Showing posts with label সিলেট. Show all posts
Showing posts with label সিলেট. Show all posts

21 January 2011

সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ-শিবির সংঘর্ষে আহত ১৫

সিলেট অফিস

সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ-ছাত্রশিবির সংঘর্ষে উভয়পক্ষের ১৫ জন আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাতে এ সংঘর্ষ ঘটে। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

আহতদের মধ্যে রয়েছেন, ছাত্রলীগ কর্মী অর্জুন দাশ, রানা রায়, ধ্রুব, রাহাত রায়, ছাত্রশিবির কর্মী আরিফ হাসান, আরিফ উদ্দিন, আবদুর রহিম, নাজমুস সাকিব, সিকৃবি শিবিরের সভাপতি সাবি্বর আহমদ। বাকি আহতদের নাম জানা যায়নি। তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

ছাত্রলীগ দাবি করেছে, বহিরাগত ক্যাডারদের নিয়ে ছাত্রশিবির ক্যাম্পাসে মহড়া দিলে সাধারণ ছাত্ররা তাদের প্রতিহত করে। অন্যদিকে ছাত্রশিবির এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, বঙ্গবন্ধু হলে নিয়মিত কার্যক্রম শেষে বেরিয়ে যাওয়ার পথে ছাত্রলীগ ক্যাডাররা তাদের ওপর হামলা চালায়।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় শিবিরের সিকৃবি শাখা সভাপতি সাবি্বর আহমদ পাঁচ কর্মী নিয়ে বঙ্গবন্ধু হলের ২০৭ নম্বর কক্ষে সভা করেন। সভা শেষে বেরিয়ে যেতে চাইলে ছাত্রলীগ কর্মীরা হলের প্রধান কলাপসিবল ফটক বন্ধ করে বাইরে অবস্থান নেন। এ সময় অবরুদ্ধ শিবির কর্মীরা জোরপূর্বক ফটক খুলে বেরিয়ে কাঁঠাল চত্বরে এলে ছাত্রলীগ কর্মীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাদের ওপর হামলা চালান। ধাওয়া খেয়ে শিবির কর্মীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পেছনের ফটক দিয়ে পালিয়ে যান।

ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আফরাত হোসেন বলেন, 'ক্যাম্পাস থেকে বহিষ্কৃত শিবির সভাপতি সাবি্বর আহমদ বহিরাগত ক্যাডার নিয়ে ক্যাম্পাসে অবস্থান নেয়। সাধারণ ছাত্ররা এ সময় তাকে প্রশাসনের হাতে তুলে দিতে চাইলে শিবির ক্যাডাররা ছাত্রদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়।'

শিবিরের সিকৃবি শাখা সভাপতি সাবি্বর আহমদ বলেন, 'আমরা নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ব্যক্তিগত মোটরসাইকেল নিয়ে বঙ্গবন্ধু হলে যাই। হল থেকে বিরিয়ে আসার সময় ওঁৎ পেতে থাকা ছাত্রলীগ ক্যাডাররা আমাদের ওপর হামলা চালায়।'

13 November 2010

ওসমানী হাসপাতালে সংঘর্ষ: জামায়াত-শিবিরের আরো ৯ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার

সিলেট অফিস

সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজে ছাত্রলীগ ও ছাত্রশিবিরের সংঘর্ষের ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার রাতে জামায়াত-শিবিরের আরো ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। তাঁরা হলেন জামায়াতের উত্তর জেলা সেক্রেটারি সৈয়দ ফয়জুল্লা বাহার, জামায়াত-শিবিরের কর্মী তাজুল ইসলাম, আশরাফুল ইসলাম, খালেদ সাইফুল্লাহ, রেজাউল ইসলাম, জুনায়েদ আহমেদ, শামসুর ইসলাম, বেলাল আহমেদ ও সালমান রহমান সানি।
গতকাল শুক্রবার দুপুরে সিলেট কোতোয়ালি থানায় তাঁদের হস্তান্তর করা হয়। বিকেলে তাঁদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়।
র‌্যাব-৯ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত ১২টার পর সিলেট নগরীর সুবিদবাজার, কুমারগাঁও ও শেখঘাটে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
ওসমানী মেডিক্যাল কলেজে এমবিবিএস প্রথম বর্ষে ভর্তি শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানাতে গিয়ে গত সোমবার সকালে ছাত্রলীগ ও ছাত্রশিবিরের সংঘর্ষে অন্তত ৫০ জন আহত হয়।

10 November 2010

শিবিরের আরও ১৮ জন গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট | তারিখ: ১১-১১-২০১০

সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজে ছাত্রলীগ ও ছাত্রশিবিরের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় শিবিরের আরও ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত মঙ্গলবার রাত থেকে গতকাল বুধবার দুপুর পর্যন্ত সিলেট নগরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। এই সংঘর্ষের ঘটনায় এ পর্যন্ত গ্রেপ্তারের সংখ্যা ৬৫।

সর্বশেষ দফায় গ্রেপ্তার হওয়া শিবিরের ১৮ নেতা-কর্মীর মধ্যে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ নেতা-কর্মী রয়েছেন। তাঁরা হলেন বাহারুল ইসলাম, ওয়াহিদুল ইসলাম, ফয়সল মাহমুদ সাকিব খান, সায়েম আল মাসুম, নুরুল ইসলাম, জাকির, মিজানুর রহমান, সানাউল্লাহ সানি, মাসুদ ও ইসলাম উদ্দিন। পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। গ্রেপ্তার হওয়া বাকি আটজনকে কলেজ কর্তৃপক্ষের দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

এদিকে গত মঙ্গলবার র্যা বের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া ১৩ জনকে গতকাল বুধবার আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

সিলেট কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নারায়ণ দত্ত বলেন, সংঘর্ষের পর পুলিশ ও র্যা ব পৃথকভাবে অভিযান চালিয়ে এ পর্যন্ত ৬৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

উল্লেখ্য, গত সোমবার সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস প্রথম বর্ষে ভর্তি কার্যক্রম চলাকালে নবাগত শিক্ষার্থীদের দলে ভেড়ানোকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ ও ছাত্রশিবিরের মধ্যে সংঘর্ষে পুলিশসহ ৩০ জন আহত হয়।

9 November 2010

সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ: ছাত্রশিবিরের দুই নেতাসহ বহিষ্কার ৬, গ্রেপ্তার ৪১

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট | তারিখ: ১০-১১-২০১০

সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজে সংঘর্ষের ঘটনায় ইসলামী ছাত্রশিবিরের কলেজ শাখার সভাপতি, সেক্রেটারিসহ ছয়জনকে কলেজ থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার কলেজের একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এদিকে সংঘর্ষের ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার নগরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে পুলিশ শিবিরের আরও ৪১ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে। এ ঘটনায় মোট গ্রেপ্তারের সংখ্যা ৪৭।
কলেজ প্রশাসন সূত্র জানায়, কলেজের অধ্যক্ষ ওসুল আহমদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে একাডেমিক কাউন্সিলের বৈঠক হয়। প্রাথমিকভাবে ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় সর্বসম্মতভাবে তাঁদের সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বহিষ্কৃতরা হলেন শিবিরের মেডিকেল কলেজ শাখার সভাপতি এমবিবিএস ফাইনাল পরীক্ষার্থী নাসিফ রিয়াজুজ্জামান, সেক্রেটারি পঞ্চম বর্ষের সাজ্জাদ হোসেন, একই বর্ষের শিবিরকর্মী মারুফ শাহরিয়ার, চতুর্থ বর্ষের সাইফুদ্দিন খালেদ ও সালাউদ্দিন কাদের এবং তৃতীয় বর্ষের শাহরিয়ার শফিক।

এদিকে গত সোমবার রাত থেকে গতকাল মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত সিলেট নগরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় ২৮ জনকে। তাঁরা হলেন মো. ছালে আহমদ, মো. কামরুল হাসান, মো. সাহেদ আহমদ, মো. রফিকুল ইসলাম, কামরুল ইসলাম, ফয়জুর রহমান, ফয়েজ আহমদ, সাইফুর রহমান, ফারুক আহমদ, আবদুল্লাহ আল মামুন, মো. ছানা উল্লাহ, মো. মাসুদুর রহমান, মো. শফিকুল ইসলাম, ইসলাম উদ্দিন, আবদুল হান্নান, লায়েক হোসেন, কামরান হোসাইন, মো. মাহমুদুর রহমান, রাহাত নূর, মো. ইসলাম উদ্দিন, কামরান আহমদ, শামসির আহমদ, মাসুম খান, ইমতিয়াজ হোসেন, সেবুল উদ্দিন, মামুন খান, মো. মসুমুল হক, মো. আহবাবুর রহমান।

সিলেট কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক নারায়ণ দত্ত জানান, সংঘর্ষের ঘটনায় সোমবার রাতে দুটি মামলা হয়েছে। পুলিশকে মারধরের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি এবং মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ অপর মামলাটি করে। মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত গ্রেপ্তার হওয়া ৩৪ জনকে এ দুটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

এদিকে র্যা বের সদস্যরা গতকাল নগরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে শিবিরের আরও ১৩ জন কর্মীকে আটক করে। রাতে সিলেট কোতোয়ালি থানায় তাঁদের সোপর্দ করা হয়। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন আফজল হোসেন, কুদরতুল ইসলাম, মো. জাহিদুল ইসলাম, সাইদুল ইসলাম, জিয়াউদ্দিন, নজরুল ইসলাম, রাসেল আহমদ, শিহাবউদ্দিন, রেজাউল করিম, জাহিদুর রহমান, শাখাওয়াত হোসেন, আবদুল বাতেন ও আবুল হাসনাত।

কোতোয়ালি থানায় কর্তব্যরত উপপরিদর্শক (এসআই) রোকনউদ্দিন বলেন, আটক ১৩ জন শিবিরকর্মীকে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

