Showing posts with label রংপুর. Show all posts
Showing posts with label রংপুর. Show all posts

11 April 2011

পীরগাছায় তাফসির মাহফিলে আওয়ামী লীগ-জামায়াত সংঘর্ষ : আহত ২০

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

রংপুরের পীরগাছায় গত রবিবার রাতে তাফসিরুল কোরআন মাহফিলে সরকারবিরোধী বক্তব্য দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে মাহফিল আয়োজক ও জামায়াত সমর্থিত লোকজন এবং আওয়ামী লীগ কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, ভাঙচুর ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকসহ আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১৫ জন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, পীরগাছার দেউতি দারুল হিকমাহ ইসলামী পাঠাগারের উদ্যোগে দেউতি কলেজ মাঠে দুই দিনব্যাপী আয়োজন করা হয় এই মাহফিল। গত রবিবার মাহফিলের প্রথম দিনে রাত সাড়ে ১০টায় প্রধান বক্তা ঢাকার কোরআন রিসার্চ ফাউন্ডেশনের ডিরেক্টর হযরত মাওলানা মুহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল মুজাহিদ তাফসির শুরু করেন। এ সময় তিনি বর্তমান সরকার ও আওয়ামী লীগবিরোধী বক্তব্য দিতে শুরু করলে পারুল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মতিউল ইসলাম ডাবলু, আওয়ামী লীগ কর্মী নুর মোহাম্মদ ও ইমদাদুল হক তাঁদের নিষেধ করেন।

এ সময় আয়োজকদের সঙ্গে প্রথমে তাঁদের বাদানুবাদ হয়। পরে একপর্যায়ে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় আয়োজকদের সঙ্গে যুক্ত হয় জামায়াতে ইসলামীর কর্মী-সমর্থকরা। এরপর তারা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মতিউল ইসলাম ডাবলুর ওপর হামলা চালায়। এতে আহত হন কমপক্ষে ১৫ জন। এরপর এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে আওয়ামী লীগ কর্মীরা মাহফিল মঞ্চ, গেট ও চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করে।

পীরগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসলাম ইকবাল বলেন, এ ব্যাপারে কোনো পক্ষই থানায় লিখিত অভিযোগ করেনি। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।

16 March 2011

কারমাইকেল ও কক্সবাজার কলেজে ছাত্রলীগ-শিবির সংঘর্ষ, আহত ৪০, গ্রেপ্তার ৩৩ শিবিরকর্মী

কালের কণ্ঠ ডেস্ক

স্নাতক শ্রেণীর নবীন ছাত্রছাত্রীদের স্বাগত জানানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে গতকাল মঙ্গলবার রংপুর কারমাইকেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ও কক্সবাজার সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে ছাত্রলীগ-ছাত্রশিবির সংঘর্ষে মোট ৮০ জন আহত এবং ৩৩ শিবিরকর্মী গ্রেপ্তার হয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ১৯ মার্চ পর্যন্ত কারমাইকেল কলেজ বন্ধ ঘোষণা করে ছাত্রছাত্রীদের হলত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

রংপুর থেকে আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক জানিয়েছেন, গতকাল স্নাতক প্রথম বর্ষের নবীন ছাত্রদের স্বাগত জানানোর জন্য ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র ফ্রন্টসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন ক্যাম্পাসে মিছিল করে। কিন্তু ছাত্রশিবির স্বাগত মিছিল না করে বহিরাগত পরিবেষ্টিত হয়ে ক্যাম্পাসে সভা করতে থাকে। ছাত্রলীগকর্মীরা এ সময় ছাত্রশিবির নেতাদের কাছে বহিরাগতদের বের করে দেওয়ার অনুরোধ জানালে উভয় পক্ষে কথা কাটাকাটি ও পরে সংঘর্ষ হয়। পরে উভয় সংগঠন পরস্পরকে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া দেয়। এ সময় শিবিরকর্মীরা জিএল ছাত্রাবাস থেকে লাঠিসোঁটা নিয়ে ছাত্রলীগকর্মী শিশির, সুমন ও কামালকে বেধড়ক পেটায়। তারা দৃক নিউজের রংপুর সংবাদদাতা সেলিম মাহফুজকে মারধর করে এবং অন্য সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়ে। এতে ১০ সাংবাদিকসহ ৪০ জন আহত হয়। এ ঘটনায় সাধারণ ছাত্রছাত্রী ও পার্শ্ববর্তী লালবাগ এলাকার মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় পুলিশ মহানগর শিবিরের সাংগঠনিক সম্পাদক আলামীন হাসান, মহানগর শাখার দপ্তর সম্পাদক মোস্তাফিজার রহমান তুহিন, জিএল হোস্টেল শাখার সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিসহ শিবিরের ২১ নেতা-কর্মীকে আটক করেছে। কলেজ কর্তৃপক্ষ সম্ভাব্য সংঘাত এড়াতে ১৯ মার্চ পর্যন্ত কলেজ বন্ধ এবং গতকাল সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে চারটি ছাত্রাবাসের ছাত্রদের হলত্যাগের নির্দেশ দিয়েছে। এ ছাড়া ঘটনার সূত্রপাত অনুসন্ধানে কলেজ কর্তৃপক্ষ শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাককে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

