Mon, Sep 20th, 2010 11:24 pm BdST
পিরোজপুর, সেপ্টেম্বর ২০ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী ও রাজাকার-আলবদরদের হাতে পিরোজপুরে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ হত্যার তথ্য পেয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত দল।
সোমবার জেলার বিভিন্ন স্থানে যুদ্ধাপরাধ সংঘটনের স্থান ও মানবতাবিরোধী অপরাধের ওপর দ্বিতীয় দফা সাক্ষ্য গ্রহণের প্রথমদিন চার সদস্যের তদন্ত দল প্রধান এ দাবি করেন।
গত ১৮ অগাস্ট তদন্ত দল প্রথম পিরোজপুরে আসে। এ সময় তারা দু'দিনে ৩৫ জনের সাক্ষ্য নেন এবং জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
তারা জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীসহ নয়জনের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের পৃথক দু'টি মামলায় ১৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।
তদন্ত দলের প্রধান পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সহকারী পুলিশ সুপারিনটেনডেন্ট (এএসপি) মো. হেলাল জানান, পিরোজপুরে মুক্তিযুদ্ধের সময় ২৯ হাজার ৯০৬ জনকে হত্যার তথ্য পাওয়া গেছে।
তিনি জানান, মুক্তিযুদ্ধের সময় পিরোজপুরের পাড়েরহাট, জিয়ানগরসহ এ অঞ্চলে কয়েক হাজার মানুষ হত্যা করা হয়েছে। জেলায় মোট ১২টি বদ্ধভূমি রয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার-আলবদর বাহিনী এ অঞ্চলে অন্তত তিনশ নারীর ওপর নির্যাতন চালায়।
এছাড়া তারা তৎকালীন মহকুমা শহরে ট্রেজারিসহ প্রত্যন্ত এলাকায় ৩৫টি বাড়িতে লুটপাট ও ১৪৬টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে বলে জানান তিনি।
তদন্ত দলের অপর তিন সদস্য হলেন- সিআইডির ইন্সপেক্টর ওয়ায়দুল্লাহ, নূর হোসেন ও শাহজাহান।
সোমবার তদন্ত দল জিয়ানগর উপজেলার পাড়েরহাট রাজলক্ষ্মী উচ্চ বিদ্যালয়ে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীসহ নয়জনের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের পৃথক দু'টি মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ করে।
সাঈদীর বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধে সময় গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের অভিযোগে মামলা দু'টি করা হয়।
এর মধ্যে সদর উপজেলার বাদুরা গ্রামের প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা সইজউদ্দীন পশারীর ছেলে মানিক পশারী গত ২০০৯ সালের ১২ অগাস্ট মুখ্য বিচার বিভাগীয় হাকিম আদালতে সাঈদীসহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন।
একই বছরের ৩১ অগাস্ট জিয়ানগর উপজেলার টেংরাখালী গ্রামের জমিরউদ্দিনের ছেলে মুক্তিযোদ্ধা মাহাবুবুল আলম একই অভিযোগে সাঈদী ও তার ভাই মোস্তফা সাঈদীসহ চারজনের বিরুদ্ধে অপর মামলাটি করেন।
গত ২৯ জুন জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ও নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়।
সোমবার তদন্ত দল সদরের বলেশ্বর খেয়াঘাট বধ্যভূমি, হুলারহাট স্টিমারঘাট বধ্যভূমি, মণ্ডলপাড়া গণহত্যার স্থান, তেজদাসকাঠী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বধ্যভূমি, জুজখোলা বধ্যভূমি পরিদর্শন করে।
সন্ধ্যায় তারা পিরোজপুর মুক্তিযোদ্ধা সংসদে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
তদন্ত দলের প্রধান জানান, মঙ্গলবার তারা স্বরূপকাঠী উপজেলার কুরিয়ানা পেয়ারা বাগান বদ্ধভূমি পরিদর্শন করবেন।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/প্রতিনিধি/জেবি/ডিডি/এইচএ/২৩১০ ঘ.
No comments:
Post a Comment
মন্তব্য করুন