26 August 2010

হয়নি শুরার বৈঠকও: জামায়াতের রুকন সম্মেলন হয় না চার বছর

ওয়াসেক বিল্লাহ্ | তারিখ: ২৬-০৮-২০১০

গঠনতন্ত্র অনুযায়ী জামায়াতে ইসলামীর নীতিনির্ধারণী বা বড় সিদ্ধান্তগুলো দলের সর্বোচ্চ পর্ষদ রুকন সম্মেলনে অনুমোদন নিতে হয়। কিন্তু চার বছর ধরে সংগঠনটির কোনো রুকন (আনুষ্ঠানিক সদস্য) সম্মেলন হয়নি।
এমনকি পাঁচজন শীর্ষস্থানীয় নেতার গ্রেপ্তারের পর গত জুলাইয়ে নির্ধারিত মজলিসে শুরার সম্মেলনও করতে পারেনি দলটি।
দলীয় সূত্র জানায়, গত মাসের শেষের দিকে জামায়াতের ৫১ সদস্যের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের বৈঠক হয়। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, আপাতত মজলিসে শুরার অধিবেশন করা হবে না। এ সময়ে কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সব সিদ্ধান্ত নেবে।
কেন এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো, জানতে চাইলে কর্মপরিষদের সদস্য আবদুল হালিম প্রথম আলোকে বলেন, দলের পাঁচ নেতা কারাগারে, অনেক জেলার আমিরও জেলে আছেন। এ অবস্থায় মজলিসে শুরার অধিবেশন করার মতো অবস্থায় নেই জামায়াত।
জামায়াতের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কর্মপরিষদ বিশেষ পরিস্থিতিতে মজলিসে শুরার কাজ করতে পারে। কিন্তু কর্মপরিষদ দলের গঠনতন্ত্র সংশোধন বা আমিরকে অপসারণ করতে পারে না। তাই শুরার বৈঠক না করলে নির্বাচন কমিশনে জামায়াতের নিবন্ধন পাওয়ার ক্ষেত্রে জটিলতা তৈরি হতে পারে। কারণ, নিবন্ধন আইন অনুযায়ী জামায়াতের গঠনতন্ত্র সংশোধন করে কমিশনে জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা আছে। কিন্তু মজলিসে শুরার অনুমোদন ছাড়া গঠনতন্ত্র সংশোধন সম্ভব নয়।
জামায়াতের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী নীতিনির্ধারণ ও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য বছরে অন্তত দুটি মজলিসে শুরার অধিবেশন হবে। এ ছাড়া দলের আমির মনে করলে যেকোনো সময় শুরার অধিবেশন ডাকতে পারবেন।
জামায়াত সাধারণত জুলাই ও ডিসেম্বর মাসে মজলিসে শুরার অধিবেশন করে। চলতি বছরও জুলাই মাসে অধিবেশন বসার কথা ছিল।
জামায়াতের কর্মপরিষদের সদস্য সৈয়দ আবদুল্লাহ্ মোহাম্মদ তাহের প্রথম আলোকে জানান, মজলিসে শুরার অধিবেশন আপাতত হচ্ছে না।
কর্মপরিষদের আরেক সদস্য আবদুল হালিম জানিয়েছেন, কর্মপরিষদই এখন মজলিসে শুরার কাজ করবে। গঠনতন্ত্রে এমন সুযোগ আছে।
সর্বশেষ রুকন সম্মেলন চার বছর আগে: সর্বশেষ ২০০৬ সালের ৩ জুন পল্টন ময়দানে জামায়াতের রুকন সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। আগে প্রতি তিন বছর অন্তর রুকন সম্মেলন করার বাধ্যবাধকতা ছিল। কিন্তু ওই বছরেই জামায়াতের গঠনতন্ত্রে পরিবর্তন এনে বলা হয়, দলের আমির বা মজলিসে শুরা যখন প্রয়োজন মনে করবে, তখন রুকন সম্মেলন আহ্বান করা হবে।
এ বিষয়ে গত দুই বছরে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের (এখন কারাবন্দী) সঙ্গে এই প্রতিবেদকের অনেকবার কথা হয়। প্রতিবারই তিনি বলেন, এখন রুকন সম্মেলনের মতো এত বড় কর্মসূচি পালনের অবস্থা জামায়াতের নেই।
জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য আবদুল হালিম বলেন, যখন দল ছোট ছিল, তখন তিন বছর অন্তর সম্মেলন করা সম্ভব ছিল। কিন্তু এখন রুকনের সংখ্যা প্রায় ২৭ হাজার। এ অবস্থায় এত মানুষের অংশগ্রহণে সম্মেলন করা খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে।

No comments:

Post a Comment

মন্তব্য করুন