Showing posts with label বিডিনিউজ. Show all posts
Showing posts with label বিডিনিউজ. Show all posts

25 April 2011

সংগ্রাম সম্পাদকের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের মামলা

Mon, Apr 25th, 2011 4:49 pm BdST

ঢাকা, এপ্রিল ২৫ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকার সম্পাদক, প্রকাশক আবুল আসাদকে অর্থ আত্মসাৎ ও প্রাণনাশের হুমকির মামলায় আদালতে তলব করা হয়েছে।

সোমবার এ পত্রিকার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক এ বি সিদ্দিকের দায়ের করা মামলায় এ আদেশ দেন ঢাকা মহানগর হাকিম এ জি এম আল মাসুদ।

মামলার আরজিতে বলা হয়, বাদির বকেয়া বেতন- ভাতা বাবদ ৭ লাখ ৪৮ হাজার ৯৯৬ টাকা না দিয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তি তাকে প্রাণনাশ করার হুমকি দিচ্ছেন। বাদির একমাত্র মেয়ের চিকিৎসার জন্য পাওনা টাকা চাইতে গেলে তাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে বলা হয়, "কোন টাকা দেয়া হবে না। মামলা করে টাকা নেন।"

আগামি ১ জুন আবুল আসাদকে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য দিন রাখা হয়েছে বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান বাদির আইনজীবী এস এম দৌলত-ই-খুদা।

মামলার আরজিতে আরো উল্লেখ করা হয়, হুমকির বিষয়ে বাদি গত ৫ এপ্রিল রমনা থানায় আবুল আসাদের বিরুদ্ধে একটি সাধারন ডায়েরি করেন।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/পিবি/কেএমএস/১৬৫০ ঘ.

29 March 2011

ডুয়েটে ছাত্র শিবিরের ৫ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার

Sun, Mar 27th, 2011 6:18 pm BdST

গাজীপুর, মার্চ ২৭ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- ঢাকা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ডুয়েট) ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতিসহ ৫ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তারের পর কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীর পরিবারকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য ও ছাত্রলীগের এক কর্মীর ওপর হামলার ঘটনায় শনিবার রাতে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, ছাত্রশিবির ডুয়েট শাখার সভাপতি ইমরুল কায়েস এবং কর্মী মফিজুল ইসলাম, আবুল বাশার, শাহেদ আলম ও মনসুর আলম।

এ ব্যাপারে রোববার জয়দেবপুর থানায় মামলা হয়েছে।

জয়দেবপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রফিকুল ইসলাম জানান, শিবিরের ডুয়েট শাখার কর্মী মোহাম্মদ লোকমান ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীর পরিবার নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করে। এটি শনিবার দুপুরে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের নজরে আসে।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এরপর ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা শনিবার সন্ধ্যায় ছাত্রশিবিরের কয়েকজনকে চড়থাপ্পড় দেয়। এর জের ধরে রাত সাড়ে ১১টার দিকে ছাত্রশিবির ছাত্রলীগের ওপর হামলা চালায়।

এ ঘটনায় আহত হয় ছাত্রলীগকর্মী ও কম্পিউটার কৌশলের ৩য় বর্ষের ছাত্র জুম্মন তালুকদার এবং পুরকৌশল বিভাগের ২য় বর্ষের ছাত্র মিজানুর রহমান।

রফিকুল জানান, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ নেতা জয়দেব দাশ বাদি হয়ে ছয়জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ১০-১২ জনকে আসামি করে মামলাটি করেছেন। মামলার আরেক আসামি মোহাম্মদ লোকমান পলাতক।

এদিকে এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এম সবদার আলী তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন।

তিনি সাংবাদিকদের জানান, তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বর্তমানে ক্যাম্পাস পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে বলে তিনি জানান।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/প্রতিনিধি/সিএস/আরএ/১৮১৪ ঘ.

26 March 2011

ঢাকায় ১৭ শিবিরকর্মী গ্রেপ্তার

Sat, Mar 26th, 2011 1:59 pm BdST

ঢাকা, মার্চ ২৬ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- শান্তিনগরে পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাংচুরের অভিযোগে ইসলামী ছাত্রশিবিরের ১৭ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

শনিবার সকাল ৯টার দিকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে রমনা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সোহেল রানা জানিয়েছেন।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, কয়েকশ শিবিরকর্মী কাকারাইল মোড় থেকে একটি মিছিল বের করে। মিছিলটি শান্তিনগরে এসে বিভিন্ন গাড়ি ভাংচুর শুরু করে।

ওই সময় পুলিশ বাধা দিলে শিবিরকর্মীরা পুলিশের ওপর ইট ছোড়ে বলেও সোহেল জানান। তখন পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ১৭ শিবিরকর্মীকে গ্রেপ্তার করে।

তারা হলেন- হাফিজুর রহামান (১৮), হেলাল উদ্দিন (২২), মমিনুল করিম (১৮), দেলোয়ার হোসেন (২১), সারোয়ার হোসেন (২১), আলী হোসেন (২২), মোজাহিদুল ইসলাম (১৮), রকিব (২২), রফিবুল ইসলাম (১৮), আবু জায়েদ (১৮), রুহুল আমিন (২২), জাবেদ ইকবাল (২৪), শরিফুল ইসলাম (২০), বাপ্পি (১৮), মাসরুর আহমেদ (২১), রবিউল ইসলাম (২১) ও আশিকুর রহমান (২২)।

এদের অধিকাংশই বিভিন্ন মাদ্রাসার শিক্ষার্থী।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র জাবেদ ইকবাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে তারা শোভাযাত্রা বের করেছিলেন। তার ওপর পুলিশ বিনা উস্কানিতে হামলা চালায়।

গাড়ি ভাংচুর ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেন তিনি।

পুলিশ বলছে, শিবিরকর্মীদের ছোড়া ইটে তাদের চার জন আহত হয়েছে।

তারা হলেন- আব্দুল কুদ্দুস (পরিদর্শক তদন্ত),মাহবুবুল আলম (উপপরিদর্শক), নুরে আলম ও মো. আমিনুল (কনস্টেবল)।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/কেটি/এমআই/১৩৪০ ঘ.

23 March 2011

কর ফাঁকিতে অভিযুক্ত মীর কাশেম

Wed, Mar 23rd, 2011 4:50 pm BdST

ঢাকা, মার্চ ২৩ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- কর ফাঁকির একটি মামলায় জামায়াতে ইসলামীর মজলিসে শূরার সদস্য মীর কাশেম আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন হয়েছে।

বুধবার ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জহুরুল হকের আদালতে অভিযোগ গঠন হয়।

দিগন্ত মিডিয়া লি. ও কেয়ারী লিমিটিডের চেয়্যারম্যান মীর কাশেম ওই সময় আদালতে ছিলেন।

আদালতে অভিযোগ পড়ে শোনানোর পর কাশেম নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন।

অভিযোগ গঠনের পর আদালত আগামী ১০ এপ্রিল বিচার শুরুর দিন ঠিক করেছে। সেদিন সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হবে।

মীর কাশেম মামলা থেকে অব্যাহতির জন্য আবেদন করলেও তা নাকচ করেন বিচারক।

গত বছরের ১৯ অগাস্ট জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের উপকর কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান এ মামলাটি দায়ের করেন।

মামলায় বলা হয়, ২০০৫ থেকে ২০০৬ করবর্ষে মীর কাশেম ২৭ লাখ ৮৫ হাজার ১১৮ টাকার ৩৭ পয়সা আয়ের তথ্য গোপন করে ৮ লাখ ৯০ হাজার ৬১ টাকা কর ফাঁকি দেন।

মামলা দায়েরের তিন দিন পর ২২ অগাস্ট কাশেম হাইকোর্ট থেকে জামিন নেন।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/পিবি/এলএন/এমআই/১৬৪০ ঘ.

21 March 2011

জামায়াত নেতা রফিকুল জামিনে মুক্ত

Mon, Mar 21st, 2011 11:50 pm BdST
Dial 2000 from your GP mobile for latest news
ঢাকা, মার্চ ২১ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর আমির মাওলানা রফিকুল ইসলাম জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।

সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের তত্ত্বাবধায়ক তৌহিদুল ইসমালম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "জামিনের কাগজপত্র পৌঁছানোর পর রাত সাড়ে ১০টার দিকে রফিকুল ইসলামকে মুক্তি দেওয়া হয়।"

ঢাকা মহানগর জামায়াতের নেতা-কর্মীরা কারা ফটকে তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।

গত বছরের ২৫ অগাস্ট মাওলানা রফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানাসহ বিভিন্ন অভিযোগে মোট নয়টি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয় তাকে।

সবগুলো মামলায় জামিন পাওয়ার পর গত ৩ ডিসেম্বর তাকে মুক্তি দেওয়া হলেও কারাফটক থেকেই তাকে আবারো গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এলএইচ/জেকে/২৩৪৩ ঘ.

