৃত্যুর এক সপ্তাহের মাথায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ-ছাত্রশিবির সংঘর্ষে ছাত্রলীগের কর্মী ফারুক হোসেনের মৃত্যু দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির আকস্মিক অবনতির লক্ষণ। রাজশাহীর ঘটনার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন বিস্ময়ের সঙ্গে মন্তব্য করেছেন: সব তো ঠিকভাবেই চলছিল, হঠাত্ করে কেন এসব শুরু হলো? তিনি বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এসব সহিংসতার পেছনের কারণ খতিয়ে দেখতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেটা করা খুবই জরুরি; তবে সাধারণভাবে দেখা যায়, কিছু বোঝাও যায় যে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সহিংসতার আশঙ্কা সব সময়ই রয়েছে। কোন মুহূর্তে তা শুরু হচ্ছে, সেটা নির্ভর করে পরিস্থিতির ওপর।

শিক্ষার্থীদের সংগঠনগুলো যদি পড়াশোনার পরিবর্তে ক্যাম্পাসের ভেতর, আবাসিক হলগুলোতে ও সংলগ্ন এলাকায় নিজেদের নিয়ন্ত্রণ, দখলদারি এবং সেসবের সঙ্গে আনুষঙ্গিক বৈষয়িক প্রাপ্তির বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দেয়, তাহলে তাদের মধ্যে সংঘাত-সংঘর্ষ অনিবার্য। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যে দ্বন্দ্ব ছাত্রলীগের ভেতরই বিভিন্ন গ্রুপের মধ্যে, রাজশাহীতে তা ছাত্রলীগ ও ছাত্রশিবিরের মধ্যে। দ্বন্দ্বটা আধিপত্যের। ছাত্রলীগের এক কর্মীর একটি আবাসিক হলে প্রবেশের চেষ্টা এবং ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীদের তাতে বাধা দেওয়ার ঘটনা থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে যে বিরাট সংঘর্ষ ঘটে গেল, তা থেকেই আধিপত্যের লড়াইটা খুব স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে তথাকথিত ছাত্রসংগঠনগুলোর আধিপত্যের লড়াইকে নির্বাচিত গণতান্ত্রিক সরকারগুলো প্রশ্রয় দেয়। যে সরকার যখন ক্ষমতায় থাকে, তার অনুসারী ছাত্রসংগঠন সেই লড়াইয়ে সরকারি সহযোগিতা পায়। সেখানে দেশের প্রচলিত আইন কাজ করে না। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামী ছাত্রশিবিরের একচ্ছত্র আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয় বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে, সেই সরকারের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়েও সংগঠনটি একই রকম সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনসহ নিকটবর্তী এলাকার সাধারণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে তাদের প্রভাব ও আধিপত্য এতটাই বিস্তৃত ও গভীর হয়েছে যে নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে তারা এমনকি সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গেও রীতিমতো যুদ্ধ চালাতে পারে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামী ছাত্রশিবিরের দৌরাত্ম্য মাত্রা ছাড়িয়েছে; তাদের ঘাঁটি উচ্ছেদ করতে সম্ভাব্য সর্বোচ্চ আইনি উদ্যোগ নিতে হবে।

বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার যদি মনে করে ছাত্রশিবির ও ছাত্রদলের আধিপত্য অপসারিত হবে ছাত্রলীগের দ্বারা, তাহলে সংঘর্ষ, রক্তপাত, প্রাণহানি, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষা-বিপর্যয় বন্ধ হবে না। বকর ও ফারুকের মতো সম্ভাবনাময় তরুণদের অকালে ঝরে পড়া থামবে না। সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে শিক্ষাঙ্গনকে সব ধরনের দলীয় রাজনৈতিক প্রভাব থেকে মুক্ত করে শিক্ষার প্রকৃত পরিবেশ ফিরিয়ে আনার। এই ধারার ছাত্ররাজনীতিও আর চলতে দেওয়া উচিত কি না, তা গভীরভাবে ভেবে দেখার সময় হয়েছে।


