সেলিম জাহিদ
বিএনপির সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই এক শ পৌরসভায় মেয়র পদে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে জামায়াতে ইসলামী। সমঝোতা না হলে জামায়াত প্রার্থীরা একা নির্বাচন করবেন। এর মধ্যে অন্তত ২০টি পৌরসভায় তাঁরা জিতবেন বলে আশা করছে দলটি। তবে দলের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল বলেছেন, যতটা সম্ভব সব কটি পৌরসভায়ই তাঁরা নির্বাচন করবেন।
জানা গেছে, আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে সাবেক সংসদ সদস্য ও সংসদ সদস্য পদে প্রার্থী ছিলেন এমন বেশ কয়েকজন জামায়াত নেতা অংশ নেবেন।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থীরা চারদলীয় জোটবদ্ধ হয়ে অংশ নেবেন। শরিক দল জামায়াত মুখে একজোট হয়ে নির্বাচন করার কথা বললেও কার্যত তারা একক নির্বাচনের
প্রস্তুতি নিচ্ছে। জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের একজন সদস্য বলেছেন, সমঝোতার ভিত্তিতে জোটবদ্ধ নির্বাচনের কথা থাকলেও ব্যতিক্রম কিছু হবেই। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও মহাজোটের শরিকদের নিয়ে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছে।
জামায়াতের নির্বাচন পরিচালনাবিষয়ক 'নির্বাচন কমিটি' ফলাফল যাই হোক_পৌরসভা নির্বাচনে জোরালো অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নির্বাচনে বড় ধরনের অনিয়ম বা জবরদস্তি হলে তারা নির্বাচনকে সরকারবিরোধী আন্দোলনে রূপ দেবে। জানা গেছে, পৌরসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে জামায়াতের স্থানীয় ও আঞ্চলিক দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের নিয়ে প্রার্থী বাছাইয়ে একাধিক বৈঠক করেছে নির্বাচন কমিটি। জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির মকবুল আহমাদ এ কমিটির প্রধান।
সূত্রের দাবি, কঙ্বাজার জেলার চকরিয়া পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে জামায়াত এনামুল হক মঞ্জুকে প্রার্থী করবে। তিনি কঙ্বাজার-১ আসন থেকে ১৯৯১ সালে জামায়াতদলীয় সংসদ সদস্য ছিলেন। বিকল্প প্রার্থী হিসেবে এখানে আরিফুল কবিরের নামও আছে। একইভাবে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভায় এবার প্রার্থী করা হচ্ছে ওই আসন থেকে সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী অধ্যাপক আবদুল লতিফ চৌধুরীকে। বর্তমান মেয়র আতাউর রহমানও স্থানীয় জামায়াত নেতা। দলীয় সিদ্ধান্তে তিনি এবার প্রার্থী হতে পারছেন না।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চাঁপাইনবাবগঞ্জ আসন থেকে জামায়াতের প্রার্থী করা হবে দলের ঢাকা মহানগর কমিটির ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি ও সাবেক শিবির সভাপতি নুরুল ইসলাম বুলবুলকে। এ কারণে আবদুল লতিফ চৌধুরীকে পৌরসভার মেয়র পদে প্রার্থী করা হচ্ছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রার্থী বদলের ঘটনায় জামায়াতের স্থানীয় নেতা-কর্মীদের একটি অংশে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
এ ছাড়া বগুড়ার সদর পৌরসভায় জামায়াতের জেলা আমির অধ্যাপক সাহাবুদ্দিন, সাতক্ষীরার কলারোয়ায় মনিরুজ্জামান, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে নজরুল ইসলাম, কঙ্বাজারে সরোয়ার কামাল, টেকনাফে মো. ইসমাঈল, পীরগঞ্জে মাওলানা আবু হানিফ নির্বাচন করবেন। মহেশখালী পৌরসভায় প্রার্থী তালিকায় আছেন মাওলানা ওসমান গণি ও কুতুবউদ্দিন।
পৌরসভা নির্বাচনের বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম আজহারুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, 'যতটুকু সম্ভব সবটাতেই আমরা নির্বাচন করার চেষ্টা করব। যেখানে মেয়র সম্ভব সেখানে মেয়র, না হয় কাউন্সিলর।'
বিএনপি জোটবদ্ধ নির্বাচনের কথা বলেছে, জামায়াত কী ভাবছে_জানতে চাইলে এ টি এম আজহার বলেন, 'আমরাও বলে দিয়েছি লোকালি আন্ডারস্ট্যান্ডিং-এর (স্থানীয়ভাবে সমঝোতার) মাধ্যমে যতটা সম্ভব জোটবদ্ধভাবে নির্বাচন করতে।'
জোটবদ্ধ প্রার্থী নিয়ে বিএনপির সঙ্গে সমঝোতা কতটুকু হয়েছে_এ প্রশ্নের জবাবে ঢাকা মহানগর জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির ও দলের সংসদ সদস্য হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, 'জোটবদ্ধ নির্বাচনের ব্যাপারে স্থানীয়ভাবে আলোচনা চলছে। তবে জাতীয় নির্বাচনেও ব্যতিক্রম কিছু হয়, এখানে (পৌরসভা) আরেকটু বেশি হবে এই আর কী।'
13 December 2010
বিএনপিকে না জানিয়ে ১০০ প্রার্থী জামায়াতের
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment
মন্তব্য করুন