13 July 2010

খুলনা-শেরপুরজামায়াত-শিবিরের ৭১ জনের নামে অভিযোগপত্র

কালের কণ্ঠ ডেস্ক

দ্রুত বিচার আইনে দায়ের করা মামলায় খুলনা ও শেরপুরে জামায়াত-শিবিরের ৭১ নেতা-কর্মীর নামে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। এর মধ্যে বেশির ভাগই গ্রেপ্তার হয়ে জেলহাজতে আছে; অন্যরা পলাতক। বিস্তারিত আমাদের জেলা অফিস ও প্রতিনিধির প্রতিবেদনে:

খুলনা অফিস জানায়, মহানগর জামায়াতের আমির মিয়া গোলাম পরওয়ার, সেক্রেটারি মাওলানা আবুল কালাম আজাদসহ ৪৭ জনকে আসামি করে গতকাল সোমবার আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। গতকাল দুপুরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা খুলনা থানার এসআই মনিরুল ইসলাম মুখ্য মহানগর হাকিম মো. বারেকুজ্জামানের আদালতে এ অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আদালত অভিযোগপত্রটি গ্রহণ করে মামলাটি দ্রুত বিচার আদালতের বিচারক অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মো. আবু শামীম আজাদের আদালতে প্রেরণের নিদের্শ দেন।

চার্জশিটভুক্ত অন্য আসামিরা হলেন মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমির আবদুল মতিন ও মাস্টার শফিকুল আলম, সহকারী সেক্রেটারি খন্দকার আবদুল খালেক, মাহফুজুর রহমান ও খান গোলাম রসুল, মহানগর ছাত্রশিবির সভাপতি সাইদুর রহমান সাইদ, বিএল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ শাখা সভাপতি আজিজুল ইসলাম ফরাজী, অ্যাডভোকেট শেখ আবদুল ওয়াদুদ, শেখ জাহাঙ্গীর আলম, অ্যাডভোকেট লস্কর শাহ আলম, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসাইন হেলাল, ডা. হাবিবুর রহমান, আবদুর রহমান, কাজী নুরুন্নবী, আজিজুর রহমান স্বপন, আরিফুল ইসলাম, মিয়া গোলাম কুদ্দুস, মিয়া মুজাহিদুল ইসলাম, গাজী শাহ মাকদুম, তাওহিদুল ইসলাম, সাইফুল হাসান, শেখ ফরিদউদ্দিন, শেখ সিরাজুল ইসলাম, রেজাউল করিম, এমরান খালিদ, এমরান হোসেন, ডা. কাজী ইয়াসিন উদ্দিন, মাওলানা মনিরুজ্জামান, এম জি সরোয়ার, ইসমাঈল হোসেন, মুহিব্বুর রসুল, আমিনুল ইসলাম, শফিকুল ইসলাম, হুমায়ুন কবীর, আবুল কালাম, এস এম সুমন, আলমগীর হোসেন, মো. বদিউজ্জামান, আবদুর রহমান, মুজাহিদুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর আলম, হাসিবুর রহমান, আবদুল মান্নান ও এরশাদ হোসাইন।

তদন্ত কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম জানান, গত ৩০ জুন জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীরা প্রশাসনের পূর্বানুমতি ছাড়া নগরীর ডাকবাংলা মোড়ে জড়ো হয়ে রাস্তায় যানচলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। এ কাজে পুলিশ বাধা দিলে তারা পুলিশের ওপর হামলা ও ওয়্যারলেস সেট ছিনিয়ে নেয়। তাদের হামলায় খুলনা থানার ওসি মনির-উল-গিয়াসসহ পাঁচ পুলিশ কর্মকর্তা আহত হন। এ ঘটনায় এসআই রেজাউল করিম বাদী হয়ে খুলনা থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন। দ্রুত বিচার আইনে দায়ের করা মামলাটির অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। গ্রেপ্তার হওয়া আসামিদের কয়েক দফা রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ, ঘটনার দিনের ভিডিও ফুটেজ, স্থিরচিত্র দেখে আসামিদের শনাক্ত করা হয়েছে। অভিযোগপত্রে দেওয়া ৪৭ জনের মধ্যে এজাহারভুক্ত ২১ জনসহ ২৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে; অন্যরা এখনো পলাতক।

শেরপুর প্রতিনিধি জানান, জেলা জামায়াতের আমির ও সেক্রেটারিসহ জামায়াত-শিবিরের ২৪ নেতা-কর্মীকে আসামি করে গত রবিবার সন্ধ্যায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। শেরপুর সদর থানার উপপরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. আবদুল্লাহ আল মামুন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নূরুল ইসলাম মো. নিপুর আদালতে এ অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আদালত অভিযোগটি গ্রহণ করে পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ১৫ জুলাই।

অভিযুক্ত ২৪ আসামির মধ্যে ১৫ জন শেরপুর জেলা কারাগারে আছেন; অন্যরা এখনো পলাতক। কারাগারে থাকা আসামিরা হলেন জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা আবদুল বাতেন, নালিতাবাড়ী পৌর জামায়াতের সেক্রেটারি আইয়ুব আলী, জামায়াতের সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের জেলা সভাপতি ডা. মো. আনোয়ার হোসেইন, ঝিনাইগাতী উপজেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি সুলতান আহম্মদ, জামায়াতকর্মী ইব্রাহিম সাদী, মোস্তফা সেলিম, আবু বকর ছিদ্দিক, মোস্তাফিজুর রহমান, মো. সাইফুল্লাহ্, বিল্লাল হোসেন, শিবিরের মারুফ হাসান, শামিম হাছান, রফিকুল ইসলাম, রফিকুল মিয়া ও মো. মনিরুজ্জামান। অভিযুক্ত জেলা জামায়াতের আমির ডা. শাহাদাত হোসাইনসহ ৯ জন পলাতক রয়েছে।

আদালত ও পুলিশ সূত্র জানায়, জামায়াতের শীর্ষস্থানীয় তিন নেতার মুক্তির দাবিতে গত ৩০ জুন অভিযুক্ত জামায়াত-শিবির নেতা-কর্মীরা শহরে বিক্ষোভ মিছিল করে। মিছিলকারীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে মহড়া দিয়ে শহরে আতঙ্ক ও ত্রাসের সৃষ্টি করে। এ ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ডিবির এএসআই মো. সজীব খান বাদী হয়ে দ্রুত বিচার আইনে মামলা দায়ের করেন।

No comments:

Post a Comment

মন্তব্য করুন