ভূঁইয়া নজরুল, চট্টগ্রাম
জামায়াত নেতার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের নকশা পাস করাতে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) কর্মকর্তার বাসায় গিয়ে তাঁর প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন এক যুবলীগ নেতা। গত বৃহস্পতিবার রাতে জামায়াত নেতার মালিকানাধীন মাওলানা ডেভেলপমেন্ট কম্পানির হয়ে সিডিএর সিনিয়র স্থপতি মাহারিনা জাফরিনের বাসায় গিয়ে এ হুমকি দেন কোতোয়ালি থানা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মির্জা কামরুল হাসান ওরফে আলমাস।
মাহারিনা জাফরিন কালের কণ্ঠকে জানান, মাওলানা ডেভেলপমেন্ট কম্পানির একটি বড় প্রকল্প পাসের জন্য বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রথমে তাঁর অফিসে গিয়ে হুমকি দেন কামরুল হাসান। প্রকল্পটি দ্রুত পাস না করলে পরিণাম ভালো হবে না বলে তখন তাঁকে হুমকি দেওয়া হয়। এ ব্যাপারে মাহারিনা জাফরিন কোতোয়ালি থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন বলে জানান। ডায়েরিতে কামরুল হাসান, ওই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান সৈয়দ শামীম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল কাদের জিলানীসহ অজ্ঞাতপরিচয় ১৫ থেকে ২০ জনকে আসামি করা হয়েছে। ডায়েরিতে উল্লেখ করা হয়, অফিসে হুমকির পর রাত সাড়ে ৯টায় কামরুল হাসানের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী মাহারিনা জাফরিনের ফ্ল্যাটে গিয়ে দরজায় লাথি মারে এবং চিৎকার-চেঁচামেচি করে। এ সময় মাহারিনা জাফরিন বাসায় না থাকায় পাশের ফ্ল্যাটের বাসিন্দাদের সন্ত্রাসীরা শাসিয়ে বলে আসে, '২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাকে (মাহারিনা) দেখা করতে বলবেন। দেখা না করলে মেরে ফেলা হবে।'
অভিযোগের বিষয়ে মির্জা কামরুল হাসান ওরফে আলমাস নিজেকে যুবলীগের একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে দাবি করে মোবাইল ফোনে কালের কণ্ঠকে বলেন, 'একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে আমার রাজনৈতিক পরিচয়ে প্ল্যানটি কী অবস্থায় আছে, তা জানতে গিয়েছিলাম।' এ কথা বলে তিনি তাঁর মোবাইল ফোনের লাইন কেটে দেন। তবে মহানগর যুবলীগের সভাপতি চন্দন ধর কামরুল হাসানের ব্যাপারে বলেন, 'এই নামে আমাদের কোনো নেতা বা কর্মী নেই।' মাওলানা ডেভেলপমেন্ট কম্পানির পরিচালক মোহাম্মদ আশরার বলেন, 'আমাদের কোনো প্রকল্পের জন্য তদবির করতে কাউকে সিডিএতে পাঠানো হয়নি। এ ছাড়া আলমাস নামের কারো সাথে আমার পরিচয় নেই।' এ বিষয়ে সিডিএর চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম বলেন, 'আওয়ামী লীগের নাম ভাঙিয়ে কোনো নেতা বা কর্মী সিডিএ কর্মকর্তাদের হুমকি দিলে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া আবাসিক এলাকায় কিভাবে সন্ত্রাসী দল প্রবেশ করল, তা খতিয়ে দেখা হবে।'
জানা যায়, পোর্ট কানেকটিং রোডে তাসপিয়া কমিউনিটি সেন্টারের পাশে মাওলানা ডেভেলপমেন্ট কম্পানি ১২ থেকে ১৫ তলার দুটি ভবনের প্ল্যান সিডিএতে জমা দেয়। ভবন দুটিতে দেড় শ ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হবে। সিডিএ বিধিমালা অনুযায়ী এসব প্রকল্প বিশেষ বৃহদায়তন প্রকল্প হিসেবে বিবেচ্য। এ প্রকল্পের অনুমোদন প্রক্রিয়াধীন। সিনিয়র স্থপতি মাহারিনা জাফরিন এ বিশেষ বৃহদায়তন প্রকল্পের সদস্যসচিব।
No comments:
Post a Comment
মন্তব্য করুন