28 October 2010

জামায়াতের সাবেক সাংসদসহ ২০ জন গ্রেপ্তার

Thu, Oct 28th, 2010 2:57 pm BdST

ঢাকা, অক্টোবর ২৮ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- রাজধানীর মিরপুরে এক বাসা থেকে জামায়াতে ইসলামীর এক সাবেক সাংসদসহ ২০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় বাসাটি থেকে ছয়টি বোমা, বোমা তৈরির সরঞ্জাম এবং জিহাদী বইও উদ্ধার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও রাজশাহী-১ আসনের সাবেক সাংসদ অধ্যাপক মুজিবুর রহমান এবং খুলনা মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমির শফিকুল আলম রয়েছেন। অন্যরা বিভিন্ন জেলার জামায়াতের সদস্য বলে জানিয়েছে পুলিশ।

আটকদের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে একটি মামলা করেছে পুলিশ।

পুলিশের মিরপুর জোনের সহকারি কমিশনার জসিম মোল্লা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, "তাদের বিরুদ্ধে অন্য ধারায়ও মামলা করা হতে পারে।"

মিরপুরের ১ নম্বর সেকশনের কালওয়ালা পাড়ার মোহর আলীর বাসায় বৃহস্পতিবার দুপুরে এ অভিযান চালানো হয় বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন মিরপুর জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার ইমতিয়াজ আহমেদ।

তিনি বলেন, "বাসাটি থেকে ছয়টি বোমা, বোমা তৈরির বেশ সরঞ্জাম এবং কিছু জিহাদী বইও উদ্ধার করা হয়েছে।"

বাড়ির মালিক মোহর আলী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, জামায়াতের মিরপুর শাখার আমীর অধ্যক্ষ মাহফুজুর রহমান তার ভবনের ২য় তলা ভাড়া নিয়ে একটি কোচিং সেন্টার খোলেন।

বৃহস্পতিবার জামায়াতের সদস্য হাবিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে একটি আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এজন্য জামায়াতের সদস্যরা কোচিং সেন্টারে আসেন বলে জানান মোহর আলী।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এলএইচ/এজে/এমআই/পিডি/১৮৪৭ ঘ.

28 September 2010

সাঈদীর আইনজীবীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা

Mon, Sep 27th, 2010 5:10 pm BdST

টাঙ্গাইল, সেপ্টেম্বর ২৭ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে ঔদ্ধত্যপূর্ণ মন্তব্য করায় দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর আইনজীবী ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলামের বিরুদ্ধে মানহানী ও রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে টাঙ্গাইলে মামলা দায়ের হয়েছে।

সোমবার সকালে মুখ্য বিচারিক হাকিম 'ক' অঞ্চল আদালতে মামলাটি দায়ের করা করেন জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার মো. ফজলুল হক বীরপ্রতীক।

মামলার শুনানি শেষে আসামির বিরুদ্ধে সমন জারি করেছেন বিচারক কাউছার আহমেদ।

মামলার আবেদনে বাদী বলেন, "১৯৭১ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে বাংলাদেশ স্বাধীন করে। এই বিষয়টি বিবাদী ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলাম অবগত থাকার পরও মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করার উদ্দেশ্যে চিহ্নিত স্বাধীনতা বিরোধী ও যুদ্ধাপরাধী দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ও মতিউর রহমান নিজামীদের পক্ষে মামলা পরিচালনা করছেন। এর মধ্য দিয়ে কার্যত তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সংবিধান ও সরকারকেই অস্বীকার করছেন।

গত ২২ সেপ্টেম্বর ঢাকায় স্থাপিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শুনানির এক পর্যায়ে ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলাম বলেন, ''একাত্তর সালে যুদ্ধ হয়েছে পাকিস্তানের সাথে ভারতের। মুজিবনগর সরকারের স্বাধীনতার ঘোষণায় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধের কথা বলা হয়নি।"

উক্ত বক্তব্যের তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ করেন ট্রাইব্যুনালের বিচারক বিচারপতি নিজামুল হকসহ অনেকে।

মামলার আবেদনে বাদী আরো বলেন, "বিবাদীর এ বক্তব্য গত ২৩ সেপ্টেম্বর বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। বিবাদীর এ বক্তব্যে প্রমাণিত হয় বিবাদী বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, সংবিধান, সরকার ও প্রচলিত আইনকে অস্বীকার করে রাষ্ট্রদ্রোহীতামূলক অপরাধ করে বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাতের ষড়যন্ত্র করছেন।"

মামলা দায়েরের পর জেলার মুক্তিযোদ্ধা ও আইনজীবীরা আদালত প্রাঙ্গণে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন। পরে তারা ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলামের কুশপুত্তলিকা দাহ করেন।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/প্রতিনিধি/কিউএইচ/কেএমএস/১৭০০ ঘ.

'হুঁশিয়ার, কাসেম সাব আ গেয়া'

Tue, Sep 28th, 2010 2:46 pm BdST

আল আমীন দেওয়ান
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম প্রতিবেদক

চট্টগ্রাম, সেপ্টেম্বর ২৮ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- ১৯৭১ সালে চট্টগ্রামে রাজাকার-আল বদরদের প্রধান নির্যাতন কেন্দ্র ছিলো আন্দরকিল্লার ফরেস্ট গেটের টেলিগ্রাফ হিল রোডের ডালিম হোটেল।

মুক্তিযোদ্ধারা বলছেন, জামায়াতে ইসলামীর নেতা মীর কাসেম আলীর তত্ত্বাবধানে চলতো ওই নির্যাতন কেন্দ্র। সেখানে হাত-পা ও চোখ বাঁধা অবস্থায় পিটিয়ে ভেঙে দেওয়া হতো বন্দিদের হাত-পা। ইট দিয়ে থেতলে দেওয়া হতো মুখ।

একাত্তরে ছাত্রসংঘের নেতা এবং বর্তমানে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য মীর কাসেমের সঙ্গে চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াত ইসলামীর বর্তমান নায়েবে আমির আফসার উদ্দিনও এ নির্যাতন কেন্দ্রের তত্ত্বাবধানে ছিলেন বলে মুক্তিযোদ্ধাদের দাবি।

যদিও তারা দুজনই একাত্তরে নির্যাতন চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।

একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত দল কয়েকদিন আগেই ডালিম হোটেলসহ চট্টগ্রামে গণহত্যা ও নির্যাতনের বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করে। তদন্ত দল জানায়, মীর কাসেমের বিরুদ্ধে অভিযোগের পক্ষে সাক্ষ্য পাওয়া গেছে।

নির্যাতন কেন্দ্রটিতে বন্দি থাকা তৎকালীন চট্টগ্রাম জয়বাংলা বাহিনীর উপ-প্রধান মুক্তিযোদ্ধা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এবং কয়েকজন নির্যাতিতের স্বজন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন একাত্তরের কথা।

নির্যাতন কেন্দ্রে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় ২৩ দিন ছিলেন জাহাঙ্গীর আলম। একাত্তরের ২৩ নভেম্বর চট্টগ্রামের কদমতলীর বাড়ি থেকে তাকে ধরে আনে বদর বাহিনীর সদস্যরা। ১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হলে মুক্তি পান তিনি।

নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে জাহাঙ্গীর আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "নির্যাতনে অর্ধমৃত মুক্তিযোদ্ধাদের হাতের লাঠি দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে আফসার উদ্দিন গর্ব করে বলতো- 'রাজাকার দেখেছিস, আমি রাজাকার'। নির্যাতন ও জিজ্ঞাসাবাদ শেষে অর্ধমৃত মুক্তিযোদ্ধা ও অন্য বন্দিদের মেরে ফেলতে নিয়ে যাওয়ার জন্য দেখিয়ে দিতো সে।"

জাহাঙ্গীর জানান, বন্দি অবস্থায় আফসার উদ্দিন একদিন তাকে রেডিওতে স্বাধীনতাবিরোধী একটি কথিকা পাঠ করতে বলেন। জাহাঙ্গীর অস্বীকৃতি জানালে তার ওপর আরো ভয়াবহ নির্যাতন চলে।

নিজের থেতলে দেওয়া ঠোঁট দেখিয়ে এ মুক্তিযোদ্ধা বলেন, "আফসার উদ্দিন এখন এই দেশেই রাজনীতি করছে। তাকে ধরে জিজ্ঞেসাবাদ করা হলে প্রমাণের জন্য তদন্ত দলের বেশি কষ্ট করতে হবে না। প্রয়োজনে আমার মুখোমুখি করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক।"

