Showing posts with label খুলনা. Show all posts
Showing posts with label খুলনা. Show all posts

20 February 2011

বিদেশি পিস্তলসহ গ্রেপ্তার জামায়াত নেতার ছেলে দুই দিনের রিমান্ডে

খুলনা অফিস

খুলনায় বিদেশি পিস্তলসহ গ্রেপ্তার হওয়া জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য শাহ মোহম্মদ রুহুল কুদ্দুসের ছেলে শাহ মোহম্মদ সোয়েবকে (২৩) দুই দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। খুলনার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মো. আবু শামীম আজাদ গতকাল শনিবার এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। গত শুক্রবার রাতে একটি বিদেশি পিস্তলসহ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

খুলনার সোনাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম জানান, গত শুক্রবার রাত সোয়া ৯টার দিকে নগরীর বয়রা সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের সামনে পুলিশ একটি মোটরসাইকেলের আরোহী জামায়াত নেতা রুহুল কুদ্দুসের ছেলে শাহ মোহম্মদ সোয়েবকে আটক করে। তার কাছ থেকে একটি ইউএসএ লেখা ৭.৬৫ বোরের বিদেশি পিস্তল উদ্ধার করা হয়। পুলিশ সোয়েবের ব্যবহৃত সিভিজেড (খুলনা মেট্রো-ল-১১-০৮৩৭) মোটরসাইকেলটি আটক করেছে। তবে তার সঙ্গে থাকা অপর আরোহী রাসেল পালিয়ে যায়। রাসেল করিমনগর এলাকার বাসিন্দা।

8 November 2010

সাতক্ষীরা, রাজশাহীতে শিবিরের সাতজন নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা ও রাজশাহী | তারিখ: ০৯-১১-২০১০

সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলায় ইসলামী ছাত্রশিবিরের ছয়জন নেতা-কর্মীকে রোববার গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এদিকে রাজশাহী কলেজ শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের এক নেতাকে গতকাল সোমবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আশাশুনি উপজেলার জামায়াতে ইসলামীর কার্যালয়ে থেকে রোববার রাতে গোপনে বৈঠক করার সময় ছাত্রশিবিরের ছয়জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আশাশুনি থানার ওসি ফজলুর রহমান জানান, গতকাল তাঁদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে পুলিশের ওপর হামলার মামলায় রাজশাহী কলেজ শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক শাহ্ আলমকে গতকাল গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

26 August 2010

পাইকগাছা পৌর জামায়াতের আমির গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা | তারিখ: ২৬-০৮-২০১০

জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের খুলনার পাইকগাছা পৌর শাখার আমির শফিকুল ইসলাম নিজামীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পাইকগাছা পৌরসভার কোর্ট জামে মসজিদের পাশের রাস্তা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। শফিকুল কোর্ট জামে মসজিদের খতিব।

পাইকগাছা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলাম প্রথম আলোকে জানান, গত শুক্রবার জুমার নামাজের সময় যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষার জন্য দোয়া করেন জামায়াতের নেতা শফিকুল। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। গতকাল বুধবার তাঁকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করা হয়। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাঁকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

8 August 2010

রিমান্ডে একজন: খুলনায় গোপন বৈঠকের সময় পাঁচ শিবির নেতা গ্রেপ্তার

খুলনা অফিস

খুলনায় গোপন বৈঠকের সময় ছাত্র শিবিরের জেলা প্রচার সম্পাদকসহ পাঁচ নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল রবিবার সকালে জেলার দিঘলিয়া উপজেলার খানপাড়া জামে মসজিদ থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। অপরদিকে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় মহানগর শিবিরের সাবেক সভাপতি মিয়া মোজাহিদুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ দুই দিনের রিমান্ডে নিয়েছে।

দিঘলিয়া থানার ওসি বিমল কৃষ্ণ মণ্ডল জানান, গতকাল সকাল সাড়ে ৮টার দিকে পুলিশ খানপাড়া জামে মসজিদে গোপন বৈঠকের সময় শিবিরের জেলা শাখার প্রচার সম্পাদক সোহেল, দিঘলিয়া উপজেলার সভাপতি সাদেকুর রহমান, অর্থ সম্পাদক সাইফুল্লাহ, ওয়ার্ড সভাপতি জালাল শেখ ও সদস্য আবদুর রহিমকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে পাঁচটি মোবাইল ফোনসেট, গুরুত্বপূর্ণ তথ্যসংবলিত দুটি ডায়েরি পাওয়া যায়। পরে আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাঁদের জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

3 August 2010

সাতক্ষীরায় আফগানফেরত জামায়াত নেতা গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরায় আফগানিস্তানফেরত এক জামায়াত নেতাকে গতকাল মঙ্গলবার গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। গ্রেপ্তার ওই নেতার নাম জিয়াউর রহমান। তাঁর বাড়ি দেবহাটা উপজেলার সখীপুর ইউনিয়নের নারকেলি গ্রামে। তাঁর বাবার নাম আবদুল করিম সরদার। তিনি ইউনিয়ন জামায়াতের সদস্য এবং ওয়ার্ড কমিটির সেক্রেটারি।

পুলিশ সূত্র জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গোয়েন্দা পুলিশ গতকাল সকালে জিয়াউর রহমানকে দেবহাটার পারুলিয়ায় তাঁর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে গ্রেপ্তার করে। তিনি বেশ কিছুদিন আফগানিস্তানে ছিলেন। এমনকি আফগান যুদ্ধেও অংশ নিয়েছেন বলে তথ্য রয়েছে। পরে দেশে ফিরে তিনি জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। তাঁর নামে সদর থানায় রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা রয়েছে।
দেবহাটা থানার ওসি আবদুল বারী জানান, জিয়াউর রহমান অত্যন্ত প্রভাবশালী। জামায়াতে ইসলামীর বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন। তাঁকে আজ বুধবার কোর্টে পাঠিয়ে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড চাওয়া হবে বলে গতকাল রাতে ওসি জানিয়েছেন।

21 July 2010

একজনের নিখোঁজ বিষয়ে রুল: জামায়াত-শিবিরের ১৭৩ নেতা-কর্মীর আগাম জামিন

নিজস্ব প্রতিবেদক | তারিখ: ২২-০৭-২০১০

পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে খুলনা, কুষ্টিয়া, যশোর ও সাতক্ষীরায় দায়ের করা পৃথক মামলায় জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের ১৭৩ জন নেতা-কর্মীর আগাম জামিন মঞ্জুর করেছেন হাইকোর্ট। গতকাল বুধবার হাইকোর্টের পৃথক দুটি বেঞ্চ পৃথক জামিন আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন।

এদিকে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংস্কৃতিক সম্পাদক গোলাম মোর্তজা নিখোঁজ থাকার বিষয়ে গতকাল বিচারপতি আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা ও বিচারপতি কাজী রেজাউল হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বেঞ্চ রুল জারি করেন। রুলে গোলাম মোর্তজাকে বেআইনিভাবে আটক করে রাখা হয়নি, তা নিশ্চিত করতে কেন তাঁকে আদালতে হাজির করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। স্বরাষ্ট্রসচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ও র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সাত দিনের মধ্যে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

রিট আবেদনে দাবি করা হয়, ১৪ জুলাই পল্টন থেকে ধানমন্ডিতে যাওয়ার পথে মোর্তজাকে পুলিশের পরিচয়ে সাদা পোশাকধারী লোকজন আটক করে। এর পর থেকে তাঁর সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। তাঁর অবস্থান জানতে নির্দেশনা চেয়ে মোর্তজার ভাই আবু কাউসার মোহাম্মদ শামসুজ্জামান হাইকোর্টে রিটটি (হেবিয়াস করপাস) করেন। গতকাল শুনানি শেষে আদালত রুল জারি করেন। আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী তাজুল ইসলাম।

আগাম জামিন: খুলনা, কুষ্টিয়া ও যশোরের জামায়াতের ১২২ জন নেতা-কর্মী আদালতে হাজির হয়ে আগাম জামিনের আবেদন করলে বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হক দুই মাসের জন্য তাঁদের আগাম জামিন দেন। একই সঙ্গে কেন তাঁদের স্থায়ী জামিন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়। জামিন পাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন কুষ্টিয়া শহর জামায়াতের আমির রফিকউদ্দিন আহমেদ, খুলনা মহানগর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম কুদ্দুস প্রমুখ।

জানা যায়, গত ২৯ জুন জামায়াতের শীর্ষস্থানীয় তিন নেতা নিজামী, মুজাহিদ ও সাঈদীকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে মিছিল করার সময় পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে তিন জেলায় পৃথক মামলা করা হয়।

পৃথক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি আফজাল হোসেন আহমেদ ও বিচারপতি মুহাম্মদ আবদুল হাফিজের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বেঞ্চ জামায়াতের সাবেক সাংসদ ও সাতক্ষীরা জেলা আমির মোহাদ্দেস আবদুল খালেকসহ জামায়াতের ৫১ জন নেতা-কর্মীর চার মাসের আগাম জামিন মঞ্জুর করেন। সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্রের অভিযোগে ১৬ জুলাই তাঁদের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরা সদর থানায় এ মামলা হয়।

