19 February 2010

ইডেন, বদরুন্নেসায় শিবিরের ছাত্রী শাখাঃ অভিভাবকের হাতে সমর্পণ ৮ ছাত্রীকে

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর দুটি মহিলা কলেজে ইসলামী ছাত্রশিবিরের শাখা ছাত্রী সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর ইডেন স০রকারি মহিলা কলেজ এবং বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজের বিভিন্ন হোস্টেলে অভিযান চালিয়ে বেশ কিছু জিহাদি বই উদ্ধার করা হয়। সন্দেহজনক তৎপরতার অভিযোগ ওঠায় প্রতিষ্ঠান দুটির আট শিক্ষার্থীকে তাদের অভিভাবকের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। কর্তৃপক্ষ ইডেনের পাঁচটি ও বদরুন্নেসার দুইটি হোস্টেলে এ অভিযান চালায়।

দুটি কলেজের হোস্টেলের বিভিন্ন কক্ষ ও মসজিদ ব্যবহার করে গোপনে তৎপরতা চালানোর অভিযোগ পাওয়ার পরই এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে পুলিশ ও কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। এ সময় জামায়াতের আদর্শিক নেতা মাওলানা মওদুদী, গোলাম আযম ও দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর লেখা অনেক বই ছাড়াও কথিত জিহাদের বিভিন্ন বই ও প্রচারপত্র উদ্ধার করা হয়।

ইডেন কলেজের ছাত্রীরা জানান, কয়েক দিন ধরে বোরকা পরা একদল ছাত্রী সরকারবিরোধী প্রচারপত্র বিলি করছিল। এ ছাড়া হলের নামাজঘরে দরজা বন্ধ করে গভীর রাতে তারা শলাপরামর্শ করে আসছিল। এসব ব্যাপার ছাত্রীদের নজরে আসার পরই তাঁরা গতকাল কলেজ কর্তৃপক্ষকে জানান। পরে কর্তৃপক্ষ নামাজঘরগুলোতে গিয়ে বিপুল পরিমাণ জিহাদি বই উদ্ধার করে। এ ছাড়া ছাত্রী সংস্থার কক্ষ বলে পরিচিত কয়েকটি কক্ষেও তল্লাশি চালানো হয়।

ইডেন কলেজের ছাত্রলীগের সভানেত্রী নিঝুম কালের কণ্ঠকে বলেন, অভিযানের সময় কলেজ কর্তৃপক্ষ বেশ কিছু জিহাদি বইও উদ্ধার করে। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার সন্দেহজনক ঘোরাফেরার কারণে চারজনকে আটক করা হয়েছিল। পরে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

লালবাগ থানার ওসি মোহাম্মদ আলী কালের কণ্ঠকে জানান, চার তরুণীকে ইডেন কলেজ কর্তৃপক্ষ আটক করেছিল। তারা আপন বোন। পরে অধ্যক্ষার উপস্থিতিতে জিজ্ঞাসাবাদ করে তাদের বাবাকে ডেকে তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এর মধ্যে দুজন কলেজের ছাত্রী। তাদের বাবা একটি মসজিদের মুয়াজ্জিন। ওসি আরো জানান, ইডেন কলেজ থেকে প্রায় এক হাজার বিভিন্ন বই উদ্ধার করা হয়েছে।

বদরুন্নেসা কলেজ কর্তৃপক্ষ জানায়, ছাত্রী সংস্থার তৎপরতা চালানোর অভিযোগে গতকাল বৃহস্পতিবার কলেজের দুটি হোস্টেলের ছয় ছাত্রীকে তাদের অভিভাবকের হাতে তুলে দেওয়া হয়। তারা হচ্ছে_ইংরেজি তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী সুমাইয়া জাহান, অর্থনীতি তৃতীয় বর্ষের মার্জিয়া তানিয়া, হোসনে আরা রুনা ও ময়না এবং উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণীর ছাত্রী সুমাইয়া ও মারুফা। ঘটনা আঁচ করতে পেরে আরো কয়েকজন ছাত্রী আগেই হল থেকে পালিয়ে গেছে বলে অন্য ছাত্রীরা জানান।

ছাত্রলীগের কলেজ শাখার সভানেত্রী নাসরিন কালের কণ্ঠকে জানান, ইসলামী ছাত্রী সংস্থা ও জঙ্গি তৎপরতায় জড়িত থাকার অভিযোগে সাধারণ ছাত্রীরা কয়েকজন শিক্ষার্থীকে চিহ্নিত করে।

কলেজের অধ্যক্ষ মেরিনা জাহান কালের কণ্ঠকে জানান, কিছু ছাত্রীর কক্ষে গোলাম আযম ও জঙ্গিসংক্রান্ত বিভিন্ন বই পাওয়া গেছে। পরে অভিভাবকদের ডেকে এসব ছাত্রীকে তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। ইদানীং কিছু ছাত্রী নিউমার্কেটে গিয়ে সংগঠনের বিভিন্ন পাঠচক্রে অংশ নিত অভিযোগ করে তিনি বলেন, কলেজ পরিচালনা কমিটির সঙ্গে বৈঠক করে পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হবে।


খবরের লিংক

No comments:

Post a Comment

মন্তব্য করুন