চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি | তারিখ: ১৩-০২-২০১০
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এ এ এম মহিউদ্দিন হত্যাকাণ্ডের পর ক্যাম্পাসে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ছাত্রশিবির ও ছাত্রলীগ উভয়ই তাঁকে নিজেদের কর্মী দাবি করে মিছিল-সমাবেশ করেছে। বড় ধরনের সহিংসতার আশঙ্কায় ছয়টি আবাসিক হলের অনেক শিক্ষার্থী চলে যাচ্ছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নম্বর ও দুই নম্বর গেট দিয়ে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের ব্যাগ ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে ক্যাম্পাস ত্যাগ করতে দেখা যায়।
গতকাল সকাল থেকে ক্যাম্পাসের দুই নম্বর গেটসহ মোড়ে মোড়ে ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীদের দলবেঁধে অবস্থান নিতে দেখা যায়। অন্যদিকে ছাত্রলীগের কর্মীরা অবস্থান নেন ক্যাম্পাসের অদূরে এক নম্বর গেট এলাকায়। হিসাববিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র আবদুল আজাদ বলেন, ‘মহিউদ্দিন কোনো সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিল কি না জানি না। যতটুকু জানি, সে নিরীহ। একজন নিরীহ ছাত্রকে এভাবে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করা কোন সভ্যতার লক্ষণ? নিজেকে নিরাপত্তাহীন মনে করায় ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে যাচ্ছি।’
বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা: গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে সিন্ডিকেটের এক জরুরি সভায় আজ শনিবার থেকে এক সপ্তাহের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন উপাচার্য অধ্যাপক আবু ইউসুফ। সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পর্ষদের শিক্ষকেরা উপস্থিত ছিলেন। আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে আবার ক্লাস-পরীক্ষা শুরু হবে।
প্রক্টরের গাড়ি ভাঙচুর: বৃহস্পতিবার রাতে ক্যাম্পাসের স্টেশন চত্বরে প্রক্টরের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, কিছু শিবিরকর্মী প্রক্টরের গাড়িটি দাঁড়ানো অবস্থায় দেখে এর গ্লাস ভেঙে দেন। প্রক্টর মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন গাড়ি ভাঙচুরের কথা নিশ্চিত করে বলেন, ‘কিছু উচ্ছৃঙ্খল ছেলে ঢিল মেরে আমার গাড়ির গ্লাস ভেঙে দিয়েছে।’
জেলা পুলিশ সুপার জেড এ মোর্শেদ বলেন, ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কা দেখা দিলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পাল্টাপাল্টি বক্তব্য: মহিউদ্দিন হত্যার জন্য ছাত্রশিবির ও ছাত্রলীগ একে অন্যকে দায়ী করেছে। শিবিরের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি শামসুদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ ঘটনা ছাত্রলীগ পরিকল্পিতভাবে ঘটিয়েছে। ষোলশহর স্টেশনে তারা আমাদের দলের সমর্থককে কাছে পেয়ে হত্যা করেছে। বিষয়টি আমরা ঘটনার দিন রাতেই উপাচার্য, সহ-উপাচার্যসহ সবাইকে জানিয়েছে।’
ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক এরশাদ হোসেন বলেন, ‘ছাত্রলীগের সমর্থক মহিউদ্দিনকে হত্যা করে শিবিরের ক্যাডাররা আমাদের ওপর দোষ চাপাতে চাইছে। মহিউদ্দিন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে চলাফেরা করতেন। তিনি দলের একনিষ্ঠ সমর্থক ছিলেন।
খবরের লিংক
No comments:
Post a Comment
মন্তব্য করুন