মতিউর রহমান | তারিখ: ১১-০২-২০১০
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিহত আবু বকরের পরিবারের সঙ্গে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে নিহত ফারুকের পরিবারের কী অবিশ্বাস্য মিল। বকরের পরিবারের এমন একটা ছবির সঙ্গে আমরা লিখেছিলাম—‘স্বপ্ন হন্তারকেরা দেখো, আবু বকরের মাকে দেখো, তাঁর ভাঙা ঘর দেখো, দেখো আবু বকরের বাবাকে। হয়তো তোমাদের কুৎসিত চেহারা দেখতে চান না এই বৃদ্ধ বাবা।’ বকরের জায়গায় এখানে ফারুক পড়লে নতুন কিছু লেখার প্রয়োজন পড়বে না। ফারুকের বোন ও বাবা-মায়ের এই ছবিটি গতকাল তোলা: প্রথম আলো
ছয় দিনের ব্যবধানে আরও একজন দরিদ্র মেধাবী ছাত্রকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হলো। দুচোখ ভরা স্বপ্ন নিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে এসেছিলেন জয়পুরহাটের খোর্দ্দ সগুনা গ্রামের ফারুক হোসেন। তিনি গণিত বিভাগের স্নাতক (সম্মান) পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হয়েছেন। ফারুক ছাত্রলীগের কর্মী ছিলেন। তাঁর দরিদ্র বাবা ফজলুর রহমান কোনো রকমে এক বিঘা জমি আবাদ করে সংসার চালান। ছেলে ফারুকের লেখাপড়ার খরচ জোগাতে তিনি গ্রামীণ ব্যাংকের শিক্ষাঋণ নিয়েছেন। ফারুককে ঘিরে পুরো পরিবারটি নতুন জীবনের স্বপ্ন দেখেছিল। সেদিন সোমবার সন্ধ্যায়ও ফারুক মুঠোফোনে মা হাছনা বানুর সঙ্গে কথা বলেছিলেন। টাঙ্গাইলের সেই আবু বকরের মতো একই স্বপ্নের কথা ফারুক মাকে বলেছিলেন, ‘বাবাকে বোঝাও, আর একটা বছর কষ্ট করো। ...একটা চাকরি জোগাড় করতে পারলেই সংসার নিয়ে আর চিন্তা করতে হবে না।’ এখন তো ফারুকের মা-বাবা আর পরিবারের সামনে শুধুই অন্ধকার। ভবিষ্যতের সব স্বপ্ন ভেঙে খানখান হয়ে গেছে।
গত সোমবার রাত আর মঙ্গলবার ভোরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে জামায়াতে ইসলামীর ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের সশস্ত্র হামলায় ফারুক হোসেনের নৃশংস হত্যাকাণ্ড ছাড়াও ছাত্র-পুলিশসহ কমপক্ষে ৫০ জন গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ১০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তিন-চারজন ছাত্রের হাত-পায়ের রগ কেটে দিয়েছেন শিবিরের নেতা-কর্মীরা। ফারুককে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত করেই ক্ষান্ত হননি, শিবিরের কর্মীরা তাঁর মৃত্যু নিশ্চিত করা পর্যন্ত অপেক্ষা করেছেন। তারপর ফারুকের রক্তাক্ত লাশ টেনে নিয়ে ম্যানহোলে ফেলে দেন। পুরো ঘটনাটি যে পরিকল্পিত ও ঠান্ডা মাথায় খুন, তাও স্পষ্ট নানা ঘটনা থেকে। শুধু হত্যা নয়, বহুদিন ধরে আমরা দেখছি, প্রতিপক্ষের হাত-পায়ের রগ কাটার মতো নৃশংসতায় শিবিরের নেতা-কর্মীরা কুখ্যাত হয়ে উঠেছেন।
গত দুই দশকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে নিহত হয়েছেন ১৪ জন ছাত্র। এর মধ্যে নয়জনই জামায়াতে ইসলামীর ছাত্রসংগঠন ছাত্রশিবিরের নৃশংস বর্বরতার শিকার। বাকিরা নিহত হয়েছেন ছাত্রলীগ, ছাত্রদল এবং ছাত্রমৈত্রীর মধ্যে সংঘাতের কারণে। শুধু ছাত্র নয়, অধ্যাপক তাহের ও অধ্যাপক ইউনুসের মতো নিবেদিত শিক্ষকেরাও নৃশংসতার শিকার হয়েছেন। আমাদের মনে আছে, ফারুকের মতোই অধ্যাপক তাহেরকে নৃশংসভাবে হত্যা করার পর তাঁর মৃতদেহ সেপটিক ট্যাংকের ভেতর ঢুকিয়ে রাখা হয়েছিল।
