মহেশখালী (কক্সবাজার) প্রতিনিধি | তারিখ: ২৫-০৯-২০১০
কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলায় গত বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার তিন আসামিকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছেন জামায়াতে ইসলামীর কর্মীরা। এ সময় তাঁরা পুলিশের একটি গাড়িও ভাঙচুর করেন। জামায়াতের কর্মীদের ইটের আঘাতে পুলিশের পাঁচ সদস্য আহত হয়েছেন।
পুলিশের আহত সদস্যরা হলেন মহেশখালী থানার দ্বিতীয় কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) শওকত হোসেন, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মোহাম্মদ ইউসুফ, কনস্টেবল গোলাম মোস্তফা, গণরায় নেপালি ও অসিত চাকমা। গত বৃহস্পতিবার রাত ১১টায় তাঁদের মহেশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এদিকে সরকারি কাজে বাধা, পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগে আহত এসআই শওকত হোসেন গতকাল শুক্রবার সকালে মহেশখালী থানায় অজ্ঞাতনামা ২০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। মহেশখালী উপজেলা (দক্ষিণ) জামায়াতের আমির মোহাম্মদ জাকের হোসেনের দাবি, পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় জামায়াতের কোনো নেতা-কর্মী জড়িত নন।
মহেশখালী থানার পুলিশের ভাষ্যমতে, জামায়াতের কর্মীরা গত ১৩ আগস্ট বিকেলে উপজেলার শাপলাপুর বাজারে রাষ্ট্র, সংবিধান ও সরকারবিরোধী লিফলেট বিতরণ করলে স্থানীয় আওয়ামী লীগের কর্মীরা তা জব্দ করেন। এ ঘটনায় ওই দিন রাতে উপজেলার শাপলাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ ইদ্রিস মহেশখালী থানায় জামায়াতের ১৩ জন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন। ওই অভিযোগের বিষয়ে নির্দেশনা চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করে মহেশখালী থানার পুলিশ। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে গত বৃহস্পতিবার সকালে ওই অভিযোগটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে পুলিশ।
মহেশখালী থানার এসআই শওকত হোসেন জানান, গত বৃহস্পতিবার রাত আটটার দিকে তাঁর নেতৃত্বে একদল পুলিশ উপজেলার শাপলাপুর বাজার থেকে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার আসামি জামায়াতের কর্মী সিরাজুল হক, আবু সুফিয়ান ও আবদুল কাদেরকে গ্রেপ্তার করে। তাঁরা শাপলাপুর নতুন ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সের সামনে পৌঁছালে জামায়াতের অজ্ঞাতনামা শতাধিক নেতা-কর্মী সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে হামলা চালিয়ে পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করেন। পরে তাঁরা গাড়ির চারপাশ ঘিরে আসামি ছিনতাইয়ের চেষ্টা করেন। এ সময় পুলিশের সঙ্গে তাঁদের ধাক্কাধাক্কি হয় এবং পেছনে থাকা জামায়াতের কর্মীরা পুলিশের ওপর ইট নিক্ষেপ করেন। পুলিশ দুটি ফাঁকা গুলি ছুড়লে জামায়াতের কর্মীরা সরে দাঁড়ান। পরে পুলিশ দ্রুত গাড়ি নিয়ে থানায় চলে আসে।
মহেশখালী উপজেলা (দক্ষিণ) জামায়াতের আমির মোহাম্মদ জাকের হোসেন প্রথম আলোকে জানান, সম্প্রতি শাপলাপুর বাজারে কে বা কারা লিফলেট বিতরণ করলে স্থানীয় আওয়ামী লীগের কর্মীরা তা জব্দ করেন। জামায়াতের কোনো কর্মী ওই লিফলেট বিতরণের সঙ্গে জড়িত না থাকলেও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা ষড়যন্ত্র করে জামায়াতের কর্মীদের আসামি করে মিথ্যা মামলা করেন। গত বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায়ও জামায়াতের কেউ জড়িত নন।
জাকের হোসেন বলেন, গত বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে মাওলানা আবু সুফিয়ান ও সিরাজুল হক জামায়াতের কর্মী। কিন্তু আবদুল কাদের বিএনপির কর্মী।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উত্তম কুমার চক্রবর্তী প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
No comments:
Post a Comment
মন্তব্য করুন