সাতক্ষীরায় বিপুল পরিমাণ জিহাদি বই-পুস্তক উদ্ধার

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা

দুই জামায়াত কর্মীর স্বীকারোক্তি অনুযায়ী বিপুল পরিমাণ জিহাদি বই-পুস্তক উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার সাতক্ষীরা শহরের মধ্য কাটিয়ার আবুল কালাম আজাদ ও মুন্সিপাড়ার আব্দুর রহমানের বাড়ি থেকে পুলিশ দুই শতাধিক জিহাদি বই-পুস্তক উদ্ধার করে। পুলিশ জানায়, গত সপ্তাহে সাতক্ষীরা শহরের জেলা জামায়াত অফিস থেকে ১৪ জামায়াত-শিবির কর্মীকে আটক করা হয়। পরে তাদের বিরুদ্ধে সদর থানায় রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করা হয়।

16 July 2010

সাতক্ষীরায় জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের ২০ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা | তারিখ: ১৬-০৭-২০১০


সাতক্ষীরা জেলা জামায়াতের কার্যালয় ও সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ২০ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে সন্ধ্যায় জামায়াত কার্যালয় থেকে ১৪ জনকে এবং ভোররাতে নিজ বাড়ি থেকে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন জামায়াতের রুকন সদর উপজেলার আগড়দাঁড়ি গ্রামের আকরামুজ্জামান, কামাননগর এলাকার মাহবুবুর রহমান, দহকুলার মো. সাহাজাহান, জাহানাবাজের আবদুর সবুর, রইচপুরের নূরুল হক।

সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাজাহান আলী খান জানান, তাঁরা খবর পান জামায়াতের কর্মীরা জেলা জামায়াত কার্যালয়ে রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকাণ্ড চালাতে গোপন বৈঠক করছেন। সন্ধ্যায় সেখানে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। ওসি জানান, তাঁদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রবিরোধী গোপন ষড়যন্ত্রের অভিযোগে মামলা করা হবে।

13 July 2010

খুলনা-শেরপুরজামায়াত-শিবিরের ৭১ জনের নামে অভিযোগপত্র

কালের কণ্ঠ ডেস্ক

দ্রুত বিচার আইনে দায়ের করা মামলায় খুলনা ও শেরপুরে জামায়াত-শিবিরের ৭১ নেতা-কর্মীর নামে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। এর মধ্যে বেশির ভাগই গ্রেপ্তার হয়ে জেলহাজতে আছে; অন্যরা পলাতক। বিস্তারিত আমাদের জেলা অফিস ও প্রতিনিধির প্রতিবেদনে:

খুলনা অফিস জানায়, মহানগর জামায়াতের আমির মিয়া গোলাম পরওয়ার, সেক্রেটারি মাওলানা আবুল কালাম আজাদসহ ৪৭ জনকে আসামি করে গতকাল সোমবার আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। গতকাল দুপুরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা খুলনা থানার এসআই মনিরুল ইসলাম মুখ্য মহানগর হাকিম মো. বারেকুজ্জামানের আদালতে এ অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আদালত অভিযোগপত্রটি গ্রহণ করে মামলাটি দ্রুত বিচার আদালতের বিচারক অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মো. আবু শামীম আজাদের আদালতে প্রেরণের নিদের্শ দেন।

চার্জশিটভুক্ত অন্য আসামিরা হলেন মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমির আবদুল মতিন ও মাস্টার শফিকুল আলম, সহকারী সেক্রেটারি খন্দকার আবদুল খালেক, মাহফুজুর রহমান ও খান গোলাম রসুল, মহানগর ছাত্রশিবির সভাপতি সাইদুর রহমান সাইদ, বিএল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ শাখা সভাপতি আজিজুল ইসলাম ফরাজী, অ্যাডভোকেট শেখ আবদুল ওয়াদুদ, শেখ জাহাঙ্গীর আলম, অ্যাডভোকেট লস্কর শাহ আলম, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসাইন হেলাল, ডা. হাবিবুর রহমান, আবদুর রহমান, কাজী নুরুন্নবী, আজিজুর রহমান স্বপন, আরিফুল ইসলাম, মিয়া গোলাম কুদ্দুস, মিয়া মুজাহিদুল ইসলাম, গাজী শাহ মাকদুম, তাওহিদুল ইসলাম, সাইফুল হাসান, শেখ ফরিদউদ্দিন, শেখ সিরাজুল ইসলাম, রেজাউল করিম, এমরান খালিদ, এমরান হোসেন, ডা. কাজী ইয়াসিন উদ্দিন, মাওলানা মনিরুজ্জামান, এম জি সরোয়ার, ইসমাঈল হোসেন, মুহিব্বুর রসুল, আমিনুল ইসলাম, শফিকুল ইসলাম, হুমায়ুন কবীর, আবুল কালাম, এস এম সুমন, আলমগীর হোসেন, মো. বদিউজ্জামান, আবদুর রহমান, মুজাহিদুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর আলম, হাসিবুর রহমান, আবদুল মান্নান ও এরশাদ হোসাইন।

তদন্ত কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম জানান, গত ৩০ জুন জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীরা প্রশাসনের পূর্বানুমতি ছাড়া নগরীর ডাকবাংলা মোড়ে জড়ো হয়ে রাস্তায় যানচলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। এ কাজে পুলিশ বাধা দিলে তারা পুলিশের ওপর হামলা ও ওয়্যারলেস সেট ছিনিয়ে নেয়। তাদের হামলায় খুলনা থানার ওসি মনির-উল-গিয়াসসহ পাঁচ পুলিশ কর্মকর্তা আহত হন। এ ঘটনায় এসআই রেজাউল করিম বাদী হয়ে খুলনা থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন। দ্রুত বিচার আইনে দায়ের করা মামলাটির অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। গ্রেপ্তার হওয়া আসামিদের কয়েক দফা রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ, ঘটনার দিনের ভিডিও ফুটেজ, স্থিরচিত্র দেখে আসামিদের শনাক্ত করা হয়েছে। অভিযোগপত্রে দেওয়া ৪৭ জনের মধ্যে এজাহারভুক্ত ২১ জনসহ ২৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে; অন্যরা এখনো পলাতক।

শেরপুর প্রতিনিধি জানান, জেলা জামায়াতের আমির ও সেক্রেটারিসহ জামায়াত-শিবিরের ২৪ নেতা-কর্মীকে আসামি করে গত রবিবার সন্ধ্যায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। শেরপুর সদর থানার উপপরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. আবদুল্লাহ আল মামুন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নূরুল ইসলাম মো. নিপুর আদালতে এ অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আদালত অভিযোগটি গ্রহণ করে পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ১৫ জুলাই।

অভিযুক্ত ২৪ আসামির মধ্যে ১৫ জন শেরপুর জেলা কারাগারে আছেন; অন্যরা এখনো পলাতক। কারাগারে থাকা আসামিরা হলেন জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা আবদুল বাতেন, নালিতাবাড়ী পৌর জামায়াতের সেক্রেটারি আইয়ুব আলী, জামায়াতের সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের জেলা সভাপতি ডা. মো. আনোয়ার হোসেইন, ঝিনাইগাতী উপজেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি সুলতান আহম্মদ, জামায়াতকর্মী ইব্রাহিম সাদী, মোস্তফা সেলিম, আবু বকর ছিদ্দিক, মোস্তাফিজুর রহমান, মো. সাইফুল্লাহ্, বিল্লাল হোসেন, শিবিরের মারুফ হাসান, শামিম হাছান, রফিকুল ইসলাম, রফিকুল মিয়া ও মো. মনিরুজ্জামান। অভিযুক্ত জেলা জামায়াতের আমির ডা. শাহাদাত হোসাইনসহ ৯ জন পলাতক রয়েছে।

আদালত ও পুলিশ সূত্র জানায়, জামায়াতের শীর্ষস্থানীয় তিন নেতার মুক্তির দাবিতে গত ৩০ জুন অভিযুক্ত জামায়াত-শিবির নেতা-কর্মীরা শহরে বিক্ষোভ মিছিল করে। মিছিলকারীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে মহড়া দিয়ে শহরে আতঙ্ক ও ত্রাসের সৃষ্টি করে। এ ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ডিবির এএসআই মো. সজীব খান বাদী হয়ে দ্রুত বিচার আইনে মামলা দায়ের করেন।

9 July 2010

জামায়াতের মাঠের রাজনীতি স্থবির

সেলিম জাহিদ

জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ ও নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী গ্রেপ্তার হওয়ার পর দলটির প্রকাশ্য কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। মামলা ও পুলিশি আতঙ্কে জামায়াত অধ্যুষিত এলাকাগুলোতেই কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচি পালনে শৈথিল্য দেখা গেছে। ঝটিকা মিছিল ছাড়া ঢাকাতেই জামায়াত-শিবির স্থির হয়ে কোনো কর্মসূচি পালন করছে না। সারা দেশে তাদের মাঠের রাজনীতি আরো স্থবির।

