প্রথম আলো ডেস্ক | তারিখ: ০৫-০৩-২০১০
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ফারুক হোসেন হত্যাকাণ্ড এবং পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ইসলামী ছাত্রশিবিরের ১১ কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার ও গত বুধবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, রাজশাহীর বাগমারা, কক্সবাজারের সেন্ট মার্টিন ও কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলা থেকে তাঁদের আটক করা হয়। তাঁদের মধ্যে দুজন ফারুক হত্যা ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামি। গতকাল তাঁদের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
আটক হওয়া শিবিরের কর্মীরা হলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র আতাউর রহমান, ইসলামি শিক্ষা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের মাহমুদুল হাসান ও ভাষা বিভাগের স্নাতকোত্তরের আরাফাত হোসেন এবং ঠাকুরগাঁওয়ের দেলোয়ার হোসেন সাইদী, লক্ষ্মীপুরের রামগতির রায়হান, রাজশাহীর আশরাফুল ইসলাম, নওগাঁর সানাউল্লাহ, কক্সবাজারের কুতুবদিয়া উপজেলার শাহজাহান ও সদরের ঈদগাঁও এলাকার মিজান। গ্রেপ্তার হওয়া শিবিরের কর্মীরা হলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামি শিক্ষা বিভাগের স্নাতকোত্তর বিভাগের ছাত্র রেজাউল হক এবং একই বিভাগের স্নাতক (সম্মান) চতুর্থ বর্ষের ছাত্র আবদুর রাজ্জাক (২৫)।
ঢাকার বাইরে আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়: গতকাল বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে ছাত্রশিবিরের কর্মী আতাউর রহমানকে আটক করে রাজশাহী মহানগরের মতিহার থানার পুলিশ। এরপর দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব আবদুল লতিফ হলের ১৫৮ নম্বর কক্ষ থেকে মাহমুদুল হাসানকে আটক করা হয়। বিকেল পাঁচটার দিকে ক্যাম্পাস থেকে আটক করা হয় আরাফাত হোসেনকে।
মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তোফাজ্জাল হোসেন খান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আটক হওয়া কর্মীদের থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
বাগমারা (রাজশাহী): বাগমারার নন্দনপুর গ্রামের চিকাবাড়ী বাজার থেকে গতকাল সকালে শিবিরের কর্মী আবদুর রাজ্জাককে গ্রেপ্তার করে বাগমারা থানার পুলিশ। তাঁর বাড়ি নন্দনপুর গ্রামে।
বাগমারা থানার উপসহকারী পরিদর্শক (এএসআই) আনিসুর রহমান জানান, ফারুক হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি রাজ্জাক ঘটনার পর থেকে পলাতক ছিলেন। গতকাল তাঁকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়।
কুড়িগ্রাম: ভূরুঙ্গামারী উপজেলার শিলখুড়ি ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী পাগলাহাট বাজারের একটি কাপড়ের দোকান থেকে গত বুধবার সন্ধ্যায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিবিরের কর্মী রেজাউল হককে গ্রেপ্তার করেন র্যাব-৫-এর সদস্যরা। পরে তাঁকে ভূরুঙ্গামারী থানার পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।
ভূরুঙ্গামারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল মোনায়েম জানান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ফারুক হত্যাকাণ্ডের দিন পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় দায়ের করা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি রেজাউল। তাঁর বাড়ি ভূরুঙ্গামারীর দিয়াডাঙ্গা গ্রামে।
টেকনাফ (কক্সবাজার): গতকাল বিকেলে টেকনাফ উপজেলার প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিন থেকে ছাত্রশিবিরের ছয় কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। পরে তাঁদের স্পিডবোটে করে কড়া নিরাপত্তায় টেকনাফ থানায় নিয়ে আসা হয়।
টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খালেদ হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ফারুক হত্যাকাণ্ডসহ সৃষ্ট ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ছাত্রশিবিরের ছয় কর্মীকে আটক করা হয়েছে। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জিহাদী বই জব্দ
নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী: রাজশাহী মহানগরে গতকাল সকালে শিবির নিয়ন্ত্রিত পাঁচটি ছাত্রীনিবাসে অভিযান চালিয়ে সাতটি ইসলামি জিহাদি বই জব্দ করেছে পুলিশ। অভিযান চালানো ছাত্রীনিবাসগুলো হলো নগরের রাজারহাতা এলাকার মঞ্জিল ছাত্রীনিবাস, মালোপাড়ার গ্রিনভ্যালি, হাতেম খাঁ এলাকার নূরমহল ও প্যারাগন এবং রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের পাশের শান্তিনিকেতন ছাত্রীনিবাস।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের বিশেষ শাখার সহকারী কমিশনার তারিকুল ইসলাম জানান, কিছু ছাত্রী শিবিরের ক্যাডারদের সহযোগিতা করছে—এমন খবর পেয়ে ওই পাঁচটি ছাত্রীনিবাসে গতকাল অভিযান চালিয়ে সাতটি জিহাদি বই জব্দ করা হয়।
খবরের লিংক
No comments:
Post a Comment
মন্তব্য করুন