ফারুক মেহেদী
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লার ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি)। একই অভিযোগে জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ব্যাংক হিসাব খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সাবেক জ্বালানি উপদেষ্টা মাহমুদুর রহমান ও তাঁর স্ত্রীর ব্যাংক হিসাবও খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে সিআইসির প থেকে দেশের সব ব্যাংক ও অ-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্টের বিপরীতে তাঁদের আর্থিক লেনদেনের তথ্য আগামী সাত দিনের মধ্যে সরবরাহ করার জন্য বলা হয়েছে। এনবিআর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সিআইসির প থেকে বিভিন্ন ব্যাংকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, আবদুল কাদের মোল্লার নামে যে ব্যাংকেই যেকোনো ধরনের অ্যাকাউন্টই থাকুক না কেন, তা পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত করতে হবে। একই সঙ্গে তাঁর নিজ বা যৌথ নামে পরিচালিত চলতি, সঞ্চয়ী ও মেয়াদি আমানত অ্যাকাউন্ট, ঋণ অ্যাকাউন্ট, ফরেন কারেন্সি অ্যাকাউন্ট, ক্রেডিট কার্ড অ্যাকাউন্ট, ভল্ট, লকার, সঞ্চয়পত্রসহ যেকোনো উপায়ে অর্থ-সম্পদ ব্যাংকে জমা থাকুক না কেন, এ সবকিছুর তথ্যও সরবরাহ করতে হবে ব্যাংকগুলোকে।
মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান ও তাঁর স্ত্রীর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ না করা হলেও তাঁদের নামে দেশের যেকোনো ব্যাংকেই চলতি, সঞ্চয়ী ও মেয়াদি আমানত অ্যাকাউন্ট, ঋণ অ্যাকাউন্ট, ফরেন কারেন্সি অ্যাকাউন্ট, ক্রেডিট কার্ড অ্যাকাউন্ট, ভল্ট, লকার, সঞ্চয়পত্রসহ যেকোনো উপায়ে অর্থ-সম্পদ ব্যাংকে জমা থাকুক না কেন, এর সম্পূর্ণ তথ্যও সরবরাহ করতে বলা হয়েছে। এসব তথ্য পাওয়ার পরই সিআইসি তাঁদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিআইসির এক কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে বলেন, তাঁদের আয়কর রিটার্ন খতিয়ে দেখা হয়েছে। এতে ব্যাপক গরমিল পাওয়া গেছে। তাঁরা আয়কর ফাঁকি দিয়ে থাকতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ব্যাংকিং লেনদেনের তথ্য পাওয়ার পরই তাঁদের ব্যাপারে পরবর্তী করণীয় ঠিক করবে সিআইসি।
সিআইসির গোয়েন্দারা আবদুল কাদের মোল্লার রিটার্ন খতিয়ে দেখেছেন। তাঁর প্রধান আয় দেখানো হয়েছে সৌদি আরব থেকে পাঠানো রেমিট্যান্স ও বাইতুল মাল। আর এ আয়ের মধ্যেই কর ফাঁকি রয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এর আগে ১ এপ্রিল আরেক জামায়াত নেতা ও দিগন্ত মিডিয়ার চেয়ারম্যান মীর কাশেম আলী, তাঁর স্ত্রী খন্দকার আয়েশা খাতুন, ছেলে মোহাম্মদ বিন কাশেম, মীর আহমেদ বিন কাশেম, মেয়ে হাসিনা তায়েবা, তাহেরা কাশেম, তাহেরা হাসনিন ও সুমাইয়া রাবেয়ার ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য চেয়ে দেশের সব ব্যাংককে চিঠি দেয় সিআইসি।
রাজস্ব ফাঁকিবাজদের খুঁজে বের করার কাজে নিয়োজিত রাজস্ব বোর্ডের আওতাধীন শক্তিশালী এ সংস্থার একটি বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত এ রকম আরো অন্তত ৩৫ জনের নাম তাদের তালিকায় রয়েছে। পর্যায়ক্রমে এসব ব্যাংক অ্যাকাউন্ট তল্লাশি ও জব্দ করা হতে পারে।
http://dailykalerkantho.com/?view=details&type=single&pub_no=135&cat_id=1&menu_id=14&news_type_id=1&news_id=48373
No comments:
Post a Comment
মন্তব্য করুন