নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়-সংলগ্ন গ্রাম বিনোদপুর, কাজলা, মেহেরচণ্ডী ও ভদ্রায় অভিযান চালানোর নির্দেশ দিয়েছে সরকার। এ গ্রামগুলোতে ছাত্রশিবিরের শক্ত অবস্থান রয়েছে। গত সোমবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে রাতভর সংঘর্ষের সময় এসব গ্রামের সন্ত্রাসীরা ছাত্রশিবিরের সঙ্গে যোগ দিয়েছিল।
স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে পুলিশের আইজি এবং র্যাব মহাপরিচালকের বৈঠকে গ্রামগুলোতে অভিযান চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে গত সোমবার রাতে ছাত্রশিবিরের নির্মম নির্যাতনে ছাত্রলীগকর্মী ফারুক হোসেন নিহত হন।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখছে সরকার। পুলিশ মহাপরিদর্শক নূর মোহাম্মদকে রাজশাহী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পাশাপাশি ভবিষ্যতে যাতে সন্ত্রাসী ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে সে জন্য বিশ্ববিদ্যালয় এবং এর আশপাশের গ্রামের সন্ত্রাসীদের খুঁজে বের করে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করতে জামায়াতে ইসলামী সমর্থিত ইসলামী ছাত্রশিবির পরিকল্পিতভাবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের ওপর হামলা চালায় বলে প্রতিমন্ত্রী অভিযোগ করেছেন। এর মধ্য দিয়ে শিবির কোনো বার্তা দিতে চাইছে কি না_এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'তারা তো প্রতিনিয়তই বার্তা দিয়ে আসছে। সবকিছুর মধ্য দিয়েই সরকার তার লক্ষ্যে পেঁৗছবে। আমাদের যে শক্তি আছে তা দিয়ে সব অপশক্তিকে দমন করা হবে।' পাশাপাশি বিরোধী দলসহ সকল রাজনৈতিক দলকে তিনি এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়-সংলগ্ন এলাকায় ছাত্রশিবিরের শক্ত অবস্থান রয়েছে। তাদের সহায়তায় শিবির ছাত্রলীগের ওপর হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনায় একজন শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে। শুনেছি আরেকজনকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ১৭-১৮ জন চিকিৎসাধীন রয়েছে। নিহত ছাত্রের পরিচয় জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বিষয়টি পরে জানাবেন বলে মন্তব্য করেন।
সোমবারের রাতের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই ছাত্রনেতা বলেন, সংঘর্ষের একপর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী শিবিরকে নিবৃত্ত করতে পারলেও পরে তারা পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে সন্ত্রাসীদের নিয়ে এসে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের উৎখাতের জন্য হামলা চালায়।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সেখানে ব্যর্থ কি না_জানতে চাইলে টুকু বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের কাজ করে গেছে। অনেক বিষয় চিন্তা করে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে তাদের অভিযান চালাতে হয়।
জামায়াতে ইসলামীকে ইঙ্গিত করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার পর থেকে একটি মহল দেশকে অকার্যকর করার চেষ্টা করছে। সরকার অনেক বাধা পেরিয়ে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের রায় কার্যকর করেছে। এখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। এ বিচার বাধাগ্রস্ত করতেই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করেছে তারা।
ছাত্রলীগের ভর্তিবাণিজ্য প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, 'ভর্তিবাণিজ্য বন্ধ করতে সবাইকে নিয়ে বৈঠকে বসার জন্য শিক্ষামন্ত্রীকে অনুরোধ জানাব।'
খবরের লিংক
No comments:
Post a Comment
মন্তব্য করুন