এ বছরের শুরুতে রাজধানীকে সংগঠনের 'প্রাণকেন্দ্র' হিসেবে উপস্থাপন করার ঘোষণা দিয়েছিল জামায়াত। ঢাকা সিটি করপোরেশনের ৯০ ওয়ার্ডকে ১১০টি সাংগঠনিক ওয়ার্ডে ভাগ করে জামায়াত তৎপরতা চালাচ্ছে। আত্দগোপনে থাকা ঢাকা মহানগর আমির রফিকুল ইসলাম খান গত মার্চ মাসে এ প্রতিবেদককে আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অন্তত ৫০টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে প্রার্থী দেওয়ার কথা বলেছিলেন। সংগঠনের বিগত গণসংযোগ অভিযানে প্রত্যাশার চেয়েও বেশি পৌনে এক লাখ লোক সহযোগী সদস্য ফরম পূরণ করে জামায়াতে শরিক হয়েছে বলেও দাবি করেছিলেন রিমান্ডে থাকা সেক্রেটারি জেনারেল। কিন্তু জামায়াতের তিন প্রধান নেতা গ্রেপ্তার হওয়ার পর ঢাকায় যে প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে, তাতে ওই জনশক্তির প্রকাশ ঘটেনি।

জামায়াতের কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচি পালনে এখন পর্যন্ত রাজধানীর পল্টন, মতিঝিল ও রমনা থানা কমিটিকে মাঠে তৎপর দেখা গেছে। এ ছাড়া উত্তরা, মিরপুর, পল্লবী, উত্তর ও দক্ষিণ বাড্ডা, পশ্চিম রামপুরা, খিলগাঁও, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, মোহাম্মদপুর, যাত্রাবাড়ী, মিরহাজিরবাগেও বিক্ষিপ্তভাবে মিছিল হয়েছে। অন্য এলাকায় কোনো কর্মসূচি পালন করা হয়নি।

জামায়াতের সংসদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর সেক্রেটারি হামিদুর রহমান আযাদ এর সঙ্গে দ্বিমত প্রকাশ করে বলেন, 'পুলিশের এত নির্যাতনের পরও আমরা মাঠে আছি। কোনো কর্মসূচিই ব্যর্থ হয়নি। হয়তো কর্মসূচি পালনের প্রকৃতি পরিবর্তন হয়েছে।'

জামায়াত প্রভাবাধীন এলাকা হিসেবে পরিচিত চট্টগ্রামের পূর্বাঞ্চল, রাজশাহী, সিলেট মহানগর ও খুলনা বিভাগের বিভিন্ন জেলায় জামায়াতের প্রকাশ্য রাজনৈতিক কার্যক্রমেও স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। বিক্ষোভ করতে গিয়ে খুলনা মহানগর আমির মিয়া গোলাম পরোয়ার গ্রেপ্তার হওয়ার পর স্থানীয় নেতাদের অনেকে গা ঢাকা দিয়ে চলছেন। রাজশাহী মহানগর আমির আতাউর রহমানসহ শীর্ষ নেতারা ফারুক হত্যা মামলায় আটক থাকায় মাঠের রাজনীতি থমকে গেছে আরো আগে থেকেই।

জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির মকবুল আহমদের নিজ জেলা ফেনী এবং ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম আজহারুল ইসলামের রংপুরের বদরগঞ্জেও সেভাবে সফল বিক্ষোভ হয়নি বলে খবর পাওয়া গেছে। তিন নেতা গ্রেপ্তার হওয়ার দিন দুই স্থানে ঝটিকা বিক্ষোভ মিছিল বের করা হলেও পুলিশ আর কোনো মিছিল হতে দেয়নি।

দলের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম আজহারুল ইসলাম বলেন, 'পুলিশ ও সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে হামলা চালিয়ে জামায়াতের মিছিল-সভা পণ্ড করে সরকার নিজেই সন্ত্রাস সৃষ্টি করছে।'


বিভিন্ন এলাকা থেকে আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর :
চট্টগ্রামে মোবাইল সিম বদল : গ্রেপ্তার আতঙ্কে চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীরা অবস্থান পরিবর্তনের পাশাপাশি মোবাইল ফোনের সিমও পরিবর্তন করছেন। দলের মাঠপর্যায়ে হতাশা নেমে এসেছে। নগরীর দেওয়ান বাজারে দলীয় কার্যালয়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। অপরিচিত কাউকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। নগর জামায়াত আমিরসহ দায়িত্বশীল নেতারা প্রকাশ্যে অফিসে আসছেন না। চন্দনপুরায় মহানগর শিবিরের কার্যালয়েও গতকাল কাউকে পাওয়া যায়নি। দুপুরে জামায়াতের দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে কোনো নেতাকে পাওয়া যায়নি। দলীয় কার্যালয়ের নিচতলায় উত্তর জেলা জামায়াতের অফিস, তৃতীয় তলায় মহানগর আমিরসহ দায়িত্বশীলদের কার্যালয়ও ফাঁকা ছিল। এ তলার নিরাপত্তাকর্মী হাছিনুর রহমান জানান, কয়েক দিন ধরে অফিসে লোকজনের যাতায়াত কমে গেছে। বিকেল সাড়ে ৫টায় গিয়ে দেখা যায়, নগর জামায়াত আমির মাওলানা শামসুল ইসলাম এমপি নগরীর হালিশহর ও ডবলমুরিং থানায় দায়ের হওয়া মামলার এজাহারের কপি পড়ছেন।

এ ঘটনায় মাওলানা শামসুল ইসলাম ছাত্রলীগকে দায়ী করে বলেন, 'আওয়ামী লীগ বাকশাল কায়েম করতে জামায়াত-শিবিরকে দমন করছে। গণতান্ত্রিক দেশে প্রতিবাদ জানানোর অধিকার থাকলেও আমাদের নেতা-কর্মীরা রাস্তায় বেরোতে পারছেন না।' সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে স্থবিরতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য জামায়াত-শিবির কাজ করছে। যত বাধা আসুক, তারা হতাশ হয় না। এখন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি।'

সিএমপির কমিশনার মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান কালের কণ্ঠকে বলেন, জামায়াত-শিবির বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বজায় রাখতে প্রকৃত দোষী ব্যক্তিদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার অভিযান চলছে।
রাজশাহীতে লুকোচুরির মিছিল : রাজশাহী মহানগর জামায়াত কেন্দ্রের কোনো কর্মসূচিই সফলভাবে পালন করতে পারছে না। পুলিশের সঙ্গে লুকোচুরি করে নগরীতে ক্ষণস্থায়ী মিছিল বের করছে। তবে রাজশাহী মহানগর পুলিশের বিশেষ শাখার সহকারী কমিশনার তারিকুল ইসলাম বলেছেন, শিবির ভেতরে ভেতরে সক্রিয় হয়ে নাশকতার চেষ্টা করতে পারে। পুলিশি তৎপরতায় তারা এগোতে পারছে না। এর পরও তারা সজাগ দৃষ্টি রাখছে।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি শিবিরের হামলায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগকর্মী ফারুক হোসেন হত্যাকাণ্ড এবং ছাত্রলীগের চার নেতার রগ কাটার ঘটনায় স্থানীয়ভাবে জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি কঠিন সংকটে পড়ে। ওই ঘটনার পর রাজশাহী মহানগর, জেলা ও বিশ্ববিদ্যালয়ে জামায়াত-শিবির একঝাঁক নেতা গ্রেপ্তারের পর দলটির রাজনীতি বিপর্যয়ের মুখে। উপজেলা পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা সক্রিয় থাকলেও গ্রেপ্তার এড়াতে অনেকেই এখন গা ঢাকা দিয়ে চলছে।

স্থানীয় সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, রাজশাহীর রাজনীতিতে দ্বন্দ্ব-সংঘাতের মূলে ছিল জামায়াত-শিবির। তাদের তাণ্ডব আগের চেয়ে এখন নিয়ন্ত্রিত। জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মহানগর জামায়াতের এক নেতা জানান, কৌশলগত কারণেই তাঁরা বেশি সময় ধরে মাঠে মিছিল নিয়ে থাকছেন না।

সিলেটে হঠাৎ মিছিল: সিলেট মহানগর জামায়াত তিন নেতার মুক্তির দাবিতে তারা কঠোর ও কৌশলী ভূমিকা পালন করছে। জমি ও হাউজিংসহ ব্যবসা-বাণিজ্যে মনোযোগী নেতারা এখন দলকে সময় দিচ্ছেন। পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যমতে, বিভিন্ন ব্যানারে জামায়াত মাঠপর্যায়ে সংগঠিত হচ্ছে।

সিলেটে দলের ভেতরে নেতৃত্ব নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অসন্তোষ বিরাজ করছে। বিশেষ করে মহানগর জামায়াতে হঠাৎ করে অভিজ্ঞ ও প্রবীণ নেতৃত্বকে বাদ দিয়ে অপেক্ষাকৃত তরুণ নেতৃত্ব সামনে আসায় প্রবীণ নেতাদের মধ্যে এই ক্ষোভ দেখা দেয়। ফলে দলের কার্যালয়ে নিয়মিত সভা-সমাবেশ হলেও রাজপথে দুর্বল উপস্থিতি ছিল জামায়াতের। এখন এ সংকট কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে দলটি।

নিজামী, মুজাহিদ ও সাঈদী গ্রেপ্তারের পর বৃহস্পতিবার বন্দরবাজারে পুলিশের সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা হলে জামায়াত কৌশল বদলায়। ঝামেলা এড়াতে আগাম ঘোষণা না দিয়ে মিছিল বের করে। পুলিশ বাধা দেওয়ার আগেই তারা মিছিল শেষ করে চলে যায়।

গত দুই দিনে রাজপথে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে দলের নেতা-কর্মীরা যে মিছিল ও সমাবেশ করছেন তাতেই দলের নতুন কৌশল সম্পর্কে সবাই অবগত হয়ে গেছে। 'জামায়াত এখন রাজপথে তাদের সম্পূর্ণ শক্তির প্রদর্শন করবে না। মাঝেমধ্যে সুযোগ বুঝে নিজেদের অবস্থানের জানান দেবে'_এমন দাবি করছেন একজন জামায়াত নেতা।