8 November 2010

আহত ৩০, শিবিরের ছয় নেতা-কর্মী আটক ফরিদপুর মেডিকেলে ছাত্রলীগের দুই পক্ষে সংঘর্ষ, ওসমানী মেডিকেল কলেজে ছাত্রলীগ-শিবির সংঘর্ষ

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট ও ফরিদপুর অফিস | তারিখ: ০৯-১১-২০১০

সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজে গতকাল সোমবার ছাত্রলীগ ও ছাত্রশিবিরের মধ্যে সংঘর্ষে ৩০ জন আহত হয়েছেন। এমবিবিএস প্রথম বর্ষে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের দলে বেড়ানোকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় শিবিরের মেডিকেল কলেজ শাখার সভাপতিসহ ছয়জনকে আটক করা হয়েছে।
এদিকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে ছাত্রলীগের এক পক্ষের হামলায় অপর পক্ষের ১৫ জন আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় কলেজের ছাত্রাবাসের ১৪টি কক্ষে ভাঙচুর চালানো হয়।
ওসমানী মেডিকেল কলেজের প্রশাসন, পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, এমবিবিএস প্রথম বর্ষে ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু হয় ৫ নভেম্বর। নতুন শিক্ষার্থীদের দলে বেড়ানোকে কেন্দ্র করে গতকাল সকাল সাড়ে নয়টার দিকে ছাত্রলীগ ও শিবিরের নেতা-কর্মীদের মধ্যে বাগিবতণ্ডা হয়। এরপর উভয় পক্ষ ক্যাম্পাসে শক্তি বৃদ্ধি করে। শিবিরের মেডিকেল কলেজ শাখার সভাপতি নাফিস রিয়াজুজ্জামান ও কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আল বিরুনি ১০টার দিকে হাতাহাতি ও বাগিবতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন।
এর পরপরই শিবিরের ৩০ থেকে ৪০ জন নেতা-কর্মী সংগঠিত হয়ে কলেজ করিডরে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের ওপর অতর্কিতে হামলা চালান। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা কলেজ ক্যানটিনে অবস্থান নেন। এ সময় শিবিরের নেতা-কর্মীরা কলেজ মিলনায়তনের সামনে প্রদর্শনী স্টল, দেয়ালপত্রিকাসহ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক প্রচারণার স্ট্যান্ড ভাঙচুর করেন। একপর্যায়ে ছাত্রলীগের কর্মীরা শিবিরের নেতা-কর্মীদের ধাওয়া করলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়।
সংঘর্ষে ছাত্রলীগের মেডিকেল কলেজ শাখার সহসভাপতি রতিন হালদার, সাংগঠনিক সম্পাদক মোশাররফ হোসেনসহ ২২ জন নেতা-কর্মী আহত হন। তাঁদের মধ্যে ওই দুই নেতা এবং কর্মী পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থী শাহেদ হোসেন, শামসুল আরেফিন ও আয়নুল মাহমুদ, দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আসাদ, সাফিন ও মল্লিককে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত অপর শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
সংঘর্ষে শিবিরের ছয়জন কর্মী আহত হয়েছেন। তাঁরা হলেন শান্ত, মাহমুদ, জালাল, সাজেদুল, খালেদ ও ইমরান। তাঁদের সিলেটের বিভিন্ন বেসরকারি হাসাপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
খবর পেয়ে পুলিশ ও র্যা বের সদস্যরা ক্যাম্পাসে অবস্থান নেন। সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ বেধড়ক লাঠিপেটা শুরু করলে ছাত্রলীগ ও শিবিরের কর্মীরা ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন। পুলিশের লাঠিপেটায় একটি জাতীয় দৈনিকের শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি ও কয়েকজন অভিভাবক আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে কলেজ শাখার শিবিরের সভাপতি নাফিস রিয়াজুজ্জামান, শিবিরকর্মী শিক্ষানবিশ চিকিৎসক নাজমুল হোসেন ও আবদুল্লাহ ইউসুফ জামিল, পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থী নাজমুল সাদাত, তৃতীয় বর্ষের ছাত্র জালাল হোসেন ও প্রথম বর্ষের ছাত্র হাসান মুরাদকে আটক করে। কলেজ ক্যাম্পাস থেকে পুলিশ লোহার রড, দা, হকিস্টিক ও ক্রিকেটের স্ট্যাম্প উদ্ধার করেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিবিরের একজন নেতা জানান, নতুন শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানানোর প্রস্তুতি নিতে গেলে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা গত বৃহস্পতিবার থেকে বাধা দিয়ে আসছেন। সোমবারও (গতকাল) বাধা দেওয়ায় উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। শিবিরের এই নেতার দাবি, সংঘর্ষে তাঁদের অন্তত ১০ জন কর্মী আহত হয়েছেন।
মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আল বেরুনি খান বলেন, ভর্তি-কার্যক্রম বানচাল করতে শিবির পূর্বপরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়েছে।
সিলেট কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মুজিবুর রহমান জানান, উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার সময় লামাবাজার পুলিশ ফাঁড়ির কনস্টেবল ফরহাদ হোসেনের মাথায় ইট লেগেছে। সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ মৃদু লাঠিপেটা করে। ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার নওরোজ আহমদ বলেন, কলেজ কর্তৃপক্ষের দেওয়া অভিযোগ অনুযায়ী পুলিশ আইনানুগ ব্যবস্থা নিচ্ছে। ক্যাম্পাসে পুুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
কলেজের উপাধ্যক্ষ হারুন-উর-রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, ওই ঘটনায় ঘণ্টা খানেক ভর্তি-কার্যক্রম বন্ধ ছিল। একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সংঘর্ষের ঘটনায় সিলেট কোতোয়ালি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন কলেজ অধ্যক্ষ।
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ সূত্র জানায়, গত রোববার ছিল কলেজের ১৫তম ব্যাচের কোর্স সমাপনী অনুষ্ঠান। এ উপলক্ষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও নৈশভোজের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠান শেষে রাত দুইটার দিকে ছাত্রলীগের মেডিকেল কলেজ শাখার এক পক্ষের কয়েকজন কর্মী কলেজের শহীদ মিনারে আড্ডা দিচ্ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা জানান, রাত আড়াইটার দিকে দাউদ চৌধুরীর (মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সম্পাদক) নেতৃত্বে ছাত্রলীগের একদল নেতা-কর্মী লাঠিসোঁটা নিয়ে শহীদ মিনারে অবস্থানরত কর্মীদের ওপর অতর্কিতে হামলা চালায়। এরপর তাঁরা ছাত্রাবাসের কক্ষে কক্ষে গিয়ে বেশ কয়েকজন ছাত্রকে ঘুম থেকে তুলে মারধর করেন। এ সময় হামলাকারীরা ছাত্রাবাসের ১৪টি কক্ষের জানালার কাচ ও আসবাব ভাঙচুর করেন।
হামলায় ১৫ জন আহত হন। আহত ছাত্রদের মধ্যে আটজনকে ফরিদপুর মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অবশিষ্ট সাতজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, আহত ছাত্রদের অনুরোধে তাঁদের নাম প্রকাশ করা হয়নি।
শিক্ষার্থীরা জানান, রাত সাড়ে তিনটার দিকে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আ স ম জাহাঙ্গীর চৌধুরী ক্যাম্পাসে গেলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। সকালে পুলিশ ছাত্রাবাসের সব কক্ষে তল্লাশি চালায়।
আহত ছাত্রদের দাবি, হামলাকারীরা ছয়টি মুঠোফোন সেট ও একটি ল্যাপটপ লুটে নিয়ে গেছে।
এ নিয়ে গতকাল কলেজের একাডেমিক কমিটির জরুরি সভা হয়েছে। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ঘটনার তদন্তে কলেজের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক নাজির আহম্মেদকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে আগামী সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। কমিটি গতকাল থেকেই কাজ শুরু করেছে।
ছাত্রলীগের ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ শাখার সভাপতি হূদয় রঞ্জন বর্মণ প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনাকে ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল বলা যাবে না। তবে কলেজে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুটি পক্ষ দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় রয়েছে বলে তিনি স্বীকার করেন।
দাউদ চৌধুরী বলেন, ‘রোববার রাতের ঘটনা সম্পর্কে আমি কিছু জানি না। আমি ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নই।’
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আ স ম জাহাঙ্গীর চৌধুরী বলেন, ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, কলেজের পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

2 October 2010

বড়লেখায় শিবিরের ১৩ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার

বড়লেখা (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি

মৌলভীবাজারের বড়লেখার তেলিগুল এলাকা থেকে পুলিশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ১৩ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে।

পুলিশ জানায়, শুক্রবার দুপুরে বড়লেখা পৌর শহরের ওই এলাকার উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর রুকন আবদুস শহীদের বাড়িতে ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীরা জড়ো হয়ে মিছিলের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। শিবিরের ৫০-৬০ জন কর্মী উপস্থিত থাকলেও পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে অনেকে দৌড়ে পালিয়ে যান। পুলিশ সেখান থেকে ১৩ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করে।

এ ঘটনায় মামলা করার পর গ্রেপ্তারকৃতদের জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

10 August 2010

সিলেটে মিছিলে বাধার জের: জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা বেধড়ক পেটাল পুলিশকে

সিলেট অফিস
'আমরা সচেতন সিলেটবাসী'র ব্যানারে গতকাল মঙ্গলবার সিলেট নগরীতে জামায়াত-শিবিরের বের করা জঙ্গিমিছিলে বাধা দিতে গিয়ে উল্টো বেধড়ক পিটুনির শিকার হয়েছে পুলিশ। নগরীর জিন্দাবাজারে বিকেল ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এতে চার পুলিশসহ আহত হয়েছে অন্তত ১০ জন। পুলিশ পাঁচজনকে আটক করেছে।

