Mon, Aug 16th, 2010 5:59 pm BdST
ঢাকা, অগাস্ট ১৬ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)-যুদ্ধাপরাধের বিচারের পথ উন্মুক্তকারী সংবিধানের প্রথম সংশোধনী বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেছেন গ্রেপ্তারকৃত সন্দেহভাজন যুদ্ধাপরাধী জামায়াতে ইসলামীর দুই নেতা।
দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামান ও আবদুল কাদের মোল্লার পক্ষে দায়ের আবেদনটিতে সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক দেখিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের কয়েকটি ধারা বাতিলের দাবি জানানো হয়েছে।
জামায়াত নেতা ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক সোমবার বিচারপতি আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা ও কাজী রেজা-উল হকের বেঞ্চে আবেদনটি দায়ের করেন।
মঙ্গলবার এর শুনানি হবে বলে জানান তিনি।
আবেদনে স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন সচিব ও ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যানকে প্রতিপক্ষ করা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, "সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে ৪৭ ও ৪৭(ক) এর ৩ অনুচ্ছেদের সংযোজন করা হয়েছে। অনুচ্ছেদ দুটিতে গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ, মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য সশস্ত্র বাহিনী, সহায়ক বাহিনী বা যুদ্ধবন্দিকে দণ্ড দেওয়ার কোনো আইন সংবিধানের সঙ্গে অসামাঞ্জস্য হলেও বাতিল হবে না বলে বিবৃত আছে।"
এসব অপরাধের ক্ষেত্রে অভিযুক্ত ব্যক্তির সাংবিধানিক অধিকার প্রযোজ্য হবে না বলেও অনুচ্ছেদ দুটিতে বলা হয়।
আবেদনে আরো বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের ৩ (১) ধারায় বিচারের ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের কোনো মৌলিক অধিকার থাকবে না বলা হয়েছে।
জামায়াত নেতারা বলছেন, ৬ (১) ধারায় হাইকোর্টের বিচারপতিকে ট্রাইব্যুনালের বিচারপতি নিয়োগের যে বিধান করা হয়েছে তা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
ওই আইনে ৬ (৩) ধারায় ট্রাইব্যুনাল গঠনের আদেশ, কার্যক্রম নিয়ে কোনো আদালতে প্রশ্ন করা যাবে না বলা হয়েছে। এই বিধান হাইকোর্ট বিভাগের বিচারিক ক্ষমতাকে খর্ব করেছে বলেও তারা মনে করেন।
রিট আবেদনে আরো বলা হয়েছে, "আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের ১৯ ধারায় সাক্ষ্য হিসেবে সাময়িকী, বই, পত্রিকা গ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু আইন অনুযায়ী সাক্ষ্য আইনে তা গ্রহণযাগ্য নয়। এছাড়া ২০ (২) ধারায় মৃত্যুদণ্ডের বিধান রাখা হলেও কোন কোন অপরাধে মৃতুদণ্ড দেওয়া হবে তা বলা হয়নি।"
আইনের ২৩ ধারায় ফৌজদারি কার্যবিধি প্রযোজ্য হবে না বলা হয়েছে। এ ধারাটিও সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে অভিযোগ তাদের।
মঙ্গলবার আবেদনটি পরিচালনা করবেন বিএনপির অন্যতম নীতি নির্ধারক ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ও ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক।
একাত্তরে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের মামলায় গত ২ অগাস্ট জামায়াতে ইসলামীর মুহাম্মদ কামারুজ্জামান ও আবদুল কাদের মোল্লাকে পুরানো হাইকোর্ট ভবনে স্থাপিত ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
ওই দিন দলটির আমির মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদকেও আদালতে হাজির করা হয়।
সেদিন আদালত পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তাদেরকে এ মামলায় গ্রেপ্তার রাখার আদেশ দিয়ে কারাগারে পাঠায়।
নিজামী, মুজাহিদ, সাঈদী, কামারুজ্জামান ও কাদেরকে স�প্রতি গ্রেপ্তারের পর বিভিন্ন মামলায় হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ঢাকার পল্লবী ও কেরানীগঞ্জ থানায় মুক্তিযোদ্ধা হত্যাসহ বিভিন্ন অভিযোগে মামলা রয়েছে।
১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ, গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার গত ২৫ মার্চ তদন্ত সংস্থা, আইনজীবী প্যানেল ও ট্রাইব্যুনাল গঠনের ঘোষণা দিলে বহু প্রতীক্ষিত এই বিচারের প্রক্রিয়া শুরু হয়।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/প্রতিনিধি/আরএ/জিএনএ/১৭৫০ ঘ.
No comments:
Post a Comment
মন্তব্য করুন