শুক্রবার সকাল থেকে নগরীর মোড়ে মোড়ে পুলিশ ও র‌্যাব সতর্ক অবস্থায় থাকলেও জামায়াত কোনো মিছিল বের করেনি। কিন্তু রবিবার নগরবাসী ও পুলিশ যখন ঘুমিয়ে, তখন সকাল ৮টায় হঠাৎ করেই জামায়াত নগরীতে মিছিল বের করে। পুলিশ ঘুম থেকে উঠে প্রস্তুতি নিতে নিতেই তাদের মিছিল শেষ হয়ে যায়। গত সোমবারও সকাল ৯টায় নগরীর পূর্ব প্রান্তে শাহজালাল উপশহর এলাকায় মিছিল করে জামায়াত। জামায়াতের এই কৌশলের কাছে পুলিশ একাধিকবার মার খেয়েছে।

মহানগর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি ফখরুল ইসলাম বলেন, 'আমরা কোনো সংঘাত চাই না। সরকারের ফ্যাসিবাদী আচরণের প্রতিবাদ করা আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার।'

ঝিনাইদহে দায়সারা কর্মসূচি : হামলা ও গ্রেপ্তার আতঙ্কে ঝিনাইদহে জামায়াত-শিবিরের প্রকাশ্য কোনো কর্মকাণ্ড দেখা যাচ্ছে না। গেরিলা কায়দায় হঠাৎ খণ্ড খণ্ড মিছিল আর ঘরোয়া গোপন বৈঠক করেই কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে ছাত্রলীগের আন্দোলনের মুখে জামায়াত-শিবির কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। ঝিনাইদহ জেলা জামায়াত কার্যালয়টি শহরের হামদহ এলাকায়। নতুন হাটখোলায় সংগঠনের শহর কার্যালয়। দুটি কার্যালয় খোলা থাকলেও নেতা-কর্মীদের উপস্থিতি কম। গত ১৩ জুন নতুন হাটখোলায় ছাত্রলীগের সঙ্গে সংঘর্ষে উভয় সংগঠনের বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী আহত হন। এ ঘটনায় পুলিশ জামায়াত-শিবিরের ৫০ জনকে গ্রেপ্তার করে। পরে তারা জামিনে বেরিয়ে এলেও প্রকাশ্যে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে তাদের খুব একটা দেখা যাচ্ছে না। বিক্ষোভসহ অন্যান্য কর্মসূচি দায়সারাভাবেই পালন করছে জেলা জামায়াত ও ছাত্রশিবির।

জেলা আমির মুজাম্মিল হক বলেন, 'আমাদের সাংগঠনিক রুটিন ওয়ার্ক নিয়মিত চলে এবং এখনো চলছে। শহরে কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালনে নেতা-কর্মীরা নানা রকম বাধার সম্মুখীন হচ্ছে। আজ হোক, কাল হোক, আমরা ঝিনাইদহ শহরে শোডাউন করবই।'

সাতক্ষীরায় নড়বড়ে : শীর্ষ নেতাদের গ্রেপ্তারের পরও মামলা ও পুলিশের ভয়ে সফলভাবে বড় ধরনের কোনো কর্মসূচি পালন করতে পারেনি সাতক্ষীরা জামায়াত। গোপনে নেতা-কর্মীরা জড়ো হয়ে ঝটিকা মিছিল বের করলেও প্রকাশ্যে কোনো তৎপরতা নেই। জামায়াতের দুর্গ বলে পরিচিত সাতক্ষীরায় দলের অবস্থা এখন অনেকটা নড়বড়ে।

জামায়াত নেতা-কর্মীদের দাবি, পুলিশের অতিরঞ্জন, বাড়াবাড়ি ও সরকারের জুলুম-অত্যাচারের কারণেই তারা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করতে পারছে না। গত ৮ এপ্রিল জামায়াত সেক্রেটারি আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ সাতক্ষীরা আসতে চাইলে মুক্তিযোদ্ধা-জনতার প্রতিরোধের মুখে ঢুকতে পারেননি। এ সফরকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের সংঘর্ষের মামলায় প্রায় ৪০ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার হয়। নিজামী, মুজাহিদ ও সাঈদীর গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করতে গিয়ে কলারোয়া উপজেলায় পুলিশের হাতে জামায়াত শিবিরের আট নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার হয়।

জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি নূরুল হুদা 'দৌড়ের ওপরে আছেন' মন্তব্য করে বলেন, 'কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচি শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রেখে পালন করতে চাই। কিন্তু তাতেও পুলিশের বাধা।'

চাঁপাইনবাবগঞ্জে গোপন বৈঠক : জামায়াত প্রভাবাধীন চাঁপাইনবাবগঞ্জেও সাংগঠনিক কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। শীর্ষ নেতাদের গ্রেপ্তারের পর তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ-সমাবেশ, মহাসড়কে কিছুক্ষণ ব্যারিকেড দেওয়া ছাড়া আর কোনো কর্মসূচি নিয়ে ঘোষণা দিয়ে রাস্তায় নামতে পারেনি নেতা-কর্মীরা। অর্ধদিবস হরতাল আহ্বান করে পরে তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। মামলা ও পুলিশের ভয়ে বিভিন্ন মাদ্রাসা, মেসসহ দুর্গম এলাকায় অত্যন্ত সন্তর্পণে দলের সাংগঠনিক বৈঠক হচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে। জেলা সদরের বাইরের উপজেলাগুলোতেও দলটির প্রকাশ্য তেমন কোনো কর্মসূচি নেই। তবে নাচোল বিএম মাদ্রাসা ও পল্লী দাতব্য চিকিৎসাকেন্দ্রে সঙ্গোপনে জামায়াতের বৈঠক হচ্ছে। এ ছাড়া শিবগঞ্জের ধাইনগর ইউনিয়নের দুর্গম এলাকায় দলের গোপন বৈঠক হয়।

গত সোমবার দুপুরে অপরিচিত লোকদের নিয়ে শহরের পুরনো বাজার এলাকায় ঝটিকা মিছিল করেছে জামায়াত-শিবির। দুপুর পৌনে ২টার দিকে ২০-৩০ জন পুরনো বাজার জামে মসজিদ থেকে বের হয়ে পুরনো বাজার মোড়ে জমায়েত হয়। হঠাৎ স্লোগান দিয়ে মিছিল শুরু হয়। অল্প সময়ের মধ্যেই আবার শেষ।
পুলিশ বলছে, 'মিছিলকারীরা অপরিচিত, এরা এ এলাকার নয়।' চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি ওমর ফারুক জানান, কেন্দ্রের নির্দেশে জামায়াতের কার্যক্রম এগিয়ে যাচ্ছে। সময়মতো জামায়াত প্রকাশ্য কর্মসূচি চালাবে।

কক্সবাজারে নীরবতা : তিন নেতা গ্রেপ্তারের পর করণীয় নিয়ে দলটির মাঠপর্যায়ের নেতা-কর্মীরা দ্বিধা-দ্বন্দ্বে আছেন। কেন্দ্র ঘোষিত বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছে অত্যন্ত সন্তর্পণে। সোমবারের বিক্ষোভ-সমাবেশ কর্মসূচি পালন করেছে জেলা কার্যালয় প্রাঙ্গণে মাইক লাগিয়ে। ধারণা করা হয়েছিল, কেন্দ্রীয় নেতারা গ্রেপ্তার হলে জামায়াতের প্রভাবাধীন কক্সবাজারে তুলকালাম কাণ্ড ঘটবে, কিন্তু বাস্তবে কিছুই হয়নি। অনুসন্ধানে জানা গেছে, জামায়াত এ ব্যাপারে জনসমর্থন পাচ্ছে না।

গত শুক্রবার কক্সবাজারের বিভিন্ন মসজিদে জুমার নামাজ শেষে নিজামী, সাঈদী ও মুজাহিদের মুক্তি কামনায় দোয়া করার জন্য স্থানীয় নেতারা তৎপর ছিলেন। কিন্তু প্রত্যন্ত অঞ্চল, বিশেষ করে মিয়ানমার সীমান্তবর্তী এলাকা এবং মহেশখালী ও কুতুবদিয়া দ্বীপাঞ্চলের কিছু কিছু এলাকা ছাড়া অন্য মসজিদগুলোতে দোয়া হয়নি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব মসজিদের বেশির ভাগেই দোয়া হয় সাঈদীর জন্য। দীর্ঘদিন সাঈদী এসব এলাকায় তাফসির মাহফিল করেন।

শুক্রবার কক্সবাজার শহরের বাহারছড়া জামে মসজিদে জুমার নামাজ শেষে সাঈদীর জন্য দোয়া করতে গেলে ইমামকে নিয়ে হট্টগোল বাধে। পরে প্রবীণ মুসলি্লরা ইমামকে রক্ষা করেন। মসজিদের ইমাম মাওলানা শফিউল আলম বলেন, 'মহল্লার জামায়াতের নেতা-কর্মীরা কয়েক দিন ধরে জুমার নামাজে নেতাদের জন্য দোয়া করতে বলে আসছিলেন। একজন আলেম হিসেবে সাঈদীর জন্য দোয়া চাইতে গিয়ে আমি এ পরিস্থিতির সম্মুখীন হই।'