ঘটনার পর পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের জন্য নগরীর বিভিন্ন জায়গায় অভিযান শুরু করে। পুলিশের হাতে আটকরা হলেন_মুস্তাফিজুর রহমান, মাওলানা ইমরান আহমদ, জয়নাল আবেদীন, ইয়াহইয়া ও মাওলানা জলিল উদ্দিন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীরা গতকাল 'আমরা সচেতন সিলেটবাসী'র ব্যানারে বিরাট জঙ্গিমিছিল বের করে। রমজানকে স্বাগত জানিয়ে ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বিরুদ্ধে মিছিলটি বের করা হলেও জামায়াত-শিবিরের লোকজন প্রথম থেকেই ছিল মারমুখী। তারা কোনো পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই বিকেলে জমায়েত হতে থাকে রেজিস্ট্রি মাঠে। পুলিশ শুরুতে বাধা দিলেও বাধা উপেক্ষা করে তারা সুরমা পয়েন্ট থেকে মিছিল বের করে।

মিছিলটি জিন্দাবাজারের সোনালী ব্যাংকের সামনে আসার পর পুলিশ আবারও বাধা দেয়। কিন্তু মিছিলকারীরা এগোতে থাকলে পুলিশ লাঠিপেটা শুরু করে। এ সময় জামায়াত-শিবিরের কর্মীরাও পুলিশের ওপর হামলা চালায়। তারা পুলিশ সদস্যদের ধরে কিল-ঘুষি মারে, ইট দিয়ে আঘাত করে এবং বেধড়ক পেটায়। হামলায় চার পুলিশ ও সাতজন পথচারী আহত হয়।

আহত পুলিশ সদস্যদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে একটি টিয়ার সেল ছোড়ে। জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা সোনালী ব্যাংকের করপোরেট শাখা ভবন ও একটি টেম্পো ভাঙচুর করেছে। সংঘর্ষের সময় জিন্দাবাজার ও বন্দর বাজার রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। দোকানপাট বন্ধ করে দেন ব্যবসায়ীরা। পথচারীরা ভয়ে এদিক-ওদিক ছুটতে থাকে।

ঘটনার পর পুলিশ হামলাকারীদের ধরতে নগরীর বিভিন্ন জায়গায় অভিযান শুরু করে। সন্ধ্যা ৭টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত ছিল। কোতোয়ালি থানার ওসি খন্দকার নওরোজ আহমদ পুলিশ আহত হওয়ার ঘটনা স্বীকার করে বলেন, 'আমরা পাঁচজনকে আটক করেছি।'

15 July 2010

কামারুজ্জামান ও কাদের মোল্লা রিমান্ডে

আদালত প্রতিবেদক

মুক্তিযুদ্ধের সময় গণহত্যার অভিযোগে পল্লবী থানায় দায়ের করা মামলায় জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামান ও আবদুল কাদের মোল্লাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতে (রিমান্ড) নেওয়ার আদেশ দেওয়া হয়েছে। ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালত গতকাল বুধবার এ আদেশ দেন।

কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে কামারুজ্জামান ও কাদের মোল্লাকে গতকাল বিকেল পৌনে ৪টার দিকে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) আদালতে নিয়ে যায়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক নুরুল ইসলাম সিদ্দিকী তাঁদের ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন জানালে মহানগর হাকিম রোকসানা বেগম হ্যাপী পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তিনি আসামিদের পক্ষে আইনজীবীদের করা জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেছেন।

জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষপর্যায়ের দুই নেতাকে আদালতে নেওয়া হবে_এ খবর পেয়ে গতকাল দিনভর আদালতপাড়ায় বিক্ষোভ করে ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন সংগঠন। তারা যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবি জানায়। কামারুজ্জামান ও কাদের মোল্লাকে প্রিজন ভ্যানে করে আদালত থেকে বের করার সময় অনেকে তাঁদের লক্ষ্য করে জুতা ও ঝাড়ু নিক্ষেপ করে।

আদালতে কামারুজ্জামান ও কাদের মোল্লার আইনজীবীরা রিমান্ডের আবেদন বাতিল ও জামিনের আবেদন জানান। আইনজীবীরা বলেন, '৪০ বছর আগের ঘটনায় করা মামলায় আসামিদের হয়রানি করার জন্য গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এজাহারে বর্ণিত ঘটনা সম্পর্কে আসামিরা কিছুই জানেন না।'

অন্যদিকে রিমান্ড আবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, আসামিরা ১৯৭১ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সঙ্গে মিলিত হয়ে আলবদর, আলশামস ও রাজাকার বাহিনী গঠন করে শহর-বন্দর, গ্রামে-গঞ্জে গণহত্যা, অগি্নসংযোগ, লুটতরাজ, নারী ধর্ষণ ইত্যাদি মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করেন। পল্লবী এলাকার আলোকদী গ্রামে তাঁরা নিরীহ মানুষকে হত্যা করে বলে তদন্তে জানা গেছে। তাঁদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে ওই ঘটনায় জড়িতদের নাম প্রকাশ পাবে।

শুনানির পর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেন আদালত। আসামিদের চিকিৎসা ও প্রথম শ্রেণীর মর্যাদা দেওয়ার বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষকে কারাবিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার আদেশ দেওয়া হয়েছে। আসামিপক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট আবদুর রাজ্জাক, কামাল উদ্দিন প্রমুখ। রাষ্ট্রপক্ষে মহানগর পিপি আবদুল্লাহ আবু, জেলা জজ আদালতের পিপি খন্দকার আবদুল মান্নান, অতিরিক্ত পিপি শাহ আলম তালুকদারসহ ২০-২৫ জন আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা ও অগি্নসংযোগের অভিযোগে মোট ৮০ জনকে আসামি করে ২০০৮ সালের ২৫ জানুয়ারি পল্লবী থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। আসামিদের মধ্যে ১০ জনের নাম-পরিচয় উল্লেখ করা হয়েছে এবং অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়েছে ৭০ জনকে। যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আমির হোসেন মোল্লা বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলার আরজিতে নিজামী, মুজাহিদ, কাদের মোল্লা ও কামারুজ্জামানকে হত্যাকারীদের নির্দেশদাতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

আরো তিন মামলায় গ্রেপ্তার : পুলিশের কর্তব্যকাজে বাধা দেওয়া, পুলিশকে মারধর, ভাঙচুর, রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের গাড়িবহরে বাধা দেওয়ার অভিযোগে কামারুজ্জামান ও কাদের মোল্লাকে পল্টন থানায় দায়ের করা তিনটি মামলায়ও গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করে পুলিশ। মহানগর হাকিম ইসমাইল হোসেন গতকাল পুলিশের ওই আবেদন গ্রহণ করেছেন।

জামায়াত-শিবির-যুবদল-ছাত্রদলের ৮২ নেতা-কর্মীর আগাম জামিন : গাড়ি ভাঙচুর ও পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে ঢাকা, খুলনা ও সিলেটে দায়ের করা ছয়টি মামলায় জামায়াত-শিবির, যুবদল ও ছাত্রদলের ৮২ নেতা-কর্মীকে আগাম জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।

বিচারপতি আফজাল হোসেন আহমেদ ও বিচারপতি মুহাম্মদ আব্দুল হাফিজের বেঞ্চ এবং বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের বেঞ্চ গতকাল আলাদা আদেশে তাদের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন।

রাজধানীর মতিঝিল থানায় দায়ের করা মামলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম মঞ্জুসহ ছয়জন, বরিশালে করা মামলায় ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি পারভেজ আকন্দ বিপ্লব এবং পিরোজপুরের একটি মামলায় মাসুদ শেখসহ তিনজনকে আগাম জামিন দেন হাইকোর্ট।

এ ছাড়া সিলেটের চারটি ও খুলনার একটি মামলায় জামায়াত-শিবিরের ৭২ নেতা-কর্মীর জামিন মঞ্জুর করা হয়েছে। জামায়াত-শিবিরকর্মীদের পক্ষে ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক, অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম, ব্যারিস্টার বেলায়েত হোসেন ও অ্যাডভোকেট সাইফুর রহমান এবং ছাত্রদল-যুবদল নেতা-কর্মীদের পক্ষে অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম সজল আদালতে শুনানি করেন।

9 July 2010

জামায়াতের মাঠের রাজনীতি স্থবির

সেলিম জাহিদ

জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ ও নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী গ্রেপ্তার হওয়ার পর দলটির প্রকাশ্য কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। মামলা ও পুলিশি আতঙ্কে জামায়াত অধ্যুষিত এলাকাগুলোতেই কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচি পালনে শৈথিল্য দেখা গেছে। ঝটিকা মিছিল ছাড়া ঢাকাতেই জামায়াত-শিবির স্থির হয়ে কোনো কর্মসূচি পালন করছে না। সারা দেশে তাদের মাঠের রাজনীতি আরো স্থবির।

এ বছরের শুরুতে রাজধানীকে সংগঠনের 'প্রাণকেন্দ্র' হিসেবে উপস্থাপন করার ঘোষণা দিয়েছিল জামায়াত। ঢাকা সিটি করপোরেশনের ৯০ ওয়ার্ডকে ১১০টি সাংগঠনিক ওয়ার্ডে ভাগ করে জামায়াত তৎপরতা চালাচ্ছে। আত্দগোপনে থাকা ঢাকা মহানগর আমির রফিকুল ইসলাম খান গত মার্চ মাসে এ প্রতিবেদককে আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অন্তত ৫০টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে প্রার্থী দেওয়ার কথা বলেছিলেন। সংগঠনের বিগত গণসংযোগ অভিযানে প্রত্যাশার চেয়েও বেশি পৌনে এক লাখ লোক সহযোগী সদস্য ফরম পূরণ করে জামায়াতে শরিক হয়েছে বলেও দাবি করেছিলেন রিমান্ডে থাকা সেক্রেটারি জেনারেল। কিন্তু জামায়াতের তিন প্রধান নেতা গ্রেপ্তার হওয়ার পর ঢাকায় যে প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে, তাতে ওই জনশক্তির প্রকাশ ঘটেনি।

