13 February 2010

নীলফামারীতে জামায়াত ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষে আহত ৭০, জেলা আমির আটক




নীলফামারী প্রতিনিধি | তারিখ: ১৪-০২-২০১০


নীলফামারী শহরে গতকাল শনিবার জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। সংঘর্ষে পুলিশ কর্মকর্তাসহ অন্তত ৭০ জন আহত হয়েছে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। জামায়াতের পক্ষ থেকে একটি মিছিল বের করা হলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।

প্রায় ঘণ্টাব্যাপী এ সংঘর্ষে গোটা এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। শহরের অধিকাংশ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ জেলা জামায়াতের আমির শাহ মোজাম্মেল হকসহ দলটির ২০ নেতা-কর্মীকে আটক করেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, দেশের বিভিন্ন স্থানে জামায়াত-শিবিরের কার্যালয়ে ভাঙচুর, নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার ও নির্যাতনের প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর জেলা শাখা গতকাল বিকেল পাঁচটার দিকে মিছিল বের করে। শহরের উকিলপাড়ায় আল হেলাল একাডেমিতে অবস্থিত দলটির কার্যালয় থেকে মিছিল শুরু হওয়ার পরপরই পুলিশ আটকে দেয়। পরে মিছিলটি দলীয় কার্যালয়ে ফিরে যায়।

জামায়াতের ওই মিছিলের খবর পেয়ে জেলা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে পাল্টা মিছিল শুরু হয়।

ছাত্রলীগের মিছিলটি শহরের চৌরঙ্গী মোড় থেকে আধা কিলোমিটার দূরে জামায়াতের কার্যালয়ের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় পাল্টাপাল্টি হামলা শুরু হয়। দলীয় কার্যালয়ের ভেতর থেকে জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীরা মিছিলটি লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়েন। ছাত্রলীগের মিছিল থেকেও পাল্টা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। একপর্যায়ে পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা জামায়াতের কার্যালয় ভবনের ফটক ভেঙে ফেলেন। লাঠিসোঁটা, হকিস্টিক নিয়ে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষের একপর্যায়ে জামায়াতের কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। পরে দমকলকর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।

পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ১০-১২টি কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। সংঘর্ষ চলাকালে নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল ইসলাম, উপপরিদর্শক (এসআই) সাহাবুদ্দিন, কনস্টেবল আশরাফ আলীসহ পুলিশের ১০ জন সদস্য আহত হন। এ ছাড়া নীলফামারী জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুদ রহমানসহ সংগঠনটির ৫০ জন নেতা-কর্মী এবং জামায়াত-শিবিরের ১০-১২ জন আহত হয়। তাদের নীলফামারী সদর আধুনিক হাসপাতাল ও রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

নীলফামারী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মমতাজুল হক বলেন, জামায়াত-শিবিরের মিছিলের প্রতিবাদে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা-কর্মীরা মিছিল করেন। জামায়াত-শিবির ওই মিছিলে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।

এ ব্যাপারে জামায়াতে ইসলামীর কোনো নেতার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

নীলফামারীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) রশিদুল হক বলেন, পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করতে বাধ্য হয়। দায়িত্ব পালনকালে ১০ জন পুলিশ সদস্য আহত হন। জামায়াতের জেলা আমিরসহ দলের ২০ নেতা-কর্মীকে আটক করা হয়েছে বলে তিনি নিশ্চিত করেন।


খবরের লিংক

No comments:

Post a Comment

মন্তব্য করুন