"মীর কাসেম যখন ডালিম হোটেলে আসতো, তখন বদর সদস্যরা পাহারায় থাকা অন্যদের বলত 'কাসেম সাব আ গেয়া, তোম লোক বহুত হুঁশিয়ার'। সে আসার পর বন্দিরাও আতঙ্কিত হয়ে পড়তো।"

হৃদরোগে ভুগছেন জাহাঙ্গীর। এর মধ্যেই বললেন, "এখনো বেঁচে আছি এই কুলাঙ্গারদের কুকীর্তির সাক্ষী হয়ে। আফসার উদ্দিনকে আমার মুখোমুখি করলে মীর কাসেম আলীর অপকীর্তির প্রমাণ সেই হাজির করবে।"

নির্যাতন কেন্দ্রে এ পীযূষ দাস নামে একজন ভয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে জানিয়ে জাহাঙ্গীর বলেন, তাকে দিয়ে লাশ সরানো হতো।

"মীর কাসেম এলে ঘোষণা দিতো পীযূষই। তবে পরে তাকেও মেরে ফেলা হয়", বলেন তিনি।

একাত্তরের ২৫ নভেম্বর গণতন্ত্রী পার্টির চট্টগ্রাম জেলার তখনকার সভাপতি সাইফুদ্দিন খানসহ সাত জনকে ডালিম হোটেলে রাজাকাররা ধরে নিয়ে আসে। পরে ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা তাদের মুক্ত করে।

সাইফুদ্দিন খানের স্ত্রী নূরজাহান খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "হাত-পা বেঁধে আমার স্বামীসহ সব বন্দিদের বীভৎস নির্যাতন করা হতো। এখানে নির্যাতন করে করে মেরে ফেলা হয় অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধাকে।"

নুরজাহান খানের ভাই রেজা আহম্মদ বলেন, "কেন্দ্রটির তত্ত্বাবধানে থাকা সেই সময়ের ছাত্রসংঘের নেতা মীর কাসেম আলীর নির্দেশেই ডালিম হোটেলে মুক্তিযোদ্ধা ও অন্য বন্দিদের ওপর নির্যাতন চালানো হতো।"

গত শনিবার এই ডালিম হোটেলে নূরজাহান খান ও রেজা আহম্মেদ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের কাছে একাত্তরে রাজাকার ও আল বদর বাহিনীর মানবতাবিরোধী বিভিন্ন বীভৎসতার সাক্ষ্য দেন।

তবে যুদ্ধাপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে আফসারউদ্দিন নিজেকে উল্টো মুক্তিযোদ্ধা দাবি করেন।

তিনি সোমবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "আমি মুক্তিযোদ্ধা ছিলাম। তখন জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীকে কিছু না করার জন্য আমিই অনুরোধ করেছিলাম।"

নিজেকে মুক্তিযাদ্ধা দাবি করলে কীভাবে রাজাকারদের অনুরোধ করেন- প্রশ্ন করা হলে কেনো উত্তর দেননি এ জামায়াত নেতা।

তিনি বলেন, "সে সময় আমি ফরিদপুর ছিলাম। সাংবাদিকরা এসব নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করছে।"

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এএডি/এএনএস/এমআই/১৪৩৬ ঘ.

26 September 2010

যুদ্ধাপরাধ বিচার আদালতকে উড়িয়ে দিলেন সাকা

Fri, Sep 24th, 2010 11:42 pm BdST

চট্টগ্রাম, সেপ্টেম্বর ২৪ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ, গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুন্যালের গ্রহণযোগ্যতা ও ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী বলেছেন, এটা কিসের আদালত?

একাত্তরের অপরাধ তদন্তে শুক্রবার ট্রাইব্যুনালের তদন্ত দলের চট্টগ্রামে আসার পর এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, কোনো অ্যাক্ট নেই, সিআরপিসি নেই, এটা কিসের আদালত?

তদন্ত দল রাউজান উপজেলার বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধে জড়িত থাকার সাক্ষ্য পাওয়ার পর ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম এসে নগরীর নিজ বাসভবন গুডস হিলে রাত ৮টার দিকে তিনি এ সংবাদ সম্মেলন করেন।

মুসলিম লীগ নেতা ফজলুল কাদের চৌধুরীর ছেলে সালাউদ্দিন কাদের অবশ্য তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে আসছেন। তার দাবি, মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি পড়াশোনার জন্য দেশের বাইরে ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের আরো বলেন, "ট্রাইবুন্যাল এমন কোনো সার্কাস দেখাবে না যাতে বিচার ব্যবস্থা গ্রহণযোগ্যতা হারায়। বিচার ব্যবস্থা গ্রহণযোগ্যতা হারালে সমাজ, রাষ্ট্র ও দেশের স্থিতিশীলতা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।"

ট্রাইবুনালের ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, "ট্রাইব্যুনাল আমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে করবে না কেন?"

এ বক্তব্যের ব্যাখা দিয়ে সাংসদ সালাউদ্দিন কাদের বলেন, "আমি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুজনেরই একটা ঝুঁকি আছে। ৭১ সালে আমরা দুজনই হিন্দুস্থান যাই নি এবং আমাদের কোনো মুক্তিযোদ্ধা সনদ নেই। তাই ট্রাইবুন্যালের সামনে আমরা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে আছি।"

দেশে সাংবিধানিক ধারা অব্যাহত রাখার অনুকূল পরিবেশ নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, "সরকারকে দায়িত্বশীল বক্তব্য দিতে হবে। সরকার এমন কোনো পথে হাঁটবে না যাতে চট্টগ্রামের মানুষ নিজেদের জাতীয় সত্ত্বা থেকে বিচ্ছিন্ন করার প্রয়াস পায়।"

ট্রাইবুন্যালের তদন্ত পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে সালাউদ্দিন কাদের বলেন, "৩৯ বছরে যে ঘটনার সাক্ষী-প্রমাণ পাওয়া গেল না তারা ছয় ঘণ্টায় তার প্রমাণ পেয়ে গেলেন?"

ট্রাইব্যুনালকে সঠিক তদন্তের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, "ট্রাইব্যুনাল যেন স্থায়ী থাকে। কয়েকটি বিচার করে যেন তাদের কাজ শেষ না হয়।"

কুণ্ডেশ্বরী ঔষধালয়ের মালিক নূতন চন্দ্র সিংহকে একাত্তরের ১৩ এপ্রিল রাউজানের গহিরায় তার বাড়িতেই হত্যা করা হয়। একই এলাকায় সালাউদ্দিন কাদেরের বাড়ি।

নতুন চন্দ্র সিংহের হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন কি না� এমন প্রশ্নের জবাবে সালাউদ্দিন কাদের বলেন, "৭১ সালের এপ্রিল মাসের শুরুর দিকে আমি পাকিস্তান চলে যাই। যাওয়ার আগে ঢাকায় শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাৎ করেছিলাম।"

"মরহুম ফজলুল কাদের চৌধুরীর জ্যৈষ্ঠ সন্তান হিসেবে আমি গর্ব বোধ করি। আমার বাবা অখণ্ড পাকিস্তানের পক্ষ নিয়েছিলেন। তখন আমি কোনো রাজনীতি করতাম না", বলেন তিনি।

চট্টগ্রামকে সা�প্রদায়িক স�প্রীতির শহর হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, "বিনীত অনুরোধ করছি, যেন এমন কোনো উস্কানি দেওয়া না হয় যাতে সা�প্রদায়িক স�প্রীতি নষ্ট হয়।"

নূতন চন্দ্র সিংহের বড় ছেলে সত্য রঞ্জন সিংহ ১৯৭৯ সালের সংসদ নির্বাচনে তার প্রস্তাবক ছিলেন দাবি করে সালাউদ্দিন কাদের বলেন, নির্বাচন কমিশনে সেই ফরম রক্ষিত আছে।

রাউজান থানায় তার বিরুদ্ধে কোনো হত্যা মামলার বিষয়ে তিনি অবগত নন বলে জানান।

সত্য রঞ্জন সিংহ ১৯৭২ সালের ২৯ জানুয়ারি নূতন চন্দ্রকে হত্যার অভিযোগে সালাউদ্দিন কাদের ও তার বাবা ফজলুল কাদেরকে আসামি করে রাউজান থানায় একটি হত্যামামলা দায়ের করেন।

ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সম্পর্কে সালাউদ্দিন কাদের বলেন, "যতদূর জেনেছি তারা আমার প্রতিপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছেন। কোনো সাধারণ মানুষের সাক্ষ্য নেননি। নিহতের পরিবারের কেউ বলেননি আমি ১৯৭১ সালের ১৩ এপ্রিল ঘটনাস্থলে ছিলাম। প্রফুল্ল চন্দ্র সিংহ বলেছেন তারা শুনেছেন।

