পিরোজপুর প্রতিনিধি
জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগের তদন্ত শুরু হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত দল গতকাল বুধবার পিরোজপুরে সরেজমিনে তদন্ত কাজ চালায়।
তদন্ত দলের প্রধান হেলাল উদ্দিন, দুই সদস্য মো. ওবায়দুল্লাহ (পরিদর্শক) ও নূর হোসেন (পরিদর্শক) গতকাল সকালে সদর উপজেলার বাদুরা গ্রামে যান। তাঁরা মুক্তিযুদ্ধের সময় সাঈদীর নেতৃত্বে যেসব বাড়িতে লুটপাট ও আগুন লাগানো হয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে, সেসব ঘরবাড়ি সরেজমিন গিয়ে দেখেন। যাদের স্বজনদের হত্যা, ধর্ষণ করা হয়েছে তাদের বক্তব্য এবং সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। এ সময় তদন্ত দলের কাছে মামলার বাদী মানিক পশারিসহ ১২ জন যুদ্ধকালীন বিভিন্ন বিষয়ের তথ্য তুলে ধরে।
মুক্তিযুদ্ধের সময় পাড়েরহাট বন্দরের রাজাকার কমান্ডার আবদুল মবিন হাওলাদারের ছেলে কাদের উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে তার বাবার কর্মকাণ্ডের বিবরণ দেয়। সে বলে, 'একাত্তরে আমার বাবা এমন কোনো ধ্বংসাত্মক কাজ নাই, যা করে নাই। আমার মা ও আমরা তাকে ঘৃণা করি। মুক্তিযুদ্ধের সময় সে হত্যা, নারী ধর্ষণ, লুণ্ঠন করেছে। অনেক মা-বোনকে পাকিস্তানিদের হাতে তুলে দিয়েছে। মানুষের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। যুদ্ধের পরও গর্ব করে সে এ কথা এলাকার অনেককে বলেছে। সাঈদী ছিল আমার বাবার দোসর।'
প্রধান তদন্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, 'মুক্তিযুদ্ধের সময়ের সাক্ষ্য ও প্রমাণের ভিত্তিতেই সাঈদীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা তদন্ত যথেষ্ট স্বচ্ছতা ও আন্তর্জাতিক মানের করতে পারব_এমন মনোবল নিয়েই এ কাজ শুরু করেছি। আমরা এখন মানিক পশারির দায়ের করা মামলার ১২ জন সাক্ষীর জবানবন্দি রেকর্ড করার কাজ করছি।' তিনি জানান, মামলার অনেক সাক্ষী মাছ ধরার কাজে সাগরে অবস্থান করছে। এ কারণে জবানবন্দি রেকর্ড করতে দেরি হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, তদন্ত দল বাদুরা গ্রামে কাজ শেষে আজ বৃহস্পতিবার সাঈদীর বিরুদ্ধে দ্বিতীয় মামলার তদন্ত কাজে জিয়ানগর উপজেলার টেংরাখালী গ্রামের যাচ্ছে। সেখানেও তারা মামলার বাদী ও সাক্ষীদের জবানবন্দি রেকর্ড করবে।
এদিকে গতকাল তদন্ত দল পাড়েরহাট বন্দরে পেঁৗছালে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ জনগণ যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করে।
No comments:
Post a Comment
মন্তব্য করুন