বিশেষ প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম | তারিখ: ১৭-০২-২০১০
জামায়াত-শিবিরের অধিকাংশ নেতা-কর্মী রিমান্ডে বলেছেন, তাঁরা জানতেন না, কে নিহত হয়েছেন। দলের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের কেউ কেউ জানতেন, আওয়ামী লীগের হামলায় নিহত শিবিরের একজন নেতার জানাজা পড়তে হবে। জানাজা হবে আন্দরকিল্লা জামে মসজিদে জুমার নামাজের পর। কিন্তু জুমার আগে সবাইকে নেওয়া হয় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গের সামনে। সেখানে একটি লাশ নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। পরে লাশ না পেয়ে গায়েবানা জানাজা হয়। নেতাদের আকস্মিক সিদ্ধান্তে বিক্ষোভ মিছিল হয়।
ওই দিন পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের পর জামায়াত-শিবিরের ৮৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। আদালত গত শনিবার এদের প্রত্যেকের দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পুলিশ ২০ জন করে কারাগার থেকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
জানা গেছে, গত রোববার সকালে প্রথম দফায় ২০ জনকে রিমান্ডে নেওয়া হয়। এঁদের মধ্যে জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরের নায়েবে আমির আহসান উল্লাহও রয়েছেন। রিমান্ড শেষে এই ২০ জনকে সোমবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। একই সঙ্গে অন্য ২০ জনকে রিমান্ডে নেওয়া হয়। গতকাল মঙ্গলবার তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিউদ্দিন মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদে জামায়াত-শিবিরের অধিকাংশ নেতা-কর্মী বলেছেন, জানাজায় যাওয়ার আগে তাঁরা জানতেন না, কার জানাজা পড়তে যাচ্ছেন তাঁরা। দলের নেতারা নগরের দূর-দূরান্ত থেকে তাঁদের দলীয় নেতার জানাজা পড়ার কথা বলে এনেছেন। ওসি বলেন, এঁদের জবানবন্দি ১৬১ ধারায় লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রিমান্ডে আনা জামায়াত-শিবিরের বেশির ভাগ নেতা একই সুরে কথা বলেছেন। গতকাল রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের একজন ছাত্র প্রথমে শিবির করেন না এবং গায়েবানা জানাজায় অংশ নেননি বলে দাবি করেন। পুলিশ কর্মকর্তা তাঁকে ভিডিও ফুটেজ দেখানোর কথা বললে ওই ছাত্র জানান, ‘আমি ছাত্রাবাসে সিট পেতে শিবিরে যোগ দিই। দলীয় সিদ্ধান্তের কারণে গায়েবানা জানাজা ও মিছিল করি।’
এর আগে প্রথম দফায় রিমান্ডে নায়েবে আমির আহসান উল্লাহ জানান, শুক্রবার সচরাচর তিনি তাঁর এলাকা বাকলিয়ার মসজিদে জুমার নামাজ পড়েন। কিন্তু আগের রাতে দলের সিরাজদৌলা রোডের কার্যালয় থেকে টেলিফোন করে তাঁকে পরদিন সকালে শিবিরের একজন শহীদ নেতার জানাজা পড়তে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে আসতে বলা হয়। সেই সূত্রে তিনি সেখানে যান এবং পরে মিছিল থেকে গ্রেপ্তার হন। তিনি জানতেন না, কোন নেতা নিহত হয়েছেন।
গত বৃহস্পতিবার রাতে ষোলশহর রেলস্টেশনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতিবিজ্ঞানের ছাত্র এ এ এম মহিউদ্দিন সন্ত্রাসীদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে খুন হন। জামায়াত-শিবির মহিউদ্দিনকে তাদের কর্মী দাবি করে হাসপাতাল থেকে মরদেহ ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে।
খবরের লিংক
No comments:
Post a Comment
মন্তব্য করুন