কক্সবাজার জেলা জামায়াত আমির মুহম্মদ শাহজাহান কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমরা নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করতে চেয়েছি, কিন্তু সরকার বাকশালী কায়দায় আমাদের রাজপথে যেতে দেয়নি।'

7 July 2010

খুলনায় সংঘর্ষ: মহানগর জামায়াত আমিরসহ ১০ জন তৃতীয় দফা রিমান্ডে

খুলনা অফিস

খুলনা মহানগর জামায়াতে ইসলামীর আমির মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ ১০ জনকে তৃতীয় দফা রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার সকালে খুলনা মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিদের হাজির করা হয়। দ্রুত বিচার আইনের মামলায় তাঁদের চার দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হলে আদালত এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এদিকে নতুন করে গ্রেপ্তার তিনজনের তিন দিনের রিমান্ড শেষে একই আদালত তাঁদের জেলহাজতে পাঠিয়েছেন। আজ বুধবার দ্রুত বিচার আইনের মামলায় তাদের আবারও আদালতে হাজির করে রিমান্ড আবেদন করা হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় করা পৃথক দুটি মামলায় দুই দফায় চার দিন রিমান্ডের পর তৃতীয় দফায় মহানগর জামায়াতের আমির মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ জামায়াত-শিবিরের ১০ জনকে এক দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন আজিজুল ইসলাম ফারাজী, শেখ সিরাজুল ইসলাম, তাওহিদুল ইসলাম, শেখ ফরিদউদ্দিন, রেজাউল করীম, ইমরান খালিদ, ইমরান হোসেন, শাহ মাখদুম, সাইফুল হাসান। এঁদের দ্রুত বিচার আইনের মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

নতুন করে গ্রেপ্তার ডা. কাজী ইয়াছিন উদ্দিন আহমেদ, মাওলানা মনিরুজ্জামান ও এম জি সরোয়ারকে তিন দিনের রিমান্ড শেষে গতকাল বিকেলে আদালতে হাজির করা হয়। আদালত তাঁদের জেলহাজতে পাঠান।

6 July 2010

খুলনা জামায়াতের আমিরসহ ১০ জন জেলহাজতে

খুলনা অফিস

মহানগরীর জামায়াতে ইসলামীর আমির মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ ১০ জনকে দুই দফায় চার দিনের পুলিশি রিমান্ড শেষে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। গতকাল সোমবার বিকেলে জেল হাজতে পাঠানো হয় তাঁকে। তবে বাকি তিন জনের তিন দিনের রিমান্ড অব্যাহত রয়েছে। আজ মঙ্গলবার দ্রুত বিচার আইনে দায়ের করা মামলায় তাঁদেরকে আবার আদালতে হাজির করে রিমান্ডের আবেদন জানানো হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

পুলিশ জানায়, গত ৩০ জুন বুধবার বিকেলে পূর্ব অনুমতি ছাড়া নগরীর ডাকবাংলো মোড়ে মিছিলে বাধাকে কেন্দ্র করে জামায়াত-শিবির কর্মীদের হামলায় খুলনা থানার ওসি মনির-উল-গিয়াসসহ দুই পুলিশ আহত হন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মহানগরী আমির মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ ২১ জনকে আটক করে। এ ঘটনায় পুলিশ তাঁদের বিরুদ্ধে দুইটি মামলা দায়ের করে।

খুলনা থানার ওসি (চলতি দায়িত্ব) মামুন খান বলেন, 'গ্রেপ্তারকৃতদের দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। দ্রুত বিচার মামলার আইন অনুযায়ী সাত কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত শেষ করে শিগগিরই চার্জশিট দেওয়া হবে।'

3 July 2010

খুলনায় সংঘর্ষ - মহানগর জামায়াতের আমিরসহ ১০ জন ফের রিমান্ডে

খুলনা অফিস

খুলনা মহানগর জামায়াতে ইসলামীর আমির মিয়া গোলাম পরোয়ারসহ ১০ জনকে ফের দুই দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। আটক বাকি তিনজনকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।

সূত্র জানায়, মিয়া গোলাম পারোয়ারসহ ১০ জনের দুই দিনের রিমান্ড গতকাল শনিবার শেষ হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে তাঁদের আরো ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানান।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মনিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, গত বুধবার পুলিশের ওপর হামলা, কাজে বাধা দেওয়ার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আরো জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁদের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। রিমান্ডে নেওয়া অন্য আসামিরা হলেন_ফরিদ উদ্দিন, রেজাউল করিম, ইমরান খালিদ, ইমরান হোসেন, তৌহিদুল ইসলাম, সাইফুল হাসান, আজিজুল ইসলাম ও গাজী শাহ মাকদুম।

এ ছাড়া একই আদালতে জামায়াতের শুরা সদস্য মনিরুজ্জামান, মহানগর জামায়াতের সমাজকল্যাণ সম্পাদক ডা. কাজী ইয়াছিন উদ্দিন ও এমজি সরোয়ারের ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানানো হলে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

গত বুধবার বিকেলে নগরীর ডাকবাংলো মোড়ে জামায়াতে ইসলামীর মিছিলে পুলিশ বাধা দিলে সংঘর্ষ হয়। এতে খুলনা থানার ওসিসহ দুই পুলিশ সদস্য আহত হন।

2 July 2010

সিলেটে অর্থমন্ত্রীর বাসভবনে জামায়াতের ইটপাটকেল, গাড়ি ভাঙচুর


প্রথম আলো ডেস্ক | তারিখ: ০২-০৭-২০১০


সিলেটে বিক্ষোভ মিছিল করতে না দেওয়ায় জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীরা গতকাল বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের বাসভবনে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেছেন। এ সময় তাঁরা জরুরি বিদ্যুৎ সরবরাহের একটি জিপসহ ১০টি গাড়ি ভাঙচুর করেন।

এদিকে সিলেট, শেরপুর, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলা থেকে জামায়াতে ইসলামী, ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীসহ ২৯ জনকে আটক করেছে পুলিশ। পুলিশের অনুমতি ছাড়া বিক্ষোভ মিছিল করে আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে গত বুধবার তাঁদের আটক করা হয়।

অন্যদিকে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের গ্রেপ্তার হওয়া নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করে গত বুধ ও গতকাল বৃহস্পতিবার ৮৫ জনকে আদালতে পাঠানো হয়। এর মধ্যে আদালত ৬৬ জনকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন, নয়জনের জামিন আবেদন এবং ১০ জনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

আসামিদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া বিক্ষোভ মিছিল, সড়ক অবরোধ, গাড়ি ভাঙচুর, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। অনেককে যুবলীগের নেতাসহ বিভিন্ন ব্যক্তির দায়ের করা হামলা, চুরিসহ বিভিন্ন পুরোনো মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় গত মঙ্গলবার জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমানী নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ ও নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী গ্রেপ্তার হন। এর প্রতিবাদে দলটির নেতা-কর্মীরা গত মঙ্গলবার ও বুধবার সারা দেশে বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ এবং পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এ ঘটনায় পুলিশ খুলনা মহানগর জামায়াতে ইসলামীর আমির মিয়া গোলাম পরওয়ার, কুষ্টিয়া জেলা জামায়াতের আমির আবদুল ওয়াহেদসহ ১৮৫ জনকে গ্রেপ্তার করে।

ঢাকার বাইরে আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক, আঞ্চলিক কার্যালয় ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:
সিলেট: গতকাল দুপুরে সিলেট মহানগর জামায়াতের উদ্যোগে বন্দরবাজার থেকে মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি নগরের কোর্ট পয়েন্ট এলাকার দিকে যেতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় জামায়াতের কর্মীরা পুলিশকে ধাওয়া করে এলোপাতাড়ি ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এতে পাঁচজন পথচারী আহত হন। পরে জামায়াত ও শিবিরের কর্মীরা মিছিল নিয়ে ধোপাদীঘিরপাড়ে গিয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের বাসভবনে ‘হাফিজ কমপ্লেক্স’-এর প্রধান ফটকে ধাক্কা দেন। এ সময় বাড়ির নিরাপত্তাকর্মীরা ফটক বন্ধ করে দিলে মিছিল থেকে কয়েক দফায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। এ সময় পুলিশ তাঁদের ধাওয়া দিয়ে তাড়িয়ে দেয়। মহানগর পুলিশের উপকমিশনার আহসান হাবিব অর্থমন্ত্রীর বাসভবনে ইটপাটকেল নিক্ষেপের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে কানাইঘাট উপজেলার গাছবাড়ী এলাকায় গতকাল দুপুরে জামায়াত-বিএনপি-আওয়ামী লীগের ত্রিমুখী সংঘর্ষে ১৫ জন আহত হয়েছেন। বিক্ষুব্ধ জামায়াত-বিএনপির কর্মীরা গাছবাড়ী এলাকায় আওয়ামী লীগের একটি ইউনিয়ন কার্যালয় ভাঙচুর করেছে। সংঘর্ষ থামাতে ১২ জনকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করে পুলিশ।
খুলনা: খুলনায় জামায়াত নেতা মিয়া গোলাম পরওয়ার, সরকারি বিএল কলেজ ছাত্রশিবিরের সভাপতি আজিজুল ইসলাম ফরাজীসহ ১০ জনকে দুটি পৃথক মামলায় গতকাল এক দিন করে দুই দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। খুলনা মুখ্য মহানগর হাকিম মো. বারেকুজ্জামান এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

