9 July 2010

বারবার ফাঁস হয় 'আচমকা তল্লাশি'

রাজীব নন্দী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

'আগে থেকে অভিযানের খবর ফাঁস হওয়ায় অস্ত্র, অপরাধী বা বহিরাগত কাউকেই খুঁজে পাওয়া যায় না তল্লাশিতে। প্রশাসন ওপরের নির্দেশ পালন করতেই তল্লাশি অভিযানের নামে এমন নাটক করে। গত সোমবার ছয়টি ছাত্রহলে মধ্যরাতের তল্লাশি সে রকমই একটি আইওয়াশ।' গত মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক জয়নাল আবেদীন কালের কণ্ঠের কাছে এভাবেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

বহিরাগত শিবির ক্যাডারদের ধরতে গত সোমবার রাতে চবি প্রশাসন ও পুলিশ ছাত্রদের হলে হলে 'আচমকা তল্লাশি' চালায়। অভিযানে তিনজন বহিরাগতকে আটক করা হলেও পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে যেসব কক্ষ থেকে তাদের পাওয়া গেছে, বাতিল করা হয়েছে সেসব কক্ষ। প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরাও নিজেদের দুর্বলতা স্বীকার করেছেন। সহকারী প্রক্টর চন্দন কুমার পোদ্দার বলেন, 'সারা দেশে গ্রেপ্তার আতঙ্কে শিবির ক্যাডাররা গা-ঢাকা দিয়েছে। তাই চিহ্নিত ক্যাডার দূরে থাক, চবির হল শাখার সভাপতি, সেক্রেটারিসহ কোনো নেতাকেই অভিযানের সময় দেখিনি। হয়তো তল্লাশির খবর আগে জেনেই কৌশল পরিবর্তন করে তারা পালিয়ে গিয়েছে।'

নৃবিজ্ঞানের শিক্ষার্থী কাজী আলম কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমি সাড়ে ৯টার দিকে শুনেছি, আজ রাতে এ রকম কিছু একটা হতে পারে। দুই ঘণ্টা পর শুনি, রুমে রুমে পুলিশের তল্লাশি! এটা তাহলে কিভাবে অতর্কিত অভিযান হলো?'

জেলা পুলিশ সুপার জেড এ মোর্শেদ বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ শান্ত রাখার দায়িত্ব মূলত কর্তৃপক্ষেরই। পুলিশ উপযাচক হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করে না। সাহায্য চাইলেই আমরা এগিয়ে যাই। কোনো ছাত্রহলে তল্লাশি চালাতে কিছু প্রস্তুতির ব্যাপার থাকে। তবে শিক্ষকরা রাজনৈতিকভাবে ভিন্ন ভিন্ন মানসিকতার হওয়ায় আগাম তথ্য হয়তো ফাঁস হয়ে যায়। পরবর্তী তল্লাশিতে চবি প্রশাসন আরো সহযোগিতা করবে বলে আশা করি।'

এদিকে ছয়টি হলে অভিযান চালালেও ক্যাম্পাসের পার্শ্ববর্তী কটেজগুলোতে অভিযান চালানো হয়নি। অথচ চবিতে শিবির নিয়ন্ত্রিত অন্তত ১০টি কটেজে ক্যাডাররা অবস্থান করেন বলে অভিযোগ আছে। এ ছাড়া প্রতিটা হলে একাধিক পালানোর পথ থাকায় এর আগেও হল তল্লাশির খবর পেয়ে শিবিরের নেতা-কর্মী, ক্যাডাররা পালাতে সক্ষম হয়। গত ১১ থেকে ১৩ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামে শিবির সন্দেহে বিভিন্ন মেস ও ছাত্রাবাসে পুলিশ সাঁড়াশি অভিযান চালিয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মহিউদ্দিন মাসুম হত্যাকাণ্ডের পরই এ অভযান শুরু হয়। কিন্তু সেবারও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয়টি হলে তল্লাশি চালিয়ে কোনো অস্ত্র উদ্ধার কিংবা কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

No comments:

Post a Comment

মন্তব্য করুন