ঘটনার জন্য উভয় ছাত্র সংগঠন পরস্পরকে দায়ী করে বিবৃতি দিয়েছে। এ ঘটনায় কলেজ ও আশপাশের এলাকায় দুই পক্ষের নেতা-কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। ক্যাম্পাস ও আশপাশের এলাকায় বিপুল পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

এদিকে আমাদের কক্সবাজার অফিস জানিয়েছে, সেখানকার সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে গতকাল সকালে প্রথম বর্ষ স্নাতকের নবীন ছাত্রদের স্বাগত জানানোর প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়ে ছাত্রলীগ ও ছাত্রশিবিরকর্মীদের মধ্যে দুই ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, পুলিশ, সংবাদকর্মীসহ কমপক্ষে ৪০ জন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সলিমুর রহমানসহ পাঁচজনকে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় ১২ শিবির ক্যাডারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা জানান, গতকাল নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ করে নেওয়ার জন্য কলেজের প্রশাসনিক ভবনের গেটে শিবির ও ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা সকাল থেকেই প্রতিযোগিতা শুরু করে দেয়। শিবিরকর্মীরা রীতিমতো ল্যাপটপ নিয়ে বসে শিক্ষার্থীদের ছবি ও নামধাম তালিকাভুক্ত করা শুরু করে। একপর্যায়ে উভয় ছাত্র সংগঠনের কর্মীরা লাইনে দাঁড়িয়ে শিক্ষার্থীদের বরণ করার চেষ্টা করলে প্রথমে কথা কাটাকাটি এবং পরে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। শিবিরকর্মীরা বেশ কিছু ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীকে মারধর করে। সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সলিমুর রহমান, ইসলামের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মুজিবুল আলমসহ কয়েকজন সাংবাদিক ও পুলিশ সদস্য আহত হন। আহতদের বেশির ভাগই ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী বলে জানা গেছে। সংঘর্ষের সংবাদ পেয়ে বিপুলসংখ্যক পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় সাত পুলিশ সদস্য আহত হন। পুলিশ কলেজ ক্যাম্পাস ও আশপাশের এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১২ শিবির ক্যাডারকে গ্রেপ্তার করে। এ ব্যাপারে আহত পুলিশ সাব-ইন্সপেক্টর উনুমং বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। উল্লেখ্য, প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থীর এ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজটিতে দুই দশক ধরে ইসলামী ছাত্রশিবিরের আধিপত্য বিরাজ করে আসছিল।

9 October 2010

সাঘাটায় জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ

গাইবান্ধা প্রতিনিধি

গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমির ছিলমানেরপাড়া সিরাজুল উলুম ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এ বি এম ছলিম উদ্দিন ব্যাপারীর বিরুদ্ধে ওই মাদ্রাসার আয়াকে ধর্ষণ প্রচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। ছলিম উদ্দিন ব্যাপারী ১৯৯৬ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াত মনোনীত সাঘাটা-ফুলছড়ি আসনে এমপি প্রার্থী ছিলেন। এ ব্যাপারে শুক্রবার রাতে সাঘাটা থানায় আয়া নুরুন্নাহার বেগম বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন।

নুরুন্নাহার বেগমের অভিযোগ, মামলার বিবরণ, পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, নুরুন্নাহার ওই মাদ্রাসায় আয়া এবং তাঁর বাবা নুরুল ইসলাম সেখানে এমএলএসএস পদে চাকরিরত। জামায়াত নেতা অধ্যক্ষ ছলিম উদ্দিন প্রায়ই আয়া নুরুন্নাহারকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। কিন্তু নুরুন্নাহার ওই কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় অধ্যক্ষ তাঁর বাবা নুরুল ইসলামসহ তাঁকে চাকরিচ্যুত করার হুমকি দিতেন। তাঁরা বিভিন্ন সময় বিষয়টি অন্যান্য শিক্ষক এবং মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সদস্যদের জানালে তাঁরা এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নেননি। বৃহস্পতিবার রাতে অধ্যক্ষ ছলিম উদ্দিন ব্যাপারী কৌশলে নুরুন্নাহারের শোয়ার ঘরে ঢুকে তাঁকে ধর্ষণের চেষ্টা চালান। এ সময় নুরুন্নাহার চিৎকার দিলে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে ছলিম উদ্দিনকে হাতে-নাতে আটক করে বেদম মারধর করে। পরে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির এক সদস্য মীমাংসার কথা বলে তাঁকে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেন।

24 September 2010

রংপুরে ৫০০ মেস-মালিক পুলিশকে তথ্য দিচ্ছেন না

আরিফুল হক, রংপুর | তারিখ: ২৫-০৯-২০১০

রংপুর শহরে সহিংসতার ঘটনা এড়াতে প্রায় দেড় হাজার মেসের বাসিন্দাদের জীবনবৃত্তান্ত জানাতে দুই মাস আগে মেসমালিকদের ফরম দিয়েছিল পুলিশ। এক হাজারের মতো মেসমালিক এরই মধ্যে ফরম জমা দিয়েছেন। কিন্তু পাঁচ শতাধিক মেসমালিক এখনো তাঁদের ফরম জমা দেননি।

