নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম | তারিখ: ২০-১২-২০১০
চট্টগ্রাম জেলা জামায়াতে ইসলামী এবং ছাত্রশিবিরের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। তবে সরকারবিরোধী আন্দোলনে চট্টগ্রামের রাজপথে সক্রিয় নয় জামায়াত। রাজপথে নামলেই ধরপাকড় হতে পারে—এমন আশঙ্কায় জামায়াত-শিবির রাজপথে নামছে না বলে জানা গেছে।
নগর জামায়াতের আমির শামসুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘পুলিশের ধরপাকড়ের কারণে আমরা রাস্তায় নামতে পারছি না। রাজপথে নামলেই পুলিশ আমাদের পেটায়। সরকার আমাদের মাঠে নামতে দিচ্ছে না। এ জন্য আমরা কিছু কৌশল নিয়েছি। তবে আমরা শিগগির রাজপথে নামব।’
দলীয় সূত্র জানায়, জামায়াত চট্টগ্রামে কৌশলে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে যোগাযোগ এবং শিবির-নিয়ন্ত্রিত কলেজগুলোয় যুদ্ধাপরাধীদের বিপক্ষে কৌশলে পোস্টার লাগানো হচ্ছে। জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ ও দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীসহ জামায়াতের নেতাদের মুক্তি চেয়ে ছাত্রশিবির চট্টগ্রাম কলেজ এবং হাজী মুহাম্মদ মুহসীন কলেজে অসংখ্য পোস্টার লাগিয়েছে। এ ছাড়া শিবিরের রাজনীতির প্রতি নতুন প্রজন্মকে আকর্ষণের লক্ষ্যে দুই কলেজে টাঙানো হয়েছে শতাধিক ব্যানার। শিবির-নিয়ন্ত্রিত কলেজ দুটিতে অন্য কোনো দলের রাজনৈতিক কার্যক্রম নেই। অতীতের মতো মিছিল-সমাবেশ নেই কেন, জানতে চাইলে শিবিরের চট্টগ্রাম কলেজ শাখার সভাপতি মোহাম্মদ হারুন বলেন, ‘আমাদের দাওয়াতি কাজ চলছে। শিবির মিছিল সর্বস্ব সংগঠন নয়।’
জামায়াতের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত ১২ ফেব্রুয়ারি রাতে চট্টগ্রামের ষোলশহর রেলস্টেশনে মহিউদ্দিন নামের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র খুন হন। শিবির তাঁকে নিজেদের কর্মী দাবি করে পরদিন নগরে মিছিল বের করে। জামালখান মোড়ে পুলিশের সঙ্গে মিছিলকারীদের সংঘর্ষ হয়। পুলিশ সেখান থেকে জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিশে সুরার সদস্য আহসান উল্লাহসহ শতাধিক নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করে।
যুদ্ধাপরাধী ইস্যুতে গত ১১ এপ্রিল সিরাজদ্দৌলা সড়কের একটি কমিউনিটি সেন্টারে সমাবেশ ডাকে জামায়াত। সমাবেশে যোগ দিতে চট্টগ্রামে আসেন মুজাহিদ। তাঁকে ঠেকাতে একই স্থানে পাল্টা কর্মসূচি দেয় কয়েকটি মুক্তিযোদ্ধা সংগঠন। ফলে সমাবেশ না করেই পুলিশ পাহারায় চট্টগ্রাম ছাড়েন মুজাহিদ। এ ঘটনার প্রতিবাদে পরদিন আন্দরকিল্লা মোড়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করে জামায়াত। সেখানে পুলিশের সঙ্গে আবার জামায়াতের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। জামায়াতের দাবি, এ দুই ঘটনায় পুলিশ তাঁদের অন্তত ৩০০ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করে। সর্বশেষ ৭ ডিসেম্বর জেলা পরিষদের সামনে থেকে গ্রেপ্তার হন জামায়াতের ১০ নেতা-কর্মী। এসব ঘটনার পর আর রাজপথে নামেনি জামায়াত।
No comments:
Post a Comment
মন্তব্য করুন