2 July 2010

মুজাহিদ ও সাঈদী রিমান্ডে, নিজামী কারাগারে 'অসুস্থ'

নিজস্ব প্রতিবেদক

জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ ও নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। রাজধানীর পল্টন থানায় দায়ের করা পুলিশের ওপর হামলার মামলায় মঞ্জুরকৃত রিমান্ডে গতকাল বৃহম্পতিবার বিকেলে তাঁদের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ডিবি হেফাজতে নেওয়া হয়। মিন্টো রোডের গোয়েন্দা অফিসে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
এই মামলার অপর আসামি জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামী কারাগারে অসুস্থতা বোধ করার কথা জানালে পুলিশ তাঁকে পরে জিজ্ঞাসাবাদের সিদ্ধান্ত নেয়।

গত বুধবার আদালত জামায়াতের এই তিন নেতাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন। তবে ওই দিন পুলিশ রিমান্ডে না নেওয়ায় তাঁদের কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। গতকাল দুপুরে তাঁদের কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ডিবি হেফাজতে নেওয়ার জন্য পুলিশের কয়েকজন কর্মকর্তা কেন্দ্রীয় কারাগারে যান। প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে বিকেলে আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ ও দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে কড়া প্রহরায় সরাসরি মিন্টো রোডে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা দপ্তরে নেওয়া হয়। এ জন্য মিন্টো রোডে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়।

মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপকমিশনার (ডিসি) মনিরুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে জানিয়েছেন, নিরাপত্তার কারণেই মুজাহিদ ও সাঈদীকে গোয়েন্দা অফিসে রাখা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তারা এখানে এসেই তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করবেন।

পল্টন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল হক জানিয়েছেন, পল্টন থানার তিনটি মামলায় আদালত নিজামী, মুজাহিদ ও সাঈদীর ৯ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামী কারাগারে অসুস্থতা বোধ করায় তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হয়নি। তাঁকে পরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। পুলিশের কাজে বাধা দেওয়া ও পুলিশকে লাঞ্ছিত করার মামলায় তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

গত মঙ্গলবার পুলিশ নিজামী, মুজাহিদ ও সাঈদীকে পৃথকভাবে গ্রেপ্তার করে। পর দিন তাঁদের আদালতে হাজির করে পুলিশ বিভিন্ন মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবেদন জানায়। রাজধানীর তিনটি থানায় তাঁদের বিরুদ্ধে আগে দায়ের করা পাঁচটি মামলায় আদালত মোট ১৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পল্টন থানার তিনটি মামলায় তিন দিন করে ৯ দিন, উত্তরা থানার একটি মামলায় তিন দিন এবং রমনা থানার একটি মামলায় চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর হলেও সেদিন কোনো মামলায় তাঁদের রিমান্ডে নেওয়া হয়নি। গতকাল পল্টন থানা পুলিশ প্রথম তাঁদের রিমান্ডে নেয়। আরো জানা গেছে, রমনা থানার মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তর করা হয়েছে।

গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আসামিদের বিরুদ্ধে পল্টন থানার পুলিশের ওপর হামলা ঘটনায় ১৭ ফেব্রুয়ারি দায়ের করা মামলার (নম্বর-৩৭) তদন্ত কর্মকর্তা হলেন এসআই জিল্লুর রহমান, ১২ ফেব্রুয়ারি দায়ের করা মামলার (নম্বর-২০) তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শামসুর রহমান এবং ২০ জুন দায়ের করা মামলার (নম্বর-২৫) তদন্ত কর্মকর্তা এসআই রেজ্জাক হোসেন। এই তদন্ত কর্মকর্তারা ধারাবাহিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদে অংশ নেবেন। নিরাপত্তার কারণেই আসামিদের গোয়েন্দা কার্যালয়ে রাখা হয়েছে। সেখানে রেখে জিজ্ঞাসাবাদে আইনত বাধা নেই। জিজ্ঞাসাবাদের মুহূর্তে ঊর্ধ্বতন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এ প্রতিবেদন লেখার সময় গত রাত ৮টা পর্যন্ত মুজাহিদ ও সাঈদীকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হয়নি।

No comments:

Post a Comment

মন্তব্য করুন