26 September 2010

এলিফ্যান্ট রোডে শিবিরের ঘাঁটি: ঢাবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা হতে পারে : তত্ত্বাবধায়ক রিমান্ডে

নিজস্ব প্রতিবেদক

এই বছরের শুরুতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিবিরের তাণ্ডবের পর রাজধানীতে অর্ধশত শিবিরের আস্তানা চিহ্নিত করে অভিযান চালায় পুলিশ। অভিযানের পর ওইসব আস্তানা ছেড়ে শিবিরের জঙ্গি ক্যাডাররা আত্মগোপনে চলে যায়। রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডের ২৬৬ নম্বর বাড়িটিও ছিল এই তালিকায়। পুলিশ অভিযান চালিয়ে সিলগালা করে দিয়েছিল তা। কিন্তু পরবর্তী সময়ে পুলিশের নজরদারির অভাবে বাড়িতে বিস্ফোরক দ্রব্য মজুদ করেছিল শিবিরকর্মীরা। এদিকে শুক্রবার অভিযানের পর পুলিশ আবারও বাড়িটি তাদের তত্ত্বাবধানে নিয়েছে।
পুলিশ সূত্র জানায়, আর গাফিলতি নয়। রাজধানীজুড়ে শিবিরের সব আস্তানায় নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে। শিবিরকর্র্মীরা আবারও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের ওই বাড়িতে প্রবেশের চেষ্টা করলে তাদের গ্রেপ্তার করা হবে।

অভিযোগ উঠেছে, এলিফ্যান্ট রোডের বাড়িটি ছিল শিবিরের একটি প্রশিক্ষণ ক্যাম্প। বাড়ির মালিক ভাড়া দেওয়ার কথা বললেও পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের ধারণা, ভাড়া দেওয়াটা ছিল লোক দেখানো। মালিকের গোচরেই বাড়িটি শিবিরে প্রশিক্ষণ ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছিল।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো. মহিউদ্দিন জানান, শিবিরকর্মীদের পাহারা দেওয়ার অভিযোগে বাড়ির তত্ত্বাবধায়ক মোস্তাফিজুর রহমানকে শনিবার তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। পালিয়ে যাওয়া শিবিরকর্মীদের সম্পর্কে তথ্য জানতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. আমিনুর রহমান মজুমদারে বিরুদ্ধেও মামলা করা হতে পারে।

গতকাল ঘটনাস্থলে গেলে ওই বাড়ি দেখতে আসা নাজমুল নামে এক ব্যক্তি কালের কণ্ঠকে বলেন, 'পত্রিকায় এই বাড়ি নিয়ে লেখা সংবাদ পড়ে আজিমপুর থেকে দেখতে এসেছি।' পাশের বাড়ির নিরাপত্তাকর্মী আমিনুল ইসলাম আমিন বলেন, বাড়িটি অনেক আগে থেকেই শিবিরের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। সম্প্রতি রাত হলেই বাড়িটিতে লোকজন আসত।

নিউমার্কেট অঞ্চলের পুলিশের সহকারী কমিশনার শরিফুল ইসলাম বলেন, ঘটনার তদন্ত চলছে। এখনো মামলা হয়নি কেন_এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, তদন্তের পর মামলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে বাড়ির মালিককেও ছাড় দেওয়া হবে না। নিউমার্কেট থানার অপারেশন অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বাড়িটি পুলিশের নজরদারির মধ্যে রয়েছে।

গত শুক্রবার রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোড এলাকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের জামায়াতপন্থী শিক্ষক অধ্যাপক ড. আমিনুর রহমান মজুমদারের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। পুলিশ বাড়ি থেকে জঙ্গি সরঞ্জাম উদ্ধারের পর মোস্তাফিজুর রহমান ও সিদ্দিক উল্লাহ নামের দুই তত্ত্বাবধায়ককে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদের পর গতকাল সিদ্দিক উল্লাহকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

এদিকে শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি ডা. মুহাম্মদ রেজাউল করিম এলিফ্যান্ট রোডের বাড়িতে অভিযানের ঘটনাকে 'নাটক' বলে দাবি করেছেন। গতকাল শনিবার বিকেলে খুলনায় শিবিরের এক সমাবেশে তিনি এ অভিযোগ করেন।

No comments:

Post a Comment

মন্তব্য করুন