তদন্ত দলের কাছে নূতন চন্দ্রের হত্যার ঘটনা তুলে ধরেন তার ছেলে প্রফুল্ল চন্দ্র সিংহ।

ফজলুল কাদের চৌধুরীকে হত্যা করা হয়েছে দাবি করে সালাউদ্দিন কাদের বলেন, "শুনেছি এতে প্রফুল্ল চন্দ্র সিংহ জড়িত ছিলেন।

"শুধু একজনের বাবার হত্যার বিচার করলে হবে না। আমিও বাবা হত্যার বিচার চাই।"

ফজলুল কাদের মুক্তিযুদ্ধের পর কারাবন্দি অবস্থায় মারা যান।

১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ, গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার গত ২৫ মার্চ তদন্ত সংস্থা, আইনজীবী প্যানেল ও ট্রাইব্যুনাল গঠনের ঘোষণা দিলে বহু প্রতীক্ষিত এই বিচারের প্রক্রিয়া শুরু হয়।

এরপর বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোটের অন্যতম শরিক জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজমীসহ দলটির কয়েকজন শীর্ষ নেতাকে বিভিন্ন অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ট্রাইব্যুনাল তাদের গ্রেপ্তার রাখারও নির্দেশ দিয়েছে।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/সিএম/এএডি/এজে/জিএনএ/১১৩৬ ঘ.

একদিনে শতাধিক হিন্দুকে হত্যা

Fri, Sep 24th, 2010 10:32 pm BdST

মিন্টু চৌধুরী
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম প্রতিবেদক
চট্টগ্রাম, সেপ্টেম্বর ২৪ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- একাত্তরের ১৩ এপ্রিল রাউজানের তিনটি এলাকায় দিনভর পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে মুসলিম লীগের সশস্ত্র কর্মী ও রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা হত্যা করে শতাধিক হিন্দু নর-নারীকে।

সেদিন কুণ্ডেশ্বরী, জগৎমল্ল ও ঊনসত্তর পাড়ার হামলায় নিহত হয় কুণ্ডেশ্বরী ঔষধালয়ের মালিক অধ্যক্ষ নূতন চন্দ্র সিংহসহ ১০৭ জন।

হত্যাযজ্ঞ থেকে বেঁেচ যাওয়া কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী ও তাদের স্বজন শুক্রবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে দিয়েছেন সেদিনের সে ঘটনার বিবরণ।

ঘটনা ৩৯ বছর আগের হলেও তা যেন তাদের কাছে 'এইতো সেদিনের'। সে স্মৃতি মনে উঠলে আজও তারা শিউরে ওঠেন, হয়ে পড়েন হতবিহ্বল।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত দলের কাছে 'কোথায়-কীভাবে' সেদিন পাকবাহিনী তাদের এদেশীয় দোসরদের সহায়তায় ওই হত্যাকাণ্ড চালিয়েছিলো শুক্রবার তা বর্ণনা করে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন তারা।

রাউজানের দুটি স্থানের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও তার বাবা তৎকালীন মুসলিম লীগ নেতা ফজলুল কাদের চৌধুরীর সম্পৃক্ততার বিষয়টি উঠে এসেছে।

সালাউদ্দিন কাদের অবশ্য তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে আসছেন। তার দাবি, মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি পড়াশোনার জন্য দেশের বাইরে ছিলেন।

একাত্তরের ১৩ এপ্রিল সকালে কুণ্ডেশ্বরীতে নিজ বাড়িতে নূতন চন্দ্র সিংহকে, দুপুরে এর তিন কিলোমিটার দূরে জগৎমল্ল পাড়ায় একই পরিবারের সাতজনসহ ৩৭ জন নারী-পুরুষ এবং বিকাল ৫টার দিকে পাহাড়তলীর ঊনসত্তর পাড়ায় ৬৯ জনকে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডের শিকার সকলেই সংখ্যালঘু হিন্দু স�প্রদায়ের।

কুণ্ডেশ্বরী ওষধালয়ের প্রতিষ্ঠাতা নূতন চন্দ্র সিংহকে নিজ বাড়ির জগদ্ধাত্রী মন্দিরের সামনে হত্যা করা হয় বলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত দল ও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের কাছে জানিয়েছেন তার বড় ভাইয়ের ছেলে ভূপতি চন্দ্র সিংহ (৬৩)।

নূতন চন্দ্র সিংকে গুলি করে হত্যার স্থানটি দেখিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, "একাত্তরের ১৩ এপ্রিল সকাল ৯টায় সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী পাক আর্মিদের সঙ্গে নিয়ে কুণ্ডেশ্বরী ভবনে আসে। এসময় আর্মিরা কাকার (নূতন সিং) সঙ্গে কথা বলে সন্তুষ্ট হয়ে ফিরে যায়।

"কিন্তু সে (সাকা চৌধুরী) রাউজান কলেজ ক্যাম্প থেকে ১০টার দিকে দুই গাড়ি সেনা নিয়ে কুণ্ডেশ্বরী ভবনে আসে। এসময় তারা ভবনের গেইট ভেঙ্গে প্রবেশ করে।"

তখন সাকা চৌধুরীর সঙ্গে স্থানীয় মুসলিম লীগ সদস্য ও রাজাকার আবদুল মাবুদ, নবাব মিয়া, গোলাম আলী, এলাহী বক্স ও আবদুস সালাম ছিলো বলে জানান ভূপতি সিংহ।

তিনি বলেন, "সে সময় আমি প্রাণভয়ে ভবন থেকে এক-দেড় কিলোমিটার দূরে বিনাজুরী গ্রামে আশ্রয় নেই। পরে তিনটি গুলির শব্দ শুনতে পাই এবং তার কিছু পরে ঘটনাস্থলে আসি।

কুণ্ডেশ্বরী ভবনের প্রবেশ পথের অদূরে পুকুর পাড়ে তার 'কাকাকে দাহ করা হয়' বলে কন্নাজড়িত কণ্ঠে জানান ভূপতি সিংহ।

নূতন চন্দ্র সিংহর ছেলে প্রফুল্ল রঞ্জন সিংহ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "সাকা চৌধুরীই পাক বাহিনীকে আমাদের বাড়িতে এনে বাবাকে গুলি করে হত্যা করিয়েছিলো।"

রঞ্জন সিংহ জানান, ঘটনার দুই দিন আগে পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে তিনি দেশ ত্যাগ করেন। তৎকালীন ইউপি চেয়ারম্যান আমানত খাঁ চৌধুরী তাদেরকে এ তথ্য জানান।

মল্লপাড়ায় ৩৭ জন হত্যার সাক্ষী জোৎস্নাপ্রভা

কুণ্ডেশ্বরীর দুই কিলোমিটার দূরে জগৎমল্ল পাড়ার ৮০ বছর বয়সী জোৎস্নাপ্রভা এখন আর আগের মতো শুনতে পান না, চোখেও দেখেন না ভালভাবে।

একাত্তরের ১৩ এপ্রিল দুপুরে স্বামীসহ সাতজনকে হারিয়েছেন তিনি। তার চোখের সামনে ৩৭ জনকে লাইনে দাঁড় করিয়ে ব্রাশ ফায়ারে হত্যা করা হয়। নির্মম ওই স্মৃতি নিয়ে আজও বেঁচে আছেন তিনি।

অভিযোগ রয়েছে, নূতন চন্দ্র সিংহকে হত্যার পর ফেরার পথে সাকা চৌধুরী ও তার অনুগতরা পাকবাহিনীকে এনে এ হত্যাযজ্ঞ চালায়।

শুক্রবার দুপুরে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইবুনালের তদন্ত দল যখন জোৎস্নাপ্রভার বাড়িতে পৌঁছায় তখনো তিনি বারান্দায় বসা। অনেক কষ্টে স্মৃতি হাতড়ে তদন্ত দলের কাছে সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দেন তিনি।

তার স্বজনদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, জ্যোৎস্নাপ্রভা চৌধুরীর বাড়ির উঠানে সেদিন জড়ো করা হয়েছিলো প্রায় ৪০ জনকে। পরে তাদের ব্রাশ ফায়ার করা হয়। গুলির শব্দে লাশের স্তুপের ওপর পড়ে জ্ঞান হারিয়ে প্রাণে বেঁচে যান জ্যোৎস্নাপ্রভা; হারান স্বামীসহ সাতজনকে।

তার বাড়ির অদূরে শহীদ ৩৫ জনের নামফলক সম্বলিত একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়েছে। তদন্ত দল ও উপস্থিত সাংবাদিকরা শহীদদের স্মরণে শুক্রবার সেখানে এক মিনিট নিরবতা পালন করেন।

