নিজস্ব প্রতিবেদক
একাত্তরের যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের লক্ষ্যে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে 'দু-চারজন কর্মচারীর দোকান' বলে তাচ্ছিল্য করেছেন জামায়াত সমর্থক আইনজীবীরা। এ-সংক্রান্ত আইনটিকেও তাঁরা বলেছেন 'ফালতু আইন'।
জামায়াতে ইসলামীর কর্মপরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট মশিউল আলম বলেছেন, 'উনাদের (আটক জামায়াত নেতাদের) দমাতে হাইকোর্টের পাশে কী যেন... একটা খুলছে। গায়ে ছাল নেই কুত্তার নাম বাঘা। দু-চারজন কর্মচারী দিয়ে একটা দোকান সাজিয়ে বলছে ইন্টারন্যাশনাল ট্রাইব্যুনাল।'
অন্য আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনকে কটাক্ষ করে বলেন, 'এটা একটা ফালতু আইন। উচ্চ আদালতে চালেঞ্জ হলে টিকবে না।' গতকাল শনিবার বিকেলে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আইনজীবীদের সঙ্গে দলের মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তাঁরা এসব কথা বলেন।
অ্যাডভোকেট মশিউল আলম আরো বলেন, 'জামায়াত নেতৃবৃন্দকে জড়ানো মামলাগুলো শক্তিশালী মামলা নয়।' মামলাগুলোকে 'দুর্বল রশি' আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, 'টান দিলে এই রশি ছিঁড়ে যাবে। একটু ধৈর্য ধরে মোকাবিলা করতে হবে।'
সভায় জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির মকবুল আহমদ প্রধান অতিথি এবং ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম আজহারুল ইসলাম বিশেষ অতিথি হিসেবে বত্তৃদ্ধতা দেন। দলের ঢাকা মহানগর সেক্রেটারি হামিদুর রহমান আযাদ এমপি এতে সভাপতিত্ব করেন।
মকবুল আহমদ বলেন, 'জামায়াত নেতা-কর্মীদের ধরে নিয়ে এখানে-ওখানের মামলায় জড়ানো হচ্ছে। কারো ক্ষমতা চিরদিন থাকে না। পাঁচ বছরের ক্ষমতার দেড় বছর শেষ হয়ে গেছে। এরপর কী হবে সরকারকে তা চিন্তা করতে হবে।'
সংবিধান সংশোধনের লক্ষ্যে বিশেষ কমিটি প্রত্যাখ্যান করে মকবুল আহমদ বলেন, 'আমরা সংসদে আছি, কিন্তু আমরা বসলে গায়ে গন্ধ লাগে। তাই আমাদের বাদ দেওয়া হয়েছে। এই কমিটি সর্বদলীয় হয়নি। এর কোনো আবেদন নেই।'
এ টি এম আজহারুল ইসলাম বলেন, 'বোকা লোকেও বোঝে, ৪০ বছর আগে কী শক্তি ছিল জামায়াতের। ৪০ বছর পর আজ জামায়াতের উত্থান কেন হলো? এই উত্থান তো জনগণই করেছে।'
আজাহারুল ইসলাম বলেন, 'একাত্তরে যদি জামায়াত অপরাধ করত তাহলে এই ভাবমূর্তি হতো না। পৃথিবীর কোথাও যুদ্ধাপরাধীদের জনগণ সুযোগ দেয় না। জামায়াত নেতারা অপরাধী হলে এমপি নির্বাচিত হতেন না।'
আজহার আরো বলেন, 'এক পাকিস্তান চাওয়াই জামায়াতের অপরাধ। এটি যদি অপরাধ হয়, তাহলে আওয়ামী লীগের মন্ত্রিসভায়ও এই অপরাধী আছে, আগে তাদের গ্রেপ্তার করেন।'
সভায় অ্যাডভোকেট ফরিদ উদ্দিন খান, অ্যাডভোকেট আবদুর রাজ্জাক বক্তব্য রাখেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন দলের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, মহানগর সহকারী সেক্রেটারি নুরুল ইসলাম বুলবুল, মাওলানা আবদুল হালিম প্রমুখ।
No comments:
Post a Comment
মন্তব্য করুন