পুলিশ জানিয়েছে, ইসলামী ছাত্রশিবিরের নিয়ন্ত্রণাধীন ওই মেসের মালিকদের চারবার তাগাদা দেওয়া হলেও তাঁরা বাসিন্দাদের জীবনবৃত্তান্ত জানাননি। এতে পুরো উদ্যোগ ব্যর্থ হতে চলেছে। অন্যদিকে মেসমালিকদের ভাষ্য, পুলিশকে মেসের বাসিন্দাদের জীবনবৃত্তান্ত জানাতে তাঁরা বাধ্য নন।

পুলিশের একাধিক সূত্র ও অনুসন্ধানে জানা গেছে, রংপুর শহরের বিভিন্ন পাড়া ও মহল্লায় শিক্ষার্থীদের বসবাসের জন্য আনুমানিক দেড় হাজার মেস রয়েছে। গত কয়েক বছরে কারমাইকেল কলেজের আশপাশ এলাকার মেসগুলো থেকে কলেজে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়েছে। কলেজকে নিয়ন্ত্রণ করতে ছাত্রশিবিরের অনেক নেতা-কর্মী এসব মেসে থাকেন এবং মেসে আধিপত্য বিস্তার করেন। অভিযোগ রয়েছে, মেসগুলোতে বিভিন্ন সময় জঙ্গিরাও আশ্রয় নেয়। মেসগুলো সন্ত্রাসমুক্ত করতে জেলা পুলিশ গত জুলাই মাসের শুরুর দিকে মেসে বসবাসকারী শিক্ষার্থীদের জীবনবৃত্তান্ত জানার উদ্যোগ নেয়। এ জন্য পুলিশ নিজ উদ্যোগে ফরম তৈরি করে তা মেসগুলোতে সরবরাহ করে। দুই মাস ধরে পুলিশের একটি বিশেষ শাখা এ কাজটি করছে।

পুরো কাজটি তদারক করছেন জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপপরিদর্শক (এসআই) শরিফুল ইসলাম। প্রথম আলোকে তিনি জানান, কারমাইকেল কলেজের চারদিকে এক হাজারেরও বেশি মেস রয়েছে। এসব মেস কলেজপাড়া, দর্শনা মোড়, আশরতপুর, চকবাজার, পার্কের মোড়, মডার্ন মোড়, কেডিসি রোড, চুড়িপট্টি, খামার, কলেজ রোড, বনানীপাড়া, আদর্শপাড়া, বালাপাড়া, তাজহাট, বাবুপাড়া, স্টেশন, বাবুখা, কামারপাড়াসহ আরও কিছু এলাকায় রয়েছে। এর মধ্যে কলেজপাড়া, চকবাজার, আশরতপুর, কামারপাড়া, আদর্শপাড়া এলাকার পাঁচ শতাধিক মেসমালিক এখনো মেসে থাকা শিক্ষার্থী ও বাসিন্দাদের জীবনবৃত্তান্ত জানাননি।

এসআই শরিফুল জানান, অনেক ক্ষেত্রে মেসে থাকা ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীরাই মেসমালিকদের জীবনবৃত্তান্ত দিচ্ছেন না এবং তাঁদের ওপর চাপ প্রয়োগ করছেন।

এদিকে পুলিশ জানিয়েছে, শহরের খলিফাটারী ও কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় ছাত্রশিবিরের নিয়ন্ত্রণাধীন ৩০টি মেস পুলিশের নজরদারিতে রয়েছে। এর মধ্যে আছে দেলোয়ার, জামান, বীথি, আরিফ, নলেজ, ধানসিড়ি, জিম ও বাস টার্মিনাল এলাকার জেজা এম ছাত্রাবাস।

দেলোয়ার ছাত্রাবাসের মালিক দেলোয়ার হোসেন জানান, মেসে কারা বসবাস করছে এর হিসাব পুলিশকে জানাতে হবে কেন। নলেজ ছাত্রাবাসের মালিক নূরুল হক জানান, বাড়িতে কারা থাকছে এর তালিকা দিতে আমরা বাধ্য নই। ধানসিড়ি ছাত্রাবাসের শহীদুল ইসলামসহ অন্য ছাত্রাবাসের মালিকেরাও একই ধরনের কথা জানিয়েছেন।

পুলিশ সুপার (এসপি) সালেহ মোহাম্মদ তানভীর প্রথম আলোকে বলেন, অপরাধীরা শিক্ষার্থী হয়ে মেসগুলোতে অবস্থান নেয়। এ ছাড়া কারমাইকেল কলেজের আশপাশের অধিকাংশ মেস ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীরা নিয়ন্ত্রণ করেন। এসব মেসে কয়েক দফা অভিযান চালানো হলেও ছাত্রশিবিরের সন্ত্রাসীদের পাওয়া যায়নি। তাঁরা এখন ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা শহরের বিভিন্ন মেসে অবস্থান নিয়েছেন।

