23 July 2010

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল নিরাপত্তা জোরদার, জামায়াতের চার নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদের প্রস্তুতি

নিজস্ব প্রতিবেদক

একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের লক্ষ্যে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। পুরাতন হাইকোর্ট ভবনে স্থাপিত এ ট্রাইব্যুনালে আগতদের ব্যাপারে নেওয়া হয়েছে বিশেষ সতর্কতা। ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা স্থাপনের পাশাপাশি এর মাধ্যমে এলাকায় মানুষের গতিবিধি পর্যবেক্ষণের জন্য গতকাল শুক্রবার স্থাপন করা হয়েছে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ।

এদিকে একাত্তরের হত্যার অভিযোগে সারা দেশে দায়ের করা মামলাগুলোর মধ্যে তিনটি মামলা ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়েছে। এসব মামলার আসামি হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ চার নেতাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের প্রস্তুতি চলছে।

আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেছেন, 'নিজামীসহ জামায়াতে ইসলামীর গ্রেপ্তারকৃত চার শীর্ষ নেতাকে কয়েক দিনের মধ্যেই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গ্রেপ্তার দেখানো হবে।'

তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, একাত্তরে হত্যা, লুট, অগি্নসংযোগের অভিযোগে সারা দেশে দায়ের করা কয়েক শ মামলা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে তিনটি মামলা ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়েছে। এগুলোর তদন্ত ও বিচারের দায়িত্ব এখন ট্রাইব্যুনালের। সে ক্ষেত্রে অভিযুক্তদের মধ্যে যারা ভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার আছেন, তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গ্রেপ্তার দেখানো হবে। নিজামী, সাঈদীসহ শীর্ষ চার জামায়াত নেতাকে কয়েক দিনের মধ্যেই গ্রেপ্তার দেখানো হতে পারে। অভিযুক্ত অন্যদের গ্রেপ্তার প্রক্রিয়াও দ্রুত শুরু হবে।

ট্রাইব্যুনালের প্রধান আইনজীবী অ্যাডভোকেট গোলাম আরিফ টিপু জানিয়েছেন, মুক্তিযুদ্ধকালে হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট, অগি্নসংযোগ, দেশ ত্যাগে বাধ্য করা-সংক্রান্ত অভিযোগে দেশের বিভিন্ন থানা ও আদালতে দায়ের করা মামলাগুলোর বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ আইন-১৯৭৩-এর অধীনে হবে। এগুলো অন্য মামলার মতো নয়। তাই দেশের বিভিন্ন স্থানে দায়ের করা মামলাগুলো আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আওতায় আসবে। তদন্ত সংস্থা ও আইনজীবী প্যানেল দ্রুতই এগুলো তদন্ত করবে।

এদিকে মামলা স্থানান্তর ও নতুন তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগের পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ট্রাইব্যুনাল ভবনে এবং এর আশপাশে স্থাপন করা হয়েছে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা। এ ক্যামেরার মাধ্যমে ট্রাইব্যুনাল এলাকার সার্বিক যাতায়াত মনিটরিং করতে গতকাল একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ স্থাপন করা হয়েছে। এরই মধ্যে ভবনের প্রধান ফটক ও এজলাসের প্রবেশ পথে বসানো হয়েছে আর্চওয়ে।

আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম গতকাল বলেছেন, একাত্তরের চিহ্নিত ঘাতকদের মধ্যে যাঁরা এরই মধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছেন, তাঁদের কয়েক দিনের মধ্যেই ট্রাইব্যুনালে গ্রেপ্তার দেখানো হবে। বাকিদেরও গ্রেপ্তার করা হবে। চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীদের মামলাগুলো ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। জাতীয় প্রেসক্লাবে আওয়ামী মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন। মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগের সভাপতি ফয়েজ উল্লাহর সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল আমিন আহমেদ চৌধুরী, সংসদ সদস্য মেহের আফরোজ চুমকি, মুক্তিযোদ্ধা খালেকুজ্জামান, এম এ মজিদ প্রমুখ।

No comments:

Post a Comment

মন্তব্য করুন