কালের কণ্ঠ ডেস্ক
যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়া শুরু এবং জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষস্থানীয় তিন নেতাকে গ্রেপ্তারের প্রেক্ষাপটে দলটির সাবেক আমির গোলাম আযমকে নজরদারিতে রেখেছে সরকার। গোলাম আযম শীর্ষ যুদ্ধাপরাধী হিসেবে 'গণ-আদালতে' অভিযুক্ত হয়েছিলেন।
জামায়াতের রাজনৈতিক গুরু গোলাম আযম মঙ্গলবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তাঁকে যুক্তরাজ্যে যেতে দেওয়া হচ্ছে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সরকারের একজন নীতিনির্ধারক বলেন, 'গোলাম আযম গোয়েন্দা নজরদারিতে আছেন।'
রাজধানীর বড় মগবাজারে নিজ বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে ৮৭ বছর বয়সী গোলাম আযম জানান, প্রতিবছরই সন্তানদের সঙ্গে দেখা করতে তিনি যুক্তরাজ্যে যান। কিন্তু এবার তাঁকে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। তিনি বলেন, '২০০৮ সালে আমার ওয়াইফ ভিসা পেলেও আমাকে ভিসা দেওয়া হয়নি। আমি ব্রিটিশ আদালতে আপিল করেছিলাম। আপিলের রায় আমার পক্ষে হওয়ার পরও আমাকে যেতে দেওয়া হয়নি।'
আপিলের জবাবে যুক্তরাজ্য সরকার তাঁর পক্ষেই রায় দিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, 'বাংলাদেশ সরকার আমাকে যেতে দিচ্ছে না। এ বছর এপ্রিল মাসের ২৭ তারিখ আমার পাসপোর্ট নিয়ে গিয়েছে।'
শীর্ষ যুদ্ধাপরাধী হিসেবে অভিযুক্ত গোলাম আযমের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালে গণহত্যা, লুণ্ঠন, অগি্নসংযোগ ও ধর্ষণসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজে মদদ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
মানবতার বিরুদ্ধে এসব অপরাধের বিচার করতে সরকার গত ২৫ মার্চ ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস (ট্রাইব্যুনাল) অ্যাক্ট ১৯৭৩ অনুসারে বিচারক প্যানেল, তদন্ত সংস্থা ও আইনজীবী প্যানেল গঠন করে।
সরকার যুদ্ধাপরাধদের বিচার করতে যাচ্ছে, এ কারণেই কি আপনাকে দেশ ত্যাগ করতে দেওয়া হচ্ছে না_এ প্রশ্নের জবাবে গোলাম আযম বলেন, 'এসব বিষয়ে আমি কিছু জানি না। যুদ্ধাপরাধ কী, আমি জানি না।'
এর আগে গোলাম আযমের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টায় তাঁর যুক্তরাজ্য প্রবাসী দৌহিত্র নাবিল আল আযমীর মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি উত্তেজিত হয়ে যান। তিনি বলেন, 'আমরা পারিবারিকভাবে প্রেসের সঙ্গে কথা না বলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কিছুদিন আগে একটি দৈনিক পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছিলাম। তারা ভুল ও মিথ্যা তথ্য ছেপেছে। আমি আপনার কোনো প্রশ্নেরই জবাব দেব না।'
জামায়াতে ইসলামীর বর্তমান সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মুজিবুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, 'গোলাম আযম সাহেব তাঁর মগবাজার কাজী অফিস রোডের বাড়িতে আছেন। নিয়মিত নামাজ আদায় করছেন। তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে দেখা করেন না।'
গত ২৯ জুন ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার মামলায় জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ ও নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
No comments:
Post a Comment
মন্তব্য করুন