খবরের লিংক

সংসদে জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি বন্ধের দাবি

বিশেষ প্রতিনিধি | তারিখ: ১০-০২-২০১০

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সমর্থিত ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের রাজনীতি বন্ধের দাবি জানিয়েছেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্তসহ সরকারদলীয় একাধিক সাংসদ। আজ বুধবার জাতীয় সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে এবং রাষ্ট্রপতির ভাষণ সম্পর্কে আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তাঁরা এ দাবি জানান।

বক্তারা বলেন, যারা নির্মমভাবে হত্যা করে লাশ গর্তের মধ্যে পুঁতে রাখে, রগ কাটে তাদের রাজনীতি করার অধিকার নেই। বর্তমান স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশে ছাত্রশিবিরের রাজনৈতিক অধিকার থাকবে কি না, সে বিষয়ে এখনই সিদ্ধান্ত নিতে হবে বলে তাঁরা মন্তব্য করেন। একই সঙ্গে তাঁরা এ ব্যাপারে অবিলম্বে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য দাবি করেন।

স্পিকার আবদুল হামিদ এ সম্পর্কে দেওয়া এক রুলিংয়ে বলেন, ‘এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে সংসদে বিশদভাবে অবহিত করতে হবে। আশা করি, যথাসম্ভব দ্রুততার সঙ্গে তা করা হবে। এটা করা উচিত।’

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংঘর্ষের ঘটনা তুলে ধরে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত সংসদে অভিযোগ করে বলেন, জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামী রাজশাহীতে উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়ার পরই ছাত্রশিবির এই নির্মম হত্যাকাণ্ড ঘটায়। ছাত্রশিবির নিজামীদেরই উত্তরসূরি। নিজামীই একসময় ওই সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় তাঁরা আমাদের বিপক্ষে দাঁড়িয়ে হত্যা, লুটপাট, নির্যাতন ও নারী ধর্ষণের মতো ঘৃণিত অপরাধ করেছেন। রগ কাটা, ম্যানহোলে লাশ রাখার মতো নৃশংস ঘটনা এঁরাই ঘটাতে পারেন। আজ গণতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতায়। দেশের ১৫ কোটি মানুষ এঁদের বিরুদ্ধে। তাই সময় এসেছে এঁদের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার।

শিবিরের রাজনীতি বন্ধের দাবি জানিয়ে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, এই সংগঠনের কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে। যারা অস্ত্র নিয়ে গুলি করে, রগ কেটে লাশ ম্যানহোলে ফেলে রাখে তাদের রাজনীতি করার অধিকার নেই। তিনি বলেন, শিক্ষাঙ্গনে ছাত্রদের মধ্যে আদর্শগত দ্বন্দ্ব বা মতবিরোধ থাকতে পারে। কিন্তু তারা একে অপরের বন্ধু, সহযোগী বা ভাই। এই এক ভাই আরেক ভাইকে নির্মমভাবে হত্যা করে সেফটি ট্যাংকে লাশ রাখবে, এটা হতে পারে না।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ ও ঢাকায় কমিশনার হত্যা একই সূত্রে গাঁথা বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, স্থিতিশীল রাজনীতি ও গণতান্ত্রিক সরকারকে অস্থিতিশীল করতে এ ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। এ ধরনের ঘটনা ঘটবে, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হবে, পরীক্ষা স্থগিত হবে, এটা হতে পারে না।

সরকারি দলের অপর সাংসদ ফজলে রাব্বী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘শিবিরের রগ কাটা রাজনীতি বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের সন্ত্রাস ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবির কর্তৃক ছাত্র হত্যা একই সূত্রে গাঁথা।’

ফজলে রাব্বী এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা সংসদকে অবহিত করার দাবি করে বলেন, ‘ঘটনার সময় পুলিশ সময়মতো যায়নি। মতিহার থানার ওসি সেখানে ছিলেন না। এ ব্যাপারে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে সংসদে জানাতে হবে।’

আজ ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নেন পানিসম্পদমন্ত্রী রমেশ চন্দ্র সেন, শামসুর রহমান, অপু উকিল, এস কে আবু বাকের, রফিকুল ইসলাম, আশরাফ আলী খান, সাধনা হালদার, আবদুল মজিদ খান প্রমুখ। আলোচনা শেষে সংসদের বৈঠক কাল বেলা তিনটা পর্যন্ত মুলতবি করা হয়।

