29 January 2010

চট্টগ্রামে হকারদের অভিযোগঃ জামায়াতের ব্যবসায়ীরা দোকানে আগুন দিয়েছেন


নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম | তারিখ: ৩০-০১-২০১০

চট্টগ্রামের রিয়াজউদ্দিন বাজার এলাকার সব দোকানপাট গতকাল শুক্রবার বন্ধ ছিল। ১৪৪ ধারা বলবত্ থাকায় আজ শনিবারও দোকানপাট বন্ধ থাকবে। গত বুধ ও বৃহস্পতিবার ব্যবসায়ী ও হকারদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ এবং দোকানে অগ্নিসংযোগের পর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ওই এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। সংঘর্ষের ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে আরেকটি মামলা হয়। এ নিয়ে মামলার সংখ্যা চারটিতে দাঁড়িয়েছে।

গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে হকার্স নেতারা দাবি করেন, জামায়াত সমর্থিত ব্যবসায়ীরা তাঁদের প্রায় ৮০০ দোকান পুড়িয়ে দিয়েছেন। এতে প্রায় তিন কোটি টাকার পণ্যসামগ্রীর ক্ষয়ক্ষতি এবং দুই কোটি টাকার মালামাল লুট হয়েছে।

ব্যবসায়ীদের সূত্রে জানা যায়, রিয়াজউদ্দিন বাজার এবং তামাকুমন্ডি লেইনে ছোট-বড় দুই শতাধিক মার্কেটে কয়েক হাজার দোকানপাট রয়েছে। এগুলো কাপড়-ছোপড় থেকে শুরু করে প্রসাধনী, গৃহসজ্জা, ইলেকট্রনিকস ও নিত্যব্যবহার্য গৃহস্থালি পণ্যসামগ্রীর পাইকারি দোকান।

কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম মহিউদ্দীন মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, ১৪৪ ধারা বলবত্ থাকায় পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কোনো দাকানপাট খুলবে না। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ১৪৪ ধারা তুলে নেওয়া হবে।

গতকাল সকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে চট্টগ্রাম সম্মিলিত হকার্স ফেডারেশন ও চট্টগ্রাম হকার ঐক্য পরিষদের নেতারা যৌথভাবে সংবাদ সম্মেলন করেন। তাঁরা অভিযোগ করেন, নিউমার্কেট মোড়, স্টেশন রোড ও আমতলা এলাকায় দুই দিনে ৮০০ দোকানে আগুন দেওয়ার সঙ্গে জামায়াতের নেতা-কর্মীরা জড়িত। বুধবার রাতে বঙ্গবন্ধুর ঘাতকদের ফাঁসি কার্যকর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তামাকুমন্ডি লেইন বণিক সমিতির নেতারা ‘নারায়ে তাকবির’ স্লোগান দিয়ে একের পর এক দোকানে আগুন দেন। তাঁরা বেছে বেছে কেবল হকার্স লীগের সদস্যদের দোকানে আগুন দেন।

হকার্স নেতারা দাবি করেন, বুধবার সন্ধ্যায় স্টেশন রোডে রিয়াজউদ্দিন বাজারের মুখে একজন ফল বিক্রেতার সঙ্গে রিয়াজউদ্দিন বাজার বণিক সমিতির সভাপতির গন্ডগোল হয়। আধা ঘণ্টার মধ্যে বিষয়টির মীমাংসাও হয়। কিন্তু ঘটনাস্থল থেকে অনেক দূরে তামাকুমন্ডি লেইন বণিক সমিতির নেতারা রাতে জরুরি বৈঠক ডেকে ব্যবসায়ীদের জড়ো করেন। এরপর সভাপতি মাহমুদুল হক চৌধুরীর নেতৃত্বে হকার্স লীগের দোকানগুলোয় আগুন লাগানো শুরু করেন তাঁরা। আগের দিন মাহমুদুল হকের নেতৃত্বে ওই ব্যবসায়ীরা লালদীঘির মাঠে মতিউর রহমান নিজামীর সমাবেশে অংশ নেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন চট্টগ্রাম হকার্স ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আলম ওরফে লেদু। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম হকার্স ঐক্য পরিষদের সভাপতি ঋষি বিশ্বাস, চট্টগ্রাম হকার্স ফেডারেশনের সভাপতি শাহাবুদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা, মহানগর হকার্স লীগের সাধারণ সম্পাদক নুর আহম্মদ চৌধুরী, যুগ্ম সম্পাদক হারুনুর রশিদ।

হকার্স নেতাদের অভিযোগ প্রসঙ্গে মাহমুদুল হক বলেন, হকাররা নিজেদের দোকান নিজেরাই পুড়িয়েছে। এখন আমাদের ওপর দায় চাপাচ্ছে। আমরাও শনিবার (আজ) সংবাদ সম্মেলন করব। তাদের অভিযোগের জবাব দেব।’ তিনি জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নন বলেও দাবি করেন।


খবরের লিংক

No comments:

Post a Comment

মন্তব্য করুন