এসপি সালেহ বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ শহরের সার্বিক পরিস্থিতির যাতে অবনতি না ঘটে এ জন্য মেসগুলোতে শিক্ষার্থীদের অবস্থান জানতে একটি ফরম তৈরি করে মেসমালিকদের দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অনেক মেসমালিক এতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। এসব মেসের সংখ্যা পাঁচ শতাধিক হবে।

এ ব্যাপারে কারমাইকেল কলেজ শাখা ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশীদ গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের নির্দিষ্ট কোনো মেস নেই এবং আমাদের নিয়ন্ত্রণেও কোনো মেস নেই। পুলিশ প্রশাসন যদি এ কথাটি বলে থাকে তবে তা সত্যি নয়। তা ছাড়া মেসগুলোতে সাধারণ শিক্ষার্থীরাই থাকে।’

8 August 2010

গাইবান্ধার 'যুদ্ধাপরাধী' আব্দুল আজিজের ওপর নজরদারি বাড়ল

গাইবান্ধা প্রতিনিধি

গাইবান্ধা জেলা জামায়াতের সাবেক আমির সুন্দরগঞ্জ থেকে নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদস্য এবং অভিযুক্ত 'যুদ্ধাপরাধী' মাওলানা আব্দুল আজিজের ওপর পুলিশের নজরদারি আরো কঠোর করা হয়েছে। গতকাল রবিবার থেকে তাঁর ওপর নজরদারি নতুন করে বাড়ানো হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রক্রিয়া শুরু হলে গত ২৭ এপ্রিল থেকে আব্দুল আজিজকে পুলিশের প্রত্যক্ষ নজরদারিতে আনা হয়। সার্বক্ষণিক পুলিশ প্রহরায় এত দিন তিনি তাঁর চলাফেরা ও স্বাভাবিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছিলেন। দলীয় সভা ও কর্মসূচিতেও তাঁর অংশগ্রহণের সুযোগ ছিল। কিন্তু গতকাল থেকে তাঁর বাইরে চলাচলের ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে বলে অভিযোগে জানা যায়। বর্তমানে তিনি সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুরের চাচিয়া মীরগঞ্জে তাঁর নিজ বাড়িতে অবস্থান করছেন। দেশের বিভিন্ন এলাকায় জামায়াত-শিবিরের রাজনৈতিক তৎপরতা বৃদ্ধি এবং কোনো কোনো নেতার সরকার ও রাষ্ট্রবিরোধী বক্তব্যের কারণে তাঁর বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

এ ব্যাপারে সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান জানান, মাওলানা আজিজের ওপর আগের তুলনায় পুলিশি নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। তিনি এখন থেকে দলীয় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে পারবেন না। এদিকে জেলা জামায়াতের আমির ডা. আব্দুর রহিম বলেন, তাঁর স্বাভাবিক চলাফেরার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা গণতান্ত্রিক অধিকার হরণের নামান্তর।

30 March 2010

কারমাইকেল কলেজঃ মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য নির্মাণ শেষ হবে কবে




শান্ত নূরুননবী | তারিখ: ৩১-০৩-২০১০


রংপুরের কারমাইকেল কলেজ বাংলাদেশে বিখ্যাত ও ঐতিহ্যমণ্ডিত। আব্দুর রহমান, শাহ সোলায়মান আলী, কালাচাঁদ রায়, চিত্তরঞ্জন রায়, সুনীল বরণ চক্রবর্তী, রামকৃষ্ণ অধিকারী, মুখতার এলাহীসহ এই কলেজের অনেক শিক্ষক-শিক্ষার্থী ১৯৭১ সালে এ দেশের স্বাধীনতার জন্য প্রাণ দেন। অথচ এই বিশাল কলেজ ক্যাম্পাসে আজও মুক্তিযুদ্ধের কোনো দৃশ্যমান স্মারক নেই।

শব্দকণ্ঠ কারমাইকেল কলেজের সাংস্কৃতিক সংগঠন—তারুণ্যে ভরপুর এর সদস্যরা আশি ও নব্বইয়ের দশকে নিছক কবিতা লিখে ও আবৃত্তি চর্চা করে তুষ্ট হতে পারেননি। মুক্তিযুদ্ধ ও প্রগতির চেতনা বিকাশে নানামুখী কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে শুধু কারমাইকেল কলেজে নয়, পুরো রংপুর শহরেই সুস্থ সংস্কৃতির বিকাশে অগ্রগণ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন। স্বাধীনতার ৩০ বছর পর দীর্ঘ সামরিক শাসন শেষে ১৯৯১ সালে শব্দকণ্ঠ কারমাইকেল কলেজে মুক্তিযুদ্ধের একটি স্মারক ভাস্কর্য নির্মাণের পরিকল্পনা করে।