জামায়াতের কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচি পালনে এখন পর্যন্ত রাজধানীর পল্টন, মতিঝিল ও রমনা থানা কমিটিকে মাঠে তৎপর দেখা গেছে। এ ছাড়া উত্তরা, মিরপুর, পল্লবী, উত্তর ও দক্ষিণ বাড্ডা, পশ্চিম রামপুরা, খিলগাঁও, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, মোহাম্মদপুর, যাত্রাবাড়ী, মিরহাজিরবাগেও বিক্ষিপ্তভাবে মিছিল হয়েছে। অন্য এলাকায় কোনো কর্মসূচি পালন করা হয়নি।

জামায়াতের সংসদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর সেক্রেটারি হামিদুর রহমান আযাদ এর সঙ্গে দ্বিমত প্রকাশ করে বলেন, 'পুলিশের এত নির্যাতনের পরও আমরা মাঠে আছি। কোনো কর্মসূচিই ব্যর্থ হয়নি। হয়তো কর্মসূচি পালনের প্রকৃতি পরিবর্তন হয়েছে।'

জামায়াত প্রভাবাধীন এলাকা হিসেবে পরিচিত চট্টগ্রামের পূর্বাঞ্চল, রাজশাহী, সিলেট মহানগর ও খুলনা বিভাগের বিভিন্ন জেলায় জামায়াতের প্রকাশ্য রাজনৈতিক কার্যক্রমেও স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। বিক্ষোভ করতে গিয়ে খুলনা মহানগর আমির মিয়া গোলাম পরোয়ার গ্রেপ্তার হওয়ার পর স্থানীয় নেতাদের অনেকে গা ঢাকা দিয়ে চলছেন। রাজশাহী মহানগর আমির আতাউর রহমানসহ শীর্ষ নেতারা ফারুক হত্যা মামলায় আটক থাকায় মাঠের রাজনীতি থমকে গেছে আরো আগে থেকেই।

জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির মকবুল আহমদের নিজ জেলা ফেনী এবং ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম আজহারুল ইসলামের রংপুরের বদরগঞ্জেও সেভাবে সফল বিক্ষোভ হয়নি বলে খবর পাওয়া গেছে। তিন নেতা গ্রেপ্তার হওয়ার দিন দুই স্থানে ঝটিকা বিক্ষোভ মিছিল বের করা হলেও পুলিশ আর কোনো মিছিল হতে দেয়নি।

দলের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম আজহারুল ইসলাম বলেন, 'পুলিশ ও সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে হামলা চালিয়ে জামায়াতের মিছিল-সভা পণ্ড করে সরকার নিজেই সন্ত্রাস সৃষ্টি করছে।'


বিভিন্ন এলাকা থেকে আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর :
চট্টগ্রামে মোবাইল সিম বদল : গ্রেপ্তার আতঙ্কে চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীরা অবস্থান পরিবর্তনের পাশাপাশি মোবাইল ফোনের সিমও পরিবর্তন করছেন। দলের মাঠপর্যায়ে হতাশা নেমে এসেছে। নগরীর দেওয়ান বাজারে দলীয় কার্যালয়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। অপরিচিত কাউকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। নগর জামায়াত আমিরসহ দায়িত্বশীল নেতারা প্রকাশ্যে অফিসে আসছেন না। চন্দনপুরায় মহানগর শিবিরের কার্যালয়েও গতকাল কাউকে পাওয়া যায়নি। দুপুরে জামায়াতের দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে কোনো নেতাকে পাওয়া যায়নি। দলীয় কার্যালয়ের নিচতলায় উত্তর জেলা জামায়াতের অফিস, তৃতীয় তলায় মহানগর আমিরসহ দায়িত্বশীলদের কার্যালয়ও ফাঁকা ছিল। এ তলার নিরাপত্তাকর্মী হাছিনুর রহমান জানান, কয়েক দিন ধরে অফিসে লোকজনের যাতায়াত কমে গেছে। বিকেল সাড়ে ৫টায় গিয়ে দেখা যায়, নগর জামায়াত আমির মাওলানা শামসুল ইসলাম এমপি নগরীর হালিশহর ও ডবলমুরিং থানায় দায়ের হওয়া মামলার এজাহারের কপি পড়ছেন।

এ ঘটনায় মাওলানা শামসুল ইসলাম ছাত্রলীগকে দায়ী করে বলেন, 'আওয়ামী লীগ বাকশাল কায়েম করতে জামায়াত-শিবিরকে দমন করছে। গণতান্ত্রিক দেশে প্রতিবাদ জানানোর অধিকার থাকলেও আমাদের নেতা-কর্মীরা রাস্তায় বেরোতে পারছেন না।' সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে স্থবিরতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য জামায়াত-শিবির কাজ করছে। যত বাধা আসুক, তারা হতাশ হয় না। এখন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি।'

সিএমপির কমিশনার মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান কালের কণ্ঠকে বলেন, জামায়াত-শিবির বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বজায় রাখতে প্রকৃত দোষী ব্যক্তিদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার অভিযান চলছে।
রাজশাহীতে লুকোচুরির মিছিল : রাজশাহী মহানগর জামায়াত কেন্দ্রের কোনো কর্মসূচিই সফলভাবে পালন করতে পারছে না। পুলিশের সঙ্গে লুকোচুরি করে নগরীতে ক্ষণস্থায়ী মিছিল বের করছে। তবে রাজশাহী মহানগর পুলিশের বিশেষ শাখার সহকারী কমিশনার তারিকুল ইসলাম বলেছেন, শিবির ভেতরে ভেতরে সক্রিয় হয়ে নাশকতার চেষ্টা করতে পারে। পুলিশি তৎপরতায় তারা এগোতে পারছে না। এর পরও তারা সজাগ দৃষ্টি রাখছে।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি শিবিরের হামলায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগকর্মী ফারুক হোসেন হত্যাকাণ্ড এবং ছাত্রলীগের চার নেতার রগ কাটার ঘটনায় স্থানীয়ভাবে জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি কঠিন সংকটে পড়ে। ওই ঘটনার পর রাজশাহী মহানগর, জেলা ও বিশ্ববিদ্যালয়ে জামায়াত-শিবির একঝাঁক নেতা গ্রেপ্তারের পর দলটির রাজনীতি বিপর্যয়ের মুখে। উপজেলা পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা সক্রিয় থাকলেও গ্রেপ্তার এড়াতে অনেকেই এখন গা ঢাকা দিয়ে চলছে।

স্থানীয় সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, রাজশাহীর রাজনীতিতে দ্বন্দ্ব-সংঘাতের মূলে ছিল জামায়াত-শিবির। তাদের তাণ্ডব আগের চেয়ে এখন নিয়ন্ত্রিত। জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মহানগর জামায়াতের এক নেতা জানান, কৌশলগত কারণেই তাঁরা বেশি সময় ধরে মাঠে মিছিল নিয়ে থাকছেন না।

সিলেটে হঠাৎ মিছিল: সিলেট মহানগর জামায়াত তিন নেতার মুক্তির দাবিতে তারা কঠোর ও কৌশলী ভূমিকা পালন করছে। জমি ও হাউজিংসহ ব্যবসা-বাণিজ্যে মনোযোগী নেতারা এখন দলকে সময় দিচ্ছেন। পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যমতে, বিভিন্ন ব্যানারে জামায়াত মাঠপর্যায়ে সংগঠিত হচ্ছে।

সিলেটে দলের ভেতরে নেতৃত্ব নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অসন্তোষ বিরাজ করছে। বিশেষ করে মহানগর জামায়াতে হঠাৎ করে অভিজ্ঞ ও প্রবীণ নেতৃত্বকে বাদ দিয়ে অপেক্ষাকৃত তরুণ নেতৃত্ব সামনে আসায় প্রবীণ নেতাদের মধ্যে এই ক্ষোভ দেখা দেয়। ফলে দলের কার্যালয়ে নিয়মিত সভা-সমাবেশ হলেও রাজপথে দুর্বল উপস্থিতি ছিল জামায়াতের। এখন এ সংকট কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে দলটি।

নিজামী, মুজাহিদ ও সাঈদী গ্রেপ্তারের পর বৃহস্পতিবার বন্দরবাজারে পুলিশের সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা হলে জামায়াত কৌশল বদলায়। ঝামেলা এড়াতে আগাম ঘোষণা না দিয়ে মিছিল বের করে। পুলিশ বাধা দেওয়ার আগেই তারা মিছিল শেষ করে চলে যায়।

গত দুই দিনে রাজপথে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে দলের নেতা-কর্মীরা যে মিছিল ও সমাবেশ করছেন তাতেই দলের নতুন কৌশল সম্পর্কে সবাই অবগত হয়ে গেছে। 'জামায়াত এখন রাজপথে তাদের সম্পূর্ণ শক্তির প্রদর্শন করবে না। মাঝেমধ্যে সুযোগ বুঝে নিজেদের অবস্থানের জানান দেবে'_এমন দাবি করছেন একজন জামায়াত নেতা।

শুক্রবার সকাল থেকে নগরীর মোড়ে মোড়ে পুলিশ ও র‌্যাব সতর্ক অবস্থায় থাকলেও জামায়াত কোনো মিছিল বের করেনি। কিন্তু রবিবার নগরবাসী ও পুলিশ যখন ঘুমিয়ে, তখন সকাল ৮টায় হঠাৎ করেই জামায়াত নগরীতে মিছিল বের করে। পুলিশ ঘুম থেকে উঠে প্রস্তুতি নিতে নিতেই তাদের মিছিল শেষ হয়ে যায়। গত সোমবারও সকাল ৯টায় নগরীর পূর্ব প্রান্তে শাহজালাল উপশহর এলাকায় মিছিল করে জামায়াত। জামায়াতের এই কৌশলের কাছে পুলিশ একাধিকবার মার খেয়েছে।

মহানগর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি ফখরুল ইসলাম বলেন, 'আমরা কোনো সংঘাত চাই না। সরকারের ফ্যাসিবাদী আচরণের প্রতিবাদ করা আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার।'

