দিনাজপুর অফিস | তারিখ: ১৫-০১-২০১০
দিনাজপুর সরকারি কলেজে ছাত্রলীগ ও ছাত্রশিবিরের সংঘর্ষে কমপক্ষে ২০ জন ছাত্র আহত হয়েছে। আহত ছাত্রদের বেশির ভাগই ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় কলেজের মুসলিম হোস্টেলের ৩০টি কক্ষ জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। আজ শুক্রবার বেলা একটার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে।
পুনরায় সংঘর্ষ এড়াতে কলেজ কর্তৃপক্ষ উচ্চমাধ্যমিক ছাড়া সম্মান ও মাস্টার্স শ্রেণীর সব ক্লাস অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে। আজ বিকেলে একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আজ সন্ধ্যা সাতটার মধ্যে সব ছাত্রকে এবং কাল শনিবার সকাল ১০টার মধ্যে ছাত্রীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা জানান, আজ কলেজে প্রথম বর্ষ সম্মান শ্রেণীর ভর্তি পরীক্ষা ছিল। দুপুর ১২টায় পরীক্ষা শেষ হলে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের পক্ষ থেকে নবীন শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা জানাতে মিছিল বের করা হয়। সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট ও ছাত্রশিবির মিছিল করার পর ছাত্রলীগ মিছিল বের করে। বেলা একটার দিকে মিছিলটি কলেজের বাংলা বিভাগের সামনে ছাত্রশিবিরের প্রচার কেন্দ্র অতিক্রম করে বিজ্ঞান ভবনের দিকে যায়। এ সময় শিবির কর্মীরা পেছন থেকে ছাত্রলীগের মিছিলে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে এবং লাঠিসোঁটা নিয়ে ধাওয়া করে। তখন কলেজ মাঠে ছাত্রলীগ ও শিবিরের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে।
সংঘর্ষে ১০ জন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী আহত হয়।
আহত নেতা-কর্মীদের দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং শহরের বিভিন্ন ক্লিনিকে প্রাথমিক চিকিত্সা দেওয়া হয়। শিবির কর্মীরা কলেজের মুসলিম হোস্টেলের ১৫টি কক্ষ ভাঙচুর করে।
কলেজের ছাত্রশিবিরের নেতা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ছাত্রলীগ মিছিল নিয়ে তাদের প্রচার কেন্দ্র অতিক্রমের সময় শিবিরের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালায়। এতে কমপক্ষে ১০ জন শিবিরের নেতা-কর্মী আহত হয়। পরে ছাত্রলীগ মুসলিম হলে শিবিরের ১৫টি কক্ষ ভাঙচুর করে এবং লেপ-তোশক, বালিশ ও বইপত্রে আগুন দেয়।
তবে কলেজ ছাত্রলীগ শাখার সাধারণ সম্পাদক সুজন শিবিরের এ অভিযোগ সত্য নয় বলে দাবি করেন।
কলেজের অধ্যক্ষ মো. আলাউদ্দিন মিয়া জানান, সংঘর্ষ, ছাত্র আহত, কক্ষ ভাঙচুর ও আগুন দেওয়ার ঘটনার পর ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কলেজে সম্মান ও মাস্টার্স শ্রেণীর ক্লাস অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আজ সন্ধ্যার মধ্যে ছাত্রদের এবং পরদিন সকাল ১০টার মধ্যে ছাত্রীদের হল ছেড়ে চলে যেতে বলা হয়েছে।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামীম ইকবাল হাসান বলেন, ঘটনার পরপরই অধ্যক্ষের ডাকে শতাধিক পুলিশ কলেজ ক্যাম্পাসে গিয়ে সংঘর্ষ থামায়। বহিরাগতদের ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরিস্থিতি শান্ত না হওয়া পর্যন্ত ক্যাম্পাসে পুলিশ থাকবে বলেও তিনি জানান।
খবরের লিংক
No comments:
Post a Comment
মন্তব্য করুন