নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার | তারিখ: ০১-০৪-২০১০
কক্সবাজার শহরের আদর্শ মহিলা কামিল মাদ্রাসায় গতকাল বুধবার হামলা চালানো হয়েছে। হামলাকারীরা ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়ে কম্পিউটার ল্যাব ও ছাত্রীদের আবাসিক হোস্টেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ ঘটনায় শিক্ষক-ছাত্রী, পুলিশসহ অন্তত ৬৩ জন আহত হয়েছেন। স্থানীয় কবরস্থান দখল করে মাদ্রাসার স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগে এ হামলা চালানো হয় বলে জানা গেছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল দুপুর ১২টার দিকে মাদ্রাসার পাশের বাইপাস সড়কে স্থানীয় লারপাড়ার কিছুসংখ্যক লোক কবরস্থান দখল করে মাদ্রাসা ভবন নির্মাণের অভিযোগ তুলে এর প্রতিবাদে মানববন্ধন করার চেষ্টা করে। এ সময় কক্সবাজার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাসের নেতৃত্বে একদল পুলিশ মানববন্ধনে বাধা দেয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তারা বিক্ষোভ মিছিল করে লারপাড়ায় ঢুকে পড়ে।
বেলা একটার দিকে মাদ্রাসার পাশের কবরস্থানে স্থানীয় গোলাম মোস্তফার লাশ দাফনের জন্য কয়েকজন কবর খুঁড়তে যায়। তাদের ভাষ্য, কবর খোঁড়ার সময় মাদ্রাসার ভেতর থেকে কে বা কারা তাদের লক্ষ্য করে ইট নিক্ষেপ করে।
এ খবর আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় কয়েক শ মানুষ জড়ো হয়ে বেলা দুইটার দিকে একযোগে মাদ্রাসায় হামলা চালায়। বিক্ষুব্ধ লোকজন মাদ্রাসার সীমানাপ্রাচীর ভেঙে ভেতরে ঢুকে ছাত্রীদের হোস্টেল ও কম্পিউটার ল্যাবে ভাঙচুর শুরু করে। এ সময় হোস্টেলে অবস্থানরত দুই শতাধিক ছাত্রী আতঙ্কে ছোটাছুটি করতে থাকেন। একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ লোকজন রান্নাঘর ও খাবার ঘরে ভাঙচুরের পর আগুন ধরিয়ে দেয়। মাদ্রাসা চত্বরে থাকা একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশাও পুড়িয়ে দেয় হামলাকারীরা। হামলায় দুই শিক্ষকসহ ১০ ছাত্রী আহত হন। এ ছাড়া এলোপাতাড়ি ইটপাটকেল নিক্ষেপে পুলিশসহ ৫১ জন আহত হন।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে তারাও হামলার শিকার হয়। হামলায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নূরে আলম, সহকারী পুলিশ সুপার সরওয়ার আলমসহ ১৪ পুলিশ সদস্য আহত হন। তাঁদের মধ্যে পাঁচজনকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ফরিদ আহমদ চৌধুরী অভিযোগ করেন, কবরস্থানের জমি দখল করে মাদ্রাসার হোস্টেল নির্মাণের মিথ্যা অজুহাতে জামায়াতে ইসলামীর কয়েকজন নেতার ইন্ধনে এ হামলা হয়েছে।
ওসি প্রদীপ কুমার জানান, কবরস্থানের জমি দখল করে মাদ্রাসা ভবন নির্মাণের অভিযোগে এ হামলা চালানো হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ছয়টি ফাঁকা গুলি ছোড়ে। হামলাকারীদের আটকের চেষ্টা চলছে।
খবরের লিংক
No comments:
Post a Comment
মন্তব্য করুন