নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী | তারিখ: ১৭-০২-২০১০
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের কর্মী ফারুক হোসেন হত্যা মামলার আসামি রাজশাহী মহানগর জামায়াতের আমির আতাউর রহমানের মোবাইল ফোনের কললিস্ট খতিয়ে দেখে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার আতাউর রহমানের পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে পুলিশ এ তথ্য জানায়। গতকালই তাঁকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়।
রিমান্ডে নিয়ে আতাউর রহমানকে নগরের মতিহার থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে জানান, দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদে আতাউর রহমান বারবার নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন। একপর্যায়ে তিনি স্বীকার করেন, বিনোদপুরের ইসলামিয়া কলেজে বসে বিশ্ববিদ্যালয়ে ওই হামলার পরিকল্পনা করা হয়। পুলিশের কাছে আতাউর রহমান দাবি করেন, ঘটনার দিন সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের হামলা চালানোর প্রস্তুতি নেওয়ার খবর পেয়ে তিনি তাদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা চালান।
ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে আতাউর রহমান বলেন, ৮ ফেব্রুয়ারি ঘটনার দিন রাত ১২টার পর তিনি ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ মোবাইল ফোনের কললিস্ট বিশ্লেষণ করে উল্লিখিত সময়ের পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে তাঁর কথা বলার গুরুত্বপূর্ণ একটি তালিকা পেয়েছে। তালিকা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ঘটনার দিন রাত ১০টার পর থেকে রাত তিনটা পর্যন্ত তিনি শিবিরের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি শামসুল আলম ও সেক্রেটারি মোবারক হোসেনের সঙ্গে ১৫-১৬ বারেরও বেশি কথা বলেছেন। এ ছাড়া তিনি ভোর হওয়া পর্যন্ত একনাগাড়ে বিভিন্ন নম্বরে যোগাযোগ করে কথা বলেন। এর মধ্যে জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আবুল কালাম আজাদও রয়েছেন।
ওই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, জিজ্ঞাসাবাদে আতাউর রহমানের কাছ থেকে এই হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যায়। এসব তথ্য যাচাই করে দেখা হচ্ছে। তথ্য অনুযায়ী, তাণ্ডবের ব্যাপারে শিবিরের পূর্বপরিকল্পনা জানার পরেও তাদের প্রতিহত করার চেষ্টা চালাননি তাঁরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের হামলার ব্যাপারে আতাউর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করার কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের লতিফ হল শাখার শিবির সভাপতি হাসমত আলী ওরফে লিটন। তাঁকেও পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। পুলিশকে তিনি বলেন, জামায়াতের অজ্ঞাতসারে শিবির কিছুই করে না। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। লিটনকে আবার পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। গত ১১ ফেব্রুয়ারি সকালে আতাউর রহমানকে রাজশাহী মহানগরের লোকনাথ হাইস্কুলের পাশের রাস্তা থেকে গ্রেপ্তার করে বোয়ালিয়া থানার পুলিশ।
খবরের লিংক
No comments:
Post a Comment
মন্তব্য করুন