22 September 2010

সাঈদীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রমাণ মিলেছে

পিরোজপুর প্রতিনিধি

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। পিরোজপুরে তদন্ত চালিয়ে এ বিষয়ে তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্তদল এ কথা জানিয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সাঈদীর বিরুদ্ধে দুটি মামলায় অপরাধ সংঘটনের স্থান পরিদর্শন এবং সাক্ষ্য গ্রহণের পর তদন্তদলের সদস্যরা এ কথা বলেন।

তিন দিনের তদন্ত শেষে পিরোজপুর ত্যাগ করার আগে গতকাল বুধবার সকালে প্রধান তদন্ত কর্মকর্তা এএসপি হেলাল উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, 'মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে সাঈদীর সম্পৃক্ততার তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে। তবে এখনি সবকিছু খোলাখুলিভাবে বলা যাচ্ছে না।' তিনি জানান, তিন দিনের তদন্তে সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে পাঁচ হাজার গণকবরের সন্ধান পাওয়া গেছে। পরিদর্শক শাহজাহান সাংবাদিকদের বলেন, বেঁচে যাওয়া ৩৮ প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী একাত্তরের বিভীষিকাময় লোমহর্ষক চিত্রের বর্ণনা করেছেন। সবকিছু রেকর্ড করা হয়েছে। প্রধান তদন্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন জানান, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালে বাংলাদেশের অন্যান্য স্থানের মতো পিরোজপুর জেলায়ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল অ্যাক্ট ১৯৭৩-এর ৩ (২) ধারার অপরাধ সংঘটিত হয়েছিল। তার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেছে। রাজাকার, আল-বদর ও আল-শামস বাহিনীর সদস্যরা নিজেরা এবং তাদের সহযোগিতায় পাকিস্তানি বাহিনী পিরোজপুরের বিভিন্ন স্থানে গণহত্যা, ধর্ষণ, লুণ্ঠন, অগি্নসংযোগসহ অন্যান্য অপরাধ সংঘটন করে। এ-সংক্রান্ত সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে।

হেলাল উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, পিরোজপুরে যে তদন্ত কার্যক্রম চলছে তা আন্তর্জাতিকমানের। যথেষ্ট স্বচ্ছতা ও সততার সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে। বিভিন্ন উপজেলার অসংখ্য মানুষ বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত দিয়ে সহায়তা করেছে। তিনি আরো জানান, মুক্তিযুদ্ধের সময় পিরোজপুর জেলায় প্রায় ৩০ হাজার মানুষকে হত্যা করার প্রমাণ তাঁরা পেয়েছেন। এক প্রশ্নের জবাবে তদন্ত কর্মকর্তারা জানান, পিরোজপুরে সাঈদীর বিরুদ্ধে মামলার দুই বাদীকে হুমকি দেওয়ায় দুই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বাদীদের নিরাপত্তা বিধানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সাঈদীকে আটক রাখা নিয়ে আবেদনের শুনানি ১২ অক্টোবর
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে কারাগারে আটক রাখতে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের ওপর আগামী ১২ অক্টোবর শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে। অসুস্থতার কারণে গতকাল বুধবার কারা কর্তৃপক্ষ সাঈদীকে হাজির না করায় ট্রাইব্যুনাল পরবর্তী দিন ধার্য করেন। রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে বলা হয়েছে, সাঈদীকে আটক রাখার নির্দেশ দেওয়া না হলে তিনি বিদেশে পালিয়ে যাবেন।

No comments:

Post a Comment

মন্তব্য করুন