নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
শুধু রাউজান নয়, মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পুরো চট্টগ্রাম নগরীতে মুসলিম লীগ নেতা ফজলুল কাদের চৌধুরী (ফকা চৌধুরী) ও তাঁর ছেলে সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী (সাকা চৌধুরী) ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আর তাঁদের বাসভবন নগরীর রহমতগঞ্জ এলাকার 'গুডস হিল' মুক্তিযোদ্ধা নির্যাতনকেন্দ্র বা টর্চার সেল হিসেবে ব্যবহৃত হতো। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্তদলের আজ শনিবার তথ্য সংগ্রহের জন্য সেই গুডস হিলে যাওয়ার কথা রয়েছে।
চট্টগ্রাম শহরে সম্মুখ সমরে অংশ নেওয়া বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, ১৯৭১ সালের আগস্ট মাসে সাকা চৌধুরী নিজেই নগরীর মোমিন রোডে চেরাগী পাহাড়ের মোড়ে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ওমর ফারুককে গুলি করেন। এরপর তাঁকে রশি দিয়ে গাড়ির পেছনে বেঁধে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে আসা হয় গুডস হিলে। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর লাশ ফেলে দেওয়া হয় রাস্তার ওপর। অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ নাগরিককে এখানে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
মুক্তিযোদ্ধারা জানান, মুক্তিযুদ্ধ-পূর্ববর্তী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ মোজাফফর আহমদ, তাঁর বড় ছেলে শেখ আলমগীর ও ভাতিজা শেখ খুরশিদ আনোয়ারকে বন্দি করে আনা হয়েছিল এই গুডস হিলে। অমানুষিক নির্যাতনের শিকার হওয়ার পর ভাতিজা শেখ খুরশিদ আনোয়ার মুক্তি পেলেও সেখানে মারা যান বাবা ও ছেলে।
মুক্তিযোদ্ধারা আরো জানান, মুক্তিযুদ্ধের সময় চট্টগ্রামে তিনটি গোষ্ঠী মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ মানুষের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে। এদের মধ্যে বিহারি সম্প্রদায় ও বদর বাহিনীর সদস্যরা লোকজনের ধনসম্পদ লুট এবং অগি্নসংযোগ করলেও মানুষ হত্যায় মূল ভূমিকা রেখেছিলেন সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও তাঁর অনুগতরা। শহরের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ঘুরে সাকা চৌধুরী মুক্তিযোদ্ধাদের ধরে গুডস হিলে নিয়ে আসতেন।
No comments:
Post a Comment
মন্তব্য করুন