ঊনসত্তর পাড়ায় দাহর পরিবর্তে মাটিচাপা

ঊনসত্তর পাড়ার মহাজন বাড়ির পুকুর ঘাট সংলগ্ন পাড় দেখিয়ে অজিত মহাজন (৫৫) বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "এখানেই ৭০-৭২ জন নারী-পুরুষকে দাঁড় করিয়ে ব্রাশ ফায়ার করা হয়।"

ব্রাশ ফায়ারে অজিতের বাবা যোগেশ মহাজন, বড় ভাই রণজিত মহাজনসহ হিন্দু স�প্রদায়ের ৬৯ জন প্রাণ হারান।

অজিত মহাজন জানান, পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসরদের ভয়ে ওই হিন্দু পাড়ার সব যুবক পালিয়ে থাকায় নিহত ৬৯ জনকে ধর্মীয় মতে দাহ করা হয়নি। মহাজন বাড়ির ওই পুকুর সংলগ্ন একটি খাড়িতেই কোনরকমে মাটিচাপা দেওয়া হয়।

হত্যাকাণ্ডের সময় তার মা হরিলতা মহাজন ও বৌদি মিনতি মহাজনকে পুকুরের একপাশে বসিয়ে রাখা হয়েছিলো বলেও তিনি জানান।

অিজিত বলেন, "স্থানীয় মুসলিম লীগের নেতারা পাকিস্তানি বাহিনীকে আমাদের পাড়ায় নিয়ে এসে এ হত্যাকাণ্ড চালায়।"

তবে ওই হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া পাক বাহিনীর এ দেশীয় দোসরদের ব্যাপারে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানাতে পারেননি তিনি।

অজিত অভিযোগ করেন, ঊনসত্তর পাড়ায় হত্যাকাণ্ডে নিহতদের পরিবারের সদস্যরা এখনো কোনো স্বীকৃতি পায়নি।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এমসি/এজে/জিএনএ/১০৩০ ঘ.

'জবাইয়ে সেই দৃশ্য এখনো তাড়া করে'

Sun, Sep 26th, 2010 2:35 pm BdST

আল আমীন দেওয়ান
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম প্রতিবেদক

চট্টগ্রাম, সেপ্টেম্বর ২৬ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- একাত্তরের ১০ নভেম্বর। এখন যা পাহাড়তলী বধ্যভূমি নামে পরিচিত, সেখানে এক এক করে জবাই করা হচ্ছিলো বাঙালিদের। জবাইয়ের দৃশ্য গুণতে গুণতে জ্ঞান হারাতে বসেছিলেন প্রাণে বেঁচে যাওয়া সেই সময়ের ওয়াসার মালামাল সরবরাহকারী গোফরান ভূঁইয়া।

বধ্যভূমির কাছেই টিলার ওপর জঙ্গলে বসে সকাল সাড়ে ৬টা থেকে বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ১২শ ৫২টি জবাইয়ের দৃশ্য দেখেছিলেন তিনি। দেখেছিলেন অসংখ্য মৃত মানুষ এনে স্তূপ করতে।

পাকবাহিনী ও তাদের দোসররা সেদিন চট্টগ্রামের পাহাড়তলীর বধ্যভূমিতে হত্যা করেছিল কয়েক হাজার বাঙালিকে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত দল শনিবার ওই বধ্যভূমিতে যায়, সাক্ষ্য নেয় প্রত্যক্ষদর্শী বিভিন্ন জনের।
গোফরান ভূঁইয়ার বয়স এখন ৬৮ বছর। একাত্তরের ১০ নভেম্বর ভোরে পাহাড়তলীর পাঞ্জাবী লেইন এলাকায় আকবর শাহ মাজারের নিচে নিজের মুদি দোকান থেকে বিহারিরা তাকে ধরে নিয়ে যায়। বধ্যভূমি থেকে পালিয়ে তিনি পাহাড়ের জঙ্গলে আশ্রয় নেন। নিরাপদ স্থানে সরে পড়তে অপেক্ষা করতে থাকেন রাত নামার।

গোফরান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "ঘুমের মধ্যে আজও সেই জবাই দৃশ্য দুঃস্বপ্ন হয়ে দেখা দেয়। লাইনে দাঁড় করিয়ে একসঙ্গে ৫-১০ জন করে জবাই করছিলো বিহারিরা। কিছু সময় পরপর লাশ এনে জড়ো করছিলো বধ্যভূমিতে।"

"গুনেছিলাম তখন ১২শ ৫২টি জবাই দৃশ্য। এখনো মনে আছে", বলেন তিনি। এর পরপরই বললেন, "আমার জায়গা জমি-টাকাপয়সা যা আছে সব দিয়ে দেবো। এই বিচারের জন্য আমি সব করতে রাজি আছি।"

গোফরান ছাড়া আরো কয়েকজন জানালেন সেই সময়ের কথা। ১০ নভেম্বর বর্তমান চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকা থেকে সাবেক রেল কর্মচারী কাজী আমিনুল ইসলাম ও তার বড় ভাই কাজী আনোয়ার হোসেনসহ মোট ৪০ জনকে বধ্যভূমিতে ধরে আনে বিহারিরা। তবে পরিচিত বিহারীর সহায়তায় প্রাণে বাঁচেন তারা।

আমিনুল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "সেদিন চোখের সামনে অনেককে জবাই হতে দেখেছি।"

স্বজন হারানো মুক্তিযোদ্ধা গাজী সালেহ উদ্দিন ঊনচল্লিশ বছর ধরে আগলে রেখেছেন একটি ছবি; বধ্যভূমিতে কঙ্কালের স্তূপের।

একাত্তরের ১০ নভেম্বর পাঞ্জাবী লেইন এলাকা থেকেই তার ছোটভাই, চাচা ও দুই চাচাতো ভাইসহ ১২০ জনকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। বয়সে ছোট হওয়ায় তার ছোটভাই গাজী কামাল উদ্দিন বেঁচে গেলেও বাকিরা কেউ ফিরে আসেনি।

ছেলের খোঁজে বেরিয়ে বাবা আলী করিমও হারিয়ে যান চিরতরে। তাকেও হত্যা করা হয় এই বধ্যভূমিতে। কারো লাশও উদ্ধার করা যায়নি।

সালেহ উদ্দিন সাদা কালো ওই ছবি দেখেন, আর ভাবেন, হয়তো ছবির এই কঙ্কাল স্তূপেই আছে তার বাবা, চাচা ও দুই চাচাতো ভাইয়ের দেহাবশেষ।

সালেহ উদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বধ্যভূমিতে লাশের পর লাশ ছোট টিলার মত স্তূপ হয়ে পড়ে ছিলো দিনের পর দিন।

তিনি জানালেন, স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের শুরুর দিকে ছবিটি তুলেছিলেন ফখরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এএডি/এমআই/১৪৩০ ঘ.

21 September 2010

পিরোজপুরে একাত্তরে ৩০ হাজার মানুষ হত্যা, দাবি তদন্তদলের

Mon, Sep 20th, 2010 11:24 pm BdST

পিরোজপুর, সেপ্টেম্বর ২০ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও রাজাকার-আলবদরদের হাতে পিরোজপুরে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ হত্যার তথ্য পেয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত দল।

সোমবার জেলার বিভিন্ন স্থানে যুদ্ধাপরাধ সংঘটনের স্থান ও মানবতাবিরোধী অপরাধের ওপর দ্বিতীয় দফা সাক্ষ্য গ্রহণের প্রথমদিন চার সদস্যের তদন্ত দল প্রধান এ দাবি করেন।

গত ১৮ অগাস্ট তদন্ত দল প্রথম পিরোজপুরে আসে। এ সময় তারা দু'দিনে ৩৫ জনের সাক্ষ্য নেন এবং জবানবন্দি রেকর্ড করেন।

তারা জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীসহ নয়জনের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের পৃথক দু'টি মামলায় ১৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।

তদন্ত দলের প্রধান পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সহকারী পুলিশ সুপারিনটেনডেন্ট (এএসপি) মো. হেলাল জানান, পিরোজপুরে মুক্তিযুদ্ধের সময় ২৯ হাজার ৯০৬ জনকে হত্যার তথ্য পাওয়া গেছে।

তিনি জানান, মুক্তিযুদ্ধের সময় পিরোজপুরের পাড়েরহাট, জিয়ানগরসহ এ অঞ্চলে কয়েক হাজার মানুষ হত্যা করা হয়েছে। জেলায় মোট ১২টি বদ্ধভূমি রয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার-আলবদর বাহিনী এ অঞ্চলে অন্তত তিনশ নারীর ওপর নির্যাতন চালায়।

এছাড়া তারা তৎকালীন মহকুমা শহরে ট্রেজারিসহ প্রত্যন্ত এলাকায় ৩৫টি বাড়িতে লুটপাট ও ১৪৬টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে বলে জানান তিনি।