এমন নৃশংসতা আমরা দেখেছি গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে পিলখানায় বিডিআর হত্যাকাণ্ডের পর। তখন এ রকমই অনেক নিহত সেনা কর্মকর্তার গলিত মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছিল ম্যানহোলের ভেতর। একাত্তরেও বিজয়ের প্রাক্কালে এ রকমই বর্বরতা আর নৃশংসতার মধ্য দিয়ে হত্যা করা হয়েছিল দেশের শ্রেষ্ঠ বুদ্ধিজীবীদের।
আমরা দেখেছি , ’৭৭ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ইসলামী ছাত্রশিবির জামায়াতে ইসলামী আর ইসলামী ছাত্রসংঘের একাত্তরের বর্বরতার পথ ধরে বহু নৃশংস ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে। চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়সহ শিবিরের আধিপত্য রয়েছে, এমন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অসংখ্য ঘটনা রয়েছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় দখলে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে আক্রমণ করেছিল ছাত্রশিবিরের ক্যাডাররা।
শিবিরের হত্যার রাজনীতি শুরু হয় চট্টগ্রাম থেকে। ১৯৮১ সালের মার্চে চট্টগ্রাম সিটি কলেজের ছাত্র সংসদের সহ-সাধারণ সম্পাদক ও ছাত্রলীগের নেতা তবারক হোসেনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এর তিন বছর পর চট্টগ্রাম কলেজের মেধাবী ছাত্র ও ছাত্র ইউনিয়নের নেতা শাহাদাত হোসেনকে জবাই করে হত্যা করা হয়। ১৯৯৭ সালে চট্টগ্রাম পলিটেকনিক্যাল কলেজে আক্রমণ চালিয়ে ছাত্র সংসদের সহসভাপতি মো. জমির ও ছাত্রদলের নেতা ফরিদ আহমদকে গুলি করে, তারপর তাঁদের পায়ের রগ কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করেন শিবিরের কর্মীরা। আর ২০০০ সালে চট্টগ্রামের বহদ্দারহাট এলাকায় মাইক্রোবাসে ব্রাশফায়ার করে ছাত্রলীগের আট নেতা-কর্মীকে হত্যার ঘটনা তো এখনো মানুষ ভুলতে পারেনি।
এমন সব নৃশংসতার মধ্য দিয়ে সংগঠনটি নব্বইয়ের দশকেই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস পুরোপুরি দখলে নিয়ে নেয়।
তার আগে আশির দশকে রীতিমতো বন্দুকযুদ্ধ করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস দখল করে ছাত্রশিবির। নব্বইয়ের দশকের শুরুতে বিএনপি সরকারের আমলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে এক ছাত্রদল নেতাকে জবাই করে হত্যা করা হয়। এ হত্যার বিচার চেয়ে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতারা তত্কালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, বিএনপির নেতা আবদুল মতিন চৌধুরীর কাছে দাবিনামাও দিয়েছিলেন। কিন্তু কোনো বিচার হয়নি। এসব দখল বজায় রাখতে পরিকল্পিতভাবে ছাত্রশিবির রাজশাহী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের এলাকায় জায়গা-জমি কিনে বাড়িঘর তৈরি, ব্যবসা-বাণিজ্য, বিয়ে-শাদি করে ও মেস-ছাত্রাবাস বানিয়ে কর্মীদের থাকার ব্যবস্থার জন্য একটা ঘাঁটি গড়ে তোলে।
২০০৬ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এস তাহের আহমেদ হত্যা মামলায় ছাত্রশিবিরের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মাহবুবুল আলম সালেহীর জড়িত থাকার অভিযোগ ছিল। এ মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিনজন আসামির জবানবন্দিতেও খুনের ঘটনায় সালেহীর সম্পৃক্ততার কথা উঠে এসেছিল। কিন্তু বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সহায়তায় আইনের ফাঁক গলে সালেহী খালাস পেয়ে যান। ২০০৯ সালের ২৪ জানুয়ারি সেই সালেহীকে শিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদের সদস্য করা হয়।