শেরপুর: শেরপুর সদর ও নালিতাবাড়ী থানার পুলিশ গত বুধবার গভীর রাতে শেরপুর শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে শেরপুর জেলা জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের নয়জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে। এর মধ্যে রয়েছেন শেরপুর জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি আবদুল বাতেন, নালিতাবাড়ী পৌর জামায়াতের সেক্রেটারি মো. আইয়ুব আলী। সদর থানা পুলিশ গতকাল শেরপুরের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে তাঁদের বিরুদ্ধে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করে। আদালত আগামী রোববার রিমান্ডের ওপর শুনানির দিন ধার্য করেন এবং আসামিদের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেন। পরে তাঁদের শেরপুর জেলহাজতে পাঠানো হয়।

সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম): সীতাকুণ্ড থানায় দ্রুত বিচার আইনে করা মামলায় উপজেলা জামায়াতের সাবেক সেক্রেটারি গিয়াস উদ্দীন, দপ্তর সম্পাদক মোহাম্মদ নজরুল ইসলামসহ জামায়াত ও শিবিরের সাত নেতা-কর্মীকে বুধবার রাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল তাঁদের জেলহাজতে পাঠানো হয়।
নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া): গত মার্চ মাসে দায়ের হওয়া রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় নবীনগর উপজেলার বাঙ্গুরা গ্রামের জামায়াতের সমর্থক আবুল কাশেমকে গত বুধবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল তাঁকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

রাজশাহী: রাজশাহীতে গত বুধবার রাতে জামায়াতের বিক্ষোভ মিছিল ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় গতকাল দ্রুত বিচার আইন ও সরকারি কাজে বাধাদানের অভিযোগে দুটি মামলা করেছে বোয়ালিয়া থানার পুলিশ। এতে গ্রেপ্তার হওয়া রাজশাহী মহানগর জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি আবু বকর সিদ্দিকসহ ছয় নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে। গতকাল তাঁদের জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

কুষ্টিয়া: জামায়াতে ইসলামীর গ্রেপ্তার হওয়া ২৮ জন নেতা-কর্মীকে গত বুধবার কুষ্টিয়া জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে জেলা জামায়াতের আমির আবদুল ওয়াহেদ ও নায়েবে আমির ফরহাদ হুসাইনকে বিক্ষোভ ও যানবাহন ভাঙচুর, জনগণের প্রতিবন্ধকতাসহ পুলিশের কাজে বাধা দেওয়া, কুমারখালী পৌর কমিটির ভারপ্রাপ্ত আমির আবদুল বারী পাটোয়ারীর বিরুদ্ধে কুমারখালী পৌর মসজিদের সামনে বিক্ষোভ ও মারামারি করার অভিযোগে মামলা এবং ভেড়ামারা পৌর আমির হারুন-অর-রশীদকে বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

নাটোর: জেলা জামায়াতের সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল আউয়াল, দপ্তর সম্পাদক সাদেকুর রহমান ও রুহুল কুদ্দুস মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ কাজী রিয়াজুল হকসহ ছয় নেতা-কর্মীকে জেলা যুবলীগের সভাপতি শরিফুল ইসলামের দায়ের করা গাড়িতে হামলা করার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আদালত গতকাল তাঁদের জামিন মঞ্জুর করেন।

বরগুনা: পাথরঘাটা উপজেলায় গতকাল জামিন পেয়েছেন পাথরঘাটা সিদ্দিকিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক জামায়াতের সমর্থক মো. ইয়াছিন, ছাত্রশিবিরের কর্মী গোলাম কিবরিয়া ও নাজমুল হোসেন।

পাবনা: জেলা জামায়াতের আমির আবদুর রহিম, সদর উপজেলা জামায়াতের আমির আবদুল গফফারসহ ২০ জন ও জামায়াতের ২৫০ জন অজ্ঞাত নেতা-কর্মীকে আসামি করে গতকাল দ্রুত বিচার আইনে মামলা করেছে পুলিশ। এ মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া আবদুল গফফারসহ ১১ জন নেতা-কর্মীকে গতকাল জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

13 June 2010

খুলনা মেডিকেল কলেজে ছাত্রলীগ-শিবির সংঘর্ষ

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা | তারিখ: ১৩-০৬-২০১০


শ্রেণীকক্ষে রোলকলের সময় হাজিরা দেওয়া ও পরবর্তী সময়ে হুমকি দেওয়ার জের ধরে খুলনা মেডিকেল কলেজে আবারও ছাত্রলীগ-শিবির সংঘর্ষ হয়েছে। এ ঘটনায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এবং পুলিশের লাঠিচার্জের কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছেন। আজ রোববার সকাল পৌনে ১০টার দিকে চার নম্বর লেকচার গ্যালারির সামনে এ ঘটনা ঘটেছে।

এ ঘটনার পর ছাত্রলীগ প্যাথলজি বিভাগের এক শিক্ষককে শিবিরের মদদদাতা চিহ্নিত করে তাঁর অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ অব্যাহত রাখেন। অন্যদিকে শিবিরের পক্ষ থেকে সাধারণ ছাত্রদের মারধরের বিচার ও নির্বিঘ্নে ক্লাস করতে দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। ক্যাম্পাসে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এ ঘটনায় কলেজ কর্তৃপক্ষ পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

শিবিরের কর্মীরা অধ্যক্ষের কক্ষে প্রবেশ করলে ছাত্রলীগ তাঁদের ঘেরাও করে। পরে পুলিশ শিবির কর্মীদের নিরাপত্তা হেফাজতে নেয়। এ সময় ছাত্রলীগ কর্মীরা অধ্যক্ষের কার্যালয়ের সামনে প্যাথলজি বিভাগের শিক্ষক আবু সাঈদকে শিবিরের মদদদাতা চিহ্নিত করে তাঁর অপসারণ ও শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবিতে বিক্ষোভ করতে থাকেন।

প্রায় দুই ঘণ্টা পর দুপুর একটায় পুলিশের পাহারায় শিবির কর্মীদের ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেওয়া হয়। এ সময় পেছন থেকে ছাত্রলীগ কর্মীরা ধাওয়া করলে শিবির কর্মীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গেট থেকে ছাত্রলীগের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে।

পুলিশ শিবির কর্মীদের হটিয়ে দিলে ছাত্রলীগ ক্যাম্পাসে ভাঙচুর চালায়। এ সময় পুলিশ তাঁদের ওপর লাঠিচার্জ করে। এতে ছাত্রলীগ কলেজ শাখার সভাপতি চয়ন বিশ্বাসসহ প্রায় ১৫ জন আহত হন।

অধ্যক্ষ কাজী হামিদ আসগার প্রথম আলোকে বলেন, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। একাডেমিক কাউন্সিলরের বৈঠকে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটির প্রতিবেদন দাখিলের পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া ক্যাম্পাস ও হোস্টেলে পুলিশ মোতায়েন থাকবে।

17 April 2010

নির্বাচনোত্তর সহিংসতা : বাগেরহাটে তদন্ত কমিশননির্যাতিত হেনা মল্লিক আর ছবি রানী কান্নায় ভেঙে পড়লেন

বাগেরহাট প্রতিনিধি

নূর মোহাম্মদ মল্লিককে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে গরু বাঁধার দড়ি দিয়ে প্রকাশ্য রাস্তার ওপর দিয়ে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। এক দল টানছিল অন্য দল পেটাচ্ছিল। শিশু সোহাগ ও সাজ্জাদকে নিয়ে স্বামীর প্রাণভিক্ষার জন্য পিছু পিছু ছুটছেন হেনা মলি্লক। ক্যাডারদের হাতে-পায়ে ধরে সব সম্পদের বিনিময়ে স্বামীকে বাঁচানোর আর্তি জানিয়ে চলেছেন তিনি। কিন্তু হেনার আর্তিতে মন গলেনি সন্ত্রাসীদের। মৃত্যুর আগে পানি খেতে চেয়েছিলেন নূর মোহাম্মদ। পানির বদলে ক্যাডাররা প্রস্রাব করে দেয় তাঁর মুখে। ক্ষত-বিক্ষত রক্তাক্ত দেহে স্ত্রী-সন্তানদের সামনেই মারা যান তিনি। এতেও ক্ষান্ত হয়নি সন্ত্রাসীরা। তারা একপর্যায়ে হেনাকেও বিবস্ত্র করে ফেলে।... এর পর আর বলতে পারেননি নিহত নূর মোহাম্মদের স্ত্রী। কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।

২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনোত্তর সহিংসতার শিকার হেনা মল্লিক গতকাল শুক্রবার বাগেরহাট সার্কিট হাউসে সেদিনের শিশু-কিশোর আজকের তরুণ দুই ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন জবানবন্দি দিতে। ২০০১ সালের নির্বাচনের ছয় দিন পর ৭ অক্টোবর তাঁর স্বামী নূর মোহাম্মদকে হত্যা করা হয়। পুলিশ প্রথমে মামলাটি নিতে রাজি হয়নি। নির্যাতিত পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে রামপাল থানায় মামলা দিতে গিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা সে সময়ের সংসদ সদস্য তালুকদার আব্দুল খালেক থানার সামনেই জামায়াত-বিএনপি ক্যাডারদের হামলায় লাঞ্ছিত হন। অবশেষে বহু কাঠ-খড় পুড়িয়ে তবে মামলা হয়। যা আজও বিচারাধীন।