তদন্ত দলের অপর তিন সদস্য হলেন- সিআইডির ইন্সপেক্টর ওয়ায়দুল্লাহ, নূর হোসেন ও শাহজাহান।

সোমবার তদন্ত দল জিয়ানগর উপজেলার পাড়েরহাট রাজলক্ষ্মী উচ্চ বিদ্যালয়ে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীসহ নয়জনের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের পৃথক দু'টি মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ করে।

সাঈদীর বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধে সময় গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের অভিযোগে মামলা দু'টি করা হয়।

এর মধ্যে সদর উপজেলার বাদুরা গ্রামের প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা সইজউদ্দীন পশারীর ছেলে মানিক পশারী গত ২০০৯ সালের ১২ অগাস্ট মুখ্য বিচার বিভাগীয় হাকিম আদালতে সাঈদীসহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন।

একই বছরের ৩১ অগাস্ট জিয়ানগর উপজেলার টেংরাখালী গ্রামের জমিরউদ্দিনের ছেলে মুক্তিযোদ্ধা মাহাবুবুল আলম একই অভিযোগে সাঈদী ও তার ভাই মোস্তফা সাঈদীসহ চারজনের বিরুদ্ধে অপর মামলাটি করেন।

গত ২৯ জুন জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ও নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়।

সোমবার তদন্ত দল সদরের বলেশ্বর খেয়াঘাট বধ্যভূমি, হুলারহাট স্টিমারঘাট বধ্যভূমি, মণ্ডলপাড়া গণহত্যার স্থান, তেজদাসকাঠী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বধ্যভূমি, জুজখোলা বধ্যভূমি পরিদর্শন করে।

সন্ধ্যায় তারা পিরোজপুর মুক্তিযোদ্ধা সংসদে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।

তদন্ত দলের প্রধান জানান, মঙ্গলবার তারা স্বরূপকাঠী উপজেলার কুরিয়ানা পেয়ারা বাগান বদ্ধভূমি পরিদর্শন করবেন।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/প্রতিনিধি/জেবি/ডিডি/এইচএ/২৩১০ ঘ.

7 September 2010

জামায়াত নেতাদের মুক্তির জন্য হুমকিদাতা গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক | তারিখ: ০৭-০৯-২০১০

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর গ্রেপ্তার হওয়া শীর্ষ নেতাদের মুক্তির জন্য হুমকিদাতা মারুফ রায়হানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) আজ মঙ্গলবার তাঁকে নীলফামারী থেকে গ্রেপ্তার করে।

রাজধানীর ডিবি কার্যালয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার এ কে এম শহীদুল এক সংবাদ সম্মেলনে হুমকিদাতা মারুফ রায়হানকে সাংবাদিকদের সামনে হাজির করেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, মারুফের বাড়ি নীলফামারীর শেরপুর উপজেলার নতুন বাবু পাড়ার সাদ্দাম মোড়ে। সেখান থেকেই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। মারুফ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার। এলাকায় তাঁর একটি কম্পিউটার প্রশিক্ষণের দোকান আছে।

এ কে এম শহীদুল আরও জানান, কোন সাইবার ক্যাফে থেকে ই-মেইলটি পাঠানো হয়েছিল, ডিবি পুলিশ তা চিহ্নিত করেছে। এ ছাড়া ই-মেইলে হুমকি দেওয়ার সময় যে তিনটি মুঠোফোনের নম্বর উল্লেখ করা হয়েছিল, তার সূত্র ধরেই নীলফামারী থেকে মারুফকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত ২৫ আগস্ট হাইকোর্টের রেজিস্ট্রারকে ই-মেইলে হুমকি দিয়ে বলা হয়, ‘জামায়াতের গ্রেপ্তার হওয়া শীর্ষ নেতাদের ঈদের আগে মুক্তি দেওয়া না হলে গুরুত্বপূর্ণ ভবন উড়িয়ে দেওয়া হবে।’ ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ৩১ আগস্ট ই-মেইলটি দেখতে পান এবং ওই দিনই রেজিস্ট্রারের দপ্তর থেকে রমনা থানাকে বিষয়টি জানানো হয়।

1 September 2010

জামায়াত-শিবিরের ২ নেতাকর্মী জেলগেটে গ্রেপ্তার

Mon, Aug 30th, 2010 10:12 pm BdST

রাজশাহী, অগাস্ট ৩০ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- একটি বিস্ফোরক মামলায় রাজশাহীর জামায়াত ও শিবিরের ছয় নেতা-কর্মী সোমবার খালাস পেয়েছেন।

বিকালে কারাগার থেকে বের হওয়ার সময় ফটক থেকে তাদের মধ্যে দু'জনকে আবার গ্রেপ্তার করা হয়।

সোমবার রাজশাহীর অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম রুহুল আমিন ওই ছয়জনকে খালাস দেন।

এরা হলেন- রাজশাহী মহানগর জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি আবু বকর সিদ্দিক, রাজপাড়া থানা আমির আব্দুল মালেক, সেক্রেটারি মাহবুবুল আহসান, নগরীর ২ নম্বর ওয়ার্ড সেক্রেটারি মোখলেছুর রহমান, ১ নম্বর ওয়ার্ড শিবির সেক্রেটারি মোহাম্মদ হাসান এবং ২ নম্বর ওয়ার্ড শিবির সেক্রেটারি নাইমুল হক।

রায় ঘোষণার সময় তাদের আদালতে হাজির করা হয়।

বিকাল ৫টার দিকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বের হওয়ার সময় এই ছয়জনের মধ্যে জামায়াত নেতা মোখলেছুর রহমান ও শিবির নেতা মোহাম্মদ হাসানকে আরেকটি মামলায় গ্রেপ্তার করে মতিহার পুলিশ।

মতিহার থানার ওসি আবুল খায়ের জানান, গত ৮ ফেব্র"য়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশের উপর হামলা ও সরকারি কাজে বাধাদানের অভিযোগের মামলায় এই দু'জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তাদের থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে।

গত ৮ ফেব্র"য়ারি রাতে হলে হলে শিবির নেতা-কর্মীরা ছাত্রলীগের উপর হামলা করে। এতে এসএম হলের ছাত্রলীগকর্মী ফারুক হোসেন খুন হন। পুলিশসহ আহত হয় অর্ধশত নেতা-কর্মী। এসব ঘটনায় মতিহার থানায় ১৪টি মামলা হয়। এর মধ্যে পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় একটি মামলা হয়।

এদিকে বিস্ফোরক মামলার নথি থেকে জানা যায়, গত ৩০ জুন রাত ৮টার দিকে রাজশাহীর জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা ঢাকায় দলীয় তিন শীর্ষ নেতাকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে নগরীতে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলকারিরা নগরীর সোনাদীঘির মোড়ে ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়। ওই সময় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে জামায়াত-শিবিরের ছয় নেতাকর্মীকে আটক করে।

ওই রাতেই বোয়ালিয়া থানায় তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে একটি মামলা হয়। ১৪ জুলাই ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/প্রতিনিধি/ডিডি/২১৫৮ ঘ.

'ছাত্রদল-শিবির টেনে নিজের ভবিষ্যৎ নষ্ট করবেন না'

Tue, Aug 31st, 2010 8:14 pm BdST

ঢাকা, অগাস্ট ৩১ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের কর্মী দলে টেনে নিজের ভবিষ্যৎ 'নষ্ট' না করতে ছাত্রলীগ নেতাদের সতর্ক করেছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা।

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে মঙ্গলবার দুপুরে ১৫ অগাস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ছাত্রলীগের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ সতর্কতা উচ্চারণ করেন তিনি।

"গ্র"পিং শক্তিশালী করতে ছাত্রলীগে যারা ছাত্রদল ও শিবিরকর্মীদের ঢুকিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে," বলেন হাসিনা। তিনি বলেন, "অনুপ্রবেশকারিদের ছাত্রলীগে যারা টেনেছে তাদের প্রত্যেকের তালিকা সংগ্রহ করা হয়েছে।"

বিভিন্ন অপরাধে জড়িত প্রায় অর্ধ শতাধিক ছাত্রলীগ নেতার বহিষ্কারাদেশে কেন্দ্রীয় নেতাদের ধন্যবাদ জানিয়ে আওয়ামী লীগ প্রধান বলেন, "প্রয়োজনে আরো বহিষ্কার করতে হবে। যারা অপরাধ করবে তাদের কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।"

হাসিনা বলেন, "মিলিটারি ডিক্টেটররা ক্ষমতায় এসে অর্থবিত্ত, চাকচিক্য ও সম্পদের প্রলোভন দেখিয়ে ছাত্রদের চোখ ঝলসে দিয়েছে। সমাজে নানা ধরনের অপকর্ম করার সুযোগ করে দিয়েছে। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা হারিয়ে গেছে তাদের কারণে।"

প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব তার কাছে ভোগের বিষয় নয় বলেও মন্তব্য করেন হাসিনা। দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোই তার রাজনীতির লক্ষ্য বলে জানান হাসিনা।

ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদ হাসানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আলোচকদের মধ্যে আরো ছিলেন, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলির সদস্য ওবায়দুল কাদের, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আআমস আরেফিন সিদ্দীক, অধ্যাপক হামিদা বানু ও সাংবাদিক মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল। আলোচনা সভা পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এসইউএম/পিডি/২০০৮ ঘ.

