3 April 2010

জামালপুরে ইসলামী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান নিয়ে নানা গুঞ্জন

জামালপুর প্রতিনিধি

জামালপুরের বৈশাখী মেলা মাঠে বৃহস্পতিবার রাতে অনুষ্ঠিত ইসলামী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান নিয়ে নানা গুঞ্জনের সৃষ্টি হয়েছে। জামালপুর ইসলামী সাংস্কৃতিক পরিষদের ব্যানারে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করে ঢাকার 'কলরব' শিশু-কিশোর সাংস্কৃতিক সংগঠনের শিল্পীরা। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ ও বিশেষ অতিথি ছিলেন পৌর মেয়র শাহ ওয়ারেস আলী মামুন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জামালপুর ইসলামী সাংস্কৃতিক পরিষদের আহ্বায়ক মাওলানা আবুল কাশেম।

মূল অনুষ্ঠান শুরু হয় মাগরিবের নামাজের পর। অনুষ্ঠানকে ঘিরে বৈশাখী মেলা মাঠ কানায় কানায় ভরা ছিল মাদ্রাসাছাত্রদের ভিড়ে। গোটা জেলা থেকে মাদ্রাসাছাত্রদের আনা হয় অনুষ্ঠানে। অনুষ্ঠানে ইসলামী সংগীত পরিবেশন করা হয় একক ও দলীয় সমবেতকণ্ঠে। অনুষ্ঠানটি আয়োজনের জন্য সারা জেলায় পোস্টারিংসহ ব্যাপকভাবে প্রচারণা চালানো হয়। আর এসব ঘটনায় উপস্থিত অনেকের মনেই নানা গুঞ্জনের সৃষ্টি হয়। 'কলরব' নামের শিশু-কিশোর সাংস্কৃতিক সংগঠনের শিল্পীরা সংগীত পরিবেশন করে। এ সময় মূল আকর্ষণ ছিলেন সংগঠনের পরিচালক আইনুদ্দীন আল আজাদ। তিনি ও তাঁর দলের সদস্যরা রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত সংগীত পরিবেশন করেন। গানের ফাঁকে ফাঁকে আইনুদ্দীন আল আজাদ ও তাঁর দলের শিল্পীরা যেসব কথা বলেন, তার মধ্যে ছিল জিহাদি উদ্দীপনা। প্যারোডি গানের মাধ্যমে তাঁরা সতর্ক করে দেন_প্রবাসী বিতর্কিত লেখক তসলিমা নাসরিন দেশে ঢোকার চেষ্টা করছেন। জীবন থাকতে তাঁরা তসলিমাকে দেশে ঢুকতে দেবেন না।

গোয়েন্দা সংস্থার একটি সূত্র জানায়, আইনুদ্দীন আল আজাদ জঙ্গিবাদী তৎপরতার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তাঁর 'দ্বীনের ঝান্ডাবাহী সকল মুজাহিদ- দাও তাদেরে উদ্দীপনা তামান্না শহীদ' জিহাদি উদ্দীপনামূলক গান শুনে জঙ্গিরা উদ্বুদ্ধ হতো। ইসলামী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আড়ালে জঙ্গি অথবা জামায়াত-শিবিরের কানেকশন আছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে সরকারের একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন অনুষ্ঠানটি পর্যবেক্ষণ করেন।

অনুষ্ঠানে আগত আশেক মাহমুদ কলেজের সাবেক ছাত্রনেতা হীরা বলেন, 'আমার মনে হচ্ছে, এরা হরকাতুল জিহাদের মুজাহিদদের উজ্জীবিত ও নিজেদের সংগঠিত করতেই এ আয়োজন করেছে।'
জামালপুর ইসলামী সাংস্কৃতিক পরিষদের আহ্বায়ক মাওলানা আবুল কাশেম বলেন, 'ইসলামী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের কথা শুনে অনেকে অনেক রকমের মন্তব্য করেছেন। আমাদের সংগঠনের সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের কোনো সম্পর্ক নেই। জামায়াত একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় ইসলামকে সাংঘর্ষিক মতাদর্শে দাঁড় করিয়েছিল। আমরা মনে করি, নতুন প্রজন্মের জানা উচিত, ইসলাম মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে সাংঘর্ষিক মতাদর্শ নয়।'

No comments:

Post a Comment

মন্তব্য করুন