আর এক আওয়ামী লীগ নেত্রী ছবি রানী তাঁর ওপর পৈশাচিক বর্বরতার বর্ণনা দিতে গিয়ে শুরুতেই কান্না জুড়ে দেন। নির্যাতনের সময় জামায়াত-বিএনপি ক্যাডারদের তোলা ছবি (যা পরে পুলিশ উদ্ধার করে) ও নিজের সারা শরীরে ক্ষতের চিহ্ন দেখিয়ে সাত বছর পরেও তিনি কেবলই কাঁদতে থাকেন। বাড়ি ফেরার পথে প্রকাশ্যে বাসস্ট্যান্ড থেকে তাঁকে স্থানীয় বিএনপি অফিসে ধরে নিয়ে বিবস্ত্র করে মাথার চুল কেটে দিয়ে গোপনাঙ্গে লাঠি-বালি-মাটি ঢুকিয়ে দিয়ে উল্লাস আর ছবি তুলতে থাকে। একপর্যায়ে মৃত ভেবে রাস্তার ওপর তাঁকে ফেলে দিলে স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। ২০০২ সালের ২১ আগস্টের এ ঘটনায় দায়ের করা মামলা আজও চলছে। আসামিদের প্রায় সবাই এখন জামিনে। তাদের হম্বিতম্বির মুখে নির্যাতিত ছবি রানী আজও শঙ্কিত।

আর কোমরপুরের ঠাকুরবাড়ির অবর্ণনীয় নিষ্ঠুরতার শিকার স্বামীহারা-সম্ভ্রমহারা অনিমা ভট্টাচার্য আজও ঠিক করে কথা বলতে পারেন না। তাঁকে একটি চাকরি দেওয়ার কথা সে সময়ের প্রধানমন্ত্রী বললেও সাত বছর পর আজও তা হয়নি। নিদারুণ কষ্টে পঙ্গু পিতাকে নিয়ে তিনি মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। অনিমা বাগেরহাট সার্কিট হাউসে জবানবন্দি দিতে আসা শত শত মানুষের মুখের দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়েছিলেন, তাদের কথা শুনছিলেন। নিজের কোনো কথা বলতে পারেননি।

মোরেলগঞ্জের বৃদ্ধ কাঠমিস্ত্রি রতিকান্তকে ওই নির্বাচনের পরদিন প্রকাশ্য রাস্তায় পিটিয়ে হত্যার পর লাশের ওপর দাঁড়িয়ে উল্লাস করে জামায়াত-বিএনপির জয়ধ্বনি দিয়েছিল ক্যাডাররা। সে কথা বলতে গিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ডা. মোজাম্মেল হোসেন এমপি বলে ওঠেন, সে ঘটনার বর্ণনা করা যায় না। তিনি নিজে সংবাদ সম্মেলনে বর্বর হামলার শিকার হন। যেখানে সাত সাংবাদিক ও পাঁচ আওয়ামী লীগ নেতাও জখম হন।

২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচন-পরবর্তী সংঘটিত সহিংস ঘটনাগুলোর সরেজমিনে তদন্তে সরকার গঠিত তদন্ত কমিশনের প্রধান সাবেক বিচারপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন নির্যাতিতদের জবানবন্দি শুক্রবার নিতে বাগেরহাট সার্কিট হাউসে আসেন। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এ সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।

এ সময় কমিশনের অপর দুই সদস্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ও তদন্ত কমিশনের সদস্য সচিব মনোয়ার হোসেন এবং মীর শহিদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়াও বাগেরহাট সদর আসনের এমপি অ্যাডভোকেট মীর শওকাত আলী বাদশা ও বাগেরহাট-৩ আসনের এমপি তালুকদার হাবিবুন নাহার, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মুজিবর রহমান খানসহ নির্যাতিত শত শত মানুষ এ সময় উপস্থিত ছিলেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বাগেরহাটের সেই ভয়াবহ নির্যাতনের কাহিনী সে সময় দেশি-বিদেশি সংবাদমাধ্যমে গুরুত্বের সঙ্গে প্রচার করা হয়।


খবরের লিংক

9 April 2010

মাওলানা সুবহান

প্রশ্নকারীকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, 'একাত্তর নিয়ে আমাদের এত কথা বলেন, কিন্তু একাত্তরের পর আমরা বারবার এমপি নির্বাচিত হয়েছি; আপনারা অনেকে তখন মায়ের পেটেও ছিলেন না। একাত্তর নিয়ে এখন কী প্রশ্ন করেন?'

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে বড় মগবাজারে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে একজন সাংবাদিকের প্রশ্নে উত্তেজিত হয়ে স্বাধীনতাবিরোধী মাওলানা সুবহান এসব কথা বলেন।
বুধবার রাতে সাতক্ষীরা যাওয়ার পথে খুলনার জিরো পয়েন্টে জামায়াতের সেক্রেটারি আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের গাড়িবহর আটক ও আল-ফারুক সোসাইটিতে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র ও যুব সংগঠনের হাতে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা অবহিত করতে এ সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়।

খুলনায় জামায়াত নেতাদের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা একাত্তরের পাল্টা শোধ কি না জানতে চাইলে মাওলানা আবদুস সুবহান রেগে গিয়ে উলি্লখিত মন্তব্য করলেও জামায়াতের সেক্রেটারি আলী আহসান মুজাহিদ বলেন, 'সবকিছুতে একাত্তরের গন্ধ তালাশ করা ঠিক না। এর সঙ্গে একাত্তরের কোনো সম্পর্ক নেই।'

মুজাহিদ খুলনার জিরো পয়েন্টে ও আল-ফারুক সোসাইটিতে অবস্থানকালীন সাদা ও পোশাকধারী পুলিশ এবং স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষপাতমূলক আচরণের বর্ণনা দেন।

তিনি বলেন, 'পুলিশ জনসভা ভণ্ডুলকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো আমাদের ৪১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এভাবে যদি দুষ্টকে প্রশ্রয় দেওয়া হয়, দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে কী হবে_এ ব্যাপারে আমরা উদ্বিগ্ন।'

এক প্রশ্নের জবাবে মুজাহিদ বলেন, 'আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, না হয় ১৪৪ ধারা কোনো ব্যাপার না। সাতক্ষীরায় আমাদের গণভিত্তি অত্যন্ত মজবুত। ইচ্ছে করলে জনসভা করতে পারতাম. প্রতিহতকারীরা মাঠে নামারই সাহস পেত না। কিন্তু আমরা সংঘাতে যাইনি।'

মুজাহিদ অভিযোগ করেন, আল-ফারুক সোসাইটিতে অবস্থানকালে স্থানীয় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের লোকেরা জামায়াত নেতাদের ওপর আক্রমণ করে। এতে তাঁদের কয়েকজন আহত হন। তিনি এর সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেন।

সরকার জনগণের ওপর আস্থা হারিয়ে পুলিশনির্ভর হয়ে পড়েছে মন্তব্য করে মুজাহিদ বলেন, 'আমরা চ্যালেঞ্জও দিচ্ছি না, হুমকিও দিচ্ছি না, সরকার পুলিশের আশ্রয় বাদ দিক, ১৪৪ ধারা তুলে নিয়ে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হোক, তারপর দেখা যাবে...।'

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির মকবুল আহমদ, মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামান, আবদুল কাদের মোল্লা, এ টি এম আজাহারুল ইসলাম, হামিদুর রহমান আযাদ এমপি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

পথে পথে ব্যারিকেড
এদিকে সাতক্ষীরা থেকে আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক জানিয়েছেন, পথে পথে মুক্তিযোদ্ধা জনতার বাধার মুখে জামায়াতের কথিত দুর্গ বলে খ্যাত সাতক্ষীরায় ঢুকতে পারেননি দলের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ। শহরে ১৪৪ ধারা জারি থাকায় জামায়াত ও ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে মিছিল-সমাবেশও করতে পারেনি। মুজাহিদ সমাবেশে যোগ দেওয়ার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেও শেষ পর্যন্ত পথে পথে ব্যারিকেডের খবর শুনে সাতক্ষীরায় পা রাখেননি। তবে জেলা জামায়াতের নেতারা মুজাহিদকে সাতক্ষীরায় ঢুকতে না দেওয়ার জন্য পুলিশ প্রশাসনকে দায়ী করেছেন।

গতকাল সকাল ১০টার দিকে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আহ্বানে প্রগতিশীল সংগঠনের নেতা-কর্মীরা শহরের রাজ্জাক পার্কে জড়ো হতে শুরু করে। এরপর পুলিশ আলোচনার মাধ্যমে পার্কের নিয়ন্ত্রণ নিলে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির লোকজন বেলা ১১টায় জেলা জামায়াত অফিসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতের আমির মুহাদ্দেস আব্দুল খালেক সাতক্ষীরায় আলী আহসান মুজাহিদকে ঢুকতে না দেওয়ার জন্য প্রশাসনকে দায়ী করেন। শহরে ১৪৪ ধারা বলবৎ থাকায় পরবর্তী ঘোষনা না দেওয়া পর্যন্ত সমাবেশ স্থগিত রাখা হয়েছে বলে জামায়াত জানিয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আহ্বায়ক ইনামুল হক বিশ্বাস জানান, মুক্তিযোদ্ধা জনতার প্রতিরোধের মুখে মুজাহিদ যেহেতু সাতক্ষীরায় ঢুকতে পারলেন না, তাই আগামীতে দেশের কোথাও তিনি সমাবেশ করতে পারবেন না।