ভাস্কর্যের একটি নকশা তৈরি করেন ভাস্কর অনিক রেজা। কলেজের নজরকাড়া স্থাপত্যশৈলীর শতবর্ষী মূল ভবনের সঙ্গে সংগতি রেখেই নকশা করা হয়েছিল। মঞ্চ হিসেবে ব্যবহারের উপযোগী নকশা করা হয়েছে পাঁচ ফুট উঁচু বেদির। পেছন দিকে সরু ও সামনের দিকে ধাপে ধাপে বেদির ওপরের দিকে উঠে যাবে প্রশস্ত সিঁড়ি। বেদির শরীরজুড়ে জড়িয়ে থাকবে বীর শহীদদের মুখাবয়বের ম্যুরাল। বেদির সম্মুখ ভাগে প্রশস্ত মঞ্চ রেখে পেছনে স্থাপিত হবে ১০ ফুট উচ্চতার মুক্তিযোদ্ধার আদল। মুক্তিযোদ্ধার প্রত্যয়ী ডান হাতের বজ্রমুষ্ঠিতে ধরা রাইফেল। বাঁ হাত বাবার স্নেহে জড়িয়ে রাখবে কাঁধে বসে থাকা শিশুর পা। মুক্তিযোদ্ধার কাঁধে বসে থাকা শিশু ডান হাতে উঁচু করে রাখবে লাল-সবুজ পতাকা। বাবার মাথায় বাঁ হাত। নতুন প্রজন্মের পক্ষ থেকে মুক্তিযোদ্ধা বাবার পতাকার মান রাখার প্রতিশ্রুতি এভাবেই প্রকাশিত ভাস্কর্যে। ভাস্কর্যের নাম তাই প্রজন্ম। রড-সিমেন্ট-পাথরে ভাস্কর্য নির্মাণ করা হবে ৪০০ বছরের স্থায়িত্ব নিশ্চিত করে।

একটি সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চত্বরে ভাস্কর্য নির্মাণের অনুমতি নিতে শব্দকণ্ঠকে পার হতে হয়েছে নানা দপ্তরের লালফিতার জাল। তখনকার অধ্যক্ষ রেজাউল হক অবশ্য প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক সহায়তা করেছেন। তারপর শুরু হয় কুপন ছাপিয়ে ১০ টাকা, ২০ টাকা, ৫০ টাকা করে অর্থ সংগ্রহের কাজ। কারমাইকেল কলেজের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও রংপুরের আপামর জনগণের স্বতঃস্ফূর্ততায় অল্প সময়েই জোগাড় হয়ে যায় দুই লাখ টাকা। যা জমা হয়েছিল ন্যাশনাল ব্যাংকের রংপুর শাখার অ্যাকাউন্টে। এটি ছিল রেজাউল হক ও অধ্যাপক মোজাহার আলীর যৌথ নামে। টাকা সংগ্রহের কাজ চলমান রেখে ১৯৯২ সালে স্থাপিত হয় প্রজন্মের ভিত্তিপ্রস্তর। ভাষাসৈনিক আ ন ম গাজীউল হক রংপুরে এসে উন্মোচন করেন এই ভিত্তিপ্রস্তর।

বেদির নির্মাণকাজে কেবল শব্দকণ্ঠই নয়, অংশ নিল কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে সব প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধিরা। মনে করতে এখনো ভালো লাগে, আমরা সবাই সারবেঁধে একজনের হাত থেকে আরেকজন ইট নিয়ে সরবরাহ করেছিলাম নির্মাণকর্মীদের হাত পর্যন্ত।

স্বাধীনতাবিরোধী চেতনার ধারক ইসলামী ছাত্রশিবিরের কর্মীরা কারমাইকেল কলেজে ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতা করে শুরু থেকেই। বেদি নির্মাণের প্রাথমিক কাজ যখন সমাপ্তির পথে, ১৯৯২ সালের ২৯ মার্চ জামায়াতে ইসলামীর পোষ্য সংগঠন ছাত্রশিবিরের গুন্ডাবাহিনী কলেজে প্রবেশের মুখে ধারালো অস্ত্র নিয়ে আক্রমণ করে শব্দকণ্ঠের কর্মীদের ওপর। লোহার রড দিয়ে পায়ের হাড় থেঁতলে দেওয়া হলো অবিনাশ রেজার (বর্তমানে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক); বোমার আঘাতে ছিন্ন হয়ে গেল মোজেদুর রহমান সুষমের বাঁ পায়ের লিগামেন্ট; দুই পায়ের হাড় ভেঙে দেওয়া হলো এবং মাথা ফাটিয়ে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া হলো জুয়েল মমতাজকে (ছয় মাস চিকিৎসার পর সুস্থ হয়ে ঢাকায় একটি বেসরকারি কোম্পানিতে কর্মরত)। তার আগেই শব্দকণ্ঠের কাজে সহযোগিতা করার অপরাধে শিবিরের গুন্ডাদের প্রহারে গুরুতর আহত হলেন ছাত্রলীগের তত্কালীন নেতা রফিক সরকার (বর্তমানে ডেইলি স্টার-এর রংপুর প্রতিনিধি)। ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো ভাস্কর্যের বেদি। পরের দিন ৩০ মার্চ ১৯৯২ বিকেলে ভাস্কর্য নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত থাকার জন্য ভাস্কর্যের অর্ধনির্মিত বেদির পাশেই পিটিয়ে আধমরা করা হলো ছাত্রলীগের (জাসদ) নেতা প্রদীপকে। পুরো শহর স্তব্ধ হয়ে গেল এই ন্যক্কারজনক ঘটনায়, কিন্তু কিছুই করল না বা করতে পারল না পুলিশ কিংবা প্রশাসন; কারণ তত দিনে ‘ধর্মের নামে বজ্জাতি’ করে বেড়ানো এই দলটি অনেক শক্তিশালী হয়ে উঠেছে।