ঢাকার ৩ মামলায় শিবির নেতা মর্তুজা গ্রেপ্তার

Tue, Aug 31st, 2010 8:45 pm BdST

রাজশাহী, অগাস্ট ৩১ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম) - ছাত্রশিবিরের সমাজ কল্যাণ ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক গোলাম মর্তুজাকে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের তিনটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

তাকে দুই-একদিনের মধ্যে ঢাকায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে বলে জানিয়েছে রাজশাহী নগরীর রাজপাড়া থানা পুলিশ।

পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে শিবিরের কেন্দ্রীয় এই নেতাকে মঙ্গলবার কারাগারে পাঠানো হয়।

বিকালে রাজশাহীর রাজপাড়া থানা পুলিশ মর্তুজাকে মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে।

হাকিম জিয়াউর রহমান তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

শনিবার রাতে রাজশাহীর র‌্যাব-৫ এর একটি দল নগরীর বাইপাস এলাকা থেকে মর্তুজাকে আটক করে।

রোববার তাকে রাজপাড়া থানায় হস্তান্তর করা হয়। ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে সোমবার মর্তুজাকে একদিন হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

মর্তুজার বাড়ি রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার বামনদিঘী গ্রামে।

রাজপাড়া থানার ওসি শহীদুল হক সাংবাদিকদের জানান, মর্তুজার কাছ থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে।

তিনি জানান, মর্তুজাকে ঢাকার মোহাম্মদপুরের তিনটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ দুই-এক দিনের মধ্যে তাকে ঢাকায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করবে।

এর আগে র‌্যাব-৫ রাজশাহীর সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ৩ অগাস্ট মোহাম্মদপুরে শিবিরের একটি মেস থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র, বিস্ফোরক ও সাংগঠনিক বইসহ জামায়াতের সহযোগী শিবিরের চার নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা নাশকতার পরিকলপনা করছিলো বলে জিজ্ঞাসাবাদে র‌্যাবকে জানায়। ওই নাশকতার পরিকল্পনার সঙ্গে মর্তুজার সরাসরি স�পৃক্ততা ছিলো।

র‌্যাবের জিজ্ঞাসবাদে মর্তুজা জানান, জামায়াতের শীর্ষ নেতারা আটকের পর তৃণমূলের কর্মীরা ভীত হয়ে পড়েছে। তাদের মনোবল বাড়াতে এবং মিছিল মিটিং-এ বিস্ফোরক দ্রব্য ব্যবহারের জন্য প্রস্তুতি নেয় তারা।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/প্রতিনিধি/এমএসবি/২০৪৪ ঘ.

18 August 2010

সাঈদীর যুদ্ধাপরাধ মামলার তদন্ত শুরু

Wed, Aug 18th, 2010 8:25 pm BdST

পিরোজপুর, অগাস্ট ১৮ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ মামলার তদন্ত শুরু হয়েছে।

গত বছরের ১২ ও ৩১ অগাস্ট পিরোজপুরের মুখ্য বিচার বিভাগীয় হাকিম আদালতে গণতহ্যা, সংখ্যালঘু স�প্রদায়ের বাড়িঘরে লুটপাট ও অগ্নি সংযোগের অভিযোগে সাঈদীর বিরুদ্ধে দু'টি মামলা হয়।

বুধবার সকাল ৯টার দিকে তদন্ত দলের তিন সদস্য পিরোজপুর সদর উপজেলার বাদুরা গ্রামে যান।

দলটির প্রধান হলেন- সহকারী পুলিশ সুপার মো. হেলাল উদ্দিন। সদস্যরা হলেন- পুলিশ পরিদর্শক মো. ওবায়দুল্লাহ ও নূর হোসেন।

বাদুরা গ্রামের মানিক পশারি (৬৫) গত বছরের ১২ অগাস্ট সাঈদীসহ পাঁচজনকে আসামি করে একটি মামলা করেন।

তদন্ত দলটি মুক্তিযুদ্ধের সময় ওই গ্রামে রাজাকার ও আলবাদর বাহিনীর লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।

এ সময় সেখানে পিরোজপুর সদর থানার ওসি মো. শেখ আবু যাহিদ ও স্থানীয় সাংবাদিকরাও উপস্থিত ছিলেন।

বাদি মানিকের বাড়ির পাশে খোলা স্থানে বসে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত তারা বাদি ও ১২ জন সাক্ষীর জবানবন্দি রেকর্ড করেন। আরো ৪/৫ জন সাক্ষী এলাকায় না থাকায় তাদের সাক্ষ্য নেওয়া যায়নি।

জবানবন্দি গ্রহণকালে স্থানীয় নারী-পুরুষ এসে ভিড় করেন। এ সময় অনেকেই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।

সেসব ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে কোনো কোনো সাক্ষী কান্নায় ভেঙে পড়েন।

দুপুরের দিকে তদন্ত দলের প্রধান এএসপি হেলাল উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, "আমরা মানিক পশারির দায়ের করা মামলার ১২ জন সাক্ষীর জবানবন্দি রেকর্ড করেছি। আরো কয়েকজন সাক্ষী সাগরে মাছ ধরতে যাওয়ায় তাদের জবানবন্দি পরে নেওয়া হবে।"

তিনি জানান, বৃহস্পতিবার তারা অপর মামলাটির তদন্ত করতে জেলার জিয়ানগর উপজেলার টেংরাখালী গ্রামে যাবেন।

ওই মামলাটির বাদি হলেন- টেংরাখালী গ্রামের মাহবুবুল আলম (৫৫)।

জামায়াতের সাবেক সাংসদ সাঈদীর বাড়ি জিয়ানগর উপজেলার সাউথখালী গ্রামে।

সাঈদীর বিরুদ্ধে করা মামলা দুটি গত ২১ জুলাই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/প্রতিনিধি/ডিডি/এমএসবি/২০২২ ঘ.

16 August 2010

যুদ্ধাপরাধ: আইন বাতিল চেয়েছেন দুই জামায়াত নেতা

Mon, Aug 16th, 2010 5:59 pm BdST

ঢাকা, অগাস্ট ১৬ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)-যুদ্ধাপরাধের বিচারের পথ উন্মুক্তকারী সংবিধানের প্রথম সংশোধনী বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেছেন গ্রেপ্তারকৃত সন্দেহভাজন যুদ্ধাপরাধী জামায়াতে ইসলামীর দুই নেতা।

দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামান ও আবদুল কাদের মোল্লার পক্ষে দায়ের আবেদনটিতে সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক দেখিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের কয়েকটি ধারা বাতিলের দাবি জানানো হয়েছে।

জামায়াত নেতা ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক সোমবার বিচারপতি আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা ও কাজী রেজা-উল হকের বেঞ্চে আবেদনটি দায়ের করেন।

মঙ্গলবার এর শুনানি হবে বলে জানান তিনি।

আবেদনে স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন সচিব ও ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যানকে প্রতিপক্ষ করা হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, "সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে ৪৭ ও ৪৭(ক) এর ৩ অনুচ্ছেদের সংযোজন করা হয়েছে। অনুচ্ছেদ দুটিতে গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ, মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য সশস্ত্র বাহিনী, সহায়ক বাহিনী বা যুদ্ধবন্দিকে দণ্ড দেওয়ার কোনো আইন সংবিধানের সঙ্গে অসামাঞ্জস্য হলেও বাতিল হবে না বলে বিবৃত আছে।"

এসব অপরাধের ক্ষেত্রে অভিযুক্ত ব্যক্তির সাংবিধানিক অধিকার প্রযোজ্য হবে না বলেও অনুচ্ছেদ দুটিতে বলা হয়।

আবেদনে আরো বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের ৩ (১) ধারায় বিচারের ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের কোনো মৌলিক অধিকার থাকবে না বলা হয়েছে।

জামায়াত নেতারা বলছেন, ৬ (১) ধারায় হাইকোর্টের বিচারপতিকে ট্রাইব্যুনালের বিচারপতি নিয়োগের যে বিধান করা হয়েছে তা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

