মাসুদ কার্জন ও নুরে আলম দুর্জয়
ছাত্রশিবিরের কক্ষ থেকে উদ্ধার করা ছাত্রলীগ নেতাদের একটি তালিকা নিয়ে রহস্য দানা বাঁধছে। শিবির কেন বা কী উদ্দেশ্যে তালিকাটি করেছে_এ প্রশ্ন উঠেছে নানা মহলে। ওই তালিকায় থাকা ৭৯ জনের বেশির ভাগই ছাত্রলীগের বিভিন্ন হলের ত্যাগী নেতা-কর্মী বলে জানিয়েছেন ছাত্রলীগের একাধিক নেতা। গত বৃহস্পতিবার তালিকাটি শাহবাগে শিবিরের একটি মেস থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। ওই কক্ষটি শিবির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আনিসুর রহমানের। অভিযানের আগে তিনি পালিয়ে যান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি শেখ সোহেল রানা টিপু এ বিষয়ে কালের কণ্ঠকে জানান, ক্যাম্পাসে স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ থাকায় প্রগতিশীল ছাত্রলীগের ওপর তারা ক্ষিপ্ত। তাই শিবিরের কর্মকাণ্ড চালাতে বাধা সৃষ্টিকারী নেতা-কর্মীদের হত্যার উদ্দেশ্যে এ তালিকা তৈরি করা হতে পারে বলে তাঁর ধারণা।
ওই তালিকায় থাকা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় গণশিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক আবু আব্বাস ভূঁইয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি শেখ সোহেল রানা টিপু, সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ সাকিব বাদশার নামে এই ভাগগুলো করা হয়েছে। তালিকাভুক্তদের কারো নামের নিচে এবং ওপরে লাল কালি দিয়ে 'ক্রস', 'টিক', 'সংখ্যা' ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের সাংকেতিক চিহ্ন দেওয়া রয়েছে। তালিকার শেষে কেন্দ্রীয় সভাপতি মাহমুদ হাসান রিপনের নাম 'রিপন ভাই' হিসেবে লেখা থাকলেও তাঁর ব্যাপারে আর কিছু লেখা নেই।
তালিকাভুক্তরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন আবাসিক হলের ছাত্র। কাগজটির ওপরের অংশে লেখা আছে, 'জসিম বিসিএল'।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার কৃষ্ণপদ রায় কালের কণ্ঠকে বলেন, 'শিবির নেতার কক্ষ থেকে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের নাম লেখা একটি কাগজ পাওয়া গেছে। আসলে কী উদ্দেশ্যে তারা (শিবির) এটা করেছে, সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে যাঁদের নাম রয়েছে, তাঁরা হলেন বঙ্গবন্ধু হলের শাহীন, সোহেল, ফয়সাল, সুজন সাইদ, বাবু; জিয়া হলের মারুফ, জিকু, ইউসুফ, মামুন, সালমান, সোহাগ, রুবেল, মুন্না, সোহেল, শোভন; কবি জসিমউদ্দীন হলের সালাউদ্দিন, সুমন, সুমন শিকদার, ফোয়াদ, সোহাগ; সূর্য সেন হলের সাইদ, তুহিন, মোস্তাক আশিক, এরশাদ, জয়; মুহসীন হলের রাশেদ, রিপন, মহিউদ্দিন, মোহাম্মদ আলী, দেলোয়ার, কর্নেল, নজরুল, খোরশেদ, সোহাগ; এফ রহমান হলের ফারুক, মেহেদী, রুবেল, কামাল, জিয়া, রিজভী, রাহুল; জহুরুল হক হলের আশরাফ, শরীফ, সুমন, রাহাত, ব্যাকুল; এসএম হলের সৈকত, তারেক, তৈয়ব, সুমন, নবীন, আনু, পলাশ, আনোয়ার, ফয়সাল; জগন্নাথ হলের পংকজ, উত্তম, মিলটন উৎপল, বাবলু, রনি, সজল, দেবাশীষ; শহীদুল্লাহ হলের মুন্না, গালিব, হেদায়েত, মাহী; এফএইচ হলের আজিজ, আনোয়ার, সুমন, কল্লোল; অমর একুশে হলের মোস্তাক, রানা, মুহিত, অনিক, রাসেল ও মঈনুল। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতা আবু আব্বাস ভূঁইয়া কালের কণ্ঠকে বলেন, তালিকায় থাকা বেশির ভাগই ত্যাগী নেতা। যে তালিকাই তারা করুক, শিবির বা প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ছাত্রলীগ লড়ে যাবে।
খবরের লিংক
No comments:
Post a Comment
মন্তব্য করুন