ঝিনাইদহে দায়সারা কর্মসূচি : হামলা ও গ্রেপ্তার আতঙ্কে ঝিনাইদহে জামায়াত-শিবিরের প্রকাশ্য কোনো কর্মকাণ্ড দেখা যাচ্ছে না। গেরিলা কায়দায় হঠাৎ খণ্ড খণ্ড মিছিল আর ঘরোয়া গোপন বৈঠক করেই কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে ছাত্রলীগের আন্দোলনের মুখে জামায়াত-শিবির কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। ঝিনাইদহ জেলা জামায়াত কার্যালয়টি শহরের হামদহ এলাকায়। নতুন হাটখোলায় সংগঠনের শহর কার্যালয়। দুটি কার্যালয় খোলা থাকলেও নেতা-কর্মীদের উপস্থিতি কম। গত ১৩ জুন নতুন হাটখোলায় ছাত্রলীগের সঙ্গে সংঘর্ষে উভয় সংগঠনের বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী আহত হন। এ ঘটনায় পুলিশ জামায়াত-শিবিরের ৫০ জনকে গ্রেপ্তার করে। পরে তারা জামিনে বেরিয়ে এলেও প্রকাশ্যে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে তাদের খুব একটা দেখা যাচ্ছে না। বিক্ষোভসহ অন্যান্য কর্মসূচি দায়সারাভাবেই পালন করছে জেলা জামায়াত ও ছাত্রশিবির।

জেলা আমির মুজাম্মিল হক বলেন, 'আমাদের সাংগঠনিক রুটিন ওয়ার্ক নিয়মিত চলে এবং এখনো চলছে। শহরে কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালনে নেতা-কর্মীরা নানা রকম বাধার সম্মুখীন হচ্ছে। আজ হোক, কাল হোক, আমরা ঝিনাইদহ শহরে শোডাউন করবই।'

সাতক্ষীরায় নড়বড়ে : শীর্ষ নেতাদের গ্রেপ্তারের পরও মামলা ও পুলিশের ভয়ে সফলভাবে বড় ধরনের কোনো কর্মসূচি পালন করতে পারেনি সাতক্ষীরা জামায়াত। গোপনে নেতা-কর্মীরা জড়ো হয়ে ঝটিকা মিছিল বের করলেও প্রকাশ্যে কোনো তৎপরতা নেই। জামায়াতের দুর্গ বলে পরিচিত সাতক্ষীরায় দলের অবস্থা এখন অনেকটা নড়বড়ে।

জামায়াত নেতা-কর্মীদের দাবি, পুলিশের অতিরঞ্জন, বাড়াবাড়ি ও সরকারের জুলুম-অত্যাচারের কারণেই তারা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করতে পারছে না। গত ৮ এপ্রিল জামায়াত সেক্রেটারি আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ সাতক্ষীরা আসতে চাইলে মুক্তিযোদ্ধা-জনতার প্রতিরোধের মুখে ঢুকতে পারেননি। এ সফরকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের সংঘর্ষের মামলায় প্রায় ৪০ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার হয়। নিজামী, মুজাহিদ ও সাঈদীর গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করতে গিয়ে কলারোয়া উপজেলায় পুলিশের হাতে জামায়াত শিবিরের আট নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার হয়।

জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি নূরুল হুদা 'দৌড়ের ওপরে আছেন' মন্তব্য করে বলেন, 'কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচি শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রেখে পালন করতে চাই। কিন্তু তাতেও পুলিশের বাধা।'

চাঁপাইনবাবগঞ্জে গোপন বৈঠক : জামায়াত প্রভাবাধীন চাঁপাইনবাবগঞ্জেও সাংগঠনিক কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। শীর্ষ নেতাদের গ্রেপ্তারের পর তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ-সমাবেশ, মহাসড়কে কিছুক্ষণ ব্যারিকেড দেওয়া ছাড়া আর কোনো কর্মসূচি নিয়ে ঘোষণা দিয়ে রাস্তায় নামতে পারেনি নেতা-কর্মীরা। অর্ধদিবস হরতাল আহ্বান করে পরে তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। মামলা ও পুলিশের ভয়ে বিভিন্ন মাদ্রাসা, মেসসহ দুর্গম এলাকায় অত্যন্ত সন্তর্পণে দলের সাংগঠনিক বৈঠক হচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে। জেলা সদরের বাইরের উপজেলাগুলোতেও দলটির প্রকাশ্য তেমন কোনো কর্মসূচি নেই। তবে নাচোল বিএম মাদ্রাসা ও পল্লী দাতব্য চিকিৎসাকেন্দ্রে সঙ্গোপনে জামায়াতের বৈঠক হচ্ছে। এ ছাড়া শিবগঞ্জের ধাইনগর ইউনিয়নের দুর্গম এলাকায় দলের গোপন বৈঠক হয়।

গত সোমবার দুপুরে অপরিচিত লোকদের নিয়ে শহরের পুরনো বাজার এলাকায় ঝটিকা মিছিল করেছে জামায়াত-শিবির। দুপুর পৌনে ২টার দিকে ২০-৩০ জন পুরনো বাজার জামে মসজিদ থেকে বের হয়ে পুরনো বাজার মোড়ে জমায়েত হয়। হঠাৎ স্লোগান দিয়ে মিছিল শুরু হয়। অল্প সময়ের মধ্যেই আবার শেষ।
পুলিশ বলছে, 'মিছিলকারীরা অপরিচিত, এরা এ এলাকার নয়।' চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি ওমর ফারুক জানান, কেন্দ্রের নির্দেশে জামায়াতের কার্যক্রম এগিয়ে যাচ্ছে। সময়মতো জামায়াত প্রকাশ্য কর্মসূচি চালাবে।

কক্সবাজারে নীরবতা : তিন নেতা গ্রেপ্তারের পর করণীয় নিয়ে দলটির মাঠপর্যায়ের নেতা-কর্মীরা দ্বিধা-দ্বন্দ্বে আছেন। কেন্দ্র ঘোষিত বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছে অত্যন্ত সন্তর্পণে। সোমবারের বিক্ষোভ-সমাবেশ কর্মসূচি পালন করেছে জেলা কার্যালয় প্রাঙ্গণে মাইক লাগিয়ে। ধারণা করা হয়েছিল, কেন্দ্রীয় নেতারা গ্রেপ্তার হলে জামায়াতের প্রভাবাধীন কক্সবাজারে তুলকালাম কাণ্ড ঘটবে, কিন্তু বাস্তবে কিছুই হয়নি। অনুসন্ধানে জানা গেছে, জামায়াত এ ব্যাপারে জনসমর্থন পাচ্ছে না।

গত শুক্রবার কক্সবাজারের বিভিন্ন মসজিদে জুমার নামাজ শেষে নিজামী, সাঈদী ও মুজাহিদের মুক্তি কামনায় দোয়া করার জন্য স্থানীয় নেতারা তৎপর ছিলেন। কিন্তু প্রত্যন্ত অঞ্চল, বিশেষ করে মিয়ানমার সীমান্তবর্তী এলাকা এবং মহেশখালী ও কুতুবদিয়া দ্বীপাঞ্চলের কিছু কিছু এলাকা ছাড়া অন্য মসজিদগুলোতে দোয়া হয়নি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব মসজিদের বেশির ভাগেই দোয়া হয় সাঈদীর জন্য। দীর্ঘদিন সাঈদী এসব এলাকায় তাফসির মাহফিল করেন।

শুক্রবার কক্সবাজার শহরের বাহারছড়া জামে মসজিদে জুমার নামাজ শেষে সাঈদীর জন্য দোয়া করতে গেলে ইমামকে নিয়ে হট্টগোল বাধে। পরে প্রবীণ মুসলি্লরা ইমামকে রক্ষা করেন। মসজিদের ইমাম মাওলানা শফিউল আলম বলেন, 'মহল্লার জামায়াতের নেতা-কর্মীরা কয়েক দিন ধরে জুমার নামাজে নেতাদের জন্য দোয়া করতে বলে আসছিলেন। একজন আলেম হিসেবে সাঈদীর জন্য দোয়া চাইতে গিয়ে আমি এ পরিস্থিতির সম্মুখীন হই।'

কক্সবাজার জেলা জামায়াত আমির মুহম্মদ শাহজাহান কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমরা নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করতে চেয়েছি, কিন্তু সরকার বাকশালী কায়দায় আমাদের রাজপথে যেতে দেয়নি।'

6 July 2010

কুলাউড়া ও কসবায় জামায়াত-শিবিরের তিন নেতা গ্রেপ্তার


জুড়ী (মৌলভীবাজার) ও কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি | তারিখ: ০৬-০৭-২০১০

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায় পুলিশের ওপর হামলার মামলায় জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের তিন নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

কুলাউড়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে জামায়াতে ইসলামী সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলা কমিটির রোকন আবদুর রশীদ (২৫) ও ছাত্রশিবিরের কুলাউড়া উপজেলা (পশ্চিম) কমিটির সেক্রেটারি সফিকুল ইসলামকে (২৪)।

কুলাউড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আজিজুল ইসলাম জানান, জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীরা গত ৩০ জুন বিকেলে কুলাউড়া পৌর শহরে মিছিল বের করেন। মিছিল থেকে হঠাৎ হামলা করা হলে সেখানে দায়িত্বরত উপপরিদর্শক (এসআই) ওয়াহিদুর রহমান আহত হন। এ ঘটনায় জামায়াত-শিবিরের ১৬০ জন নেতা-কর্মীকে আসামি করে একটি মামলা হয়। গ্রেপ্তার হওয়া আবদুর রশীদ ও সফিকুল ইসলাম ওই মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। উপজেলার কলিমাবাদ গ্রামে গত রোববার রাতে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। আদালতের মাধ্যমে গতকাল তাঁদের মৌলভীবাজার জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

কসবায় গ্রেপ্তার হয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর ছাত্রশিবিরের সহসভাপতি আমির হোসেন (২৮)। গতকাল সোমবার কসবা টি আলী ডিগ্রি কলেজ এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি ডিগ্রি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য সেখানে গিয়েছিলেন।