পাঁচটি বিল উপস্থাপন: সংসদে আজ পাঁচটি বিল উপস্থাপিত হয়। সব কটি বিলই পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য কমিটিতে পাঠানো হয়েছে। বিলগুলো হলো জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘর বিল-২০১০, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজি বিল-২০১০, বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক টেকনোলজি বিল-২০১০, বাংলাদেশ ন্যাশনাল সাইন্টেফিক অ্যান্ড টেকনিক্যাল ডকুমেন্টশন সেন্টার (বেঞ্জডক) বিল-২০১০ এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার বিল-২০১০। বিজ্ঞান এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান বিলগুলো উপস্থাপন করেন।


খবরের লিংক

চার গ্রামে অভিযানের নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়-সংলগ্ন গ্রাম বিনোদপুর, কাজলা, মেহেরচণ্ডী ও ভদ্রায় অভিযান চালানোর নির্দেশ দিয়েছে সরকার। এ গ্রামগুলোতে ছাত্রশিবিরের শক্ত অবস্থান রয়েছে। গত সোমবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে রাতভর সংঘর্ষের সময় এসব গ্রামের সন্ত্রাসীরা ছাত্রশিবিরের সঙ্গে যোগ দিয়েছিল।

স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে পুলিশের আইজি এবং র‌্যাব মহাপরিচালকের বৈঠকে গ্রামগুলোতে অভিযান চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে গত সোমবার রাতে ছাত্রশিবিরের নির্মম নির্যাতনে ছাত্রলীগকর্মী ফারুক হোসেন নিহত হন।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখছে সরকার। পুলিশ মহাপরিদর্শক নূর মোহাম্মদকে রাজশাহী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পাশাপাশি ভবিষ্যতে যাতে সন্ত্রাসী ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে সে জন্য বিশ্ববিদ্যালয় এবং এর আশপাশের গ্রামের সন্ত্রাসীদের খুঁজে বের করে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করতে জামায়াতে ইসলামী সমর্থিত ইসলামী ছাত্রশিবির পরিকল্পিতভাবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের ওপর হামলা চালায় বলে প্রতিমন্ত্রী অভিযোগ করেছেন। এর মধ্য দিয়ে শিবির কোনো বার্তা দিতে চাইছে কি না_এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'তারা তো প্রতিনিয়তই বার্তা দিয়ে আসছে। সবকিছুর মধ্য দিয়েই সরকার তার লক্ষ্যে পেঁৗছবে। আমাদের যে শক্তি আছে তা দিয়ে সব অপশক্তিকে দমন করা হবে।' পাশাপাশি বিরোধী দলসহ সকল রাজনৈতিক দলকে তিনি এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়-সংলগ্ন এলাকায় ছাত্রশিবিরের শক্ত অবস্থান রয়েছে। তাদের সহায়তায় শিবির ছাত্রলীগের ওপর হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনায় একজন শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে। শুনেছি আরেকজনকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ১৭-১৮ জন চিকিৎসাধীন রয়েছে। নিহত ছাত্রের পরিচয় জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বিষয়টি পরে জানাবেন বলে মন্তব্য করেন।

সোমবারের রাতের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই ছাত্রনেতা বলেন, সংঘর্ষের একপর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী শিবিরকে নিবৃত্ত করতে পারলেও পরে তারা পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে সন্ত্রাসীদের নিয়ে এসে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের উৎখাতের জন্য হামলা চালায়।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সেখানে ব্যর্থ কি না_জানতে চাইলে টুকু বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের কাজ করে গেছে। অনেক বিষয় চিন্তা করে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে তাদের অভিযান চালাতে হয়।
জামায়াতে ইসলামীকে ইঙ্গিত করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার পর থেকে একটি মহল দেশকে অকার্যকর করার চেষ্টা করছে। সরকার অনেক বাধা পেরিয়ে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের রায় কার্যকর করেছে। এখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। এ বিচার বাধাগ্রস্ত করতেই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করেছে তারা।

