নিজস্ব প্রতিবেদক
যুদ্ধাপরাধের বিচারের জন্য গঠিত ট্রাইব্যুনাল সম্পর্কে আপত্তি তুলে বিএনপি জামায়াতকে রক্ষা করতে চায়_মন্তব্য করে আইন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেছেন, 'যুদ্ধাপরাধ আর মানবতাবিরোধী অপরাধ সমান কথা। বিএনপি মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার এ নিয়ে মন্তব্য করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বাধাগ্রস্ত করতে চাইছেন।'
গত শুক্রবার বিএনপির মহাসচিব হত্যা, লুণ্ঠন, ধর্ষণ এবং অগি্নসংযোগের মতো অপরাধ প্রচলিত ফৌজদারি আইনেই করা সম্ভব বলে মন্তব্য করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু একাডেমী আয়োজিত 'যুদ্ধাপরাধীদের বিচার-দেশবাসীর দাবি' শীর্ষক আলোচনা সভায় গতকাল শনিবার আইন প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু একাডেমীর আহ্বায়ক হেমায়েত উদ্দিন বীর বিক্রমের সভাপতিত্বে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে এ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ নাসিম।
অ্যাডভোকেট কামরুল প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন। এ ছাড়া বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের শ্রমবিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ। অ্যাডভোকেট কামরুল বলেন, তারা আগে থেকেই জানতেন যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে বিএনপি সহায়তা ও সমর্থন করবে না। কারণ এ দলের নেতারাই যুদ্ধাপরাধীদের আশ্রয়-প্রশয় দিয়ে রেখেছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি জিয়াউর রহমানের সময় কুখ্যাত রাজাকার শাহ আজিজুর রহমানের প্রধানমন্ত্রী এবং আরেক রাজাকার আলীমের মন্ত্রী হওয়া ও খালেদা জিয়ার সরকারে নিজামী-মুজাহিদের মন্ত্রী হওয়ার উদাহরণ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বিএনপি মহাসচিব এমন কথা বলে জাতিকে বিভ্রান্ত করতে চাইছেন। আইন প্রতিমন্ত্রী বলেন, খোন্দকার দেলোয়ার একজন বিজ্ঞ আইনজীবী, তাঁর এমন কথা বলা উচিত হয়নি। তিনি জ্ঞানপাপী বলেই এমনটা বলেছেন। বিএনপিতেই যুদ্ধাপরাধী আছে উল্লেখ করে কামরুল ইসলাম বলেন, ১৯৭১ এ মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজাকার, আলবদর, আলশামসরা যেসব অপরাধ করেছে সবই যুদ্ধাপরাধের পাশাপাশি মানবতাবিরোধী অপরাধের আওতায় পড়ে। তাই এ প্রোপটে বিষয় দুটিকে আলাদা করে ব্যাখ্যা করার অবকাশ নেই। তিনি বলেন, সারা দেশে সব যুদ্ধাপরাধীর বিচার করতে আরো ট্রাইব্যুনাল গঠনের প্রয়োজন হতে পারে।
মোহাম্মদ নাসিম বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হয়েছে উল্লেখ করে বলেন, এসবের পাশাপাশি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করাও মহাজোটের অন্যতম নির্বাচনী অঙ্গীকার ছিল। এখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার না হলে জনগণকে এ সরকার কী জবাব দেবে। তিনি বলেন, আগামী বিজয় দিবস জাতি পালন করবে যুদ্ধাপরাধীমুক্ত বাংলাদেশ হিসেবে। তিনি বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানি সংকট মোকাবিলায় জনগণের কাছে আরো সময় প্রার্থনা করে বলেন, আওয়ামী লীগ ২০২১ সাল পর্যন্ত সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। সময় পেলে এ সরকার বাংলাদেশকে সিঙ্গাপুরের সমান উচ্চতায় নিয়ে যাবে।
এদিকে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নান খান বলেছেন, জাতির কাছে দেওয়া আওয়ামী লীগের নির্বাচনী অঙ্গীকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সরকার বাস্তবায়ন করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। কোনো ষড়যন্ত্রই তা বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন কমিটির উদ্যোগে গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে 'মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার' বিষয়ক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
খবরের লিংক
No comments:
Post a Comment
মন্তব্য করুন