কসবা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাধনকান্তি চৌধুরী বলেন, আমির হোসেন দায়িত্বরত পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের দুটি মামলার আসামি।

5 July 2010

গ্রেপ্তার দুই


নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট | তারিখ: ০৬-০৭-২০১০

সিলেটে ইসলামী ছাত্রশিবিরের দুই নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ও র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন—র‌্যাব। দক্ষিণ সুরমা উপজেলার সেক্রেটারি আজগর খানকে গতকাল সোমবার উপজেলার কাইস্তরাইল এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে দুপুরে নগরের দরগা গেইট থেকে রফিকুল ইসলাম নামের একজন শিবিরকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়। কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুস সাত্তার জানান, তাঁরা পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুর মামলার আসামি। তাঁদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

2 July 2010

সিলেটে অর্থমন্ত্রীর বাসভবনে জামায়াতের ইটপাটকেল, গাড়ি ভাঙচুর


প্রথম আলো ডেস্ক | তারিখ: ০২-০৭-২০১০


সিলেটে বিক্ষোভ মিছিল করতে না দেওয়ায় জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীরা গতকাল বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের বাসভবনে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেছেন। এ সময় তাঁরা জরুরি বিদ্যুৎ সরবরাহের একটি জিপসহ ১০টি গাড়ি ভাঙচুর করেন।

এদিকে সিলেট, শেরপুর, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলা থেকে জামায়াতে ইসলামী, ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীসহ ২৯ জনকে আটক করেছে পুলিশ। পুলিশের অনুমতি ছাড়া বিক্ষোভ মিছিল করে আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে গত বুধবার তাঁদের আটক করা হয়।

অন্যদিকে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের গ্রেপ্তার হওয়া নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করে গত বুধ ও গতকাল বৃহস্পতিবার ৮৫ জনকে আদালতে পাঠানো হয়। এর মধ্যে আদালত ৬৬ জনকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন, নয়জনের জামিন আবেদন এবং ১০ জনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

আসামিদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া বিক্ষোভ মিছিল, সড়ক অবরোধ, গাড়ি ভাঙচুর, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। অনেককে যুবলীগের নেতাসহ বিভিন্ন ব্যক্তির দায়ের করা হামলা, চুরিসহ বিভিন্ন পুরোনো মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় গত মঙ্গলবার জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমানী নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ ও নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী গ্রেপ্তার হন। এর প্রতিবাদে দলটির নেতা-কর্মীরা গত মঙ্গলবার ও বুধবার সারা দেশে বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ এবং পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এ ঘটনায় পুলিশ খুলনা মহানগর জামায়াতে ইসলামীর আমির মিয়া গোলাম পরওয়ার, কুষ্টিয়া জেলা জামায়াতের আমির আবদুল ওয়াহেদসহ ১৮৫ জনকে গ্রেপ্তার করে।

ঢাকার বাইরে আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক, আঞ্চলিক কার্যালয় ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:
সিলেট: গতকাল দুপুরে সিলেট মহানগর জামায়াতের উদ্যোগে বন্দরবাজার থেকে মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি নগরের কোর্ট পয়েন্ট এলাকার দিকে যেতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় জামায়াতের কর্মীরা পুলিশকে ধাওয়া করে এলোপাতাড়ি ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এতে পাঁচজন পথচারী আহত হন। পরে জামায়াত ও শিবিরের কর্মীরা মিছিল নিয়ে ধোপাদীঘিরপাড়ে গিয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের বাসভবনে ‘হাফিজ কমপ্লেক্স’-এর প্রধান ফটকে ধাক্কা দেন। এ সময় বাড়ির নিরাপত্তাকর্মীরা ফটক বন্ধ করে দিলে মিছিল থেকে কয়েক দফায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। এ সময় পুলিশ তাঁদের ধাওয়া দিয়ে তাড়িয়ে দেয়। মহানগর পুলিশের উপকমিশনার আহসান হাবিব অর্থমন্ত্রীর বাসভবনে ইটপাটকেল নিক্ষেপের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে কানাইঘাট উপজেলার গাছবাড়ী এলাকায় গতকাল দুপুরে জামায়াত-বিএনপি-আওয়ামী লীগের ত্রিমুখী সংঘর্ষে ১৫ জন আহত হয়েছেন। বিক্ষুব্ধ জামায়াত-বিএনপির কর্মীরা গাছবাড়ী এলাকায় আওয়ামী লীগের একটি ইউনিয়ন কার্যালয় ভাঙচুর করেছে। সংঘর্ষ থামাতে ১২ জনকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করে পুলিশ।
খুলনা: খুলনায় জামায়াত নেতা মিয়া গোলাম পরওয়ার, সরকারি বিএল কলেজ ছাত্রশিবিরের সভাপতি আজিজুল ইসলাম ফরাজীসহ ১০ জনকে দুটি পৃথক মামলায় গতকাল এক দিন করে দুই দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। খুলনা মুখ্য মহানগর হাকিম মো. বারেকুজ্জামান এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

শেরপুর: শেরপুর সদর ও নালিতাবাড়ী থানার পুলিশ গত বুধবার গভীর রাতে শেরপুর শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে শেরপুর জেলা জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের নয়জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে। এর মধ্যে রয়েছেন শেরপুর জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি আবদুল বাতেন, নালিতাবাড়ী পৌর জামায়াতের সেক্রেটারি মো. আইয়ুব আলী। সদর থানা পুলিশ গতকাল শেরপুরের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে তাঁদের বিরুদ্ধে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করে। আদালত আগামী রোববার রিমান্ডের ওপর শুনানির দিন ধার্য করেন এবং আসামিদের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেন। পরে তাঁদের শেরপুর জেলহাজতে পাঠানো হয়।

সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম): সীতাকুণ্ড থানায় দ্রুত বিচার আইনে করা মামলায় উপজেলা জামায়াতের সাবেক সেক্রেটারি গিয়াস উদ্দীন, দপ্তর সম্পাদক মোহাম্মদ নজরুল ইসলামসহ জামায়াত ও শিবিরের সাত নেতা-কর্মীকে বুধবার রাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল তাঁদের জেলহাজতে পাঠানো হয়।
নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া): গত মার্চ মাসে দায়ের হওয়া রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় নবীনগর উপজেলার বাঙ্গুরা গ্রামের জামায়াতের সমর্থক আবুল কাশেমকে গত বুধবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল তাঁকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

রাজশাহী: রাজশাহীতে গত বুধবার রাতে জামায়াতের বিক্ষোভ মিছিল ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় গতকাল দ্রুত বিচার আইন ও সরকারি কাজে বাধাদানের অভিযোগে দুটি মামলা করেছে বোয়ালিয়া থানার পুলিশ। এতে গ্রেপ্তার হওয়া রাজশাহী মহানগর জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি আবু বকর সিদ্দিকসহ ছয় নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে। গতকাল তাঁদের জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

কুষ্টিয়া: জামায়াতে ইসলামীর গ্রেপ্তার হওয়া ২৮ জন নেতা-কর্মীকে গত বুধবার কুষ্টিয়া জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে জেলা জামায়াতের আমির আবদুল ওয়াহেদ ও নায়েবে আমির ফরহাদ হুসাইনকে বিক্ষোভ ও যানবাহন ভাঙচুর, জনগণের প্রতিবন্ধকতাসহ পুলিশের কাজে বাধা দেওয়া, কুমারখালী পৌর কমিটির ভারপ্রাপ্ত আমির আবদুল বারী পাটোয়ারীর বিরুদ্ধে কুমারখালী পৌর মসজিদের সামনে বিক্ষোভ ও মারামারি করার অভিযোগে মামলা এবং ভেড়ামারা পৌর আমির হারুন-অর-রশীদকে বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

নাটোর: জেলা জামায়াতের সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল আউয়াল, দপ্তর সম্পাদক সাদেকুর রহমান ও রুহুল কুদ্দুস মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ কাজী রিয়াজুল হকসহ ছয় নেতা-কর্মীকে জেলা যুবলীগের সভাপতি শরিফুল ইসলামের দায়ের করা গাড়িতে হামলা করার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আদালত গতকাল তাঁদের জামিন মঞ্জুর করেন।

বরগুনা: পাথরঘাটা উপজেলায় গতকাল জামিন পেয়েছেন পাথরঘাটা সিদ্দিকিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক জামায়াতের সমর্থক মো. ইয়াছিন, ছাত্রশিবিরের কর্মী গোলাম কিবরিয়া ও নাজমুল হোসেন।

পাবনা: জেলা জামায়াতের আমির আবদুর রহিম, সদর উপজেলা জামায়াতের আমির আবদুল গফফারসহ ২০ জন ও জামায়াতের ২৫০ জন অজ্ঞাত নেতা-কর্মীকে আসামি করে গতকাল দ্রুত বিচার আইনে মামলা করেছে পুলিশ। এ মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া আবদুল গফফারসহ ১১ জন নেতা-কর্মীকে গতকাল জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

1 July 2010

সিলেটে জামায়াত-শিবিরের হামলা-ভাংচুর

Thu, Jul 1st, 2010 10:38 pm BdST


সিলেট, জুলাই ০১ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম) - সিলেট নগরীর কোর্ট পয়েন্ট ও ধোপাদিঘিরপাড় এলাকায় বৃহস্পতিবার দুপুরে ভাংচুর করেছে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা।

এ সময় তারা ধোপাদিঘিরপাড় এলাকায় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের বাসায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে বলে পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বৃহস্পতিবার দুপর ২টার দিকে সিলেট মহানগর জামায়াতের উদ্যোগে কেন্দ্রীয় তিন নেতার মুক্তির দাবিতে বন্দরবাজার থেকে একটি মিছিল বের করা হয়।

মিছিলটি নগরীর কোর্ট পয়েন্ট এলাকার দিকে অগ্রসর হলে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় জামায়াত ও এর সমর্থক ছাত্র সংগঠন শিবিরের কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে পথচারীসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়।