কিছু দিনের মধ্যে ভাস্কর্য বাস্তবায়ন কমিটি নামে একটি কমিটি গঠন করে অপশক্তির বিরুদ্ধে সংগঠিত হওয়ার উদ্যোগ নিল রংপুরের মানুষ। কমিটিতে যুক্ত হলেন রংপুরের ১৭টি রাজনৈতিক, অরাজনৈতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা। কমিটির তত্ত্বাবধানে ১৯৯২ থেকে ১৯৯৯ সময়কালে ভাস্কর্যের বেদিমূল সম্পন্ন করা সম্ভব হয়েছিল। তারপর ১৯৯৯ সালের ২৬ জুলাই অস্ত্রবাজি করে পুরো কারমাইকেল কলেজ দখল করল ছাত্রশিবির। সেখানে ছাত্রদল, ছাত্রলীগসহ সব দলেরই কার্যক্রম থেমে গেল শিবিরের দাপটের তোড়ে এবং আবারও ভেঙে ফেলা হলো প্রজন্মের বেদি।

অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, কেবল ছাত্রশিবিরের প্রতাপের কারণে কারমাইকেল কলেজে, প্রায় ২০ হাজার শিক্ষার্থীর এই শিক্ষাঙ্গনে, একটি মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য নির্মাণ করা যাচ্ছে না। মাসুদ করিম নামের একজন সংস্কৃতিকর্মী দুঃখ করে বলেন, ‘যে দেশে মৌলবাদীদের ভয়ে বিমান বন্দরের সামনে লালনের ভাস্কর্য নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়, ঢাকার বলাকা ভাঙচুরকারীদের সাজা হয় না, সেখানে রংপুরে প্রজন্ম ভাস্কর্য নির্মাণ করা সত্যিই কঠিন কাজ।’

মাসুদকে প্রশ্ন করি, কতটা কঠিন? তীর-ধনুক নিয়ে ১৯৭১ সালে রংপুর ক্যান্টনমেন্ট ঘেরাও করার চেয়ে কি কঠিন?

মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগ এখন ক্ষমতাসীন। রংপুরবাসী আশা করে, বাংলাদেশের সপ্তম বিভাগীয় শহর রংপুরের স্বনামধন্য কারমাইকেল কলেজে মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য প্রজন্ম নির্মাণে সরকার ও প্রশাসন এখনি উদ্যোগী হবে।


খবরের লিংক

4 March 2010

রাজশাহী, কুড়িগ্রাম ও কক্সবাজার থেকে শিবিরের ১১ কর্মী আটক

প্রথম আলো ডেস্ক | তারিখ: ০৫-০৩-২০১০


রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ফারুক হোসেন হত্যাকাণ্ড এবং পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ইসলামী ছাত্রশিবিরের ১১ কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার ও গত বুধবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, রাজশাহীর বাগমারা, কক্সবাজারের সেন্ট মার্টিন ও কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলা থেকে তাঁদের আটক করা হয়। তাঁদের মধ্যে দুজন ফারুক হত্যা ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামি। গতকাল তাঁদের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

আটক হওয়া শিবিরের কর্মীরা হলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র আতাউর রহমান, ইসলামি শিক্ষা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের মাহমুদুল হাসান ও ভাষা বিভাগের স্নাতকোত্তরের আরাফাত হোসেন এবং ঠাকুরগাঁওয়ের দেলোয়ার হোসেন সাইদী, লক্ষ্মীপুরের রামগতির রায়হান, রাজশাহীর আশরাফুল ইসলাম, নওগাঁর সানাউল্লাহ, কক্সবাজারের কুতুবদিয়া উপজেলার শাহজাহান ও সদরের ঈদগাঁও এলাকার মিজান। গ্রেপ্তার হওয়া শিবিরের কর্মীরা হলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামি শিক্ষা বিভাগের স্নাতকোত্তর বিভাগের ছাত্র রেজাউল হক এবং একই বিভাগের স্নাতক (সম্মান) চতুর্থ বর্ষের ছাত্র আবদুর রাজ্জাক (২৫)।

ঢাকার বাইরে আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়: গতকাল বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে ছাত্রশিবিরের কর্মী আতাউর রহমানকে আটক করে রাজশাহী মহানগরের মতিহার থানার পুলিশ। এরপর দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব আবদুল লতিফ হলের ১৫৮ নম্বর কক্ষ থেকে মাহমুদুল হাসানকে আটক করা হয়। বিকেল পাঁচটার দিকে ক্যাম্পাস থেকে আটক করা হয় আরাফাত হোসেনকে।

মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তোফাজ্জাল হোসেন খান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আটক হওয়া কর্মীদের থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

বাগমারা (রাজশাহী): বাগমারার নন্দনপুর গ্রামের চিকাবাড়ী বাজার থেকে গতকাল সকালে শিবিরের কর্মী আবদুর রাজ্জাককে গ্রেপ্তার করে বাগমারা থানার পুলিশ। তাঁর বাড়ি নন্দনপুর গ্রামে।

বাগমারা থানার উপসহকারী পরিদর্শক (এএসআই) আনিসুর রহমান জানান, ফারুক হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি রাজ্জাক ঘটনার পর থেকে পলাতক ছিলেন। গতকাল তাঁকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়।

কুড়িগ্রাম: ভূরুঙ্গামারী উপজেলার শিলখুড়ি ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী পাগলাহাট বাজারের একটি কাপড়ের দোকান থেকে গত বুধবার সন্ধ্যায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিবিরের কর্মী রেজাউল হককে গ্রেপ্তার করেন র্যাব-৫-এর সদস্যরা। পরে তাঁকে ভূরুঙ্গামারী থানার পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।

ভূরুঙ্গামারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল মোনায়েম জানান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ফারুক হত্যাকাণ্ডের দিন পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় দায়ের করা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি রেজাউল। তাঁর বাড়ি ভূরুঙ্গামারীর দিয়াডাঙ্গা গ্রামে।

টেকনাফ (কক্সবাজার): গতকাল বিকেলে টেকনাফ উপজেলার প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিন থেকে ছাত্রশিবিরের ছয় কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। পরে তাঁদের স্পিডবোটে করে কড়া নিরাপত্তায় টেকনাফ থানায় নিয়ে আসা হয়।

টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খালেদ হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ফারুক হত্যাকাণ্ডসহ সৃষ্ট ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ছাত্রশিবিরের ছয় কর্মীকে আটক করা হয়েছে। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জিহাদী বই জব্দ
নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী: রাজশাহী মহানগরে গতকাল সকালে শিবির নিয়ন্ত্রিত পাঁচটি ছাত্রীনিবাসে অভিযান চালিয়ে সাতটি ইসলামি জিহাদি বই জব্দ করেছে পুলিশ। অভিযান চালানো ছাত্রীনিবাসগুলো হলো নগরের রাজারহাতা এলাকার মঞ্জিল ছাত্রীনিবাস, মালোপাড়ার গ্রিনভ্যালি, হাতেম খাঁ এলাকার নূরমহল ও প্যারাগন এবং রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের পাশের শান্তিনিকেতন ছাত্রীনিবাস।

রাজশাহী মহানগর পুলিশের বিশেষ শাখার সহকারী কমিশনার তারিকুল ইসলাম জানান, কিছু ছাত্রী শিবিরের ক্যাডারদের সহযোগিতা করছে—এমন খবর পেয়ে ওই পাঁচটি ছাত্রীনিবাসে গতকাল অভিযান চালিয়ে সাতটি জিহাদি বই জব্দ করা হয়।


খবরের লিংক

19 February 2010

জামায়াত নেতা গ্রেপ্তারঃ রংপুরে মুক্তিযোদ্ধাকে মারধরের প্রতিবাদে মানববন্ধন, বিক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর | তারিখ: ১৯-০২-২০১০


রংপুরের কাউনিয়া উপজেলায় জামায়াত-শিবির কর্মীদের হাতে এক মুক্তিযোদ্ধা আহত হওয়ার প্রতিবাদে মুক্তিযোদ্ধারা গতকাল বৃহস্পতিবার রংপুর শহরে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন।

রংপুর প্রেসক্লাবের সামনে বেলা ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ। এ সময় সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংসদের আহ্বায়ক মঞ্জুরুল ইসলাম। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন মুক্তিযোদ্ধা মজিবর মাস্টার, মুক্তিযোদ্ধা কাইয়ুম মণ্ডল প্রমুখ।

মানববন্ধন শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয় গিয়ে শেষ হয়।

কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছ পৌর এলাকার ঠাকুরদাস গ্রামে মুক্তিযোদ্ধা আবদুল কুদ্দুসকে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় লাঠি দিয়ে পিটিয়ে মাথা ফাটিয়ে দেয় সন্ত্রাসীরা। তিনি এখন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিত্সাধীন।

ঘটনার দিন রাতেই হারাগাছ পৌরসভা শাখা জামায়াতে ইসলামীর আমির মো. আমিনুর রহমানসহ ছয়জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন আবদুল কুদ্দুস। মামলার পর রাতেই আমিনুর রহমানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার আদালতের মাধ্যমে তাঁকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

আবদুল কুদ্দুস প্রথম আলোকে জানান, জামায়াতের সদস্য হওয়ার জন্য জামায়াত-শিবির নেতা-কর্মীরা তাঁকে চাপ প্রয়োগ করে আসছেন। এতে রাজি না হওয়ায় তাঁর ওপর হামলা করেছেন তাঁরা।



