নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী | তারিখ: ০২-০৩-২০১০
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাত্রলীগকে বিতাড়িত করে ক্যাম্পাসের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা ছিল ইসলামী ছাত্রশিবিরের হামলার অন্যতম লক্ষ্য। শিবিরের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক শরিফুজ্জামান নোমানী হত্যার বদলা নেওয়াও ছিল ওই হামলার আরেকটি কারণ। আর এতে মদদ দেন জামায়াতে ইসলামী ও শিবিরের কেন্দ্রীয় পর্যায়ের নেতারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন আবাসিক হলের শিবিরনিয়ন্ত্রিত কক্ষ থেকে উদ্ধার করা নথিপত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র করে ছাত্রশিবিরের পরিকল্পনা, তাদের আয়ের উত্স ও সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের তথ্যও পাওয়া গেছে। রাজশাহী মহানগরের মতিহার থানার পুলিশের একাধিক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর জাকারিয়া চৌধুরী জানান, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি রাতে মতিহার থানার পুলিশ শহীদ হবিবুর রহমান হল এবং ২৭ ফেব্রুয়ারি বিকেলে সোহ্রাওয়ার্দী হলে শিবিরনিয়ন্ত্রিত কক্ষগুলোতে অভিযান চালিয়ে সংগঠনটির বেশকিছু নিবন্ধন খাতা ও ডায়েরি উদ্ধার করে। এর মধ্যে একটি হিট লিস্টও রয়েছে, যাতে অন্য ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মীদের আছে। মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তোফাজ্জল হোসেন খান নথিপত্র উদ্ধারের কথা নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শহীদ হবিবুর রহমান হলে পাওয়া শিবিরের বার্ষিক পরিকল্পনার একটি নিবন্ধন খাতায় লেখা রয়েছে,
‘এ বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি ইউনিটে শিবিরকর্মী বাড়াতে হবে ১০০ জন, সাথী ৫০ জন, অমুসলিম বন্ধু পাঁচজন ও সমর্থক ২০০ জন।’এতে আরও লেখা রয়েছে,
‘ক্যাম্পাসের পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলোতে গিয়ে সদস্য বাড়াতে হবে। সাধারণ মানুষের সঙ্গে আরও বেশি মিশতে হবে। শিবির সম্পর্কে তাদের ভালো ধারণা দিতে হবে। দলীয় শিক্ষকদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে হবে। এক বছরের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় এবং এর আশপাশের এলাকায় ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীকে শিবিরের সমর্থকের তালিকায় আনতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় এবং এর আশপাশের এলাকা ও মেসগুলোতে শিবিরের শক্তিশালী ইউনিট কমিটি গঠন এবং প্রতিটি ইউনিটের অবস্থান সম্পর্কে ওপর মহলকে তাত্ক্ষণিক তথ্য সরবরাহ করতে হবে।’
এ ছাড়া এসব নথিপত্রে গত এক বছরে বিশ্ববিদ্যালয় এবং এর আশপাশের এলাকায় অবস্থানকারী ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীর নাম, তাদের স্থায়ী ও অস্থায়ী ঠিকানা উল্লেখ রয়েছে। এতে রাজশাহীতে কর্মরত সাংবাদিকদের তথ্যও রয়েছে।
খবরের লিংক
No comments:
Post a Comment
মন্তব্য করুন