মাগুরায় রাত জেগে গাড়িতে গাড়িতে তল্লাশি
যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের সাতক্ষীরার জনসভায় অংশগ্রহণ প্রতিহত করতে জেলার ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি বুধবার রাতে জেলায় বিভিন্ন প্রতিরোধ কর্মসূচি পালন করে। কর্মসূচির অংশ হিসেবে তারা বুধবার সারা রাত ও গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে মাগুরার বিভিন্ন পয়েন্টে মুজাহিদের খোঁজে গাড়িতে তল্লাশি চালায়।

সকাল থেকেই শহরের পিটিআইর সামনে নির্মূল কমিটির নেতা-কর্মীসহ বিভিন্ন স্তরের মানুষ এসে জড়ো হয়। সেখানে একইভাবে গাড়ি তল্লাশির পাশাপাশি চলতে থাকে প্রতিবাদ সভা। সেলিম খানের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য দেন এ টি এম মহব্বত আলী, আবুল কালাম আজাদ, আবু রেজা নান্টু, ওহিদুজ্জামান, আনিসুর রহমান, রূপক আইচ, সাজ্জাদুল ইসলাম বিপু, বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী, নাজমুল হাসান জেন্টেল, আহম্মদ আলী, ফারুক মোল্যা, রেজাউল ইসলাম ও পার্থ সাহা। প্রতিবাদ শেষে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি ও এলাকাবাসী শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করে।


খবরের লিংক

26 March 2010

খুলনায় নিজামীসহ তিন জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা | তারিখ: ২৬-০৩-২০১০


ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে করা মামলায় জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীসহ দলের তিনজন নেতার বিরুদ্ধে খুলনায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার খুলনার মুখ্য মহানগর বিচারিক হাকিম মো. বারেকুজ্জামান এ আদেশ দেন।

অন্য দুই নেতা হলেন জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ও ঢাকা মহানগরের আমির রফিকুল ইসলাম খান। শহরের টুটপাড়া এলাকার বাসিন্দা চৌধুরী রায়হান ফরিদ গতকাল সকালে মামলাটি করেন। বাদী বলেন, ‘মহানবী (সা.)-এর সঙ্গে জামায়াতের আমির নিজামীর তুলনা করে উদ্দেশ্যমূলকভাবে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা হয়েছে।’


খবরের লিংক

4 March 2010

ছাত্রলীগের পিটুনিতে শিবিরের কর্মী আহত




নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা | তারিখ: ০৪-০৩-২০১০


খুলনা মহানগরের দৌলতপুর এলাকায় গতকাল বুধবার ছাত্রলীগের পিটুনিতে কামরুল নামে এক যুবক আহত হয়েছেন। কামরুল ছাত্রশিবিরের খুলনা বিএল কলেজ শাখার কর্মী।

দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুহুল কুদ্দুস প্রথম আলোকে জানান, বিএল কলেজের বাংলা বিভাগের স্নাতক (সম্মান) তৃতীয় বর্ষের ছাত্র কামরুল বেলা ১১টার দিকে কলেজ ক্যাম্পাসের পাশে লঞ্চঘাটে বসে চা-পান করছিলেন। সেখানে ছাত্রলীগ কর্মীদের সঙ্গে তাঁর কথাকাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে ছাত্রলীগের কর্মীরা তাঁকে মারধর করেন। আহত অবস্থায় তাঁকে পুলিশ উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেছে।


খবরের লিংক

22 February 2010

ছাত্রলীগ কর্মী ফারুক হত্যাঃ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ ১০ জন আটক




প্রথম আলো ডেস্ক | তারিখ: ২৩-০২-২০১০

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের কর্মী ফারুক হোসেন হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে গতকাল সোমবার নাটোর থেকে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ ১০ জনকে আটক করেছে পুলিশ। একই ঘটনায় রাজশাহী মহানগর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য সিদ্দিক হোসেনকে দ্বিতীয় দফায় তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিবিরের চার কর্মীকে আটক ও ছাত্রীদের একটি আবাসিক হল থেকে বেশ কিছু জিহাদি বই উদ্ধার করা হয়েছে।

নাটোর: নাটোর সদর থানা সূত্রে জানা যায়, বিকেলের দিকে শহরের কানাইখালী মহল্লার সাহারা প্লাজার পঞ্চমতলায় ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির কার্যালয়ে অভিযান চালায় পুলিশ। সেখানে গোপন সভা করার সময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মামুন, কলেজশিক্ষক মো. শাহজালাল, মাদ্রাসাশিক্ষক মাওলানা জাকির হোসেন, আবুল হাশেম, সদরুল উল্লাহ, বদিউজ্জামান, কামরুল ইসলাম, আবদুল হালিম, সৈয়দ আলী ও আনসার আলীকে আটক করা হয়।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের কর্মী ফারুক হোসেন হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে তাঁদের আটক করা হয়েছে। তাঁরা বীমা কর্মকর্তা-কর্মচারী পরিচয়ে ওই কার্যালয়ে গোপন সভা করছিলেন। আটক ব্যক্তিরা রাষ্ট্রবিরোধী কোনো কর্মকাণ্ডে জড়িত কি না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তাঁরা সবাই জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মী। বিস্তারিত পরিচয় সম্পর্কে খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে।

তবে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি নাটোরের জেলা ব্যবস্থাপক রেজাউল করিম দাবি করেন, কার্যালয়ের মাসিক সমন্বয় সভা চলাকালে কিছু সন্ত্রাসী সেখানে হামলা চালায়। তাঁরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আবদুল্লাহ আল মামুনকে মারধর করে। থানায় খবর দিলে পুলিশ আসে। পুলিশ সন্ত্রাসীদের আটক না করে আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আটক করে নিয়ে যায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অপর এক কর্মকর্তা অভিযোগ করেন, হামলাকারীরা স্থানীয় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী। তারা নিজেদের অপরাধ ঢাকতে আমাদের জামায়াত-শিবির বানিয়েছে।

তবে নাটোর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে ছাত্রলীগের সম্পৃক্ততা নেই। জামায়াতে ইসলামীর জেলা সেক্রেটারি দেলোয়ার হোসেন ও জেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি নাছির উদ্দিন জানান, আটক ব্যক্তিদের কেউই জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে জড়িত নন।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আবদুল্লাহ আল মামুন ১৯৯৫-৯৬ সালে নাটোর জেলা শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি ছিলেন। তাঁর বাড়ি নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার আহমদপুর গ্রামে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক এস এম এ এইচ তাকী জানান, আবদুল্লাহ আল মামুন তাঁর সহকর্মী। তিনি ওই বিভাগে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।

রাজশাহী: নগরের মতিহার থানার সহকারী কমিশনার মৃণাল কুমার ভট্টাচার্য বলেন, গতকাল রাজশাহীর অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে সিদ্দিক হোসেনকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার জন্য আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

গত ১৬ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা সাতটার দিকে পুলিশ সিদ্দিক হোসেনকে গ্রেপ্তার করে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি জানান, মতিহার থানার পুলিশ ও ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র ভবন থেকে ব্যবস্থাপনা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ও ছাত্রশিবিরের কর্মী রাহাতকে ছাত্রলীগের কর্মীরা আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। বেলা দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সামনে থেকে পুলিশ ছাত্রশিবিরের তিনজন কর্মীকে আটক করে। তাঁরা হলেন, রিয়াদ ইবনে আহাদ, আরিফুজ্জামান ও মঞ্জুর। তিনজনই আইন ও বিচার বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে মঞ্জুর শহীদ শামসুজ্জোহা হলের ছাত্রশিবিরের ব্লক সভাপতি বলে জানা গেছে।

এদিকে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্য ও মতিহার থানার পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয়ের রহমতুন্নেসা হলে অভিযান চালিয়ে সিঁড়ির নিচ থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় ২১টি জিহাদি বই উদ্ধার করে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর চৌধুরী মোহাম্মদ জাকারিয়া ও মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত্র কর্মকর্তা (ওসি) তোফাজ্জল হোসেন ছাত্রশিবিরের চারজন কর্মীকে আটক ও জিহাদি বই উদ্ধারের সত্যতা নিশ্চিত করেন।

এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ফারুক হত্যা ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের ওপর শিবিরের হামলার প্রতিবাদে নয় দফা দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় এক সংবাদ সম্মেলন থেকে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আওয়াল কবির।

সাতক্ষীরায় জামায়াত-শিবিরের আট নেতা-কর্মী রিমান্ডে: সাতক্ষীরায় রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে জামায়াত-শিবিরের আটজন নেতা-কর্মীকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাতক্ষীরা সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুস সবুর জানান, আসামিদের ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হলে সাতক্ষীরা মুখ্য বিচারিক হাকিম এইচ এম সামছুল আরেফিন পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এ ছাড়া জামায়াত-শিবিরের অপর ২৫ নেতা-কর্মীর পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে গতকাল আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

(প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন, নিজস্ব প্রতিবেক, রাজশাহী ও সাতক্ষীরা, নাটোর প্রতিনিধি ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি)


খবরের লিংক