নিজস্ব প্রতিবেদক, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও শিবগঞ্জ প্রতিনিধি | তারিখ: ১২-০২-২০১০
রাজশাহী বিশ্ব-বিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ কর্মী ফারুক হোসেন হত্যা মামলার আসামি শিবিরের সদস্য হাফিজুর রহমান ওরফে শাহীনের (২২) গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার দিবাগত রাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার ধাইনগর ইউনিয়নের চৈতন্যপুর গ্রামে শিবিরের অপর সদস্য মাহফুজ পারভেজের বাড়ি থেকে তাঁর গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়। শাহীনের বাড়ি রাজশাহীর মতিহার থানার মেহেরচণ্ডী গ্রামে। তিনি রাজশাহী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন।
শাহীনের মৃত্যুর ব্যাপারে পুলিশ ও শিবির পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দিয়েছে। পুলিশের ভাষ্য, শিবিরকর্মীরাই শাহীনকে হত্যা করে পালিয়েছে। আর শিবিরের অভিযোগ, শাহীনকে গুলি করে হত্যা করেছে পুলিশ। চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুলিশ সুপার নজরুল হোসেনের ভাষ্যমতে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সোমবার রাতের তাণ্ডবের পর শাহীনসহ কয়েকজন শিবিরকর্মী চৈতন্যপুর গ্রামে মাহফুজ পারভেজের বাড়িতে আত্মগোপন করেন। খবর পেয়ে পুলিশ বুধবার দিবাগত রাত দুটার দিকে ওই বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় বাড়ির ভেতর থেকে একটি গুলি আসে। পুলিশ বাড়ির ভেতর ঢুকে গলায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় শাহীনের লাশ উদ্ধার করে। এ সময় অজ্ঞাতনামা তিন-চারজন পালিয়ে যায়।
পুলিশ সুপার বলেন, শাহীন ফারুক হত্যার ঘটনায় মতিহার থানায় করা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। ঘটনাটি কীভাবে ঘটেছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় শাহীনের বন্ধু শিবিরের চাঁপাইনবাবগঞ্জ সরকারি কলেজ শাখার সাবেক সভাপতি মাহফুজকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
জেলা ছাত্র শিবিরের সাধারণ সম্পাদক আজিজ মাহমুদ সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, মাহফুজের বাড়িতে শাহীন বেড়াতে যান। বুধবার রাতে পুলিশ ও র্যাবের যৌথ অভিযানের সময় তাঁদের গুলিতে শাহীন নিহত হন।
মাহফুজের মা মরিয়ম বেগম সাংবাদিকদের বলেন, গভীর রাতে বাড়িতে পুলিশের হাঁকডাক শুনে তিনি ঘুম থেকে জেগে ওঠেন। এ সময় গুলির শব্দ শুনতে পান তিনি। পরে বাড়ির ভেতরে একটি কক্ষে শাহীনের লাশ দেখতে পান।
মেস সমিতির নেতা ছিলেন শাহীন: রাজশাহী থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, শাহীন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী এলাকার মেস সমিতির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি বেশ কয়েকটি মেস ইজারা নিয়ে শিবিরের সাংগঠনিক কার্যক্রম চালাতেন। গতকাল সন্ধ্যায় নিজ বাড়ি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী মেহেরচণ্ডী পূর্ব পাড়ায় পারিবারিক গোরস্থানে তাঁর লাশ দাফন করা হয়েছে।
সন্ধ্যায় র্যাব-পুলিশের কড়া পাহারায় তাঁর লাশ বাড়িতে আনা হয়। বাড়ির পাশে একটি ফাঁকা জায়গায় জানাজার ব্যবস্থা করা হয়।
মেহেরচণ্ডী মেস সমিতির সভাপতি আবদুস সালাম মণ্ডল গতকাল স্বীকার করেন, শাহীন তাঁর সমিতির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি বিভিন্ন বাড়ি ইজারা নিয়ে মেস তৈরি করে চালাতেন। তাঁর চুক্তি করা মেসগুলো হচ্ছে সেতু, ফাল্গুনী, নূর হাবিব, নাহার, শুভ, তুহিনসহ আরও কয়েকটি।
খবরের লিংক
No comments:
Post a Comment
মন্তব্য করুন