আর এই ‘ছাত্রশিবিরকে শক্তি জোগানো, তাদের সহযোগিতা করা আমাদের ঈমানি দায়িত্ব’ বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামী। তিনি গত শনিবার রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ইসলামী ছাত্রশিবিরের ৩৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় বক্তব্য দেওয়ার সময় এ মন্তব্য করেন। তিনি ওই বক্তব্যে আরও বলেন, ‘আমরা যে কাজ করতে পারিনি, ছাত্রশিবির তা করছে। এদেরকে সহযোগিতা না করলে আল্লাহর দরবারে আমাদেরকে জবাবদিহি করতে হবে।’
একই অনুষ্ঠানে জামায়াতের জ্যেষ্ঠ সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামান বলেছেন, ‘দেশ-জাতি আজ শিবিরের দিকে তাকিয়ে আছে।’
এই বক্তৃতার তিন দিনের মধ্যে রাজশাহীতে শিবিরের বর্বর হত্যাযজ্ঞ দেখল সারা দেশের মানুষ।
শুধু রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় নয়, অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় ও ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতেও একের পর এক মেধাবী ছাত্ররা নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার হচ্ছেন। শিক্ষকেরাও নিস্তার পাচ্ছেন না।
এখন আমরা কী করব? সমগ্র জাতি, সরকার, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, এত শক্তিশালী র্যাব-পুলিশ কী বলবে দেশবাসীকে? ফারুকের মা-বাবার জন্য কোনো সমবেদনা বা সান্ত্বনাই এখন আর কোনো কাজে আসবে না।
সোমবার রাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে যে হামলার ঘটনা ঘটেছে, সবই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের সামনেই ঘটেছে। পুলিশ তো ব্যর্থ হয়েছে সম্পূর্ণভাবে। আহত ছাত্রদের অভিযোগ, পুলিশ তাঁদের রক্ষা করতে এগিয়ে আসেনি। এ রকমই চলছে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে, দলীয় শিক্ষকেরা থাকেন নির্বিকার, পছন্দের ছাত্রসংগঠনকে সহায়তা করেন নানাভাবে। আর পুলিশ কর্তৃপক্ষও সক্রিয় হয় সরকারের মনোভাব বুঝে।
রাজশাহীতে ছাত্রশিবিরের সন্ত্রাস আর নৃশংসতার পর পুলিশ ব্যাপক অভিযানে নেমেছে। স্বয়ং পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ত্বরিত রাজশাহীতে গেছেন। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হকও ঘটনাস্থলে গেছেন। গতকাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের কর্মী নিহতের ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ন্যূনতম অবহেলা দেখালে সে জন্য খেসারত দিতে হবে।
আমরা এসব বক্তব্য বা পদক্ষেপকে সমর্থন করি। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুই অংশের মধ্যে সংঘাত এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দরিদ্র ও মেধাবী ছাত্র আবু বকরের মৃত্যু নিয়ে এ রকম কোনো ধরনের কঠোর মনোভাব দেখায়নি সরকার। তেমনি কোনো ব্যবস্থাও নেয়নি। বরং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুনের কথা, ‘এটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা, এমনটা হতেই পারে, ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ এতে করে সরকারের মধ্যে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসের ব্যাপারে কিছুটা নমনীয় মনোভাবই প্রমাণ পায়।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফ যুগপত্ বিস্ময়কর ও ভয়ংকর কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারটি হল শাখায় যে কমিটি হয়েছে, তাতে গুরুত্বপূর্ণ পদে চিহ্নিত শিবির কর্মী বসানো হয়েছে। অন্যদিকে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসের ঘটনাগুলোকে ‘বিচ্ছিন্ন’ বলে অভিহিত করেছেন তিনি। তবে তিনি সরকারের কঠোর হুঁশিয়ারির কথাও বলেছেন।