পরে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা মিছিল নিয়ে নগরীর জিন্দাবাজারের দিকে অগ্রসর হলে আবারো পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। তারা মিছিল নিয়ে নগরীর ধোপাদীঘির পাড়ের দিকে চলে যায়। সেখানে তারা অর্থমন্ত্রীর বাসভবন ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে হামলা চালানোর চেষ্টা করে।

নিরাপত্তাকর্মীরা বাসার প্রধান ফটক বন্ধ করে দিলে তারা ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে।

বন্দরবাজার, কোর্ট পয়েন্ট ও ধোপাদিঘিরপাড় এলাকায় জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা কয়েকটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা, পিকআপ, মাইক্রোবাস ও টাউনবাসসহ ৮/১০টি গাড়ি ভাংচুর করে।

সিলেট মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার আহসান হাবিব পলাশ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা অর্থমন্ত্রীর বাসভবন লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেছে।

সহকারী কমিশনার (এসি) আক্তার হোসেন জানান, জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা মিছিল বের করে নগরীতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করলে পুলিশ তাতে বাধা দেয়। এসময় তারা পুলিশের উপর হামলা চালায়।

তিনি বলেন, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। অপ্রীতিকর ঘটনা রোধে নগরীর সবগুলো পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

মহানগর জামায়াতের আমির এহসানুল মাহবুব জুবায়ের দাবি করেন, তাদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিলে কোনো ধরনের উস্কানি ছাড়াই পুলিশ হামলা চালিয়েছে।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/প্রতিনিধি/এমএসবি/২২১৮ ঘ.

30 June 2010

জামায়াত-নিয়ন্ত্রিত মাদ্রাসা থেকে ইটের সুরকি, রড উদ্ধার

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট | তারিখ: ০১-০৭-২০১০


সিলেট নগরের পাঠানটুলা এলাকার জামায়াতনিয়ন্ত্রিত একটি মাদ্রাসায় অভিযান চালিয়ে গতকাল বুধবার বিকেলে পাঁচ বস্তা ইটের সুরকি ও ৩১টি রড উদ্ধার করেছে পুলিশ। গত মঙ্গলবার রাতে পাঠানটুলার কাছে মদিনা মার্কেট এলাকায় পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের সময় এগুলো ব্যবহূত হয়েছে বলে পুলিশ জানায়। এ হামলার ঘটনায় গতকাল কোতোয়ালি থানায় দুটো মামলা করেছে পুলিশ।

সিলেট মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (এসি) আক্তার হোসেন জানান, বুধবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে মদিনা মার্কেটের পার্শ্ববর্তী এলাকায় জামায়াতনিয়ন্ত্রিত পাঠানটুলা শাহ্জালাল জামেয়া ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসায় অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় এখান থেকে পাঁচ বস্তা ইটের সুরকি ও ৩১টি রড উদ্ধার করা হয়। তবে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।

কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা উপপরিদর্শক নারায়ণ দত্ত জানান, গত মঙ্গলবার রাতে মদিনা মার্কেট এলাকায় সড়ক অবরোধকালে জামায়াত-শিবিরের কিছু কর্মী পুলিশের ওপর হামলা চালান ও পুলিশের একটি পিকআপ ভ্যান ভাঙচুর করেন। এ ঘটনায় উপপরিদর্শক ইকরামুল ইসলাম বাদী হয়ে ২৩ জন জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৭০-৮০ জনকে আসামি করে একটি এবং উপপরিদর্শক ডালিম আহমদ বাদী হয়ে ২১ জনের নাম উল্লেখ করে আরেকটি মামলা করেছেন।

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার রাতে মদিনা মার্কেট এলাকায় সড়ক অবরোধকালে পুলিশের সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের কর্মীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ জামায়াত কর্মীরা পুলিশের পিকআপ ভ্যান ভাঙচুর করেন। জামায়াতের কর্মীদের ছোড়া ইট-পাটকেল নিক্ষেপে দুই পুলিশ সদস্য আহত হন।

তিন নেতা গ্রেপ্তারের প্রতিবাদঃ সিলেটে জামায়াতের সড়ক অবরোধ



নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট | তারিখ: ৩০-০৬-২০১০


জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীসহ শীর্ষস্থানীয় তিন নেতাকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে সিলেটে দলীয় নেতা-কর্মীরা গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক অবরোধ করেন। অবরোধকালে নগরের মদিনা মার্কেট এলাকায় পুলিশের সঙ্গে জামায়াতের কর্মীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশের দুই সদস্য আহত হন। পুলিশ জামায়াতের চার কর্মীকে আটক করেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল সন্ধ্যার পর জামায়াতের কর্মীরা মদিনা মার্কেট এলাকায় সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক অবরোধ করার চেষ্টা করেন। পুলিশ বাধা দিলে জামায়াতের কর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এতে ট্রাফিক পুলিশের উপপরিদর্শক ডালিম ও কনস্টেবল মুজিবুর আহত হন। এরপর পুলিশের একটি ভ্যানগাড়ি ভাঙচুর করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন জামায়াতের কর্মীরা।

একইভাবে সন্ধ্যার পর দক্ষিণ সুরমার চণ্ডীপুরে জামায়াতের কর্মীরা সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করেন। পরে সেখানে পুলিশ গেলে তাঁরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

এ ছাড়া রাত পৌনে আটটার দিকে শাহপরান এলাকায় সিলেট-তামাবিল সড়ক অবরোধ করেন জামায়াতের কর্মীরা। তাঁরা সড়কের ওপর টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। রাত সাড়ে আটটার দিকে পুলিশ যাওয়ার পর তাঁরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান।

সিলেট কোতোয়ালি থানার সহকারী কমিশনার (এসি) আখতার হোসেন জানান, পুলিশের আহত দুই সদস্যকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ মদিনা মার্কেট এলাকা থেকে মদিন মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক গাজী নাসিরসহ জামায়াতের চার কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে।

20 June 2010

হবিগঞ্জে শিবির নেতাকে গণধোলাই

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি

হবিগঞ্জের বানিয়াচং জনাব আলী কলেজে শনিবার দুপুরে জোর করে ছাত্রীদের ভর্তি ফরম কেড়ে নিতে গিয়ে গণধোলাইয়ের শিকার হয়েছেন উপজেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মাহবুবুর রহমান।

প্রত্যক্ষদর্শী কলেজছাত্র শফিক আহমেদ জানান, দুপুরে জনাব আলী কলেজে প্রথম বর্ষে ভর্তি ফরম বিতরণ ও পূরণ চলছিল। এ সময় উপজেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মাহবুবুর রহমান দুই ছাত্রীর ফরম জোর করে কেড়ে নেয়। মাহবুব চাইছিলেন ছাত্রশিবিরের তত্ত্বাবধানে তারা ফরম পূরণ করুক। এরই মধ্যে ফরম কেড়ে নেওয়ার বিষয়টি জানাজানি হলে সাধারণ ছাত্র ও কলেজ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা শিবির সভাপতিকে বেধড়ক মারধর করেন। তাঁকে বানিয়াচং স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রিপন চৌধুরী বলেন, 'শিবির সভাপতি জোর করে ছাত্রীদের ফরম কেড়ে নেন। এতে সাধারণ ছাত্ররা উত্তেজিত হয়ে তাঁকে ধোলাই দিয়েছে।'

অন্যদিকে উপজেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মাহবুবুর রহমান বলেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়েছে।

2 June 2010

শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ ও শিবির সংঘর্ষে আহত ৮



শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি | তারিখ: ০২-০৬-২০১০


শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্ত্রিবিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ ও শিবিরের কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বাসে সিট দখলকে কেন্দ্র করে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ক্যাম্পাসে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে। এতে উভয় সংগঠনের আট নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে নোমান আহমদ নামে আঞ্জুমানে তালামিজের এক কর্মীও রয়েছেন।

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, গতকাল দুপুর একটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বাসে সিট রাখাকে কেন্দ্র করে শিবির কর্মী রিপনের সঙ্গে ছাত্রলীগের কর্মী আশরাফ ও ওয়াসিমের কথাকাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে তাঁদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে রিপনের নেতৃত্বে কয়েকজন শিবিরের নেতা-কর্মী বাস আটকিয়ে স্ট্যান্ডের সামনে অবস্থান নেন। এ সময় উভয় সংগঠনের নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। এতে আটজন নেতা-কর্মী আহত হন। আহত ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা হলেন ওয়াসিম, রাজীব, আজগর, হারুন, জিন্নাত। অন্যদিকে শিবিরের নেতা-কর্মীদের মধ্যে আহত ব্যক্তিরা হলেন রিপন আহমেদ, মইনুল ও তানিম।
ছাত্রলীগের নেতা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, শিবির কর্মীরা শান্ত ক্যাম্পাসকে অশান্ত করার চক্রান্ত করছেন। শিবিরের সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন রোমেল জানান, ব্যক্তিগত কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে।

প্রক্টর এস এম সাইফুল ইসলাম জানান, ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি যেকোনো মূল্যে শান্ত রাখার ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সচেষ্ট রয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের ব্যাপারে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

29 May 2010

মৌলভীবাজার সরকারি কলেজঃ ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের সঙ্গে শিবিরের সংঘর্ষ আহত ১৫




