চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি | তারিখ: ১২-০২-২০১০
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের হামলায় ছাত্রলীগের কর্মী ফারুক হোসেনের মৃত্যুর ঘটনায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারি বেড়েছে। দুই দিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবির ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। ছাত্রলীগের কর্মীরা প্রতিদিনই সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্পটে জমায়েত হন। অপরদিকে সন্ধ্যার পর থেকে শিবিরের কর্মীদের দলবেঁধে ঘুরতে দেখা যায়। অর্থাত্ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এখন দিনে ছাত্রলীগের এবং রাতে শিবিরের নিয়ন্ত্রণে থাকছে।
এ অবস্থায় অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে প্রশাসনিক কাজ ছেড়ে মাঠে নেমেছেন স্বয়ং উপাচার্য। প্রতিদিনই তিনি স্টেশন চত্বর, সোহরাওয়ার্দী হলের মোড় এবং শাহজালাল ও শাহ আমানত হলের সামনে গিয়ে ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলছেন। ছাত্রনেতাদের শান্ত করার চেষ্টা করছেন।
হাটহাজারী সার্কেলের এএসপি বাবুল আকতার নজরদারি বাড়ানোর কথা স্বীকার করে গতকাল বৃহস্পতিবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘ক্যাম্পাসের আশপাশের কটেজ ও কয়েকটি হলের প্রতি আমরা বিশেষ নজর দিচ্ছি। একই সঙ্গে সন্ধ্যার পর বহিরাগতদের আনাগোনা যাতে না হয়, সে ব্যাপারে পুলিশের বিশেষ দল কাজ করছে। ইতিমধ্যে আমরা চার প্লাটুন পুলিশ নিয়োজিত রেখেছি। ওপর থেকে বলা হয়েছে বিশৃঙ্খলা করলেই কঠোর হাতে শায়েস্তা (দমন) করতে।’
তল্লাশি চালানোর কথা প্রসঙ্গে বাবুল আকতার বলেন, তল্লাশি কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। অতীতে তল্লাশি কখন শুরু হবে, তা অনেক আগেই টের পাওয়া যেত। এবার তেমনটি হবে না।
ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৮টি কটেজ ও ছাত্রদের ছয়টি হলের মধ্যে আলাওল, এ এফ রহমান ও সোহরাওয়ার্দীতে রয়েছে শিবিরের একক দখলদারি। অপর তিনটি হলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি ছাত্রলীগের কিছু সমর্থক রয়েছেন। রাজশাহীর ঘটনার পর দখলদারি বজায় রাখতে এসব কটেজ ও হলে নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম বজায় রাখতে সংগঠিত হচ্ছেন শিবিরের ক্যাডাররা। প্রতিদিনই সন্ধ্যার পর ঘণ্টায় ঘণ্টায় ক্যাম্পাসের একাধিক মসজিদ ও কটেজগুলোতে তাঁদের নিয়মিত বৈঠক বসছে।
আবাসিক হল সূত্রে জানা গেছে, শিবিরের ক্যাডাররা ছাত্রলীগের কর্মীদের কোনো রকম সহযোগিতা না করার জন্য আবাসিক ছাত্রদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শাহ আমানত হলের ৪২৪ নম্বর কক্ষ থেকে আইন বিভাগের ছাত্রলীগের কর্মী সাইফুদ্দিন খালেদকে তাঁর কক্ষ থেকে চলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন ওই হলের শিবিরের কয়েকজন ক্যাডার। এ ব্যাপারে ছাত্রলীগের ওই কর্মী পরদিন বুধবার হাটহাজারী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
উপাচার্য আবু ইউসুফ প্রথম আলোকে বলেন, ‘ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছি। সব নেতা আমাকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। আশা করছি, পরিস্থিতির অবনতি ঘটবে না।’
খবরের লিংক
No comments:
Post a Comment
মন্তব্য করুন