নিজস্ব প্রতিবেদক
জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ও নির্বাহী পরিষদের সদস্য মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে কর ফাঁকির প্রমাণ পেয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। সাঈদীর বিরুদ্ধে ৫০ লাখ এবং মীর কাসেমের বিরুদ্ধে ৯ লাখ টাকা কর ফাঁকির অভিযোগে মামলা করার প্রস্তুতি চলছে। গতকাল বুধবার এনবিআর চেয়ারম্যান ড. নাসির উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে বোর্ড সভায় এই মামলা করার অনুমোদন দেওয়া হয়।
এনবিআর কর্মকর্তারা জানান, গতকালই দুই জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হয়। তবে নানা আনুষ্ঠানিকতায় শেষ পর্যন্ত মামলা নথিভুক্ত করা সম্ভব হয়নি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা জানান, আরো কয়েকজনের বিরুদ্ধে কর ফাঁকির অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রমাণ পেলে তাঁদের বিরুদ্ধেও মামলা করা হতে পারে। বিষয়টি অত্যন্ত গোপনীয়তার মধ্যে চূড়ান্ত করা হচ্ছে।
জানা গেছে, যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত শীর্ষ জামায়াত নেতাদের কর ফাঁকির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে বেশ কয়েক মাস আগে থেকেই তদন্ত করছে এনবিআরের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল-সিআইসি। এরই মধ্যে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়েছে। এই কার্যক্রম শুরু হয় দিগন্ত মিডিয়ার চেয়ারম্যান মীর কাসেম আলীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য যাচাইয়ের মধ্য দিয়ে। গত ১ এপ্রিল মীর কাসেম, তাঁর স্ত্রী খন্দকার আয়েশা খাতুন, ছেলে মোহাম্মদ বিন কাশেম, মীর আহমেদ বিন কাশেম, মেয়ে হাসিনা তায়েবা, তাহেরা কাশেম, তাহেরা হাসনিন ও সুমাইয়া রাবেয়ার ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য চেয়ে দেশের সবগুলো ব্যাংকে চিঠি দেয় সিআইসি। পরে তদন্ত করে তাঁর বিরুদ্ধে কর ফাঁকির প্রমাণ পাওয়া যায়। একইভাবে সাঈদীর কর ফাঁকির প্রমাণ পায় সিআইসি। আমার দেশের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধেও একই অভিযোগে তদন্ত চলছে বলে জানা গেছে।
কর্মকর্তারা জানান, গতকালের বোর্ড সভায় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কর অব্যাহতি বিষয়ক একটি প্রস্তাব নাকচ করে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় ব্যক্তি করদাতা হিসেবে তাঁদের কাছ থেকে কর আদায়ের সিদ্ধান্ত হয়। এত দিন রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, জনতা, অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে পরামর্শক ক্যাটাগরিতে মাত্র ১০ শতাংশ হারে উৎসে কর দিয়ে আসছিলেন। এটাই ছিল তাঁদের চূড়ান্ত কর। চলতি অর্থবছরেও তাঁরা এ সুযোগ চেয়েছিলেন। কিন্তু এনবিআর মনে করে, তাঁরা সরকারিভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত চাকুরে, পরামর্শক নন। তাই তাঁদের মোট বেতনের ওপর নির্ধারিত হারে আয়কর দিতে হবে।
No comments:
Post a Comment
মন্তব্য করুন