মৌলভীবাজার প্রতিনিধি | তারিখ: ৩০-০৫-২০১০


মৌলভীবাজার সরকারি কলেজে গতকাল শনিবার ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের কর্মীদের সঙ্গে ছাত্রশিবিরের কর্মীদের সংঘর্ষে এক কর্মচারীসহ ১৫ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে একটি চাপাতিসহ শিবিরের ছয় কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, গতকাল দুপুরে কলেজে ছাত্রলীগ, ছাত্রদল ও ছাত্রশিবির পৃথকভাবে মিছিল ও সমাবেশ করে। মিছিল-সমাবেশ থেকে পাল্টাপাল্টি স্লোগান দিতে থাকায় একপর্যায়ে ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের সঙ্গে ছাত্রশিবিরের সংঘর্ষ বেধে যায়। এ সময় লাঠিসোঁটা নিয়ে একে অপরের ওপর হামলা চালায় এবং পরস্পরকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। সংঘর্ষে ছাত্রলীগ কর্মী উজ্জ্বল, রুপশান, তপন, বাপ্পু, তুষার আহমদ চৌধুরী, মখলিছ ও সোহান; ছাত্রদলের সোহান; ছাত্রশিবিরের ইকবাল ও আবদুর রহমান; কলেজের কর্মচারী মো. ফরিদ, রিমন, জুবেল, জুয়েল ও আবুল হোসেন আহত হন। আহত ব্যক্তিরা সবাই বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

সংঘর্ষের পর কলেজ ক্যাম্পাসের আশপাশ থেকে ছাত্রশিবিরের কর্মী আবদুর রাজ্জাক, মাহবুবুর রহমান, সাকিল মাহমুদ, খায়রুল ইসলাম, এমদাদুল হক ও সামাদ আহমদকে আটক করে পুলিশ।

ছাত্রলীগের কলেজ শাখার আহ্বায়ক আলাউর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল করছিলাম। এ সময় শিবির আমাদের ওপর হামলা চালায়।’ ছাত্রদল জেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন বলেন, ‘ছাত্রশিবিরই প্রথমে আমাদের ওপর হামলা চালায়।


খবরের লিংক

19 February 2010

সিলেট সরকারি কলেজঃ ছাত্রলীগ-শিবির ব্যাপক সংঘর্ষ, ২৫ কক্ষে আগুন, কলেজ বন্ধ




নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট | তারিখ: ১৯-০২-২০১০



সিলেট সরকারি কলেজের বার্ষিক ক্রীড়া অনুষ্ঠানে গতকাল বৃহস্পতিবার ব্যাপক হাঙ্গামা হয়েছে। এ সময় ধাওয়া, ইটপাটকেল ছোড়া ও ছাত্রাবাসের ২৫টি কক্ষে আগুন লাগানোর ঘটনা ঘটে। ইটপাটকেল নিক্ষেপে পার্শ্ববর্তী এমসি কলেজের ছাত্রশিবিরের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ ছয়জন আহত হন। ছাত্রলীগ কলেজ শাখার অভিযোগ, শিবিরের ক্যাডাররা বহিরাগতদের নিয়ে কলেজ ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা চালালে এ হাঙ্গামা শুরু হয়। শিবিরের পাল্টা অভিযোগ, ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটায়। কলেজ কর্তৃপক্ষ ক্রীড়া অনুষ্ঠান স্থগিত করে ১০ মার্চ পর্যন্ত কলেজের পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করেছে।



সিলেট সরকারি কলেজে গতকাল সংঘর্ষের একপর্যায়ে ছাত্রাবাসে ছাত্রশিবির কর্মীদের কক্ষ ও বিছানাসহ মালামালে আগুন ধরিয়ে দেন ছাত্রলীগের কর্মীরা। ছবি: আনিস মাহমুদ


প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গতকাল কলেজ চত্বরে বার্ষিক ক্রীড়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ সময় শিবিরের কলেজ শাখার কর্মীদের সঙ্গে পাশের এমসি কলেজ শাখা শিবিরের সভাপতি ইয়াছিন খান ও সেক্রেটারি নজরুল ইসলাম থাকায় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ক্ষুব্ধ হন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে তাণ্ডবের পর শিবিরের নেতা-কর্মীরা ক্যাম্পাসে অনুপস্থিত ছিলেন। গতকাল সকাল থেকে বহিরাগতদের নিয়ে তাঁরা সংগঠিত হয়ে ক্যাম্পাসে অবস্থান নেন।

বেলা ১১টার দিকে বহিরাগতদের বিষয় নিয়ে ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মীর সঙ্গে শিবিরকর্মীদের বাগিবতণ্ডা হয়। এর জের ধরে ঘণ্টাখানেক পর শিবিরের কলেজ শাখার নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বহিরাগত শিবিরকর্মীরা এসে যোগ দেয়। এদিকে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরাও সংগঠিত হলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। একপর্যায়ে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে ধাওয়া করে শিবিরকর্মীদের ক্যাম্পাস থেকে তাড়িয়ে দেন।

ধাওয়া খেয়ে শিবিরের নেতা-কর্মীরা তাঁদের নিয়ন্ত্রণে থাকা কলেজের একটি ছাত্রাবাসে গিয়ে আশ্রয় নেন। সেখান থেকে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের লক্ষ্য করে তাঁরা কয়েক দফা ইটপাটকেল ছোড়েন। দুপুর ১২টার দিকে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা আবার সংগঠিত হয়ে ওই ছাত্রাবাসে ঢোকেন। এ সময় শিবিরের কিছু কর্মী দৌড়ে বের হয়ে দেয়াল টপকে পালিয়ে যান। অন্যরা মারমুখী হয়ে দাঁড়ালে ছাত্রলীগের কর্মীদের সঙ্গে তাদের এলোপাতাড়ি ইটপাটকেল ছোড়াছুড়ি হয়। এতে এমসি কলেজের শিবির নেতা ইয়াছিন খান ও নজরুল ইসলাম এবং সরকারি কলেজের শিবিরকর্মী মামুন, মনজুর, কয়েস ও রাজন আহত হন। তাঁদের সিলেট নগরের আল বান্না হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

একপর্যায়ে শিবিরকর্মীরা পিছু হটে ছাত্রাবাস ছেড়ে চলে যান। এ সময় ছাত্রাবাসে শিবির নিয়ন্ত্রিত ২৫টি কক্ষে আগুন লাগান ছাত্রলীগের কর্মীরা। খবর পেয়ে সিলেট কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলীর নেতৃত্বে একদল পুলিশ ক্যাম্পাসে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসে খবর দেয়। দমকলকর্মীরা গিয়ে আগুন নেভান।
ওসি মোহাম্মদ আলী জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ব্যাপারে কলেজ কর্তৃপক্ষ বা অন্য কেউ পুলিশকে লিখিতভাবে কিছু জানায়নি। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি করেছে।

সরকারি কলেজের ছাত্রাবাসের তত্ত্বাবধায়ক ইফতেখার আলম জানান, ওই ছাত্রাবাসের ২৫টি কক্ষে আগুন দেওয়া হয়। এর মধ্যে ১২টি ব্যাপকভাবে ও ১৩টি আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ছাত্রলীগ সিলেট সরকারি কলেজ শাখার আহ্বায়ক দেবাংশু দাস প্রথম আলোকে বলেন, ‘রাজশাহীর ঘটনার পর থেকে শিবির ক্যাডাররা ক্যাম্পাস ছাড়া ছিল। বার্ষিক ক্রীড়া অনুষ্ঠান উপলক্ষে বহিরাগতদের নিয়ে তারা ক্যাম্পাসে হাজির হয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা চালায়। সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে এই নিয়ে আতঙ্ক ছিল। এ জন্য ছাত্রলীগ সাধারণ শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দিয়ে তাদের ক্যাম্পাস ছাড়া করে।’

ছাত্রাবাসে আগুন দেওয়ার বিষয়ে দেবাংশু দাস বলেন, ‘এগুলো চারদলীয় জোট সরকারের আমল থেকেই শিবির ক্যাডারদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। ক্ষুব্ধ সাধারণ ছাত্ররা সেখানে হামলা চালিয়েছেন।’

ছাত্রলীগ নেতার অভিযোগ অস্বীকার করে শিবিরের কলেজ শাখার সভাপতি শাহীন আহমদ বলেন, ‘এ হামলা পূর্বপরিকল্পিত। ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা পুলিশের আশ্রয়ে হামলা চালিয়ে শিবিরকর্মীদের তাড়িয়ে দিয়েছে।’ বহিরাগতদের প্রসঙ্গে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।

সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ আবদুস সোবহান প্রথম আলোকে বলেন, শিক্ষক ও শিক্ষার্থী বার্ষিক ক্রীড়া অনুষ্ঠান নিয়ে ব্যস্ত থাকাকালে এ ঘটনা ঘটে। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির কারণে অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়েছে। ১০ মার্চ পর্যন্ত কলেজের শিক্ষাকার্যক্রম বন্ধ থাকবে।


খবরের লিংক

17 February 2010

সিলেট জামায়াত নেতাসহ ৩১ জনকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ

ঢাকা, ফেব্র"য়ারি ১৭ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- সিলেট জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমিরসহ ৩১ জনকে আট সপ্তাহের মধ্যে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলেছে হাইকোর্ট।

একই সঙ্গে তাদের গ্রেপ্তার বা হয়রানি না করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বুধবার বিচারপতি মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াহাব মিঞা এবং বিচারপতি আব্দুর রাজ্জাকের বেঞ্চ এ নির্দেশ দেয়।

এদিকে একই বেঞ্চ চট্টগ্রামের জামায়াতে ইসলামীর আমির ও সংসদ সদস্য এম শামসুল ইসলামকে আট সপ্তাহের মধ্যে নিু আদালতে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দিয়েছে। তবে সংসদ সদস্য হওয়ায় চাইলে তাকে (শামসুল ইসলামকে) জামিন দিতেও নিু আদালতকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

গত ১২ ফেব্র"য়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনায় সিলেট পুলিশের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্র শিবিরের কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। ওই ঘটনায় পুলিশ ৪২ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করে। এদের মধ্যে ৩১ জন বুধবার আগাম জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন।

সংঘর্ষের দিন ১১ জনকে আটক করা হয়।

পৃথক একটি মামলায় এম শামসুল ইসলামকে আসামি করা হলে তিনিও আগাম জামিন চান।

আসামি পক্ষে আইনজীবী ছিলেন ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক এবং ব্যারিস্টার বেলায়েত হোসেন।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/পিসি/এলএন/এএল/জিএনএ/২১২৫ ঘ.


খবরের লিংক