1 April 2010

যুদ্ধাপরাধের বিচারঃ জামায়াতের আইনজীবী প্যানেল, আসবেন প্রবাসী ব্যারিস্টাররাও

সেলিম জাহিদ

যুদ্ধাপরাধের বিচারে আইনি লড়াইয়ের জন্য শুরুতেই বিদেশি আইনজীবীদের সহায়তা নেবে না জামায়াত। শুরুতে নিজ দলের আইনজীবীদের পাশাপাশি দেশের বিশিষ্ট কয়েকজন আইনজীবীর সহায়তা নিয়েই আইনি লড়াইয়ে অবতীর্ণ হবে। তবে ব্রিটেন প্রবাসী জামায়াত সমর্থক কয়েকজন আইনজীবী ট্রাইব্যুনালে পর্যবেক্ষক হিসেবে উপস্থিত থাকতে পারেন।

যুদ্ধাপরাধের বিচার মোকাবিলায় উচ্চ আদালতের বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ আইনজ্ঞের পরামর্শে একটি আইনজীবী প্যানেলের খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে জানা গেছে। জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ গতকাল বুধবার কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমরা আইনি লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত, আইনজীবী প্যানেলও চূড়ান্ত। এর বেশি কিছু বলা যাবে না।'

জানা গেছে, যুদ্ধাপরাধের বিচারে জামায়াত নেতাদের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হলে আসামি পক্ষের হয়ে ব্রিটেন থেকে ১৫-২০ জন ব্যারিস্টার দেশে আসতে পারেন। তাঁদের মধ্যে আছেন_ব্যারিস্টার আতাউর রহমান, ব্যারিস্টার নাজির আহমেদ, ব্যারিস্টার আবু বকর সিদ্দিক মোল্লা, ব্যারিস্টার নজরুল ইসলাম, ব্যারিস্টার এম আসাদুজ্জামান, ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ভূঁইয়া, ব্যারিস্টার ইসমাঈল, ব্যারিস্টার সাইয়েদ হাসান, ব্যারিস্টার আরিফুল কবির চৌধুরী, ব্যারিস্টার ফয়েজ উদ্দিন, ব্যারিস্টার শেখ রহমত আলী, ব্যারিস্টার ওমর ফারুক, ব্যারিস্টার ইকবাল, ব্যারিস্টার সরওয়ার কামাল, ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলাম, ব্যারিস্টার হাসান সোহেল, ব্যারিস্টার নাজিব মোমেন, ব্যারিস্টার সায়েম উদ্দিন হাসিব, ব্যারিস্টার রশীদ প্রমুখ।

এসব আইনজীবীর প্রত্যেকেই জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। ব্যারিস্টার নজরুল ইসলাম জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর জামাতা। তিনি ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল ছিলেন। ব্যারিস্টার এম আসাদুজ্জামান ছিলেন শিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্য। ব্যারিস্টার ইসমাঈল মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বড় ছেলে রফিক-বিন সাঈদীর ভায়রা ভাই। একই সঙ্গে আলী আহসান মুজাহিদের ছেলে তাসবিদেরও ভায়রা।

এই আইনজীবীরা সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী বাতিল আদেশের পর ব্রিটেনে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন।

দলের নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নবনির্বাচিত সভাপতি অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়াসহ জাতীয়তাবাদী ঘরানার নেতৃস্থানীয় প্রায় সব আইনজীবীই খসড়া তালিকায় আছেন।
ওই সূত্র নিশ্চিত করেছে, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক বিবাদী পক্ষের আইনজীবী প্যানেলের প্রধান কেঁৗসুলি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। ব্যারিস্টার রাজ্জাক বেশ কিছুদিন ধরে সংশোধিত 'আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন ১৯৭৩'-এর ফাঁকফোকর অনুসন্ধানে গবেষণার পাশাপাশি এ বিষয়ে বিদেশি আইনজ্ঞদের সঙ্গে শলাপরামর্শ করছেন।

এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর জামায়াত সেক্রেটারি ও দলের সংসদ সদস্য হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, 'সবকিছু তো আর প্রকাশ করা যায় না। সময় হলেই দেখবেন।'

ক্ষমতাসীন মহাজোট সরকার যুদ্ধাপরাধের বিচারের লক্ষ্যে জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনেই বিল পাস করার পর জামায়াত বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নেয়। ওই সময়ই ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাককে প্রধান করে একটি উপ-কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটিতে আরো আছেন জামায়াত সমর্থক ইসলামিক ল' ইয়ার্স কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় সভাপতি অ্যাডভোকেট নোয়াব আলী, সহসভাপতি অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন সরকার, অ্যাডভোকেট ফরিদ উদ্দিন খান প্রমুখ। ব্যারিস্টার রাজ্জাক ইসলামিক ল' ইয়ার্স কাউন্সিলের সেক্রেটারি জেনারেল।

এ বিষয়ে জানার জন্য ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাককে ফোন করা হলে তিনি বলেন, 'যুদ্ধাপরাধ ও ট্রাইব্যুনাল বিষয়ে আমি এখন কোনো কথাই বলব না। প্রয়োজন বোধ করলে আমি আপনাদের ডেকেই কথা বলব।'


খবরের লিংক

No comments:

Post a Comment

মন্তব্য করুন