আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি | তারিখ: ১৬-০২-২০১০
বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার হাজি তাছের উদ্দিন মহিলা কলেজ ও পার্শ্ববর্তী ইসলামি কল্যাণ ট্রাস্ট কার্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে জামায়াত-শিবিরের গোপন প্রশিক্ষণ ও তৎপরতা চলে আসছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় আলোচিত হলেও পুলিশের পক্ষ থেকে কোনে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
এলাকাবাসী জানায়, হাজি তাছের উদ্দিন মহিলা কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে জামায়াত-শিবির সেখানে তাদের বিভিন্ন কার্যক্রম শুরু করে। বিগত জোট সরকারের সময় তাদের তৎপরতা আরও বৃদ্ধি পায়। ওই সময়ে কলেজের পাশে তারা ইসলামি কল্যাণ ট্রাস্ট নামের আরেকটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে। দুটি প্রতিষ্ঠান নিবন্ধিত না হওয়া সত্ত্বেও বিগত জোট সরকারের সময় তারা সরকারি অর্থসহ টিআর প্রকল্পের মাধ্যমে গম ও চাল বরাদ্দ পায়।
কলেজের পার্শ্ববর্তী এলাকার লোকজন জানায়, গভীর রাত পর্যন্ত কল্যাণ ট্রাস্টের ভবনে গোপন বৈঠক চলে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অনেক অচেনা লোকজন সেখানে আসে। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু রেজা খানের অভিযোগ, কলেজসহ ইসলামি কল্যাণ ট্রাস্ট কার্যালয়ে জামায়াত-শিবিরের গোপন তৎপরতার বিষয়টি উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় উত্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
উপজেলার কোমারপুর গ্রামের বাসিন্দা বেলাল হোসেন বলেন, কল্যাণ ট্রাস্ট নামের ভবনটি এলাকাবাসীর কাছে একটি রহস্যময় ভবন। সেখানে ধর্মীয় কর্মকাণ্ডের অন্তরালে চলে নানা ধরনের প্রশিক্ষণ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কেন্দ্র ও কলেজের পার্শ্ববর্তী এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, ইসলামি কল্যাণ ট্রাস্ট নামে ভবনটির পরিচয় দেওয়া হলেও সেখানে জামায়াত-শিবির ও বিভিন্ন উগ্রপন্থী ইসলামি সংগঠনের কর্মতত্পরতা চলে। কল্যাণ ট্রাস্টের নেতৃত্বে রয়েছেন জামায়াতের আদমদীঘি উপজেলার সাবেক আমির ও বর্তমান বগুড়া জেলা জামায়াতের নেতা মোফাজ্জল হক, উপজেলা জামায়াতের আমির আতোয়ার হোসেন, হাজি তাছের উদ্দিন কলেজের অধ্যক্ষ ও জামায়াতের নেতা মোস্তফা আহম্মেদ, উপেজলা ভাইস চেয়ারম্যান ইউনুস আলীসহ জামায়াতে ইসলামীর বিভিন্ন পর্যায়ের শীর্ষস্থানীয় নেতারা।
হাজি তাছের উদ্দিন কলেজের অধ্যক্ষ মোস্তফা আহম্মেদ কলেজে জামায়াত-শিবিরের প্রশিক্ষণ ও গোপন তৎপরতার কথা অস্বীকার করে বলেন, কলেজটি যাতে এমপিওভুক্ত না হয়, এ জন্য একটি মহল অপপ্রচার চালাচ্ছে। উপজেলা জামায়াতের আমির আতোয়ার হোসেন বলেন, তাঁদের দলীয় কার্যালয় না থাকায় কল্যাণ ট্রাস্ট কার্যালয়টি দলীয় কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এখানে কোনো প্রশিক্ষণ বা গোপন বৈঠক হয় না।
আদমদীঘি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ওবায়দুর রহমান বলেন, উপজেলা আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক সভায় হাজি তাছের উদ্দিন মহিলা কলেজে জামায়াত-শিবিরের গোপন প্রশিক্ষণের বিষয়টি আলোচিত হয়েছে। ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাম্মেল হক বলেন, ইসলামি কল্যাণ ট্রাস্টের বিষয়ে তাঁর কাছেও অভিযোগ এসেছে। ইসলামি কল্যাণ ট্রাস্ট ভবন ও হাজি তাছের উদ্দিন মহিলা কলেজের ওপর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
খবরের লিংক
No comments:
Post a Comment
মন্তব্য করুন