ছাত্রলীগের ভর্তিবাণিজ্য প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, 'ভর্তিবাণিজ্য বন্ধ করতে সবাইকে নিয়ে বৈঠকে বসার জন্য শিক্ষামন্ত্রীকে অনুরোধ জানাব।'


খবরের লিংক

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রহত্যার সাহস হতো না জামায়াত-শিবিরের: কবীর চৌধুরী

নিজস্ব প্রতিবেদক | তারিখ: ১০-০২-২০১০

একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির উপদেষ্টা কমিটির সভাপতি ও জাতীয় অধ্যাপক কবীর চৌধুরী বলেছেন, জামায়াত-শিবিরের মৌলবাদীরা দেশকে নরকে পরিণত করেছে। দিন দিন এই নরখাদকেরা সহিংস হয়ে উঠছে। তিনি আজ বুধবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির মিলনায়তনে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, গতকাল মঙ্গলবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রশিবির যে নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তার সঙ্গে পিলখানা হত্যাকাণ্ড ও একাত্তরের বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের মিল রয়েছে। কবীর চৌধুরী জামায়াত-শিবির সম্পর্কে বলেন, এরা যে কতটা নৃশংস হতে পারে, তা দেশবাসী ভালো করেই জানে। তিনি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পর্কে হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার যদি ইতিমধ্যেই শুরু করা যেত তাহলে জামায়াত-শিবিরের এতটা সাহস হতো না। তিনি আশা প্রকাশ করেন, সরকার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এ হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার করে জামায়াত-শিবিরকে শায়েস্তা করবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি লেখক-সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির। শাহরিয়ার কবিরের জিহাদের প্রতিকৃতি প্রামাণ্যচিত্রের বিরুদ্ধে পাঠানো জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদের পাঠানো এক উকিল নোটিশের ওপর ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। উকিল নোটিশটি সম্পর্কে শাহরিয়ার কবির বলেন, তিনি এর জওয়াব দেবেন না। আলী আহসান মুজাহিদ যদি আদালতের শরণাপন্ন হতে চান, তাহলে তাঁকে তিনি স্বাগতই জানাবেন। তিনি আদালতেই তথ্যপ্রমাণ নিয়ে এর মোকাবিলা করবেন বলে সাংবাদিকদের জানান।


খবরের লিংক

9 February 2010

ফারুক হোসেনের মৃত্যুতে বিভিন্ন সংগঠনের ক্ষোভ


নিজস্ব প্রতিবেদক | তারিখ: ১০-০২-২০১০

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামী ছাত্রশিবিরের হাতে ছাত্রলীগের কর্মী ফারুক হোসেনের মৃত্যুর ঘটনায় বিভিন্ন সংগঠন ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। সংগঠনের নেতারা অবিলম্বে খুনিদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি জানান। এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে গতকাল মঙ্গলবার কর্মসূচিও পালন করেছে বিভিন্ন সংগঠন। ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে পৃথক বিবৃতি দেন বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা।

সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের উদ্যোগে গতকাল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের নারকীয় হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদ জানিয়ে বক্তারা বলেন, এর মাধ্যমে অপশক্তিরা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে।

জোটের সভাপতি নাসির উদ্দীন ইউসুফের সভাপতিত্বে সমাবেশে মফিদুল হক, গোলাম কুদ্দুছ প্রমুখ বক্তব্য দেন।

ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদ হাসান ও সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী বিবৃতিতে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রশিবিরের এ নারকীয় হত্যাকাণ্ড ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের গণহত্যার কথা মনে করিয়ে দেয়। তাঁরা বলেন, এ ঘটনার সময় প্রশাসনের নীরব ভূমিকা নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।

এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ছাত্রলীগ আজ বুধবার সারা দেশে বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে।

এ ছাড়া সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, জাতীয় গণতান্ত্রিক লীগ, নারী মুক্তি আন্দোলন, মুক্তিযোদ্ধা আইনজীবী পরিষদ, দক্ষিণ বাংলা যুব কল্যাণ সমিতি, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট বিবৃতিতে শিবির ক্যাডারদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে।


খবরের লিংক