নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রামে মিছিলে বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের সংঘর্ষে পাঁচ পুলিশসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছে। গতকাল সোমবার বিকালে নগরীর আন্দরকিল্লা এলাকায় এ সংঘর্ষ হয়। পুলিশ এই ঘটনায় জামায়াত-শিবিরের ১১ কর্মীকে গ্রেপ্তার করে।
ঘটনাস্থলে অবস্থানকারী চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) উপকমিশনার বনজ কুমার মজুমদার কালের কণ্ঠকে বলেন, 'পুলিশ অ্যাসল্ট মামলার আসামিদের নিয়ে লাঠিসোটা হাতে তারা (জামায়াত-শিবির) মিছিল করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু পুলিশ সেই মিছিলে বাধা দিলে তারা পুলিশের ওপর হামলা করে। টিয়ার গ্যাস শেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে পুলিশ তার জবাব দিয়েছে।'
আহত পুলিশ কনস্টেবল আবদুল কাদের, মোহাম্মদ মাইনুদ্দিন, খোরশেদ আলম ও মোহাম্মদ রফিককে দামপাড়া পুলিশ লাইন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আর জামায়াত-শিবিরের আহত কর্মীরা নগরীর বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা নিচ্ছে বলে জানা গেছে। পুলিশের পক্ষ থেকে ৩০টি টিয়ার গ্যাস শেল ও রাবার বুলেট ছোড়ার কথা স্বীকার করেছেন কোতোয়ালি থানার ওসি মহিউদ্দিন মাহমুদ। এ ঘটনায় পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করা হবে বলেও ওসি কালের কণ্ঠকে জানিয়েছেন।
জামায়াত-শিবিরের মিছিলে নেতৃত্ব দানকারী মাওলানা শামসুল ইসলাম এমপিকে কয়েকবার ফোন করেও এ বিষয়ে তাঁর কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে সাবেক এমপি শাহজাহান চৌধুরী কালের কণ্ঠকে বলেন, 'মিছিল শুরু করার আগেই পুলিশ ইচ্ছাকৃতভাবে হামলা চালিয়েছে।' রবিবার কেন্দ্রীয় জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের সভায় বাধা দেওয়ার প্রতিবাদে এ মিছিলের আয়োজন করা হয়েছিল।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বিকাল সোয়া ৫টার দিকে আসরের নামাজ শেষে নগর আমির মাওলানা শামসুল ইসলাম এমপির নেতৃত্বে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা আন্দরকিল্লা জামে মসজিদের সামনে সমবেত হয়। এ সময় তারা স্লোগান দিয়ে মসজিদের সিঁড়ি পেরিয়ে রাস্তায় নামার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। কয়েক মিনিট উভয়পক্ষে বাগ্বিতণ্ডা চলার পর শিবিরের কয়েকজন লাঠি নিয়ে পুলিশের ওপর হামলা করে। পরে পুলিশ লাঠিপেটা করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
পুলিশের লাঠিপেটার মুখে জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীরা কয়েক ভাগে ভাগ হয়ে বক্সিরহাট, এমইএস স্কুল ও আশপাশের এলাকায় অবস্থান নিয়ে পুলিশের ওপর ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। এ সময় তারা মসজিদের ফুলের টব ভেঙেও পুলিশের দিকে ছুড়ে মারে। পরে বিপুলসংখ্যক পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে টিয়ার গ্যাস শেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান নেওয়া জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীদের হটিয়ে দেয়। প্রায় ৩০ মিনিট ধরে এ সংঘর্ষ চলার সময় পুরো এলাকার যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সন্ধ্যা ৬টায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এলে আবার যানবাহন চলাচল শুরু হয়।
এ ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃতরা হলো রুবেল (২০), আবদুল্লাহ (৩৪), সেলিম উদ্দিন (৩৭), ইসাহাক আহমেদ (২০), আমিনুল ওয়াহেদ (৩৬), আলমগীর (৩৮), নুরুচ্ছফা (২০), মোহাম্মদ শাহীন (৩০), নূর মোহাম্মদ (২১) ও রুবেল (১৯)। তবে গ্রেপ্তারকৃত সবাই নিজেদের নিরীহ পথচারী বলে দাবি করেছে।
খবরের লিংক
No comments:
Post a Comment
মন্তব্য করুন