নিজস্ব প্রতিবেদক | তারিখ: ২৮-০৩-২০১০
জামায়াতের নির্বাহী কমিটির সদস্য ও দিগন্ত মিডিয়া করপোরেশনের চেয়ারম্যান মীর কাশেম আলী বিদেশে গেছেন। গত ২৪ মার্চ সকালে তিনি কাতার এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে ঢাকা ছেড়ে যান। ইমিগ্রেশন ও গোয়েন্দা সূত্রগুলো এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়া শুরুর প্রাক্কালে মীর কাশেম আলীর এই বিদেশ গমনকে সরকারি কর্তৃপক্ষ দেশ ছেড়ে যাওয়া হিসেবে দেখছেন। কারণ তাঁর বিরুদ্ধে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধ করার অভিযোগ আছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন ২৬ মার্চ রাজারবাগে বলেছিলেন, সন্দেহভাজন যুদ্ধাপরাধীদের কাউকে দেশ থেকে পালাতে দেওয়া হবে না। এ ব্যাপারে বিমানবন্দরসহ সব বন্দরে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইমিগ্রেশনের একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে সরকার যে তালিকা বিমানবন্দরে পাঠিয়েছে, তা আসে মীর কাশেম চলে যাওয়ার পরদিন। এ কারণে তাঁকে বিদেশে যেতে বাধা দেওয়া হয়নি। সরকারের তালিকায় অন্যদের সঙ্গে মীর কাশেম আলীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে বলে গোয়েন্দা সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে।
মীর কাশেম আলীর এ সময়ে বিদেশ যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ কোনো কথা বলতে রাজি হননি। ইমিগ্রেশন সূত্র জানায়, কাতার এয়ারের কিউআর-৩৪৫ ফ্লাইটে মীর কাশেম আলী ২৪ মার্চ সকাল আটটা ৫০ মিনিটে ঢাকা ছেড়ে যান। তাঁর গন্তব্য ছিল দুবাই হয়ে সৌদি আরব। বর্তমানে তিনি সৌদি আরবে আছেন বলে জানা গেছে।
বিমানবন্দর সূত্র জানায়, মীর কাশেম আলীর সঙ্গে তাঁর পুত্র মীর আরমান আলী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি এনামুল হকও ছিলেন। ঢাকা ত্যাগের সময় তাঁরা বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জ ব্যবহার করেন।
সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, মীর কাশেম আলী বিমানবন্দর ত্যাগ করার সময় আওয়ামী লীগের এক সাংসদ বিদেশ থেকে ফিরছিলেন। তিনি কাশেম আলী কীভাবে ভিআইপি লাউঞ্জ ব্যবহার করে বিদেশে যাচ্ছেন, তা জানতে চাইলে হইচই শুরু হয়। এরপর বিষয়টি জানাজানি হয়। ততক্ষণে তিনি চলে গেছেন। পরে লাউঞ্জ ব্যবহারের অনুমতি দেওয়ার অভিযোগে বিমানবন্দরের একজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়।
মীর কাশেম আলী বর্তমানে দিগন্ত মিডিয়া করপোরেশনের চেয়ারম্যান। এ ছাড়া তিনি ইসলামী ব্যাংকের পরিচালক, ইবনে সিনা ট্রাস্টের সদস্য (প্রশাসন) এবং কেয়ারি হাউজিং ও ইডেন শিপিং লাইনসের চেয়ারম্যান। তিনি রাবেতা আলম আল ইসলামীর এদেশীয় পরিচালক।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ বলেন, মীর কাশেম আলী কীভাবে দেশ ত্যাগ করলেন, সেটা খতিয়ে দেখা উচিত।
খবরের লিংক
No comments:
Post a Comment
মন্তব্য করুন