অন্যদিকে আমরা জানতে পারছি যে আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব ছাত্রলীগকে এখন বুঝিয়ে-সুঝিয়ে ‘নিয়ন্ত্রণ’ করার চেষ্টা করছেন। যদিও সৈয়দ আশরাফ বলেছেন যে ছাত্রলীগ আওয়ামী লীগের অঙ্গ বা সহযোগী সংগঠন নয়। তাহলে ছাত্রলীগ কাদের সংগঠন, কাদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত? গত বুধবার রাতেও আওয়ামী লীগের দুই নেতা (একজন প্রতিমন্ত্রী) ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় অফিসে বৈঠক করেছেন ছাত্রনেতাদের সঙ্গে। এতে কী প্রমাণিত হয়? সেদিনও তো ছাত্রলীগের ‘সাংগঠনিক নেতা’ ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মাত্র গত মার্চ মাসে তিনি ছাত্রলীগের টেন্ডারবাজি আর সন্ত্রাসের ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে এ পদ বা দায়িত্ব ছেড়ে দেন।
সর্বশেষ গত মঙ্গলবার রাতে কুয়েত থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোনো রাজনৈতিক পরিচয় বিবেচনায় না নিয়ে ঢাকা ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘটিত রক্তাক্ত ঘটনাবলির জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গত মঙ্গলবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনা ও ঢাকা কলেজে ভর্তি-বাণিজ্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বললেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হত্যা বা সংঘর্ষের ব্যাপারে কিছু বলেননি।
আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হুঁশিয়ারি এবং কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার সঙ্গে সম্পূর্ণ একমত পোষণ করে বলতে চাই, এখনই এবং আজকে থেকেই সব ছাত্রহত্যা এবং শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র ফারুকের হত্যা এবং গুরুতর আহতদের জন্য ইসলামী ছাত্রশিবিরের দায়ী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক। এবং তাঁদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক।
একই সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র আবু বকরের হত্যাকারীদের খুঁজে বের করা হোক। এবং সেদিনের সন্ত্রাসী ঘটনার জন্য দায়ী ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। একই সঙ্গে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়সহ বড় বড় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি-বাণিজ্য, হল দখল, চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজিসহ সব ধরনের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক অভিযান পরিচালিত করতে হবে।
এসব কিছু অবশ্যই সরকারের দায়িত্ব। সরকারকেই এ দায়িত্ব পালন করতে হবে। আমরা আশা করব, প্রধানমন্ত্রী এবার তাঁর কথা রক্ষা করবেন।
শিক্ষাঙ্গনে যেকোনো ধরনের চাঁদাবাজি আর সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যেকোনো পদক্ষেপ আমরা সমর্থন করব। দেশের সবচেয়ে মেধাবী শিক্ষার্থীরা সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির সুযোগ পান, যাঁদের অনেকেই দরিদ্র ও সাধারণ পরিবারের সন্তান। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠরত সন্তানটিকে ঘিরে থাকে পুরো পরিবারের সব স্বপ্ন। এভাবে শিক্ষাঙ্গনে আবু বকর ও ফারুক হোসেনদের নৃশংস মৃত্যু আমরা আর দেখতে চাই না।
খবরের লিংক
No comments:
Post a Comment
মন্তব্য করুন