ওই আইনে ৬ (৩) ধারায় ট্রাইব্যুনাল গঠনের আদেশ, কার্যক্রম নিয়ে কোনো আদালতে প্রশ্ন করা যাবে না বলা হয়েছে। এই বিধান হাইকোর্ট বিভাগের বিচারিক ক্ষমতাকে খর্ব করেছে বলেও তারা মনে করেন।

রিট আবেদনে আরো বলা হয়েছে, "আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের ১৯ ধারায় সাক্ষ্য হিসেবে সাময়িকী, বই, পত্রিকা গ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু আইন অনুযায়ী সাক্ষ্য আইনে তা গ্রহণযাগ্য নয়। এছাড়া ২০ (২) ধারায় মৃত্যুদণ্ডের বিধান রাখা হলেও কোন কোন অপরাধে মৃতুদণ্ড দেওয়া হবে তা বলা হয়নি।"

আইনের ২৩ ধারায় ফৌজদারি কার্যবিধি প্রযোজ্য হবে না বলা হয়েছে। এ ধারাটিও সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে অভিযোগ তাদের।

মঙ্গলবার আবেদনটি পরিচালনা করবেন বিএনপির অন্যতম নীতি নির্ধারক ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ও ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক।

একাত্তরে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের মামলায় গত ২ অগাস্ট জামায়াতে ইসলামীর মুহাম্মদ কামারুজ্জামান ও আবদুল কাদের মোল্লাকে পুরানো হাইকোর্ট ভবনে স্থাপিত ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

ওই দিন দলটির আমির মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদকেও আদালতে হাজির করা হয়।

সেদিন আদালত পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তাদেরকে এ মামলায় গ্রেপ্তার রাখার আদেশ দিয়ে কারাগারে পাঠায়।

নিজামী, মুজাহিদ, সাঈদী, কামারুজ্জামান ও কাদেরকে স�প্রতি গ্রেপ্তারের পর বিভিন্ন মামলায় হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ঢাকার পল্লবী ও কেরানীগঞ্জ থানায় মুক্তিযোদ্ধা হত্যাসহ বিভিন্ন অভিযোগে মামলা রয়েছে।

১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ, গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার গত ২৫ মার্চ তদন্ত সংস্থা, আইনজীবী প্যানেল ও ট্রাইব্যুনাল গঠনের ঘোষণা দিলে বহু প্রতীক্ষিত এই বিচারের প্রক্রিয়া শুরু হয়।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/প্রতিনিধি/আরএ/জিএনএ/১৭৫০ ঘ.

29 July 2010

মতিঝিলে পাঁচ জামায়াত কর্মী আটক

Thu, Jul 29th, 2010 8:55 pm BdST

ঢাকা জুলাই ২৯ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- রাস্তা অবরোধ করে মিছিল ও পুলিশের উপর হামলার অভিযোগে মতিঝিল থেকে জামায়াতে ইসলামীর পাঁচ কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার দুপুরে শাপলা চত্বর এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

মতিঝিল থানার ওসি মো. তোফাজ্জল হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, দলের শীর্ষ নেতাদের মুক্তির দাবিতে ঢাকা মহানগর জামায়াতের মহাসচিব এএইচএম হামিদুর রহমান আজাদের নেতৃত্বে মতিঝিলের সিটি সেন্টারের সামনে থেকে জামায়াত নেতাকর্মীরা একটি মিছিল বের করে।

মিছিলটি মতিঝিলের শাপলা চত্বরের দিকে যেতে থাকলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এ সময় তারা পুলিশের উপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে শুরু করে।

তিনি বলেন, "ঘটনাস্থল থেকে আমরা পাঁচজনকে আটক করেছি। এদের মধ্যে যাচাই বাছাই করে রাতেই আজাদসহ আটককৃতদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করা হবে।"

ওসি জানান, মামলায় পুলিশের উপর হামলা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগ আনা হবে।

গত ২৯ জুন জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারী জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ও নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এলএইচ/এসআইটি/জেবি/এইচএ/২০৪৩ন ঘ.

হুমায়ুন আজাদ হত্যা চেষ্টা মামলায় সাঈদী আবার রিমান্ডে

Thu, Jul 29th, 2010 1:22 pm BdST

ঢাকা, জুলাই ২৯ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- হুমায়ুন আজাদ হত্যা চেষ্টা মামলায় জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আরো এক দিনের পুলিশ হেফাজতে (রিমান্ড) নেওয়ার অনুমতি দিয়েছে আদালত।

এ মামলায় দুদফায় পাঁচদিন রিমান্ড শেষে বৃহস্পতিবার দুপুরে সাঈদীকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের পদির্শক (সিআইডি) মো. মোস্তাফিজুর রহমান গত ২৬ জুলাই তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আরো পাঁচদিনের হেফাজতের আবেদন করেন।

বৃহস্পতিবার সাঈদীর উপস্থিতিতে ওই আবেদনের ওপর শুনানি হয়।

শুনানি শেষে মহানগর হাকিম এস কে তোফায়েল হাসান একদিন হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন। এ সময় তার রিমান্ড বাতিল ও জামিন আবেদন নাকচ করা হয়।

ওদিকে কদমতলী থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের এক মামলায় সাঈদীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের হেফাজতে নেওয়ার আবেদনের ওপর বৃহস্পতিবার দুপুরে মহানগর হাকিম রোখসানা হেপীর আদালতে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।

মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ পরিদর্শক শেখ মাহবুবুর রহমান গত ২৩ জুলাই এ আবেদন করেন।

সাঈদীকে গত ১৯ জুলাই হুমায়ুন আজাদ হত্যা চেষ্টা মামলায় তিন দিন এবং তারপর আরো দুদিন হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেয় আদালত।

সেদিন শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা বলেন, "২০০৩ সালের ২০ নভেম্বর দৈনিক ইত্তেফাকের ঈদ সংখ্যায় ড. হুমায়ুন আজাদের লেখা উপন্যাস 'পাক সার জমিন সাদ বাদ' প্রকাশিত হয়। এরপর থেকেই সাঈদী তার বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিলে, জাতীয় সংসদ এবং অন্যান্য জায়গায় হুমায়ুন আজাদের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক নানা বক্তব্য রাখেন এবং তাকে কটাক্ষ করে ব্লাসফেমি আইন করার মতামত দেন।"

সাঈদী এসব বক্তব্য দেওয়ার কিছুদিন পর অমর একুশে গ্রন্থমেলা চলাকালে ২০০৪ সালের ২৭ ফেব্র"য়ারি রাতে মেলা থেকে বাড়ি ফেরার পথে বাংলা একাডেমীর উল্টো দিকের রাস্তায় হুমায়ুন আজাদকে হত্যার উদ্দেশ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করা হয়।

পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাকে আক্রমণের পেছনে মৌলবাদি জঙ্গি সংগঠন এবং দেলোয়ার হোসেন সাঈদী জড়িত আছেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন হুমায়ুন আজাদ।

তদন্তকারী কর্মকর্তা এ ঘটনার সঙ্গে জেএমবির প্রধান শায়খ আবদুর রহমানসহ ওই সংগঠনের শূরা সদস্যরা জড়িত ছিলেন বলে জানতে পারেন।

লেখক ও অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদ ২০০৪ সালের ১১ আগষ্ট জার্মানির মিউনিখ শহরে মারা যান।

গত বছরের ২০ অক্টোবর হুমায়ুন আজাদের ভাই এ মামলার বাদি মঞ্জুুর কবির মামলায় প্রকৃত আসামিদের অর্ন্তভূক্ত করা হয়নি দাবি করে আদালতে মামলার অধিকতর তদন্তের আবেদন করেন।

জোট সরকার আমলে ২০০৭ সালের ১৪ নভেম্বর জেএমবি নেতা শায়খ আবদুর রহমান, আতাউর রহমান সানি, মিজানুর রহমান মিনহাজ, আনোয়ার আলম ওরফে আনোয়ার হোসেন খোকাকে আসামি করে হত্যা চেষ্টা ও বিষ্ফোরক দ্রব্যের আলাদা দুটি অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।

পরে হত্যা চেষ্টা মামলাটি ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে বিচারের জন্য নিয়ে আসা হয়।

এর আগে অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদ হত্যা চেষ্টা মামলায় জেএমবি সদস্য হাফেজ মাহমুদ ওরফে রাকিব হাসানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই দিনের সিআইডি হেফাজতের অনুমতি দেয় আদালত।

এ মামলায় জেএমবির শীর্ষ পর্যায়ের নেতা সালাহউদ্দীনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চার দিনের হেফাজতে নেওয়া হয়। আর অপর জেএমবি সদস্য মিনহাজুর রহমান শাওনকে জেল গেটে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিআইডি।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/পিবি/এজে/১৩১৫ ঘ.