খবরের লিংক

17 February 2010

রংপুরে জামায়াত নেতা গ্রেপ্তার

রংপুর, ফেব্র"য়ারি ১৭ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কুদ্দুসের ওপর হামলার ঘটনায় বুধবার রংপুরের হারাগাছ পৌর জামায়াতের আমির আমিনুর রহমানকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।

এ সময় তার বাড়ি থেকে বেশকিছু জেহাদি বই উদ্ধার করা হয়।

বিচার বিভাগীয় হাকিম মাহমুদুল হাসানের আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় হারাগাছ পৌর এলাকার ঠাকুরদাস বাজারে সন্ত্রাসীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে আব্দুল কুদ্দুসের ওপর হামলা চালায়।

এ ঘটনায় ওইদিন রাতেই কুদ্দুসের ছেলে আতিকুল ইসলাম বাদী হয়ে হারাগাছ পৌর জামায়াতের আমির আমিনুল ইসলাম, সেক্রেটারি আইনুল ইসলাম, শিবির কর্মী রব্বানী, মিলন, আজাদ ও সাজুর বিরুদ্ধে কাউনিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন।

কাউনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন আব্দুল কুদ্দুস বলেন, তার ছেলে আতিকুল ইসলামকে শিবিরে যোগদান করানোর জন্য স্থানীয় জামায়াত ও শিবির ক্যাডাররা চাপ দিচ্ছিল।

তিনি জানিয়ে দেন, "আমার ছেলে স্বাধীনতা বিরোধী যুদ্ধপরাধীর দল করতে পারে না। আমি বেঁচে থাকতে তা হতে দেব না।"

এ কারণে জামায়াত নেতা আইনুল ইসলাম ও শিবির ক্যাডার রব্বানী এবং তাদের আরও কয়েকজন সন্ত্রাসী তার উপর হামলা চালায় বলে তিনি জানান।

কাউনিয়া থানার ওসি রাফিউল ইসলাম বলেন, সকালে হারাগাছ দরদি বাজার এলাকার বাসা থেকে আমিনুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়।

জঙ্গি তৎপরতার সঙ্গে এই নেতার কোনো সম্পৃক্ততা আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ কর্মকর্তা জানান।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপারিনটেনডেন্ট খন্দকার নাজমুল হুদা তৌহিদ বলেন, মুক্তিযোদ্ধা কুদ্দুসের ওপর হামলার পরপরই আমরা সন্ত্রাসীদের পাকড়াও করার অভিযান শুরু করেছি। একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের ধরার চেষ্টা চলছে।"

স্থানীয় সংসদ সদস্য টিপু মুন্সি বলেন, "শুনেছি পুলিশ একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। আমি চাই সকল সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হোক।"

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/প্রতিনিধি/ডিডি/২৩৫৫ ঘ.


খবরের লিংক

16 February 2010

কাউনিয়ায় মুক্তিযোদ্ধার মাথা ফাটাল জামায়াত শিবিরের ক্যাডাররা

কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধি | তারিখ: ১৭-০২-২০১০


রংপুরের কাউনিয়া উপজেলায় জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের ক্যাডাররা লাঠি দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা আবদুল কুদ্দুসের (৬৫) মাথা ফাটিয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উপজেলার হারাগাছ বাংলাবাজার এলাকায় প্রকাশ্যে এ ঘটনার পর আবদুল কুদ্দুসকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

এ ঘটনায় আবদুল কুদ্দুসের ছেলে আতিকুর রহমান (১৯) গতকাল রাতে কাউনিয়া থানায় মামলা করেছেন। মামলায় কাউনিয়া পৌর জামায়াতের সেক্রেটারি আইনুল ইসলাম, শিবিরের কর্মী রব্বানী, মিলন ও আজাদসহ পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে।

আতিকুর রহমান অভিযোগ করে প্রথম আলোকে বলেন, হারাগাছ পৌরসভার জামায়াতের সেক্রেটারি অবসরপ্রাপ্ত বিডিআর সদস্য আইনুল ইসলাম (৫২) দীর্ঘদিন ধরে তাঁকে শিবিরে যোগ দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করছেন। একপর্যায়ে শিবিরের কর্মীরা আবদুল কুদ্দুসকে অনুরোধ করেন তিনি যেন আতিকুরকে শিবিরে যোগ দেওয়ার অনুমতি দেন। কিন্তু আবদুল কুদ্দুস এতে আপত্তি জানান। ক্ষিপ্ত হয়ে শিবিরের কর্মী রব্বানীর নেতৃত্বে জামায়াত-শিবিরের ক্যাডাররা গতকাল সন্ধ্যায় প্রকাশ্যে তাঁর মুক্তিযোদ্ধা বাবাকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে মাথা ফাটিয়ে দেয়।

এ ব্যাপারে কাউনিয়া পৌর জামায়াতের সেক্রেটারি আইনুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

কাউনিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিত্সক আল আরাফাত জানান, আবদুল কুদ্দুসের মাথা ফেটে গেছে। তিনি এখনো শঙ্কামুক্ত নন। কাউনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাফিউল আলম জানান, এ ব্যাপারে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।


খবরের লিংক